Ratul Hassan Official

18/07/2025

📌জাবি ডি- কেমিস্ট্রি হ্যাকস
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের D ইউনিটে বায়োলজির পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—রসায়ন।
যেহেতু মোট ৮০টি MCQ’র মধ্যে রসায়ন থেকে প্রায় ২৪টি প্রশ্ন আসে, তাই এটি ভালোভাবে কভার করতে না পারলে মেরিট লিস্টে জায়গা পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। এই গাইডটি মূলত সেকেন্ড টাইমারদের জন্য, যাদের কাছে সময়টা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এক্সিকিউশনটা আরও গুরুত্বপূর্ণ।

📘 বই – তোমার আসল অস্ত্র
✅ হাজারী স্যার এর বই (১ম ও ২য় পত্র) — একদম মেইন রিসোর্স।
✅ অনুশীলনী এবং প্রশ্নব্যাংক— প্রশ্ন কাঠামো বুঝতে।
✅ গুহ/লিংকন স্যার এর এক্সট্রা ইনফো— জ্ঞান আরও গভীর করতে।
✅ গুরুত্বপূর্ণ অংশ চিহ্নিত করা। সেগুলো রিভিশনে রাখা।

🎯 Step-by-Step প্রস্তুতির পথনির্দেশ

🔸১. অধ্যায়ভিত্তিক গভীরভাবে বোঝা
রসায়ন এমন একটি বিষয়, যেখানে শুধু মুখস্থ করে কিছুই হবে না।
প্রতিটি অধ্যায় আগে বুঝে নিতে হবে—Conceptual Clarity is everything! যে যে জায়গায় কন্সেপ্ট লাগে সে সে জায়গা গুলো বুঝো। জৈব রসায়নের মত চ্যাপ্টারে একবার ম্যাথের মত কনসেপ্ট, যুক্তি এপ্লাই করলে দেখবা কর সহজ।

✅ প্রতিটি অধ্যায় পড়ার সময় লক্ষ্য করো:
কোনজায়গা টা বুঝতে হবে, কোনজায়গাটা মনে রাখতে হবে আর কোনটা বাদ দিতে হবে।

📍 উদাহরণ:
"মৌলের পর্যায়বৃত্ত ধর্ম" পড়ার সময় বিভিন্ন ব্লকের বৈশিষ্ট্য, রাসায়নিক ধর্ম পিরিয়ডিক টেবিলের কোন মৌলের ক্ষেত্রে কম, কেন কম, ব্যতিক্রম গুলো কেন ব্যতিক্রম, প্যারা, ডায়াচৌম্বক এগুলো তোমার বুঝতে হবে। কিন্তু কোন ব্লকে কোন কোন মৌল, কতটি মৌল, নিষ্ক্রিয় গ্যাসের বৈশিষ্ট্য এগুলো মুখস্থ করতে হবে(নরমালি/ট্রিক্স দিয়ে) আবার বিভিন্ন ব্লকের রাসায়নিক ধর্মের সব ব্যাখ্যা কিন্তু তোমার পড়া লাগতেছে না তো এগুলো বাদ। এভাবে বুঝে পড়তে হবে। যার কারনে তুমি ক্লাস করতে পারো/নিজের ব্যাসিক ভালো থাকলে বই দাগিয়ে পড়তে পারো।

🔸২. প্রশ্নব্যাংক বিশ্লেষণ
📘 জাবি প্রশ্ন সাধারণত একটু ঘুরিয়ে, কনসেপ্ট ভিত্তিক হয়।
🧠প্রশ্নের ধরন বুঝার জন্য তোমার আগে প্রশ্নব্যাংক দেখতে হবে। প্রশ্নব্যাংক থেকে ধারণা নিতে হবে কোনটুকু ইম্পর্টেন্ট।

