05/09/2025
বাচ্চারা জেদি হওয়া আসলে তাদের মানসিক বিকাশের স্বাভাবিক একটি অংশ। তবে কিছু বিশেষ কারণে শিশুরা বেশি জেদি হয়ে যেতে পারে। প্রধান কারণগুলো হলোঃ
✅ বাচ্চাদের জেদি হওয়ার কারণ
1. স্বাধীনতা প্রকাশের চেষ্টা – শিশু বড় হতে হতে নিজের মত প্রকাশ করতে চায়। সে যা চায়, তা না পেলে জেদ করে।
2. মনোযোগ পাওয়ার চেষ্টা – অনেক সময় বাচ্চারা চায় বাবা-মা শুধু তার দিকে তাকিয়ে থাকুক। তাই ইচ্ছে করে জেদ করে।
3. অতিরিক্ত আদর বা শাসন – কখনও বেশি শাসন, আবার কখনও বেশি ছাড় দিলে শিশুর স্বভাবের ভারসাম্য নষ্ট হয়, ফলে সে জেদি হয়ে যায়।
4. নিজের প্রয়োজন প্রকাশে অক্ষমতা – ছোট শিশুরা সঠিকভাবে বুঝিয়ে বলতে পারে না। ফলে না পাওয়ার হতাশা জেদে রূপ নেয়।
5. নিয়মের অসঙ্গতি – কখনও মা-বাবা "হ্যাঁ" বলেন, কখনও "না" বলেন। এতে শিশু বিভ্রান্ত হয় ও জেদ বাড়ে।
6. পরিবারের পরিবেশ – পরিবারে ঝগড়া, চাপ, বা মানসিক অশান্তি থাকলে শিশুর মানসিকতায় প্রভাব পড়ে এবং সে জেদি হয়।
7. অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম – মোবাইল/টিভিতে বেশি সময় কাটালে শিশু সহজেই বিরক্ত ও জেদি হয়ে যায়।
8. অনুকরণ প্রবণতা – শিশুরা বড়দের আচরণ অনুকরণ করে। যদি পরিবারে কেউ রাগী বা জেদি হয়, শিশুও তা শিখে নেয়।
বাচ্চাদের জেদ কমানো আসলে ধৈর্য, ভালোবাসা আর সঠিক কৌশলের বিষয় 😊। নিচে কিছু কার্যকর উপায় দিলাম—
✅ বাচ্চাদের জেদ কমানোর উপায়
1. শান্ত থাকুন – বাচ্চা জেদ করলে অভিভাবক রাগ করলে বা চিৎকার করলে সমস্যা বাড়ে। শান্তভাবে সামলান।
2. মনোযোগ ঘুরিয়ে দিন – জেদ করলে তার মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে দিন, যেমন খেলনা, গান বা গল্প শোনানো।
3. বিকল্প দিন – সরাসরি "না" না বলে তাকে বিকল্প দিন। যেমন: “এখন আইসক্রিম নয়, তুমি চাইলে ফল খেতে পারো।”
4. ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নিতে দিন – যেমন: কোন জামা পরবে বা কোন খেলনা নেবে, এতে সে স্বাধীনতা অনুভব করে এবং জেদ কমে।
5. সময় দিন ও শুনুন – অনেক সময় বাচ্চা শুধু শোনাতে চায়। তাকে মনোযোগ দিয়ে শোনালে জেদ কমে।
6. নিয়মে ধারাবাহিকতা রাখুন – কখনও অনুমতি দেন আবার কখনও না দেন—এতে বাচ্চা বিভ্রান্ত হয়। নিয়ম সবসময় একই রাখুন।
7. ভালো আচরণে প্রশংসা করুন – যখন সে ভালোভাবে কিছু মানে, তখন তাকে প্রশংসা করুন। এতে সে বুঝবে ভালো আচরণেই লাভ বেশি।
8. বেশি শাসন নয়, ভালোবাসা দিন – অতিরিক্ত শাসনে বাচ্চারা জেদি হয়ে যায়। নরমভাবে বোঝালে বেশি কার্যকর হয়।
9. উদাহরণ তৈরি করুন – বাবা-মা বা বড়রা যদি শান্তভাবে সমস্যা সমাধান করেন, বাচ্চাও শিখবে।
10. স্ক্রিন টাইম সীমিত করুন – মোবাইল/টিভি কমিয়ে বাইরে খেলাধুলা বা বই পড়ায় অভ্যস্ত করুন।