
26/08/2025
মেয়েটি মা হবার জন্য বদমাশ স্বামীর সঙ্গে পড়ে যা ঘটায়!
মিতু একজন সরল, ভদ্র ও স্বপ্নবিলাসী তরুণী। ছোটবেলা থেকেই তার ইচ্ছে ছিল ভালো একজন মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পাবে, ভালোবাসা আর যত্নে তার ঘর ভরে উঠবে। মা হওয়ার স্বপ্নও তার মনের গভীরে ছিল, যেন একটুকরো স্বর্গের মতো অনুভূতি। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা তার সেই স্বপ্নকে নির্মমভাবে চূর্ণ করে দেয়।
মিতুর বিয়ে হয় রাসেল নামক একজনের সঙ্গে। শুরুতে রাসেল ছিল ভদ্র, রোমান্টিক আর মায়াবী। মিতু ভাবতে শুরু করেছিল, সত্যি ভাগ্য তার পক্ষে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পরই রাসেলের আসল রূপ ধরা পড়ে। সে ছিল একজন চরম রকমের স্বার্থপর, মাদকাসক্ত, রাগী ও হিংস্র মানুষ। মিতুকে প্রায়শই মারধর করত, অপমান করত, এমনকি তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত।
মিতু প্রথমে ভেবেছিল সময়ের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু দিনদিন অবস্থা খারাপ হতে থাকে। রাসেল সন্তান চায় না—এই অজুহাতে মিতুকে নানা রকম ওষুধ খাওয়াতো, কখনও জোর করে। কিন্তু মিতু চুপচাপ মেনে নিত সব, কারণ সে মা হতে চায়। সে জানে, একটি সন্তানের আগমনে তার জীবনে আলো আসবে, হয়তো সেই সন্তানই তাকে নতুন শক্তি দেবে এই দুঃসহ জীবনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে।
একদিন, মিতু গোপনে একজন ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ডাক্তার জানায়, সে মা হতে পারবে, কিন্তু রাসেল যদি জোর করে ওষুধ খাওয়াতে থাকে তাহলে তা বিপজ্জনক। সেই থেকে মিতু কৌশলে নিজেকে রক্ষা করতে শেখে। ওষুধ খাওয়ার ভান করে, কিন্তু ফেলে দেয়। নিজের শরীর ও ভবিষ্যৎ রক্ষায় সচেতন হয়ে ওঠে।
অবশেষে, একদিন মিতু জানতে পারে সে গর্ভবতী। খবরটা শুনে রাসেল আরো রেগে যায়, চিৎকার করে, মিতুকে মারার চেষ্টা করে। কিন্তু এবার মিতু চুপ করে থাকে না। সে সাহস নিয়ে পুলিশের সাহায্য নেয়। প্রতিবেশীদের সামনে সমস্ত ঘটনা খুলে বলে। রাসেলকে গ্রেপ্তার করা হয়, এবং আদালতের নির্দেশে তার থেকে মুক্তি পায় মিতু।
এই পুরো ঘটনায় মিতু বুঝতে পারে, একজন নারী শুধু সহ্য করেই নয়, সাহস দেখিয়ে, প্রতিবাদ করেই নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে পারে। তার মা হওয়ার যাত্রা ছিল কণ্টকাকীর্ণ, কিন্তু সে হাল ছাড়েনি। এখন সে শুধু একজন মা নয়, একজন সংগ্রামী নারীর প্রতীক, যে বদমাশ স্বামীকেও ঠেকিয়ে তার মাতৃত্ব রক্ষা করতে পেরেছে।
এই গল্প শুধু মিতুর নয়, হাজারো নারীর যারা কষ্ট সহ্য করে, কিন্তু একদিন নিজের জন্য দাঁড়াতে শেখে। সমাজে এমন সাহসী নারীদের কাহিনি আলো হয়ে জ্বলে উঠুক প্রতিটি ঘরে।