21/06/2025
ভিসার নামে প্রতারণা করে কেড়ে নিয়েছে আমার ভাইয়ের প্রাণ!
প্রতিবেদন: পটিয়া টিভি
চট্টগ্রাম, ২১ জুন:
ইসলামি লেবাস আর মুখে মিষ্টি ভাষার আড়ালে এক ভয়ংকর প্রতারক বছরের পর বছর ধরে সাধারণ মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে চালিয়ে যাচ্ছে ভয়াল প্রতারণা। চট্টগ্রামের আনোয়ারার রেযাউল মুস্তফা (মনির)—নিজেকে একজন ধার্মিক, সৎ ও “বিশ্বস্ত” ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরে, অথচ বাস্তবে তিনি এক হায়েনার মতো মানুষের স্বপ্ন চুষে খেয়ে ফেলে যাচ্ছেন।
সুখের স্বপ্নে সৌদিআরব যাত্রা,
মা-বাবার মুখে হাসি ফোটানোর প্রত্যাশা।
কাঁধে ছিল পরিবারের আশা-ভরসা,
নিজের ভাগ্য বদলাতে পাড়ি জমিয়েছিল সানি—
আনিসুর রহমান সানি।
কিন্তু
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস,
বাটপারের ধোঁকায় ভেঙে গেল সব আশ্বাস।
শেষ পরিণতি—একটি নিথর দেহ,
ফিরে এলো দেশে কাফনের চাদরে মোড়া সানির মৃতদেহ।
না-পারল স্বপ্ন ছুঁতে, না-পারল কিছু বলতে—
একটা জীবন থেমে গেল নীরব, চিরদিনের জন্যে।
আর সেই মৃত্যুর নেপথ্যে যে নাম—
ভিসা বিক্রেতা রেজাউল মোস্তফা!
চোখে চোখ রেখে আশ্বাস দিয়ে বলেছিল:
'সব ঠিক আছে ভাই, চিন্তা কইরেন না…'
কিন্তু তার মুখের মধু ছিল বিষের চেয়েও ভয়ংকর।
ডজন ডজন স্বপ্নকে পাঠিয়েছে অন্ধকারে,
আরেকটা তাজা প্রাণ হারালো তার লোভের খেসারতে।
সানি নেই।
কিন্তু তার মতো যেন আর কেউ না হারায়
ভুক্তভোগী একজন অভিযোগ করে জানান, তার ভাই প্রবাসে গিয়ে এই প্রতারকের ফাঁদে পড়ে চরম বিপদের মুখে পড়েন। শেষে মানসিক যন্ত্রণায় এমন এক পরিণতি ঘটে, যা আজীবনের দুঃসহ বেদনার গল্প।
কীভাবে হয় প্রতারণা?
নাম: মুহাম্মদ রেজাউল মোস্তফা, পিতা- হাফেজ মুহাম্মদ ইয়াকুব, বাড়ি- হাকিম বাকসু মাঝীর বাড়ি, গ্রাম-বরুমচড়া, ডাক বরুমচড়া, থানা আনোয়ারা, জেলা- চট্টগ্রাম, জন্ম তারিখ- ০৩/০২/১৯৯৯। ধর্ম- ইসলাম, জাতীয়তা- বাংলাদেশী। জাতীয় পরিচয় পত্র নং- ১০৩৫৪৩৩২০৮। পাসপোর্ট নং- A13510952। মোবাইল নং-+966 57 185 4731
প্রথমে বলে—“সরাসরি কোম্পানির আকর্ষণীয় ভিসা, ৩ বছরের মেয়াদ, কোম্পানিই সব খরচ বহন করবে।” কিন্তু বাস্তবে সে দেয় মাত্র ৩ মাসের অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট, যার পর আকামা করতে হলে প্রবাসীদের নিজের পকেট থেকে লক্ষ টাকা খরচ করতে হয়।
আরও ভয়াবহ সত্য হলো, তার কোনো বৈধ কফিল বা কোম্পানি-ই নেই। কাজ তো দূরের কথা—প্রবাসে গিয়ে ভিসাধারীরা পড়ে যায় চরম দুশ্চিন্তায়। কেউ বেকার, কেউ পথে, কেউ আবার মরুভূমিতে।
ভ্রাতৃত্বের ছদ্মবেশে অমানবিক আচরণ
শুরুতে প্রবাসে নিয়ে কিছুদিন ২ বেলা খাবার দিলেও পরে একেকজনকে বের করে দেয় নিজের ভাড়া করা রুম থেকে। অনেকেই দিনের পর দিন না খেয়ে, অনিশ্চয়তার মধ্যে কাটায়। এমনকি, ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে কেউ কেউ অবৈধ হয়ে পড়ে, কেউ আবার বাধ্য হয়ে বিমান ভাড়া করে দেশে ফেরে।
এই প্রতারণায় সহায়তা করে বাংলাদেশে থাকা কয়েকজন দালাল:
টিপু সুলতান (রেযাউলের স্ত্রীর ভাই)
আহমেদ রেযা মিনহাজ (রেযাউলের ছোট ভাই)
ভুক্তভোগীর আহ্বান:
“আমার ভাই আর জীবিত নেই, কিন্তু সে যেমন শেষ হয়ে গেছে, আমি চাই না আর কারও পরিবারের সন্তান এই চক্রের ফাঁদে পড়ে ধ্বংস হয়ে যাক। এই প্রতারকদের মুখোশ টেনে নামাতে হবে। আজ যদি আমরা চুপ থাকি, কাল হয়তো আরও কেউ হারাবে ভাই, সন্তান কিংবা স্বামীকে।”
উল্লেখযোগ্য তথ্য:
বহু মানুষ এখনো এই চক্রের ফাঁদে পড়ে ভিসার অপেক্ষায়।
কেউ কেউ ইতোমধ্যে দেশে ফিরে এসেছে নিঃস্ব হয়ে।
কিছু প্রবাসী এখনো মরুভূমিতে কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।
সব তথ্য-প্রমাণ ভুক্তভোগীর কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
পটিয়া টিভির পক্ষ থেকে সতর্কতা:
এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। প্রতারকের ছবি নিচে দেওয়া হলো
সাধারণ জনগণকে অনুরোধ—যারা এদের দ্বারা প্রতারিত হয়েছেন, তারা পোস্টটি শেয়ার করুন, মন্তব্য করুন।
একসাথে মিলে এই প্রতারকদের মুখোশ খুলে দিন।
এই প্রতিবেদনটি ভুক্তভোগীদের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তৈরি। কারও সম্মানহানি উদ্দেশ্য নয়। সকল তথ্য ও প্রমাণ সংরক্ষিত রয়েছে।”