18/11/2023
লইট্রা মাছ আমার অনেক পছন্দের, চট্রগ্রামে থাকাকালীনই মূলত লইট্রা মাছের সাথে ভাব ভালোবাসা তৈরী হয়, আমি খুঁজে খুঁজে চট্রগ্রামের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে গিয়ে লইট্টা মাছের নানান আইটেম খেতাম, ঢাকায় লইট্রা শুটকি এভেলেভেইল হলেও তাজা লইট্রা মাছ পাওয়া যায় না, মাঝেমধ্যে বরফের হিয়ায়িত লইট্রা মাছ পাই, তাজা মাছের স্বাদ শুটকি বা হিমায়িত লইট্রায় পাওয়া না গেলেও, হিমায়িত মাছ পেলে দুই/চার/পাঁচ কেজি কিনে ফেলি, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমি ছাড়া বাসায় আর কেউ লইট্রা তেমন পছন্দ করে না, ফলে লইট্রা কাটা, ধোঁয়া ও রান্না আমারই করতে হয়, লইট্রা নরম মাছ, আঁশ নেই, ভেজিটেবল কাটা কেজি দিয়েই কাটা যায়, প্রথমে মাথা ও ফইড় ফেলে দেই, তারপর পেট পরিস্কার করে একবার ধুয়ে নিয়ে কাচা মাছকে লেবুর রস, খাবার সোডা ও লবন দিয়ে ২০/৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখি, এতে হিমায়িত মাছে কোন গন্ধ থাকলে তা দূর হয়ে ফ্রেস একটা ভাব আসে, তারপর মাছ ভালো করে ধুয়ে পরিমান মতো লবন, হলুদ ও জিরা গুড়া মাখিয়ে আধা ঘন্টা মেরিনেট করি, ইউটিউব থেকে ইতিপূর্বে লইট্রা রান্নার দুইটা রেসিপি শিখেছি, কারি ও ভুনা, লইট্রা মাছ রান্নার সময় নাড়াচাড়া করা যাবে না, তাহলে মাছ ভেঙে গুড়ো হয়ে যাবে, তেল গরম করে তাতে পেয়াজ ভেজে নিয়ে, তাতে পরিমাণ মতো রসুন, আদা, কাচা মরিচ কসিয়ে নিয়ে তারপর তাতে লইট্রা মাছ দিতে হয়, কাচা মাছ নাড়াচাড়া করে মশলার সাথে মিশিয়ে নিয়ে তারপর পানি এড করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫/৭ মিনিট মিডিয়াম আঁচে রান্না করতে হবে, শেষের দিকে ধনিয়া পাতা ও টমেটোর সিজন হলে টমেটো কুচি দিয়ে অল্প কিছুক্ষণ জ্বাল দিয়ে রান্না শেষ করতে হবে, লইট্রা মাছে কিন্তু ঝাল একটু বেশি না দিলে খেয়ে মজা নেই, এজন্য শুকনা ও কাচা মরিচ দুইটাই ব্যবহার করতে হয়। শুধু খাওয়া নয়, লইট্রা মাছ কাটা, ধোঁয়া ও রান্নার পুরো ব্যাপারটা আমি উপভোগ করি, সম্প্রতি দুই কেজি হিমায়িত লইট্রা কিনেছি, এবার ভাবলাম নতুন কিছু করি, ইউটিউব ঘেটে পেলাম লইট্রা ফ্রাইর রেসিপি, ফ্রাই করার জন্য লইট্রা মাছ মেরিনেট করার পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন, হলুদ, লবন, জিরা ও মরিচ গুড়ার সাথে বাটা আদা, রসুন ও বেসন দিতে হয়, কিন্তু বাকি সব থাকলেও বাসায় বেসন ছিলো না, কী করা যায় ভাবতে ভাবতে বিনা খরচে বেসনের বিকল্প বের করে ফেলেছি, ভাতের মাড় বা ফেনকে প্রথমে জ্বাল দিয়ে সেমি সলিড করে নিয়েছি, তারপর এর সাথে পরিমাণমতো উপরের মশলাগুলো ও লবন মিশিয়ে মেরিনেট করেছি, ভালোই হয়েছে, বাসায় বেসন না থাকলে বা বেসনের খরচ বাঁচাতে চাইলে আপনারাও এই পদ্ধতি ফলো করতে পারেন, মাছে যেহেতু হয়েছে, আশা করা যায় অন্যান্য যেসব ভাজাপোড়ার ক্ষেত্রে বেসন লাগে, সেখানেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে।