Argentina football fan club

  • Home
  • Argentina football fan club

Argentina football fan club Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Argentina football fan club, Digital creator, .

জীবন সুন্দর যদি নিজেকে মানিয়ে নিয়ে বাঁচতে শিখো।
না হলে মৃত্যুযন্ত্রনার মতই জীবন কঠিন।
ভাষা সুন্দর ব্যাকরণে,
আর মানুষ সুন্দর আচরণে।
গল্প তো সবারই থাকে
কারোটা উপন্যাস কারোটা দীর্ঘশ্বাস।
হাত ধরে চলার নাম ভালোবাসা নয়
ছায়া হয়ে পাশে থাকার নামই ভালোবাসা।

ভেবে দেখুন         রাত ৩টার সেই মুহূর্ত, যখন এক নতুন মা অর্ধেক ঘুম চোখে, ভালবাসা, ভ-য় আর ক্লা”ন্তিতে ভরা হৃ”দয়ে নিজের শি...
17/07/2025

ভেবে দেখুন
রাত ৩টার সেই মুহূর্ত, যখন এক নতুন মা অর্ধেক ঘুম চোখে, ভালবাসা, ভ-য় আর ক্লা”ন্তিতে ভরা হৃ”দয়ে নিজের শিশুকে খাওয়া”চ্ছেন

তার শরীর ব্য”থায় ভে”ঙে পড়ছে।
হরমোনগু”লো ওলটপালট হয়ে আ”ছে।
টানা দু’ঘণ্টা ঘুমানোর সুযোগও মেলেনি দিনের পর দিন।
তবুও… তিনি থেমে যান না........

নিজে খেতে ভুলে যান, কিন্তু শিশুর একটাও ফি”ডিং কখনও ভুলেন না।
চুপিচুপি শাও”য়ারে কাঁ”দেন, তারপর হাসিমুখে বেরিয়ে আসেন যেন কেউ টের না পায়।
সব ঠিকঠাক করছেন জেনেও বারবার মনে হয়, “আমি কি ঠিক করছি?”

মাতৃত্বে কোনো ছুটি নেই।
আছে নির্ঘু”ম রাত্রি যাপন, depression, এলোমেলো চুল সাথে প্রচুর চুল ঝরে যাওয়ার সম”স্যা, চারপাশে গ”র্ত হয়ে যাওয়া কালো দুটো চোখ, শিশু”র কা”ন্না আর একরাশ অ”প”রাধবোধ।
তবে তার স”ঙ্গে থাকে—
এক জোড়া ছোট্ট আ”ঙুল তার হাত আঁকড়ে ধরা…
ঘুম জড়ানো এক নি”ষ্পাপ হাসি…
আর এমন এক ভালবাসা, যা সব ব্যথাকেই অদ্ভুতভাবে সা”র্থক করে তোলে।

প্রতিটি নতুন মাকে জানাই—
তুমি একা নও।
তুমি দুর্বল নও।
তুমি অস”ম্ভব রকম শক্তিশালী— এমন এক শ”ক্তি, যা দুনিয়া সব”সময় দেখে না ❤️

আপনারা যারা গল্প পছন্দ করে তারা আমাদের গ্রুপে জয়েন হয়ে গল্প পড়তে পারেন, নীল লেখায় চাপ দিয়ে

জয়েন করে রাখুন 👉 মিষ্টি ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প 💙

চাকরি পেয়েছি আজ প্রায় এক বছর। বাসা থেকে বিয়ের কথাবার্তা চলছে,কাল আম্মু জিজ্ঞেস করলো আমার কোনো পছন্দ আছে কি না? আমি বললাম...
17/07/2025

চাকরি পেয়েছি আজ প্রায় এক বছর। বাসা থেকে বিয়ের কথাবার্তা চলছে,কাল আম্মু জিজ্ঞেস করলো আমার কোনো পছন্দ আছে কি না? আমি বললাম হ্যাঁ আমার একটা মেয়ের সাথে আজ ৪ বছরের রিলেশন,আম্মু বলল তাহলে ঠিকানাটা দে আমরা গিয়ে দেখে আসি।

গার্লফ্রেন্ডকে দেখতে গিয়ে আম্মু বাসায় এসেই না করে দিয়েছিল কারণ মেয়ের বয়স বেশি,গায়ের রং শ্যামলা। আম্মু বলল আমার একটা মাত্র বউমা,আত্মীয়-স্বজনের বাসায় নিয়ে গেলে যেন ওরা বলে দেখছিস ওমুকের বউটা কত সুন্দরী তাছাড়া আমার ইচ্ছে আছে তোর জন্য কম্ বয়সী ফর্সা টুকটুকে বউ নিয়ে আসব।

আম্মুরে বললাম, তোমার দেখা সুন্দরী ফর্সা মেয়েটা আমাকে বুঝবে এর কি গ্যারান্টি আছে? সে যে আমাকে ভালোবেসে আপন করে নিবে এর কি গ্যারান্টি আছে? আমি যদি সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করে দিন শেষে ঐ শ্যামলা মেয়েটার অভাববোধ করি,তার জন্য কষ্ট পাই তাহলে এই বিয়ের মানে কি?

ঐ শ্যামলা মেয়েটাই শূন্য পকেটে আমার পশে ছিল।ঐ শ্যামলা মেয়েটাই আমাকে বিয়ে করবে বলে নিজের বয়স বাড়িয়েছে,আমার সাথে থেকে আমার ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করেছে, অনেক ভালো ভালো পাত্র রিজেক্ট করেছে,যার হাত ধরে আমার সফলতা এসেছে আজ তাকে ফেলে অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করব? এত বড় অবিচার সৃষ্টিকর্তা কি মেনে নিবে? আর তুমি একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের কষ্ট বুঝবে না?

অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে,জোরাজুরি করে আম্মুকে মানিয়ে নিয়েছিলাম। আর আজ সেই শ্যামলা মেয়েটা আমার বউ, আজ বুক ফুলিয়ে বলতে পারি হ্যাঁ আমরা সত্যি অনেক ভালো আছি,সুখে আছি।

যেই মা তার ছেলের পছন্দ করা শ্যামলা মেয়েটাকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল সেই মা আজ আমাদের দুজনের ভেতর ঝগড়া হলে দোষ আমার বউয়ের হলেও আমারে এসে পিটাই।

লেখায়ঃ Adnan Habib 🌸

আপনারা যারা গল্প পছন্দ করে তারা আমাদের গ্রুপে জয়েন হয়ে গল্প পড়তে পারেন, নীল লেখায় চাপ দিয়ে

জয়েন করে রাখুন 👉 মিষ্টি ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প 💙

“ পাগল হয়ে গেছো তুমি? নিজের থেকে ১১ বছরের ছোটো মেয়েকে ভালোবাসো বলছো! তোমার কি সত্যি মাথা খারাপ হয়ে গেছে রোদ?”রৌদ্র গর্জ...
17/07/2025

“ পাগল হয়ে গেছো তুমি? নিজের থেকে ১১ বছরের ছোটো মেয়েকে ভালোবাসো বলছো! তোমার কি সত্যি মাথা খারাপ হয়ে গেছে রোদ?”

রৌদ্র গর্জন তুলে এবার।চোখেমুখে একপ্রকার আগুন নিয়ে বলে,

“ হ্যা,হ্যা পাগল হয়ে গেছি! ঐ ছোট্ট মেয়েটার জন্য উম্মাদ হয়েছি আমি। এককথায় ভয়ংকর উম্মাদ! ওকে না পেলে এই এহসান বাড়ির প্রতিটি কোণায় আগুন জ্বলবে মনে রেখো!”

কবির সাহেব নিজের বোধ হারালেন এবার।শক্ত মুখে ছেলের দিকে তাকিয়ে চোখ থেকে চশমাটা খুলে হাতে নিলেন। তেড়ে এসে বললেন,

“ সেটা তখনি হবে যখন তুমি এখানে থাকবে! আর তাছাড়া যেখানে অরিন নিজেই বলেছে ও তোমায় ভালোবাসে না,সেখানে তোমার এতো হম্বিতম্বি কোত্থেকে আসে?”

