22/02/2025
আপনি কি জানেন?
পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ ছিলো এল সালভাদোর। যে দেশে প্রতি ১লাখে ৮০-১০০ জন খুন হত। প্রতি লাখে ধর্ষিত হত ১০ জন নারী। এদের মধ্যে বেশীরভাগ মাইনর। এটি এমন একটি দেশ যেখানে দিনের বেলাতেও মানুষ বের হতে ভয় পেত। রাতে বের হওয়া ছিলো তাদের জন্য দুঃস্বপ্নের মত!
আর এসবকিছু ঘটাতো বিভিন্ন গ্যাং মেম্বাররা। যারা নিজেদেরকে ঈশ্বর মনে করতো। সাধারণ মানুষের জীবন মরণ নির্ধারণ করত গ্যাং মেম্বাররা। এমন কোন অপরাধ ছিলো না যা তারা করেনি।
MS-13, Barrio 18, Mao Mao উল্লেখযোগ্য ভয়ঙ্কর গ্যাং। এর মধ্যে MS-13 ছিলো সবচেয়ে ভয়ঙ্কর! একেক গ্যাং এর শরীর, মুখ, মাথায় থাকা একেকটি ট্যাটু বলে দেয় এরা কতটা নির্দয়, নিষ্ঠুর।
কতজন মানুষকে তারা হত্যা করেছে। ট্যাটু দেখেই সাধারণ জনগণ বুঝতে পারতো! কে কত ভয়ঙ্কর!
এই যেমন চোখের নিচে টিয়ারড্রপ (অশ্রুবিন্দু) ট্যাটু। যদি ৩ ফোঁটা হয়। তার অর্থ সে নিজেও জানেনা কত মানুষকে মেরেছে।
তাহলে আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে। ঐ দেশে কী সরকার নেই? আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নেই? অবশ্যই আছে। তারাও ভয় পেতো কিংবা জিইয়ে রাখতো এই গ্যাংদেরকে। তাদের সাথে আপোষ বা সমঝোতা করে চলতে হতো সরকারকে।
তারা সরকারকে প্রতিশ্রুতি দিতো এভাবে যে, ঠিক আছে। এই এলাকায় আমরা অপরাধ করবো না। কিন্তু তারা সেই কথা রাখতো না। কারণ শুরুতেই তো বলেছি! তারা ধরেই নিয়েছিলো তারাই সৃষ্টিকর্তা।
সাল ২০১৯।
ঠিক এমন সময় দেবদূতের মতো ঐ দেশের জাতীয় নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হোন তরুণ নায়িব বুকেলি। এই সুপারম্যান প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ঐ দেশে প্রায় ৪০ বছর ধরে বিভিন্ন গ্যাংয়ের অলিখিত রাজত্বের অবসান ঘটে।
প্রেসিডেন্ট সেনাবাহিনী এবং পুলিশকে হুকুম দেন - গ্যাং এর সাথে সংশ্লিষ্ট যে কাউকে গ্রেফতার করার।
তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় এবং হাই সিকিউরড জেলখানা নির্মান করেন। যেখানে বন্দিদের জন্য রয়েছে - গার্ড: ৬০০ সৈন্য + ২৫০ পুলিশ কর্মকর্তা
উচ্চ-প্রযুক্তি নজরদারি: ১৯টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, সম্পূর্ণ শরীর স্ক্যানার এবং ফেস রিকুগনাইজেশন প্রযুক্তি।
প্রেসিডেন্টের আদেশের পর - বর্তমানে ৮০ হাজারের মত গ্যাং মেম্বারকে বন্দি করা হয়েছে। যা দেশের মোট জনসংখ্যার ২%।
প্রতিটি সেলে ৮০ জন বন্দি থাকে। ঘুমানোর জন্য কোন বেড নেই। শুধুমাত্র একটি সাদা টিশার্ট, হাফপ্যান্ট, একটি সাদা পাতলা চাদর। লোহার দুই তিন তলা খাটের উপর গাদাগাদি করে ঘুমাতে হয়। ৮০ জনের এই সেলের জন্য এক কোনায় রয়েছে একটি পায়খানার কমোড। যেখানে কোন পর্দা নেই। সবার সামনেই পায়খানা করতে কয়। এর সাথেই একটি চার হাতের পানির হাউজ। গোসল করার জন্য। মাথার উপর ২৪ ঘন্টা জ্বলতে থাকে হাই ভোল্টেজের বাল্ব। দিন কী রাত তারা বলতে পারে না। সেখানে সবসময় দিন।
তারা এই জীবনে আর কখনও সূর্যের আলো দেখতে পাবে না। তাদেরকে একেকজনকে এমন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে যে মৃত্যু ব্যতীত এদের কেউ এই চার দেওয়াল ব্যতীত আর কিছুই দেখতে পারবে না।
