05/08/2025
এখন থেকে ৫০ বছর আগে, গেরস্ত বাড়িতে বাইরে থেকে খুব কমই পন্য কিনতে হত ।
সুশিক্ষিত কর্পোরেটরা যাকে সাস্টেইনেবল বলে ।
আমার নানা, বড় গেরস্ত ছিলেন ।
বাড়িতে ১০/১৫ টা গরু ছিল, গরুর গোয়ালের উপরে সিলিং এ বাঁশের টুকরিতে ছিল ৫০/৬০ জোরা কবুতর ।
২ জোড়া মহিষ ছিল মোষের গাড়িতে মালামাল আনা নেয়ার জন্য, সাথে সেটা দিয়ে হাল চাষ ত হতই । গরুর দুধ সবসময় থাকত, ঘি নিজেই বানাতেন । আমরা গেলে ইচ্ছেমত কবুতর এর মাংস খেতাম ।
৫টা ধানের গোলা ছিল, কতশত মণ ধান সেখানে থাকত সেটা মনে নেই, তবে প্রতি হাটে ২০/২৫ মণ ধান বিক্রির জন্য নিয়ে যেতেন খরচ করার জন্য । সেটা বেচে সপ্তাহের জরুরি জিনিস কিনে নিয়ে আসতেন । কামলাদের জন্য বিড়ি লাগত অনেক, লবণ, ইলিশ মাছ, গরুর গোশত, মসলা এসব কিনতে হত ।
মাছ, চাল, সবজি, আলু থেকে বেশিরভাগ জিনিসই বাড়িতেই থাকত । বর্ষাকালে মাছ কেনার ত প্রশ্নই ওঠে না, খরার সময়ে মাগুর শিং কই ধরে ড্রামে রেখে দিতেন ।
ধান চাষ থেকে ধানের খড় আসত, গরুর খাবার ছিল ফ্রি ।
এদিকে বছর বছর গরু বিক্রি ত ছিলই ।
সত্যিকার এর সাস্টেইনেবল মডেল ছিল ।
এরপরে এল, সবুজ বিপ্লব ।
মোষের বদলে এল পাওয়ার টিলার, মাটির তিন তলা বাড়ি ভেঙ্গে ইটের ডূপ্লেক্স হল । বড় মামা ওকালতির সুবিধার্থে শহরে চলে গেলেন । ছোট মামা শহরে গেলেন মামাত ভাই এর পড়াশোনার সুবিধার জন্য ।
সম্ভ্রান্ত গেরস্ত বাড়ি পরে রইলো একলা ।
এখন সেখানে কেউ থাকে না ।
সভ্যতা এগিয়ে যাচ্ছে,
এগিয়ে যাচ্ছে টা কোথায় ?
খাদ্যে স্বয়ং সম্পুর্ন একটা পরিবার এখন খাবারের জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল । তেলের জন্য সিন্ডিকেট উপর, পেয়াজের জন্য, মরিচের জন্য প্রায় সকল খাবারের জন্য অন্যের মুখাপেক্ষী ।
-------------
আমরা দাত মাজার জন্য টুথপেস্ট ব্যাবহার শুরু করলাম,
এখন টুথপেস্ট এ অভ্যস্ত হবার পরে কর্পোরেটরা বলা শুরু করেছে কয়লাযুক্ত টুথপেস্ট ব্যাবহার করতে - কিন্তু সেটা তাদের কাছে থেকে কিনে !
কর্পোরেটরা উন্নয়নের নামে এভাবেই সব চাপিয়ে দেয়, বদলে দেয় ।
এরপরে শোষন করে ।
আগে দেশ দখল করে শোষণ করা হত, এখন করা হয় অর্থনিতি দখল ।
খাদ্য নিরাপত্তার নামে, সব খাদ্য তারাই কিনে নেয় ।
এরপরে সেটা বেশিদামে আমাদের কাছেই বেচে তাদের নির্ধারিত দামে ।
এ খাচা ভাংবো আমি কেমন করে ??
Mujahidul Islam Jahid