রৌদ্র এবার তাচ্ছিল্যের হাসি টানে ঠোঁটের কোণে। শ্যামবরণ সুশ্রী মুখখানা ইতোমধ্যেই রাগে রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। ঘাড়ের রগগুলো ফুটে উঠেছে স্পষ্ট! রৌদ্র কোমরের ওপর দু'হাত রেখে দুচোখ বন্ধ করলো। ফোঁস করে এক ক্ষুদ্র নিশ্বাস ফেলে ধরে আসা কন্ঠে বললো —

“ অরিকে আমায় চেনাতে এসো না আব্বু! যেখানে ওর প্রতিটা নিশ্বাসের উঠানামার খবর আমার জানা, সেখানে ওর এমন কথা বলার পেছনে ঠিক কারা কারা আছে তা আর বুঝতে বাকি নেই আমার!”

এহেন কথায় কবির সাহেব হয়তো খানিকটা নড়েচড়ে দাঁড়ালেন। থতমত চেহারা নিয়ে কোনমতে বললেন,

“ মানে? কি বোঝাতে চাচ্ছো তুমি?”

রৌদ্র ধীরে ধীরে চোখ মেলে বাবার দিকে চাইলো।দু-কদম এগিয়ে এসে মাথা নিচু করে বললো,

“ ওকে আমি ভালোবাসি আব্বু! ভিষণ ভালোবাসি।বিশ্বাস করো,ওকে ছাড়া আমার নিশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়ে যায়! আমি জানি,ও হয়তো তোমাদের কথানুযায়ী ওমন কথা বলেছে।আমি...আমি আমার সানশাইনের চোখের ভাষা বুঝি আব্বু!”

কবির সাহেব তৎক্ষনাৎ নিজের মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলেন।রাগে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন মানুষটা।অদূরেই দাঁড়িয়ে অসহায় চোখে এদিকেই তাকিয়ে আছেন সাব্বির সাহেব। মানুষটার বুঝি বুকটাও কেমন ভার হয়ে আসছে ক্রমাগত। তিনি মুখ হা করে নিশ্বাস ফেলতে লাগলেন। ওদিকে জুবাইদা বেগম কেঁদে বুক ভাসিয়ে যাচ্ছেন একাধারে। ছেলের চোখে কান্না যে এই প্রথম দেখলেন তিনি! কোনো মা'ই কি পারে সন্তানের ওমন দুঃখ সহ্য করতে?

রৌদ্র হঠাৎই মাথা তুলে বাবার দিকে তাকালো।জোরালো গলায় বললো,

“ আমি ছাড়া অরিন কারো হবে না! ওর শুরুটা যেমন আমার সাথে হয়েছে, তেমনি ওর শেষটাও আমার সাথেই হবে। তবুও যদি তোমরা ওকে কোনোভাবে আমার কাছ থেকে দূরে সরাবার চেষ্টা করো,তাহলে শুনে রাখো — এই এহসান পরিবারে একসঙ্গে দুটো লাশ উঠবে।আমি তো মরবোই সাথে ওকে নিয়ে মরবো!”

কথাটা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গেই রৌদ্রের গালে সশব্দে চড় বসান কবির সাহেব। হঠাৎ করেই পুরো বাড়ি এহেন কান্ডে থমকে গেলো। জুবাইদা বেগম কান্না ফেলে ফ্যালফ্যাল চোখে তাকিয়ে রইলো কবির সাহেবের দিকে।সাব্বির সাহেব তো রৌদ্রের কথা শোনামাত্রই ধপ করে বসে পড়লেন মাটিতে। তাকে আগলে দাঁড়িয়ে ছিলো তাশরিক সাহেব আর তায়েফ সাহেব। হঠাৎ রৌদ্রের গালে চড় পড়ায় ছুটে আসলেন দুজনেই।কবির সাহেব কেমন হুংকার দিয়ে বলে ওঠেন,

“ বেশি বড় হয়ে গেছিস তুই? এই দিনের জন্যই কি বড় করেছিলাম তোকে? বাবার সামনে দাঁড়িয়ে বুক টানটান করে কথা বলছিস! এতো সাহস কোত্থেকে আসে তোর?”

রৌদ্র গাল বাকিয়ে এখনো আগের ন্যায় দাঁড়িয়ে আছে। বাবার কথা শেষ হতেই ছেলেটা ভেঙে পড়লো একপ্রকার। হু হ করে কেঁদে উঠে দাঁড়ানো অবস্থাতেই। তায়েফ সাহেবের বুকটা কেমন হু হু করে উঠলো ছেলেটার এহেন কান্না দেখে। তিনি এগিয়ে আসেন কিছুটা।রৌদ্রকে ধরতে যাবেন তার আগেই রৌদ্র দু-হাঁটু গেড়ে ধপ করে আধ-বসা হয়ে বসলো ফ্লোরে।হাতদুটো দিয়ে বাবার পা আঁকড়ে অসহায়ের মতো বলতে লাগলো,

“ একটা না,হাজারটা মারো আব্বু! তবুও আমি বলবো,তুমি প্লিজ অরিকে আমায় ভিক্ষা দাও! আমি...আমি হয়তো তোমাদের মতো ওকে রাজকন্যা বানিয়ে রাখতে পারবোনা, কিন্তু বিশ্বাস করো আব্বু! আমি ওকে আমার রানী করে রাখবো। আব্বু... আমার খুব কষ্ট হচ্ছে আব্বু! বুকটায় কেমন অসহ্য রকমের ব্যাথা হচ্ছে। আমি...আমি সত্যি ওকে ছাড়া বাঁচবো না আব্বু! তুমি আমার ওপর এটুকু দয়া করো! আমিতো তোমার কাছে কোনোদিন কিছু চাইনি আব্বু! এই প্রথম আমি আমার প্রাণ সঞ্জিবনী চাচ্ছি তোমার কাছে! দয়া করো আব্বু, একটু দয়া করো আমার ওপর!”

রৌদ্রের বলা প্রতিটি কথা উপস্থিত সকলের বুকটাই বুঝি খানখান করে দিচ্ছে। সিঁড়ির কোণে দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে কেঁদে যাচ্ছে অরিন। আর তার দিকে একরাশ অভিমান ভরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে অনিক। অনিক আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলোনা। সে ছুটে চলে যেতে লাগলো সিঁড়ির দিকে।যাওয়ার পথে অরিনের দিকে তাকিয়ে আঙুল উঁচিয়ে বেশ শক্ত গলায় বলে ওঠে,

“ তোর জন্য যদি আমার ভাইয়ের কিছু হয়,তাহলে খোদার কসম — আমি ভুলে যাবো তুই আমার মায়ের পেটের বোন!”