সেলের ভেতরে কে কী করতেছে তা বাইরে দাঁড়ানো গার্ড এবং সিসিক্যামেরায় সবাই দেখতে পায়। তারা কখনও নিজেদের আত্মীয় স্বজনকে এই জন্মে দু চোখ দিয়েই দেখতে পাবে না। ছুঁয়ে দেখাতো দূরের কথা।
সপ্তাহে শুধুমাত্র একদিন ধারাবাহিকভাবে নির্দিষ্ট সেলের, নির্দিষ্ট ব্যক্তি বাইরে আধা ঘন্টার জন্য এক্সারসাইজ করতে দেওয়া হয় ট্রেইনার দ্বারা। এতটুকুই। তাদের জন্য নেই কোন বই পুস্তক, টিভি বিনোদনের ব্যবস্থা।
কয়েদিদেরকে তিনবেলা খাবার দেওয়া হয় ভাত, বিনস, পাস্তা আর পানি। কোন প্রোটিন মাছ, মাংস এদেরকে দেওয়া হয়নি এবং দেওয়া হবে না।
এই জেলখানা থেকে পালানোর চেষ্টা কেউ কখনও করেনি এবং পালাতে কখনও পারবে না।
প্রতিটি কয়েদির চোখে আপনি শুন্যতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পারবেন না। এক সময়ে নিজেদের ইশ্বর ভাবা অপরাধীগুলো একদম ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গিয়েছে।
তারপরেও এদের কেউ যদি তাফালিং যদি করে। গার্ডের হুকুম অমান্য করে। এদেরকে নিয়ে ফেলানো হয় একটি অন্ধকার ঘরে। যেখানে নিজের ছায়াটুকুও দেখতে পায় না। দশ দিন পনেরোদিন কিংবা এক মাস। শুধুমাত্র নিজের মস্তিষ্ক ব্রেন ছাড়া এই অন্ধকার ঘুটঘুটে ঘরে তাদের আর কেউ থাকে না। ফলাফল, এতকিছুর পরে যাদের তেল থাকে, তাদের তেলকেও ভেঙ্গে চুরমার করে দেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্টের একটি মাত্র সিদ্ধান্ত এই দেশের ক্রাইম রেটকে প্রায় শুন্যের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বিপদজনক দেশ থেকে আজকে সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। অন্যদের কাছে রোল মডেল হয়ে গিয়েছে এই দেশ।
এই দেশের মানুষ এখন রাতে বের হতেও সবচেয়ে নিরাপদ ফিল করে। এর কারণ পুলিশ ও সেনাবাহিনী। তারা প্রতিটি রাস্তায় প্রতিনিয়ত টহল দেয় এবং জনগণও তাদেরকে সহযোগীতা করে।
এই জেলখানা দেশটির অপরাধীদের কাছে এখন একটি আতঙ্ক। কেউ অপরাধ করার চিন্তাও মাথায় আনে না। কারণ গুরুতর অপরাধ কিংবা গ্যাং সংশ্লিষ্ট কাজে যদি একবার ধরা পড়া যায়। তাদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঐ জেলখানা হতে তারা বের হতে পারবে না। শুধুমাত্র এই ভয়টিই মানুষকে অপরাধ হতে দূরে রেখেছে।
এখন ভাবছেন! ঐ দেশের বা বিশ্বের চুতমারানি মানব অধিকার কমিশন এর প্রতিবাদ করেনি? করেছে! তারা জানিয়েছে মানব অধিকার লঙ্গন করা হয়েছে।
তাদের কথাকে প্রেসিডেন্ট বুকেলে চোদেনি। বরং রোল মডেল হিসেবে প্রতিটি দেশের গণ মাধ্যম কর্মীদেরকে বিশেষ নিরাপত্তা পাসের মাধ্যমে জেলখানায় প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়। তারা যেন এই জেলের ডকুমেন্টারি করে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে পারে। বিশ্বের সব দেশই ক্রাইম কমাতে তাদেরকে অনুসরণ করতে পারে।
গত নির্বাচনে আবারও বিপুল ভোটে প্রেসিডেন্ট বুকেলে নির্বাচিত হয়েছে। শুধুমাত্র জনগণের জান মাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। তার পপুলারিটি দিনদিন বেড়েছে।
এত বক বক কেন মারাচ্ছি?
