
08/09/2024
লিড জেনারেশন কি, কেন ও কিভাবে?
লিড জেনারেশন ডিজটাল মার্কেটিং এর একটি জনপ্রিয় পন্থা। সঠিকভাবে লিড জেনারেশনের মাধ্যমে খুব সহজেই একটি ব্যবসাকে পৌঁছে দেওয়া যায় কাংক্ষিত লক্ষ্যে।
লিড জেনারেশন কি?
কোন একটি কাংক্ষিত বিষয়ের উপর সংগ্রহকৃত তথ্য এবং উপাত্তগুলোকে Lead বলা হয়ে থাকে। আর কোন ব্যবসা বা উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে যখন একটি নির্ধারিত লক্ষ্যে Lead সংগ্রহ করা হয়, তখন সেই প্রক্রিয়াকে লিড জেনারেশন বলা হয়। যেমনঃ আপনি একজন বই বিক্রেতা, যদি নির্দিষ্ট লেখকের উপর ভিত্তি করে বইপ্রেমীদের নাম্বার কালেক্ট করে তাদের কাছে ওই বইয়ের প্রমোশন করে তবে সেখানে তার বই বিক্রির সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই যে বইপ্রেমীদের নাম্বার ও তথ্য সঠিকভাবে সংগ্রহ করা হলো এটিই লিড জেনারেশন।
লিড জেনারেশনের পদ্ধতিসমূহঃ
সাধারণত দুই ভাবে লিড জেনারেশন করা হয়।
১। ফানেল তৈরি করে।
২। বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে লিড কালেক্ট করে।
১। ফানেল কনসেপ্টঃ এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মূলত গ্রাহকের কাছে থেকে তার মাধ্যমে লিড কালেক্ট করা হয়ে থাকে।
২। বিভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে লিড কালেকশনঃ বর্তমানে অনলাইনে অনেক B2B, B2C এবং সোস্যাল প্লাটফর্ম রয়েছে, যার মাধ্যমে ব্যবসার চাহিদার উপর ভিত্তি করে সহজেই আপনার টার্গেট কাস্টমারের প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো খুঁজে বের করতে পারা যায়।
লিড জেনারেশনের বিভিন্ন ধাপসমূহঃ
১। পরিকল্পনা এবং বিশ্লেষণ: কীভাবে লিড জেনারেট করা যায় তার একটি সঠিক পরিকল্পনা প্রয়োজন। মার্কেটিং রিসার্চ করে ও কমপিটিটরদের উপর একটি পূর্নাজ্ঞ বিশ্লেষণ করার মধ্যমে এবং তার উপর ভিত্তি করে ব্যবসার একটি আদর্শ প্রোফাইল তৈরি করতে হবে। এই প্রোফাইলটি উপযুক্ত লিড পেতে সাহায্য করবে। যেমনঃ ওয়েবসাইট, সোস্যাল মিডিয়া লিংক প্রভৃতি।
২। গবেষণা করা: আপনাকে আদর্শ গ্রাহক প্রোফাইল তৈরি করে কিছু গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করতে হবে। যেমনঃ ইনকামিং লিড, তাদের যোগাযোগের তথ্য, তাদের ডাটাবেসের উপর এনালাইসিস করা। ইনকামিং লিডের ট্র্যাক রাখা এবং সেলস টিমের কাছে রিপোর্ট করা এ পর্যায়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
৩। প্রি-টার্গেটিং: প্রি-টার্গেটিং এর মাধ্যমে ব্র্যান্ড সচেতনতা বৃদ্ধি করতে পারা যায় । এটি ব্র্যান্ডের পরিচয় বাড়ানোর পাশাপাশি আউটবাউন্ড মার্কেটিং কেপিআই গুলিকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করবে। Cold আউটরিচ থেকে সর্বোত্তম সুবিধা পেতে এটি যথেষ্ট ভূমিকা রাখে।
৪। ল্যান্ডিং পেজ: প্রি-টার্গেটিং বিজ্ঞাপন এবং ই-মেইল কপি তৈরি করতে ল্যান্ডিং পেজ অনেক গুরুতেপূর্ন ভূমিকা রাখে। ল্যন্ডিং পেইজ মূলত হচ্ছে একটি ওয়েবপেইজ যেখানে একটি নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু উক্ত পেইজে তুলে ধরা হয়। ওয়েবসাইট থেকে একটি ল্যান্ডিং পেইজ তৈরি করতে পারা যায় অথবা যেকোন ল্যান্ডিং পেইজ মেকার প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে একটি সুন্দর ল্যান্ডিং পেইজ তৈরি করতে পারা যায় । ওয়েবসাইট লিঙ্কের পরিবর্তে একটি ল্যান্ডিং পেজ থাকা সবসময়ই ভাল কারণ ল্যান্ডিং পেজটি একটি কাজের উপর ফোকাস করে এবং সমস্ত অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলিকে সহজেই বাদ দিতে সহায়তা করে৷ এছাড়াও, এটি টার্গেটেড মেসেজ বা ই-মেইল পাঠিয়ে ক্রেতাদের মাইক্রো গ্রুপে ভাগ করতে সহায়তা করে।
৫। কার্যকর বিষয়বস্তুর মাধ্যমে লিড আকর্ষণ করা: সাম্প্রতিকালে কনটেন্ট মার্কেটিং অন্যান্য বিজ্ঞাপনের চেয়ে তিনগুণ বেশি লিড পাওয়া যায়। আরো লিড আকৃষ্ট করার জন্য, আকর্ষনীয় বিষয়বস্তু শেয়ার করা খুবই গুরুত্বপূর্ন। যেমন- ব্লগ, ইনফোগ্রাফিক্স, ভিডিও, ছবি, কেস স্টাডি, ওয়েবিনার এর মতো বিষয়বস্তু। লক্ষ্য রাখতে হবে আপনি যে বিষয়বস্তু শেয়ার করবেন তা যাতে আপনার ব্র্যান্ডের পরিচয়কে হাইলাইট করে।
৬। কাস্টমারদের নিকট পৌঁছানো: আপনার লিড জেনারেশন কার্যকারী হবে যদি আপনি সঠিকভাবে কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারেন। এজন্য আপনাকে আপনার ব্যবসার মডেলের উপর ভিত্তি করে একটি সুন্দর পরিকল্পনা করা উচিত। যেমন আপনি আপনার কাস্টমারদের নিকট কল করতে এবং ক্রমানুসারে ইমেইল পাঠাতে পারেন। কল এবং ইমেলের পরে, আপনার লিড গুলোর কোয়ালিটি যাচাই করতে পারবেন। এছাড়াও প্রতিটি লিড CRM-এ রেকর্ড করার মাধ্যমে আপনি আপনার একটিভিটকে ট্র্যাক করতে সাহায্য করে।
৭। রিপোর্টিং: লিড জেনারেশন প্রক্রিয়ার প্রতিটি পর্যায়ে রিপোর্টিং করা উচিত। রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত — ইনকামিং লিড, গবেষণায় ব্যয় করা সময়, ইমেল টেমপ্লেট, পাঠানো ইমেলের সংখ্যা, বাউন্স হওয়া ইমেল, স্বয়ংক্রিয় উত্তর, ফলো আপ, যোগ্য লিডের সংখ্যা এবং সেই লিডগুলিকে নিয়ে ভালোভাবে গবেষণা করা।