আপনারা যারা গল্প পছন্দ করে তারা আমাদের গ্রুপে জয়েন হয়ে গল্প পড়তে পারেন, নীল লেখায় চাপ দিয়ে

জয়েন করে রাখুন 👉 মিষ্টি ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প 💙

#আসছে (ধামাকা পর্ব!)
#সঙ্গীন_হৃদয়ানুভুতি

রোজ রাতেই আমি টের পাই আমার বড় মেয়ে রাতে পুনুর পুনুর করে ফোনে কথা বলে। আমি ওর রুমে গেলেই একেবারে চুপ হয়ে ঘুমের ভা ন ধরে ব...
16/07/2025

রোজ রাতেই আমি টের পাই আমার বড় মেয়ে রাতে পুনুর পুনুর করে ফোনে কথা বলে। আমি ওর রুমে গেলেই একেবারে চুপ হয়ে ঘুমের ভা ন ধরে ব্যাঙ্গের মতন পরে থাকে। আমি ওর মা আমিও এমন করে ওর বাপের সাথে প্রেম করতাম। তখন ফোন ছিলনা, রাতে চিঠি আদান প্রদান করতাম। আব্বারে দেখলে আমিও ব্যাং ম রা র মতন পড়ে থাকতাম।

ভাবলাম আমার কিছু একটা করতে হবে। আমার আব্বা কলেজ যাওয়া অফ করে দিছিল তাই আমি পালিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু আমি ডিজিটাল মা, আমার মেয়ের এসব করা চলবে না।

টেকনিক করে, মেয়ে যখন ওয়াশ রুমে গেল আর ওর ফোনখানা নিয়ে দেখি রিসিভ কল ভর্তি হয়ে আছে একটি নম্বর। আর তা জান নামে সেভ করা। সুন্দরভাবে ওই নম্বর টুকে নিলাম।

ব্যাস! রান্না ঘরে গিয়ে ওই নম্বরে মেসেজ দিলাম, জান আমি লিমু, এটা আমার নিউ নম্বর।আগের নম্বরে ভুলেও কল দিবানা।ওটা মায়ের কাছে। ওই নম্বর ব্লাক লিস্ট এ দেও। এখন থেকে মেসেজিং করবো। মা টের পেয়েছে সব।তাই কিছুদিন কথা বলা যাবেনা।

ওপাশ থেকে টুং করে ফিরতি মেসেজ,আচ্ছা জান।কি করছো সোনা?

মনে মনে ভাবি,তরে একবার হাতের নাগালে পাই সোনা পুড়ে তামা বানামু।

আমি মেসেজ দিলাম,কিছুনা জান।মন খারাপ।

এভাবেই আমাদের মেসেজিং চলতেই রইল,চলতেই রইল,৫দিনের মাথায় আমি ভোর রাতেও বারান্দায় গিয়ে মেসেজিং করি।আমার বর মহাশয় ইদানীং আমার দিকে কেমন সন্দেহর দৃষ্টিতে তাকায়।তাতে কিছুই আসে যায়না। আমার মেয়ের লাইফ আগে।আমি অনেকদিন মেসেজিং করলে আমার মেয়ে ওদিক থেকে ওই ছেলেকে ভুলে যাবে।

ইদানীং আমার মেয়েকেও মন মরা দেখি।নম্বর ব্লক লিস্ট এ দিয়েছে কিনা।

যাক, অবশেষে আমি ভাবলাম আমি সেই ছেলের সাথে দেখা করি।ওকে গিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আসবো।তাহলেই সাকসেস।

সাজুগুজু করছি,মন বেশ ফুরফুরা লাগছে আজ সেই বেয়াদপ কে চরম ধোলাই দিব।

আমার বর মশাই পেপার পড়া বাদ দিয়ে আমায় আড়চোখে দেখছে আর জিজ্ঞেস করছে কি!কই যাও?

ওকে বললে ও বেপার টা নিয়ে হাইপার হবে।তাই বললাম বাজারে কিছু কেনার আছে

-এই বিকেলবেলা?

তো?মধু নাই বাসায়।তুমি তো জানো সকালে খালি পেটে আমি মধু খাই।ডায়েটে আছি তো।

বাসা থেকে নেমে পার্ক এ গিয়ে দাড়িয়ে আছি।
অল্প বয়সী কাউকেই দেখছিনা।কিন্তু আমার বরের চেয়েও বয়স্ক লোক আমার পাশে ঘুরঘুর করছে।

ফোনটা হাতে নিয়ে আবার মেসেজ দিলাম কই তুমি?

ওপাশ থেকে মেসেজ না দিয়েই কল দিল।আমি রিসিভ করে চুপ করে আছি।কি অদ্ভুত আমার পাশে দাড়ানো লোকটির কানেও ফোন আর আমার দিকে শকুনের মতন তাকিয়ে আছে।আমি কেটে দিয়ে আবার কল দিলাম,আমি আরো শিহরিত হলাম,ফোন বাজছে ওই লোকের হাতের টা ই।

রেগে গিয়ে বললাম,আপনি ই সেই মানুষ! ছিঃ মেয়ের বয়সী একজন এর সাথে প্রেম করতে লজ্জা লাগেনা।আবার তারে জান,সোনা ডাকেন!

লোকটি তীব্র দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলে,বেত্তমিস মহিলা,তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকছে আর এখন বাচ্চার বয়সী ছেলেকে বিরক্ত করেন!

ঝগড়ার এক পর্যায় জানতে পারলাম,আমার মেয়ে এই লোকের ছেলের সাথে প্রেম করে।তিনি তার ছেলের ফোন নিয়ে গেছিল।আর আমি এতদিন তার ছেলে ভেবে তার সাথেই প্রেমালাপ করেছিলাম।

দুজন ই এক পর্যায় হাসতে হাসতে মরার উপক্রম হয়েছে।দুই ব্যর্থ গোয়েন্দাই এক পর্যায় কফি শপ এ বসলাম।নিজের কর্মকান্ডর জন্য স্যরিও বললাম।তিনিও বললেন।ভাবলাম বেয়াই হিসেবে ছেলের বাবা মন্দ না।হেসে হেসে বললাম ছেলের ফোনটা বাসায় গিয়ে ছেলেকে দিয়ে দিয়েন,আমার মেয়ে খুব ই মন মরা হয়ে আছে।

সে উঠে বললো,হুম আগে মেসেজিং গুলি মুছে নেই।এমন প্রেমালাপ দেখলে মামলা খেয়ে যাব হা হা হা।

আমি হেসে কুটিকুটি হয়ে কফির মগে চুমুর দিব তখন ই দেখছি আমার দিকে রাক্ষসের মতন তাকিয়ে আছে লিমুর বাবা।
এ কি তুমি এখানে?

-বাহ!আরজু বাহ!না আসলে তো এমন রঙ্গ দেখতেই পেতাম না

এই কি বলো? ভুল ভাবছো তুমি আমায়।

-ভুল! ছিঃ এত নিচ তুমি?এখন তো আমি তিতা হয়ে গেছি?আর এই বেটা মধু?তাই তো ভ্রমর মধু খেতে এসেছে।খাও মধু।
এই বলে লিমুর বাবা চলে গেল।

আমি পিছন পিছন ছুটছি।বেয়াই মশাই উঠে বললো,ঘাবড়াবেন না সোনা থুক্কা আপা।আমি আছি অলয়েজ পাশে।

রেগে বললাম,চুপ কর টাকলা ব্যাটা।মেয়ের প্রেম ভাংতে গিয়া আমার সংসার ই ভাঙার উপক্রম হইছে।

ও লিমুর আব্বা...খারাও..তুমি ভুল ভাবতেছো,দুনিয়ার সব মধুই ভেজাল,তুমি ই আসল।

ও লিমুর আব্বা খারাও কইলাম.....
Dhonnobad dite vulben na😑

#টিট_ফর_ট্যাট

#তারকাঁটা

খুব অল্প বয়সে প্রেম নামক সমুদ্র তার পূর্ণাঙ্গ শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমার নিরীহ হৃদয়ের উপর। অনুভূতির প্রবাহ এতটাই ...
16/07/2025

খুব অল্প বয়সে প্রেম নামক সমুদ্র তার পূর্ণাঙ্গ শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমার নিরীহ হৃদয়ের উপর। অনুভূতির প্রবাহ এতটাই তীক্ষ্ণ ছিল যে মনে হতো আমার সমস্ত চেতনা, সমস্ত আবেগ একসাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। দিনকে দিন যেন অতল সাগরে ডুবে যাচ্ছিলাম। নিঃশ্বাসের জন্য হাহাকার, বুকের কাছে পানির চাপ, আর মধুর দমবন্ধ অনুভূতি; একইসাথে যন্ত্রণাদায়ক এবং পরমসুখের।

আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল নাটকীয়ভাবে, সেদিন পাড়ার মাঠে আমরা বাচ্চারা 'জামাই-বউ' খেলায় মেতে উঠেছিলাম। এই খেলায় একজন 'জামাই' হয়, আর বাকি মেয়েরা 'বউ' সাজে। জামাই তার পছন্দের বউ বেছে নেয়। সেদিন তৈমুর নামে ছেলেটি 'জামাই' হয়েছিল। আমি ছিলাম প্রতিযোগী 'বউ'দের দলে। অনেকগুলো মেয়ের মাঝ থেকে যখন তৈমুর একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আমাকে বেছে নিয়েছিল, তখন অবুঝ মনেই আনন্দে হাততালি দিয়েছিলাম।

তারপর থেকে শুরু হলো আমাদের একসঙ্গে পথ চলার অভিযান। কৈশোরে আমরা বন্ধু থেকে প্রেমিক-প্রেমিকা হয়ে উঠলাম। তৈমুর ছিল আমার দুই বছরের সিনিয়র। আমরা একই স্কুলে, একই কলেজে, একই ভার্সিটিতে পড়েছি। প্রতিবার ও আমার দুই ক্লাস উপরে থাকত। তবুও আমাদের জীবনধারা এমনভাবে সংযুক্ত ছিল যে মনে হতো আমরা একই তালে, একই ছন্দে জীবন যাপন করছি। একসঙ্গে স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতে যাওয়া, একসঙ্গে বাড়ি ফেরা, পরীক্ষার আগে রাত জেগে ফোনে পড়া রিভিশন করা, ক্যান্টিনের চা ভাগাভাগি করে খাওয়া; সবকিছুতেই আমরা ছায়ার মতো জড়িয়ে থাকতাম। সকলের কাছে তৈমুর-আমি মানেই ছিলাম চিরকালের আদর্শ জুটি।

যতদিন গেছে, আমাদের সম্পর্কের শিকড় আরও গভীরে গেঁথে গেছে। প্রেম একটা অনুভূতি থেকে রূপান্তরিত হয়েছে জীবনের অপরিহার্য অংশে। আমরা একে অপরের অস্তিত্বের এমন অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছিলাম যে আলাদা থাকাটা কষ্টকর হয়ে পড়েছিল। তাই আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম। বিয়েতে কোনো জমকালো আয়োজন ছিল না, কিন্তু আকাশের রং সেদিন একটু বেশিই নীল ছিল। বাতাসে একটা মিষ্টি সুগন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছিল।

তারপর একদিন, আমাদের নির্ভার প্রেমের গল্পটা হঠাৎ করে ছিঁড়ে গেল একটা থাপ্পড়ে। বিয়ের ঠিক এক বছর পর, একেবারে সামান্য কারণে তৈমুর আমার গায়ে হাত তুলল। থাপ্পড়ের আওয়াজে আমার প্রিয় বিড়ালটা পর্যন্ত লাফিয়ে উঠেছিল। আমি ছিলাম নির্বাক। শরীরটা কাঁপছিল না, অথচ ভেতরে কোথাও একটা ফাটল ধরছিল। যেন একটা শক্ত কাঁচের দেয়াল চুরমার হয়ে গেছে। এ কি আমার সেই তৈমুর? যে মানুষটার চোখে আমি মায়া খুঁজে পেতাম, যার স্পর্শে সারা পৃথিবী কোমল হয়ে যেত, যে মাঝরাতে সোহাগ করে কপালে চুমু দিয়ে বলত, 'তুমি আমার পৃথিবী'। সে কীভাবে এমন করতে পারল? প্রশ্নটা আমার মনে হাজার বার করে বাজছিল।

আমি সেদিন যন্ত্রণায় কাঁদিনি, থাপ্পড়টা খুব একটা ব্যথা দেয়নি। আমি কেঁদেছিলাম চেনা মানুষকে হঠাৎ অচেনা হয়ে যেতে দেখে। মেঝেতে হাত-পা ছড়িয়ে সারারাত কেঁদেছি, মাথার ভেতর শুধু ঘুরছিল, ' কেন এই পরিবর্তন? কী এমন করেছি আমি?'

পরদিন তৈমুর ক্ষমা চেয়েছিল। নরম গলায়, মায়াভরা চোখে। ওর মুখটা আমার দুর্বলতা ছিল, একবার তাকালে সব অভিমান ভুলে যেতাম। বড্ড ভালোবাসতাম যে। তাই ওর ক্ষমার অভিনয়ে আমি নরম হয়ে গেলাম। ভাবলাম, হয়তো ওর খারাপ দিন ছিল। হয়তো কোনো চাপে ছিল। প্রেমের অন্ধত্ব এমনই, যেখানে কালো রঙটাও সাদা দেখায়। আমি নিজেকে বোঝালাম, এটা একটা দুর্ঘটনা। আর হবে না।

কয়েক সপ্তাহ পর আবারও একই দৃশ্যপট। এবার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ঠিক পরেই হঠাৎ করেই রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে উঠল, কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই গলা চেপে ধরল। সঙ্গে ঝরে পড়ল বৃষ্টির মতো কটু কথা, যেন শব্দ নয়, তীক্ষ্ণ বিষের তীর। প্রতিটি শব্দ আমার কানে না লেগে, গিয়েছিল ঠিক বুকে, চেপে বসেছিল শ্বাসের ওপর।

শরীরে তখন আমার একচিলতে কাপড় মাত্র। সেই অবস্থায় ওর মুখ থেকে ঝরে পড়া নোংরা গালিগুলো মনে গেঁথে রইল ট্রমার মতো। আমি কিছু বলার সাহস পেলাম না, শুধু স্তব্ধ, কাঁপা চোখে তাকিয়ে ছিলাম। যার চোখে একদিন ছিল উপচানো মায়া, আজ সে আমাকে এমন চোখে দেখছে, যেন আমি কিছুই না, এক পশলা ধুলোর চেয়েও হালকা। কুকুরের চেয়েও অধম।

আমি আবারও গলা ছেড়ে কাঁদলাম, পাগলের মতো কাঁদলাম। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে কেঁদে জ্বর বাঁধালাম।

আমি ছিলাম বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে। আদরে গড়ে ওঠা, সোনার খাঁচায় রাখা পাখি। বাবা একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। জীবনে অভাব কী, সেটা কল্পনাতেও আসেনি কখনো। কোনো কষ্ট ছুঁয়ে দেখেনি আমায়। এমনকি রাগ করে কেউ কখনো গায়ে হাত তোলার সাহসও করেনি। যদি অসুস্থ হতাম, বাবা নিজের অফিস বন্ধ করে পাশে বসে থাকতেন। জ্বর হলে মাথা ছুঁয়ে তার চোখ ভিজে যেত। আর এখন সেই আমি... বড্ড হাসি পাচ্ছে নিজের ভাগ্যের উপর। কী বিচিত্র জীবন! যে মেয়েকে পৃথিবীর সব সুখ দিতে চেয়েছিল বাবা-মা, সেই মেয়ে আজ স্বামীর হাতে মার খাচ্ছে।

শেষরাতে নিজেকে জড়ো করে বাবার বাড়ি চলে গেলাম। চোখ লাল, মুখ বিবর্ণ। আমাকে দেখে বাবা প্রথমে কিছু না বুঝলেও যখন কারণ বললাম, রেগেমেগে আগুন হয়ে উঠলেন।
'কি! তোর গায়ে হাত তুলেছে? আমার মেয়ের গায়ে হাত তুলেছে? ওই কুত্তার বাচ্চার একদিন কি আমার একদিন।'

বাবার চোখ রাগে ঝলসে যাচ্ছিল। হাত কাঁপছিল রাগে। মুখ দিয়ে গলগল করে বের হচ্ছিল ঝাঁঝালো গালাগাল। মা তখন কাছে এসে বাবাকে থামালেন, 'চুপ করো তো। দু'জন মানুষ একসঙ্গে থাকলে একটু-আধটু কথা-কাটাকাটি, ঠোকাঠুকি হবেই। সব সংসারেই তো হয়।'

আমি স্তব্ধ হয়ে তাকালাম মায়ের মুখের দিকে। যে মা আদরে, যত্নে, লাজুক চোখে আমাকে মানুষ করেছেন, তিনি আজ এতটা নিরাসক্ত কণ্ঠে শারিরীক নির্যাতনকে স্বাভাবিক বলছেন?

