25/05/2025
তামান্না আর আযান — বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে পরিচয়। দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেম। শহরের ব্যস্ততার ভেতরেও তারা একে অপরকে সময় দিতে ভুলত না। তামান্না ছিল সাহসী, প্রাণবন্ত, আযান ছিল শান্ত, ভদ্র আর গভীর ভাবনার মানুষ।
একদিন হঠাৎ করেই আযান নিখোঁজ হয়ে গেল। ফোন বন্ধ, কোথাও খোঁজ নেই। পুলিশে রিপোর্ট করা হলো, কিন্তু কোনো হদিস পাওয়া গেল না।
তামান্না ভেঙে পড়লো। একটা বছর কেটে গেল, আযান নেই, কোনো চিহ্ন নেই। একরাশ কষ্ট বুকে নিয়ে সে ঠিক করলো, আযানকে খুঁজে বের করবেই। খোঁজ করতে করতে একদিন সে একটি পুরনো পরিত্যক্ত বাড়ির খোঁজ পায় শহরের বাইরে।
সেই বাড়ির ভেতরে ঢুকে সে দেখতে পায় এক সাদা দেয়ালে অনেকগুলো ছবি — সব তার! বিভিন্ন সময়ের, এমনকি গোপনে তোলা। দেওয়ালের এক পাশে লেখা, “তুমি আমার, শুধু আমার…”
তামান্না ভীত হয়ে পড়ে। হঠাৎ পেছন থেকে একটা কণ্ঠস্বর —
"আমি জানতাম, তুমিই আসবে…"
সে ঘুরে দাঁড়ায়, দেখে আযান, কিন্তু সে আর আগের মতো নেই। তার চোখে অস্বাভাবিক উন্মাদনা। সে বললো,
"আমি তোমাকে লুকিয়ে রেখেছিলাম সময়ের কাছে, যাতে তুমি পালিয়ে যেতে না পারো..."
তামান্না বুঝে যায় — আযান মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে, ভালোবাসা তাকে পাগল করে দিয়েছে। সে চেষ্টা করে পালাতে, কিন্তু আযান তাকে আটকে রাখে।
শেষরাতে তামান্না এক চিঠি লিখে রাখে —
"আযান, আমি তোমাকে ভালোবাসতাম। কিন্তু ভালোবাসা কারো বন্দি করে রাখার জিনিস না। তুমি যদি সত্যি আমাকে ভালোবাসতে, আমাকে মুক্তি দিতে। আমার ভালোবাসা রয়ে যাবে, কিন্তু আমি আর পারছি না..."
পরদিন সকালে স্থানীয়দের ফোন পেয়ে পুলিশ আসে — সেই পরিত্যক্ত বাড়িতে এক তরুণীকে মৃত অবস্থায় পায়, তার পাশে পড়ে ছিল সেই চিঠি।
তামান্না ঘুমের ওষুধ খেয়ে চিরনিদ্রায় চলে গিয়েছিল।
আযান ধরা পড়ে, কিন্তু সে সব সময় বলে যায় —
"সে এখনও আমার সাথেই আছে, আয়নার ভেতর, বাতাসের মাঝে..."
এই ছিল এক অসমাপ্ত ভালোবাসার গল্প — যেটা শেষ হয়, কিন্তু রেশ থেকে যায় হৃদয়ের গভীরে।