20/11/2025
ছবির ভদ্রমহিলার নাম হেলেন।
সেদিন পুরো আদালত নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল যখন হেলেন টলতে টলতে ভেতরে ঢুকলেন।
বয়স ৯১, উচ্চতা পাঁচ ফুটের সামান্য বেশি, কাঁপা হাত—বয়সের ছাপে মুহ্যমান এক দুঃখিনী মুখ।
পরনে হাসপাতালের গাউন ও হাতকড়া। অপরাধীর চেয়ে তাকে বরং বেশি দেখাচ্ছিল পথভোলা এক অশীতিপর বৃদ্ধার মতো।
বিচারক মার্কাস ফাইল উল্টে দেখলেন: গুরুতর চুরির অভিযোগ!
কিন্তু মাথা তুলতেই তাঁর মনে হলো—কিছু যেন ঠিক মিলছে না।
হেলেন ও তাঁর স্বামী জর্জ (৮৮) কাটিয়েছেন দীর্ঘ ৬৫ বছরের সাধারণ এক দাম্পত্য জীবন।
এই ৬৫ বছরে হেলেনের প্রথম অগ্রাধিকার ছিল জর্জের হার্টের ওষুধ—দিনে বারোটি বড়ি, যা তাঁর শ্বাস নিতে সাহায্য করত।
কিন্তু এক সপ্তাহ আগে একটি মূল্যপরিশোধ জনিত ভুলের কারণে তাদের স্বাস্থ্যবীমা বাতিল হয়ে যায়। ফার্মেসিতে গিয়ে হেলেন জানতে পারেন—যে ওষুধ আগে ৫০ ডলারে মিলত, এখন তার দাম ৯৪০ ডলার!
খালি হাতে ফিরে এসে তিনদিন ধরে তিনি দেখলেন—জর্জ শ্বাস নিতে পারছেন না।
হেলেন বুঝলেন, সময় আর নেই। কোনো অবস্থাতেই তিনি হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারেন না।
মরিয়া হয়ে তিনি আবার ফার্মেসিতে গেলেন। অপেক্ষা করলেন যতক্ষণ না ফার্মাসিস্ট পেছন ঘোরেন…
কাঁপা হাতে ব্যাগে ওষুধ ভরলেন।
কিন্তু দরজায় পৌঁছানোর আগেই স্বয়ংক্রিয় সাইরেন বেজে উঠল।
মুহূর্তেই হাতকড়া পড়ে গেল তাঁর দুর্বল কব্জিতে।
আদালতে ভাঙা গলায় তিনি শুধু বললেন—
“আমি চুরি করতে চাইনি, মাননীয় বিচারক… আমি শুধু তাকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম।”
বিচারক মার্কাস তাঁর দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন।
কঠোর কণ্ঠে নির্দেশ দিলেন—
“ওনার শিকল খুলে দাও, এখনই!”
এরপর বাদীপক্ষের উকিলের দিকে তাকিয়ে বললেন—
“গুরুতর চুরি? এর জন্য?”
হেলেন কেঁদে ফেললেন।
বিচারক দীর্ঘশ্বাস ফেলে এমন কথা বললেন, যা একদিন ইতিহাস হয়ে থাকবে—
“এই নারী অপরাধী নন। তিনি আমাদের সমাজব্যবস্থারই একটি শিকার।”
তিনি হেলেনকে নির্দোষ ঘোষণা করলেন।
সঙ্গেসঙ্গে সমাজসেবা বিভাগকে নির্দেশ দিলেন—
জর্জ যেন সেদিনই পূর্ণ চিকিৎসা পান।
পরে এক সাংবাদিক জিজ্ঞেস করলেন—
“আপনি এমন সিদ্ধান্ত নিলেন কেন?”
বিচারক শান্তভাবে বললেন—
“কখনও কখনও ন্যায়বিচার মানে হলো বুঝতে পারা, সমাজব্যবস্থা কোথায় অন্যায়ে পরিণত হয়েছে। এই নারী চোর নন… তিনি একজন স্ত্রী, যিনি ভালোবাসাকে বেছে নিয়েছেন।”
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট
আহা দারুন ❤️❤️❤️