বাবা বললেন, 'সব ঘরে হওয়া আর আমার ঘরে হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। আমি অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করতে শিখিনি।'

মা একটু হাসলেন। বললেন, 'রাগ হলে পুরুষ মানুষ একটু-আধটু হাত তো তোলে-ই। তুমি কি তোলেনি কখনো?'

বাবা অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন। আমি চোখ বড় করে তাকালাম বাবার দিকে। তারপর মাকে বললাম, 'বাবা! বাবা তোমার গায়ে হাত তুলেছে?'

বাবা দাঁড়ালেন না, ধীর পায়ে চলে গেলেন বারান্দার দিকে।

মা বললেন, 'তুলেছে। বিয়ের পর পর তো খুব রাগী ছিল। সময়ের সাথে সাথে ঠিক হয়ে গেছে। মেয়ে হয়ে জন্মালে অনেক কিছু সহ্য করতে হয়।'

আমি তীব্র বিস্ময়ে কাঁপা কণ্ঠে বললাম,
'তুমি সহ্য করেছো, মানে আমাকেও করতে হবে?'

'এইটুকু কারণে সংসার ছেড়ে আসা যায় না। পুরুষ মানুষ সারাদিন বাইরে কাজ করে, কত চাপ, কত টেনশন নিয়ে বাড়ি ফেরে। ঘরে এসে যদি শান্তি না পায়, রাগ তো করবেই। কখনো কখনো না চাইলেও, হাত উঠে যা।'

'আমি কি শান্তি দিইনি? ওর শান্তির জন্য তো সবই করতাম আমি।'

'তুই হয়তো এমন কিছু বলেছিস, যেটা ওর ভালো লাগেনি। পুরুষ মানুষ সব পারে, কিন্তু নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।'

'কথা ভালো না লাগলেই কেউ কাউকে মারবে? তাহলে তো আমিও রাগে অনেককে মেরে ফেলতে পারতাম!'

'মেয়েদের আর ছেলেদের রাগ কি এক? মেয়েরা সবসময় ধৈর্যশীল, সহনশীল। এইটাই তো আমাদের শক্তি।'

'এই সহনশীলতা দিয়ে কী করব আমি, মা? এই ধৈর্য দিয়ে কী হবে যদি সেটা শুধু মার খাওয়ার অনুমতি হয়ে দাঁড়ায়?'

মা ধীরে ধীরে বললেন, 'বিয়ে মানেই কেবল ভালোবাসা না, মানিয়ে নেওয়ারও নাম। যতটা পারা যায় বোঝে চলতে হয়।'

আমি চিৎকার করে বললাম, 'মানে আমি মার খাবো, আর তুমিই বলবে এটা মানিয়ে নেওয়া?'

মা একটু অস্বস্তিতে বললেন, 'দেখ মা, তৈমুর ছেলে হিসেবে খারাপ না। ভালো পরিবারের ছেলে, চাকরি আছে, তোকে ভালোবাসেও। একটু রাগী হতে পারে, কিন্তু সেটা তো পুরুষ মানুষের স্বভাব।'

'যে ভালোবাসে সে গায়ে হাত তোলে কীভাবে?'

'রাগের মাথায় সব মানুষই কিছু না কিছু করে বসে। তুই নিজেও তো কখনো কখনো খুব রেগে যাস।'

'আমি রাগ করলে কি তৈমুরকে মারি? গালাগাল করি?'

'তুই তো আর পুরুষ মানুষ নোস। মেয়েদের রাগ আর ছেলেদের রাগ এক হয় না।'

'কেন হয় না? আমিও তো মানুষ, আমারও তো রাগ আছে। কিন্তু আমি তো কাউকে মারি না!'

মা একটু বিরক্ত হয়ে বললেন, 'তুই এতো বিশ্লেষণ করিস না। সংসার এমনই হয়।'

'এমনই মানে? ধরো, তুমি যদি বাবাকে মারতে, তাহলে কি বাবাও বলতেন সংসার এমনই? মানিয়ে চলি?'

মা একটু রেগে গিয়ে বললেন, 'আমি তোর বাবাকে মারবো কেন? কী বাজে কথা বলছিস!'

'ঠিক! তুমি বাবাকে মারবে না, কারণ তুমি জানো এটা ভুল। তাহলে তৈমুর কেন আমাকে মারবে?'

মা চুপ করে রইলেন কিছুক্ষণ। তারপর বললেন, 'তুই এখনো ছোট, সংসারের খুঁটিনাটি বুঝিস না। তৈমুর তোর স্বামী, তোর সাথে একটু রাগারাগি করতেই পারে।'

'একটু রাগারাগি আর মারপিট কি এক জিনিস?'

'এত তর্ক করিস না। আমিও সংসার করেছি। যখন বিয়ে করেছি, তখন অনেক কিছু সহ্য করেছি। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে গেছে। তোর বাবাও এখন আমার গায়ে হাত তোলে না।'

'বাবা এখন তোমার গায়ে হাত তোলে না! কিন্তু আগে তুলতো! তোমার কী তখন কষ্ট হতো না? বুক ফেটে আসতো না?'

মা একটু অস্বস্তিতে বললেন, 'ওসব পুরানো কথা তুলিস না এখন।'

'কেন তুলবো না? এই পুরানো কথা থেকেই তো আমার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হচ্ছে। তুমি সহ্য করেছো বলে আমাকেও সহ্য করতে হবে?'

আমি চুপ করে মায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলাম উত্তরের আশায়। মনে হচ্ছিল, আমি বুঝি অন্য একটা গ্রহে চলে এসেছি। এখানে ভুলটা মেয়েদেরই, আর সহ্য করাটাই প্রেম, সংসার, আর নারীত্বের সেরা গুণ। আমার চোখে জল আসছিল, কিন্তু কাঁদছিলাম না। কারণ এবার কষ্টের সাথে সাথে ভেতরে একরাশ রাগ জমছিল। নিজের জন্য, মা'র জন্য, সমস্ত নারীর জন্য, যাদের শিখিয়ে দেয়া হয়, 'পুরুষ মানুষ রেগে গেলে মারতেই পারে। সেটা মাফ করে দাও, সেটাই ভালোবাসা।' আমি বুঝতে পারলাম, এই সমস্যা শুধু আমার নয়। এই সমস্যা আমার মায়ের, আমার মায়ের মায়ের, এবং এমন হাজার হাজার নারীর যারা মনে করে পুরুষের হিংস্রতা সহ্য করাই নারীত্বের পরিচয়।

কিন্তু আমি সহ্য করব না। নিজের আত্মসম্মান খোয়াব না৷ মায়ের মতো 'সময়ের সাথে সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে'- এই মিথ্যার ছায়ায় জীবন কাটাব না।

কিন্তু আমার আত্মসম্মানও ছিল কাগজের তৈরি দুর্গের মতোই। একটু বৃষ্টিতেই ভেসে যাওয়ার মতো ভঙ্গুর। তৈমুর যখন আমার বাবার বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল, সরি বলল, আমার সংকল্প বরফের মতো গলে গেল। না চাইতেও নিজের অজান্তে সেই তথাকথিত আদর্শ স্ত্রী হয়ে উঠলাম। যাকে যতবার ভাঙা হোক, সে ঠিক জোড়া লাগিয়ে ফিরে যায়।

তারপর থেকে যতবারই সংসারে ঝড় উঠত, আমি ভাঙা মন নিয়ে বাবার বাড়ি যেতাম। এক বুক যন্ত্রণায়, অপমানের ভারে নুয়ে পড়া আমি যখন মায়ের সামনে দাঁড়াতাম, তিনি সেই একই পুরনো উপদেশের বাক্স খুলে বসতেন।