✅ যেমন:
"গুণগত রসায়ন" এর প্রশ্নব্যাংক এনালাইসিস করলে দেখতে পারবা পরমাণুর কণিকা সমূহ এবং এদের মান(ইলেক্ট্রন প্রোটন নিউট্রন এর) থেকে প্রশ্ন আসসে প্রিভিয়ার্স ইয়ারে৷ তো বই পড়ার সময় এই অংশটুকু থেকে তোমার মানগুলো(চার্জ, আকার, ভর) এগুলো ভালোভাবে পড়ে নিতে হবে। এরকম ভাবে এনালাইসিস করে পড়তে হবে।

📍 উপায়:
প্রতি অধ্যায় পড়ার আগে একবার প্রশ্নব্যাংক দেখো।
টপিক অনুযায়ী কোন অংশে প্রশ্ন বেশি এসেছে দেখে পাশে স্টার দাও। ধারনা নাও। তারপর মেইন বই পড়। পড়ার পর আবার এসে প্রশ্নব্যাংকে সলভ না দেখে সলভ করার চেষ্টা কর।

🔸 ৩. এক্সট্রা রাইটারের ইনফো:
📘জাবি ডি তে বায়োলজি এক্সট্রা রাইটারের ইনফো সেরকম না লাগলেও দেখা যায় কেমিস্ট্রিতে অন্যান্য রাইটারের বই থেকে প্রশ্ন আসতেছে।
🧠বিশেষ করে ইনফরমেটিভ যে ইনফো গুলো আছে(যেমন: pH এর মান, প্রভাবক ইত্যাদি) এগুলো থেকে বেশী প্রশ্ন আসে।

📍 উপায়:
➡ এক্সট্রা রাইটারের বইয়ের থেকে আমি বিভিন্ন মেডিকেল কোচিং এর বইয়ে এড করা তথ্য পড়াটাকে বেশী প্রিফার করি। বিশেষ করে রেটিনার বইয়ে অনেক ভালোভাবে এড করা আছে। যেগুলো মেইন রাইটারের পাশাপাশি পড়ে ফেলতে বেশী অসুবিধা হয় না। এক্সট্রা রাইটারের বই থেকে পড়তে গেলে অনেক এক্সট্রা ইনফোর মাঝে কোনটা আসলে ইম্পর্টেন্ট সেটা বুঝতে অসুবিধা হতে পারে। তাই কোচিং এর বই পড়া উচিত এগুলোর জন্য।

🔸 ৪. অনুশীলনী সলভ এবং প্রাক্টিস
📘মেডিকেলের মতো জাবি ডি তে খুব বেশী প্রশ্ন না আসলেও হাজারী স্যার এবং কবির স্যারের বইয়ের অনুশীলনী পড়া মাস্ট। প্রশ্ন আসে অনেকটাই। পাশাপাশি চ্যাপ্টার পড়ার পর প্রাক্টিস করার জন্য ভালো অপশন এগুলো।

📘শুধু বই পড়ার মাধ্যমে তোমার প্রিপারেশন সম্পূর্ণ হবে না। ভর্তি পরীক্ষায় এমসিকিউ আসবে। তো তুমি যেই অংশটুকু পড়লে সেটা থেকে কীরকম প্রশ্ন হতে পারে সেটা জানা জরুরী। তাই পড়ার পাশাপাশি প্রচুর প্রশ্ন সলভ করতে হবে। প্রাক্টিস করার জন্য তোমরা 📕রয়েল/মেডিকো লেটস প্রাক্টিস/এসপেক্ট কেমিস্ট্রি নিতে পারো।

🔄 ৫. মিনি রিভিশন + কঠিন প্রশ্ন রিভিউ
🌀 মানুষের ব্রেইনে একবার পড়লে সম্পূর্ণ মনে রাখার ক্ষমতা নেই। তাই বারবার রিভিশন করতে হবে। বিশেষ করে মুখস্থ অংশটুকু। কোনো অংশ/প্রশ্ন খুব বেশী প্যারা দিলে আলাদা খাতায় লিখে ফেলবা। প্রথম কয়েকদিন বারবার ফাকা সময়ে এগুলো একবার দেখে নিলে তারপর আর সমস্যা হবে না।