-'মেয়েরা সংসার করে, ভাঙে না।,
-'একটু সহ্য করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।,
-তোর বাবাও তো রাগ করত, আমি সহ্য করেছি।'

প্রতিটি বাক্য আমাকে আরো একবার ভেঙে দিত। মনে হতো, আমি ভিক্টিম হয়েও অপরাধী বনে গেছি। মায়ের চোখে আমি একজন ব্যর্থ নারী, যে সংসার রক্ষা করতে পারেনি। তার প্রতিটি বাক্য আমার বুকে এসে বিঁধত, ঠিক তৈমুরের আরেকটি থাপ্পড়ের মতো।

এই অসহায়, বোবা লড়াইয়ের মাঝেই একদিন আমার জীবনের একমাত্র আশ্রয়, আমার বাবা স্ট্রোক করে চিরতরে চলে গেলেন। হাসপাতালের বারান্দায় দৌড়াতে দৌড়াতে, ডাক্তারদের কাছে অনুরোধ করতে করতে হারিয়ে ফেললাম আমার একমাত্র সত্যিকারের রক্ষাকর্তাকে। যিনি কখনো আমাকে দোষ দেননি, যিনি আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তার চলে যাওয়ার পর আমার পুরো দুনিয়া টলে উঠল। বুকের ভেতরে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হলো। সব আশা, সব ভরসা একসাথে ধ্বসে পড়ল। তৈমুর সেই সময়টাতে অদ্ভুত রকমের শান্ত ছিল। দেড় মাসের মতো কোনো ঝগড়া হলো না। এর কারণ ছিল আমার নিরবতা, আমার শোক। এমন না যে ও বদলে গিয়েছিল বা আমার দুঃখ বুঝেছিল।

ঠিক দেড় মাস পর, একদিন, মানুষের কোলাহলে ভরা এক রাস্তায় ও হঠাৎ করে আমার গালে আবারও সজোরে থাপ্পড় মারল। কী কারণে, কী অপরাধে ঠিক মনে নেই। শুধু মনে আছে চারপাশের মানুষদের অবাক, কৌতূহলী, অবজ্ঞাময় দৃষ্টি। কারও মুখে মৃদু হাসি, কারও চোখে বিরক্তি। কেউ এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল না, 'কী হয়েছে এখানে?'

আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। সেখানেই, জনসমক্ষে চিৎকার করে কেঁদে উঠলাম। অঝোর কান্নায় বুক ভাসিয়ে দিলাম। আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারিনি। শুধু সেখান থেকে না...মা, তৈমুর, এই শহর, এই সংসার, এই অপমান সবকিছু ছেড়ে পালিয়ে গেলাম। চিরতরে। ব্যাংক থেকে তুলে নিলাম আমার নামে থাকা সব টাকা। সেই টাকা নিয়েই পাড়ি জমালাম ভারতে।

একটা অচেনা, মেঘলা শহরে শুরু করলাম নতুন জীবন। না, সেটাও খুব রঙিন ছিল না। প্রথম দিকে একটা ছোট্ট রুমে একা একা অনেক কেঁদেছি। হতাশা, অপরাধবোধ, একাকীত্ব সব মিলিয়ে অনেক কষ্টের দিন কেটেছে। কিন্তু স্বস্তির বিষয় হচ্ছে, সেই জীবনে ছিল না থাপ্পড়, গালি, অভিযোগ কিংবা বোঝানোর নামে অপমান।

নতুন শহরের প্রতিটি দিন কাটত তৈমুরকে ভোলার চেষ্টা করতে করতে। কিন্তু মানুষের মন বোধহয় এমনই যে, যাকে ভুলতে চাই, সেই আরও বেশি করে মনে পড়ে। সারাক্ষণ মনে পড়ত ভালোবাসার দিনগুলো, কপালে ওর চুমু, পিঠে হাত বুলিয়ে বলা, 'তুমি আমার পৃথিবী।' সন্ধ্যায় একা একা বসে থাকতে থাকতে ইচ্ছে করত, সব ভুলে ফিরে যাই। ক্ষমা করে দেই। ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরি। মনে হতো, হয়তো এবার সব ঠিক হয়ে যাবে। হয়তো ও বদলে গেছে। হয়তো আমি অতিরিক্ত সেনসিটিভ হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেই মনে পড়ে যেত সেই রাস্তার থাপ্পড়, সবার সামনে অপমান আর গালিগালাজ; নিজেকে শক্ত করে আটকে রাখতাম।

সমস্ত যোগাযোগের পথ বন্ধ করে দিয়েছিলাম, মুহূর্তের দুর্বলতাও যাতে আমাকে আরেকটা ভুলে না নিয়ে যায়। বাংলাদেশ নামটাই হয়ে উঠেছিল আমার কাছে ব্যথার আরেক নাম। ওই দেশের কোনো খবর, কোনো মুখ, কোনো স্মৃতি আর ফিরত না আমার কাছে। আমি শুধু জানতাম, সেখানে আমার একটি অতীত রয়ে গেছে। একটা দগদগে ক্ষত, যার সঙ্গে আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই।

আর এখন, আমি সেই অতীতকে পেছনে ফেলে, খুব ধীরে ধীরে, নিজের মতো করে একটা নতুন আমি গড়ার চেষ্টা করছি। যে আর কাউকে ভালোবাসার নামে সহ্য করবে না। যে আর চড়-গালি-পশুতা মেনে নেবে না ভালোবাসা বা সংসার টিকিয়ে রাখার অজুহাতে।

কিন্তু আমি জানতাম না, ফেলে আসা গল্পটা তখনও এক অজানা মোড়ে অপেক্ষা করছিল তীব্র আকুলতায়।

#বিরহ_বীণার_সুর (১)
#ইলমা_বেহরোজ


এই প্লটের উপর প্রচুর গল্প-উপন্যাস, মুভি-সিরিজ হয়েছে। তবুও ইচ্ছে করল, নিজস্ব ছন্দে উপস্থাপনা করার। দেখা যাক, ভিন্নতা আনতে পারে কি না।
তিন পর্বের হবে৷ আগামীকাল পরবর্তী পর্ব৷

"চলো, আমরা বিয়ে করে ফেলি অভ্র ভাই। আজকাল আমার পে'টে গু'ড়গুড় শব্দ হয়। ছোটো ছোটো বাচ্চাগুলো পে'ট থেকে বের হতে চাইছে, শ...
15/07/2025

"চলো, আমরা বিয়ে করে ফেলি অভ্র ভাই। আজকাল আমার পে'টে গু'ড়গুড় শব্দ হয়। ছোটো ছোটো বাচ্চাগুলো পে'ট থেকে বের হতে চাইছে, শুধু তুমি বিয়ে করছ না দেখে তারা বাইরে আসতে পারছে না। তাড়াতাড়ি বাবা ডাক শোনার জন্য হলেও তোমার এখনই বিয়ে করা উচিত।"

নিধির কথা শুনে জোরেশোরে একটা বি'ষ'ম খায় অভ্র। গোধূলী আলোয় ছাদে উঠেছিলো সে ঠান্ডা বাতাস খেতে। অথচ ল'জ্জায় তার দুই কান দিয়ে ধোঁয়া বের হওয়ার উপক্রম এখন। আড়চোখে পাশের ছাদের দিকে তাকালো অভ্র। নিধি চোখ পিটপিট করে হাসি হাসি মুখ নিয়ে তাকিয়ে তার দিকে। ভাবখানা এমন, যেন এখনই অভ্র তাকে বিয়ে করে ফেললে দুই চারটা বাচ্চা জন্ম দিতে পারলেই সে বাঁচে। অভ্র তাড়াহুড়ো করে ছাদের দরজার দিকে পা বাড়াতে বাড়াতে কন্ঠ খানিকটা উঁচু করে বলল,

"সন্ধ্যায় আমি পড়াতে আসবো, পড়াশোনা শেষ করে রাখিস। নাহলে কপালে দুঃখ আছে তোর।"

"দুঃখটা তো ঠোঁটেও দিতে পারো অভ্র ভাই, চু'মু টু'মু খেয়ে আদর করলে নাকি মানুষ ব্যথা পায়, শাহিনা বলেছে আমাকে।"

অভ্র থমকে যায় আচমকা। ঘাড় ঘুরিয়ে নিধির দিকে তাকিয়ে বাঁকা চোখে প্রশ্ন করে,

"তোর বান্ধবী কিভাবে জানলো?"

নিধি খিলখিলিয়ে হেসে ওঠে। জামার দুইদিকের কলার উঁচু করে খানিকটা ভাব নেওয়ার ভঙ্গি করে বলে,

"আমার ইন্টেলিজেন্সি পাওয়ার দিয়ে। শাহিনার আপুর নতুন নতুন বিয়ে হয়েছে না? ওর আপু ওকে বলেছে আদর করলে একটু একটু ব্য'থা পায় নাকি মানুষ!"

অভ্র চোখ বড়ো বড়ো করে তাকায় নিধির দিকে। অতঃপর কাঠকাঠ কণ্ঠে বলে,

"শাহিনার সাথে তোর যোগাযোগ বন্ধ আজ থেকে। এসব অল্প বয়সে পাকা মেয়েদের সাথে যেন আর মিশতে না দেখি।"

নিধি ঠোঁট উল্টে তাকিয়ে রইলো অভ্রর চলে যাওয়ার দিকে। অতঃপর দাঁত কিড়মিড় করতে করতে ছাদের ফুল গাছগুলোতে পানি দেয়। হঠাৎ একটা সাদা গোলাপের উপর উড়ে এসে বসে একটা রঙিন প্রজাপতি। নিধি পানির মগ ফেলে দুইহাতে সাবধানে প্রজাপতি ধরার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রজাপতিটাকে কোনো মতে ধরতে সক্ষম হচ্ছে না। যতবার ধরতে যায়, ফুড়ুৎ করে উড়ে অন্য একটা ফুলে চলে। এদিকে প্রজাপতি ধরতে গিয়ে কাদা পানিতে মাখামাখি তার পরণের গোলাপী জামাটা। অবশেষে যেই না প্রজাপতির ডানাটা ধরতে যাবে, অমনি পিছন থেকে রুকসার বেগম হালকা ধমকের সুরে বলে উঠেন,

"সেই কখন থেকে ছাদে উঠেছিস, সন্ধ্যা হয়ে গেল এখনও কী করছিস?"

নিধি এবার রেগেমেগে তাকায় মায়ের দিকে। অতঃপর পানি কাদাতে মাখোমাখো ছাদের মেঝেতে হাত পা ছড়িয়ে বসে পড়ে বিলাপ করা সুরে বলে ওঠে,

"আমার প্রজাপতিটা পা'লা'লো তোমার জন্য। আমি জানিনা আমাকে প্রজাপতি এনে দিতে হবে অনেকগুলো।"

রুকসার বেগম তাজ্জব বনে যান নিধির এমন কর্মকাণ্ডে। কিন্তু তাকে অবাক হওয়ার সুযোগটুকুও না দিয়ে জামা কাপড়ের বেহাল দশা নিয়ে আচমকা উঠে দাঁড়ায় নিধি। অতঃপর হনহনিয়ে নিচে যেতে যেতে বলে ওঠে,

"তুমি থাকো, আমি ভাইয়াকে বলবো অনেকগুলো প্রজাপতি এনে দেওয়ার কথা। সব তোমার দো'ষ, তোমার জন্য আমার জামা কাপড় এমন ন'ষ্ট হলো।"

নিধির পা'গ'লা'মি দেখে মাথা চা'পড়ে সাথে সাথে সিড়ি বেয়ে নীচে নেমে আসেন তিনি। নিধি ততক্ষণে নিয়াজের ঘরে প্রজাপতির জন্য বায়না ধরেছে। নিয়াজ কোনোমতে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, প্রজাপতি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়না। কিন্তু নিধি শোনার মতো মানুষ হলে তো? ভাইয়ের ঘর থেকে বের হয়ে ধপ ধপ করে পা ফেলে নিজের ঘরের দিকে গেল সে। যাওয়ার সময় রে'গে একাকার হয়ে আড়চোখে একবার তাকায় রুকসার বেগমের দিকে।

সন্ধ্যা হতে না হতেই দরজায় কলিং বেল পড়লো। নিধি দরজার কাছেই পায়চারি করছিল। কিন্তু কলিং বেলের শব্দ শুনে ভোঁ দৌঁড়। এক দৌড়ে ঘরে ঢুকে একবারে কাঁথায় নীচে। রুকসার বেগম ভ্রু কুঁচকে সেদিকে একপলক তাকিয়ে দরজা খুলে দিলেন। সাদামাটা পোশাকে দাঁড়িয়ে থাকা অভ্র তাকে দেখে সরল হাসলো। অতঃপর বাড়ির মধ্যে ঢুকে সোজা চলে গেল নিধির ঘরে। চারিদিকের দরজা জানালা বন্ধ হলেও অন্ধকার ঘরে সুইচবোর্ড খুঁজতে খুব একটা সমস্যা হলো না অভ্রর। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ঘরের আলো জ্বালিয়ে দেয়ার সাথে সাথে খুলে দিলো জানালা দরজা। হু হু করে উত্তরে বাতাস ঘরে ঢুকতেই কাঁথার মধ্যে দিয়ে মাথা বের করে উঁকি দিয়ে নিধি বলে উঠলো,

"উফ্! আবার তুমি জানালাগুলো সব খুলে দিয়েছ অভ্র ভাই।"

"জানালা দরজা বন্ধ করে অ'ল'স হয়ে যাচ্ছিস দিন দিন, ঘরে মধ্যে ব্যা'ক'টে'রি'য়া জন্ম নিচ্ছে।"

অভ্রর গাম্ভীর্যভরা কণ্ঠ শুনে মুখ বাঁকালো নিধি। বললো,

"ব্যা'ক'টেরি'য়াদের পা'ল'ছি আমি। যেখানেই দেখি সবাই শুধু ওদের অ'ব'হেলা করে। প্রকৃতিতে সবচেয়ে অব'হে'লি'ত প্রাণী তারা, ঠিক আমার মতো। ওদের ক'ষ্ট তাই আমি বুঝব না তো কে বুঝবে? সেজন্য এখন থেকে ওরা আমার সাথে থাকবে।"

অভ্র বিশেষ পাত্তা দিলো না নিধির কথায়। টেবিল থেকে বইগুলো নিয়ে চেয়ার টেনে বসলো বেডের কাছে। নিধি কাঁথা থেকে মাথা বের করে উঁকি দিয়ে কণ্ঠে খানিকটা ঝিম ধরা ভাব করে বলল,

"আজ আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে। আজকে পড়তে পারবো না আমি একদম, তুমি চলে যাও।"

"ঘরে ব্যা'ক'টেরিয়া চাষ করার সাইড এফেক্ট এগুলো, উঠে বস।"

"পড়তে পারব না আমি আজ, অভ্র ভাই। ছেড়ে দাও প্লীজ।"

নিধির করুণ কণ্ঠে বিপরীতে কন্ঠ চওড়া করে অভ্র বলে, "তুই পড়বি না, তোর বাপ পড়বে।"

"আব্বু এখনো আসেনি। তুমি বরং এখন ঘরে যাও, আব্বু এলে আমি ডেকে দেব।"

অভ্র দাঁত কিড়মিড় করতে করতে কাঁথা ধরে একটানে খুলে ফেলে। নিধির ঢিলেঢালা পাজামা এলোমেলো হয়ে উঠে আছে হাঁটুর অনেকটা উপরে। তার ফর্সা, মসৃণ উরুতে চোখ পড়তেই সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নেয় অভ্র। বলে,