📍 Self-Test করো:
নিজে নিজেই ২০–২৫ প্রশ্নের একটি সেট তৈরি করে নিজেকে পরীক্ষা করো/কোথাও যদি ভর্তি থাকো তো সেখানে বেশী বেশী এক্সাম দাও। তবে খেয়াল রাখবে প্রশ্ন গুলো মানসম্মত কী না।

📌 Bonus Tips:
✅প্রথমবার প্রশ্নব্যাংক এনালাইসিস করে পড়ার সময় বইয়ে টপিকের পাশে লিখে রাখবা এটা কতটুকু ইম্পর্টেন্ট, কীরকম প্রশ্ন আসে, কীভাবে পড়তে হবে এরকম। এতে করে রিভিশনের সময় টা কমে আসবে এবং অনেক গুছানো হবে।
✅ রিভিশন কার্ড তৈরি করো –
ছোট ছোট টপিক বা ইনফরমেটিভ তথ্য নিয়ে index card বানাও।
বাসে, রাস্তায়, ঘুমানোর আগে/ খাওয়ার সময় এগুলো রিভিউ দাও।
✅ সবকিছু মুখস্থ করতে যাবা না। ব্রেইনে যত কম প্রেসার ফেলা যায়৷ তো বিভিন্ন ট্রিক্স দিয়ে, ছন্দ দিয়ে, ছক বানিয়ে পড়ার চেষ্টা করবা।
✅গোপন তথ্য: বোর্ড প্রশ্ন গুলো ছেড়ো না। অনুশীলনী পড়ার পিছনে মেইন উদ্দেশ্যই বোর্ড প্রশ্ন। এগুলো পড়ে ফেলবা।

⭐কিছু কথা: জাবি ডি তে সংখ্যাভিত্তিক প্রশ্ন তুলনামূলক বেশী আসে। যেমন: গলনাংক স্ফুটনাঙ্ক এর মান আসে। যেগুলো মনে রাখা অনেক টাফ। সবার পক্ষে এতো এতো সম্ভব হবে না। তো এরকম প্রশ্ন আসলে স্কিপ করার মানসিকতা নিয়েই যাবা। চান্স পাওয়ার জন্য ৮০ তে ৮০ পেতে হবে না। ৬৫-৭০ এর চান্স হবে। তাই সব প্রশ্ন /সব কিছুর পিছনে ছুটবা না। কিছু কিছু স্কিপ করবা। যেগুলো পড়ার থেকে ওই সময়ে আরো অন্য কয়েকটা সমজ টপিক সহজে পড়ে ফেলতে পারো।

🔥 সংক্ষেপে প্রস্তুতি রোডম্যাপ:
📘 Conceptual Understanding → ইনফরমেটিভ অংশ সহজে মনে/মুখস্থ রাখা →প্রশ্নব্যাংক বিশ্লেষণ → অতিরিক্ত তথ্য সংযোজন → অনুশীলনী এবং প্রশ্নসলভ → রিভিশন + সেলফ টেস্ট

✅ এই প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হলে, ইনশাআল্লাহ D ইউনিটের রসায়ন তোমার জন্য পয়েন্ট তুলতে সবচেয়ে সহজ সাবজেক্ট হয়ে উঠবে।

❤️ কিছু শেষ কথা:
> রসায়ন যদি ভয় লাগে—তবে ভয়টাই জিতবে।
আর তুমি যদি স্ট্র্যাটেজিক পড়ে কনসেপ্টগুলো আত্মস্থ করো—তাহলে তুমি জিতবে ইনশাআল্লাহ।

📢 এই গাইডটি যদি তোমার উপকারে আসে, নিচে জানাও।
আর জাবির রসায়ন প্রস্তুতি নিয়ে তোমার কোনো প্রশ্ন থাকলে লিখে দাও—আমি উত্তর দিবো ইনশাআল্লাহ।
সবাইকে দোয়া ও শুভকামনা — মেরিট লিস্টে তোমার নামটি থাকুক সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গায়! 🌟

Copy post

04/06/2025