"জামাকাপড় ঠিকঠাক করে অংক করা শুরু কর।"

অনিচ্ছা সত্ত্বেও বই খাতার উপর ঝুঁকলো নিধি। একটা অংক তিনবার কা'টা'কা'টি করে চতুর্থবার সেটাতে কলম চালাতে চালাতে গালে হাত দিয়ে বলে উঠলো,

"জীবনটা আমার অংকের মতো হয়ে যাচ্ছে পুরো, এতো চিপেও র'স বের হয়না। একেবারে র'স'কষহীন।"

"বড়ো আব্বুকে বলিস এক দিস্তা করে খাতা কিনে আনতে প্রতি সপ্তাহে, একদিনেই তো তোর একটা অংকের খাতা শেষ হয়ে যায় অংক কাটতে কাটতে।"

নিধি খাতাটা পাশে রেখে কলম উঁচিয়ে খানিকটা ঝগ'ড়াটে ভঙ্গিতে বলে ওঠে,

"করছি তো নাকি অংক? কানের কাছে এত বকবক করো কেন? কানের উপকারী সব পো'কাগুলো বের হয়ে যাচ্ছে আমার।"

অভ্র দুইহাত বুকে ভাঁজ করে ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করে,

"তোর কানে কোন উপকারী পো'কা আছে আমাকে একটু বল তো। স্কারাবেডি আছে?"

"হ্যাঁ আছে তো।"

অভ্র ঠোঁট টিপে হাসলো। বিড়বিড় করে বললো,

"এই হলো পড়াশোনা না করার ফল। এখনই যদি বলতাম গো'ব'রের পো'কা, বা'ঘি'নীর মতো ঝাঁপিয়ে পড়তো।"

অতঃপর খানিকটা কেশে গলা পরিষ্কার করে বলল,

"ভাবছি পড়াশোনা না জানা একটা মেয়েকে বিয়ে করব, কেমন হয় বলতো? সায়েন্স বা ইংলিশে গা'লি দিলেও ভালোবেসে সুনাম করছি ভাববে।"

"বইখাতাগুলো তাহলে কেজি দরে বিক্রি করে দিয়ে আসি, অভ্র ভাই?"

"তুই বইখাতা কেন বিক্রি করবি?"

অভ্র ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞাসা করলে সরল কণ্ঠে নিধি বলে,

"ওমা! এখনই না বললে পড়াশোনা না জানা বউ লাগবে তোমার। আজ থেকে আমার মেমোরি লস হয়েছে, সব পড়াশোনা ভুলে গেছি আমি। চলো বিয়েটা করে ফেলি।"

নিধির কথা শুনে হাঁটুতে হাতের ভর দিয়ে কপাল চা'প'ড়ালো অভ্র। সাথে সাথে নিধি খানিকটা এগিয়ে এলো। কাছাকাছি এসে ভীষণ জ্ঞানী একটা ভাব নিয়ে বলে উঠলো,

"আরে আরে, বিয়ের খরচের চিন্তা করতে হবে না তোমাকে। বইগুলো বিক্রি করে যা টাকা হবে, সেটা দিয়ে বিয়ে করে আমরা ঝালমুড়ি খেতে খেতে বাড়িতে চলে আসবো। দেখেছ! আমার মাথায় কতো বুদ্ধি।"

অভ্র আজ তাড়াতাড়ি ফিরে যাচ্ছে দেখে রুকসার বেগম রান্নাঘর থেকে কণ্ঠে উঁচু করে জিজ্ঞাসা করলেন,

"কিরে! তোর শরীর টরীর খা'রা'প করলো নাকি? এতো তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাচ্ছিস আজ?"

"তোমার বাঁ'দ'রনি আমাকে পড়াতে দিলে তো! ওর বকবক শুনতে শুনতে মাথাটা ধরেছে আমার।"

"সে আর নতুন কি? কোনো মাস্টার পনেরো দিনের বেশি টেকে না। শেষ পর্যন্ত তুই যা এই তিনমাস টিকে গেলি। তোর কি বেশি অসুবিধা হচ্ছে অভ্র? তোর বড় আব্বুকে কী অন্য একটা মাস্টার দেখতে বলবো?"

"না না বড়মা, তার দরকার নেই। আমার সমস্যা হচ্ছে না। বাইরের মাস্টার রাখার দরকার নেই আর।"

সন্ধ্যার পর থেকে বারবার বসার ঘরের আশেপাশে ঘুরঘুর করছে নিধি। অফিস থেকে বাড়ি ফিরেছেন কাওসার সাহেব। মেয়েকে দেখে কাছে ডাকেন। পাশে বসিয়ে বলেন,

"আমার আম্মুটা কেমন আছে?"

নিধি ঝরঝর করে কেঁদে দেয় এটুকু কথায়। নাকের পানি, চোখের পানি এক করে বলে,

"আম্মু আমাকে প্রজাপতি ধরতে দেয়নি। তুমি কাল আমার জন্য এক কৌটো প্রজাপতি এনে দেবে।"

"আচ্ছা ঠিক আছে আম্মু, আনবো। কিন্তু প্রজাপতি দিয়ে তুমি কী করবে?"

সেসময় বসার ঘরে প্রবেশ করতে করতে রুকসার বেগম বলেন,

"তুমি আর ওর ছেলেমানুষীতে সায় দিও না তো আর। দিন দিন বা'দ'র হচ্ছে তোমাদের লায় পেয়ে।"

"দেখেছ আব্বু, আম্মু কেমন আমাকে বাঁ'দ'র বলল।আমি কি এমনি এমনি প্রজাপতি চাইছি নাকি?"

"তোর কোন মহান কাজের জন্য চাইছিস বল।"

নিয়াজের কণ্ঠে পেয়ে খানিকটা আমতা আমতা করতে করতে নিধি বলে,

"গায়ে প্রজাপতি বসলে বিয়ে হয়ে যায়। আর যদি অনেকগুলো একসাথে বসে তাহলে নিশ্চই তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যাবে? আমি বিয়ে করে ছোট ছোট বাচ্চা কোলে তোমাদের সাথে দেখা করতে আসবো। কী কিউট না?"

কাওসার সাহেব কেশে ওঠেন আচমকা নিধির কথা শুনে। চোখ এদিক সেদিক ঘুরিয়ে ল'জ্জিত ভঙ্গিতে রুকসারের দিকে তাকিয়ে বলেন,

"আমি ফ্রেশ হয়ে আসি। টেবিলে খাবার বাড়ো।"

রুকসার বেগমও চলে গেলেন তাড়াহুড়ো করে। নিয়াজ মাথা চাপড়ে বসলো নিধির পাশে। সে ফ্যালফ্যাল করে এখনও বাবা মায়ের এভাবে উঠে চলে যাওয়ার কারণ খুঁজছে। তখনই নিয়াজ তার মাথায় আলতো করে থা'প্প'ড় মে'রে নিচু কন্ঠে বলে ওঠে,

"আব্বু, আম্মুর সামনে এভাবে কেউ এসব কথা বলে, পা'গ'ল!"

"আমার বিয়ে নিয়ে আমি কথা না বললে কী পাশের বাড়ির ছেলে কথা বলবে নাকি? আব্বু আম্মুও তো বিয়ে করেছে, তবে তো আমার মত কিউট একটা বাচ্চা এসেছে। বিয়ে না করলে বাচ্চা আসবে নাকি?"

চলবে.....

আপনারা যারা গল্প পছন্দ করে তারা আমাদের গ্রুপে জয়েন হয়ে গল্প পড়তে পারেন, নীল লেখায় চাপ দিয়ে

জয়েন করে রাখুন 👉 মিষ্টি ভালোবাসার রোমান্টিক গল্প 💙

#জামাই_অন_ট্রায়াল
ফিজা_সিদ্দিকী
পর্ব_১

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Argentina football fan club posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Argentina football fan club:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share