আমাদের দেশে একজন বুকেলে দরকার। প্রয়োজন একটি সুবিশাল কারাগার। যেখানে একবার কেউ ঢুকবে কিন্তু মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বেরোতে পারবে না।
থাকবে না মজার মজার খাবারের ব্যবস্থা। থাকবে না বিনোদনের ব্যবস্থা। জেলখানা যেন প্রতিটি ছিনতাইকারী, ডাকাত, খুনি, ধর্ষকদের জন্য পৃথিবীর জাহান্নাম হিসেবে আতঙ্ক ঢুকিয়ে দিতে পারে। তবেই একমাত্র সম্ভব এই দেশ হতে অপরাধ একদম নিশ্চিহ্ন করে দিতে।
সেদিন নিউজে দেখলাম, মোহাম্মদপুর সহ বিভিন্ন স্থানে মোট ৫টি কিশোর গ্যাং চলে কবজি কাটা গ্যাং। এর হোতা আনোয়ারের মাধ্যমে। প্রতিটি গ্যাংতে আছে ৫০ জন মেম্বার। তাহলে ৫টি গ্যাং তে হয় ৩০০ মেম্বার। এই ৩০০ মেম্বারের জন্য কেন এই ঢাকা শহরের মানুষ অনিরাপদে থাকবে? এই ৩০০ জনকে ক্রস দেন না কেন! এদেরকে জেলে ঢুকান না কেন? দেখলাম এরা এতটাই বেপরোয়া পুলিশকে পর্যন্ত কুপিয়েছে।
এই দেশে ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটবে? কেন ডাকাতি হবে। কেন ছিনতাই হবে! কেন খুন হবে?
কারণ আমরা জাতি হিসেবে অত্যন্ত জঘন্য রাজনৈতিক দল, পুলিশ, বিচার ব্যবস্থা পেয়েছি। যারা সবচেয়ে বড় মাদারচোদ। এরা চায় না এই দেশে শান্তি বজায় থাকুক। এরা চায় ক্ষমতা এদের থাকুক। আর এদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখুক এই অপরাধীরা। বিনিময়ে তারা হয়ে উঠুক অগাধ সম্পদের মালিক।
গত পরশু বাসে দুজন নারীকে করা হলো গ্যাং রেপ। এরপরদিন ট্রলারে করা হলো গ্যাং রেপ। আজকে ফুল দিতে আসা শিশুকে করা হলো রেইপ। চারদিকে খুন হচ্ছে। ছিনতাই হচ্ছে। ৫ অগাস্টের পর এই দেশের আইন ব্যবস্থা সবচেয়ে বেশী ভঙ্গুর ও নাজুক হয়ে গিয়েছে।
কেন কেন কেন!!
উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ যদি থাকে। ভিডিও। ছবি থাকে। তাহলে কেন ধর্ষককে, খুনিকে এক মাসের মধ্যে ফাঁসি দেওয়া হবে না। কেন তাদেরকে বছরের পর বছর বিচারের নামে বাঁচিয়ে রাখা হবে। নয়তো টাকার বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হবে। কেন এদের ভরণ পোষণ আমার ট্যাক্সের টাকায় কারাগারে চলবে?
আমি চাই, ধর্ষক ও খুনিদের একমাত্র শাস্তি হতে হবে মৃত্যুদণ্ড। এক মাসের মধ্যে। অন্যান্য ক্যাটাগরির অপরাধী! যারা পটেনশিয়াল, খুনি, ধর্ষক। উপযুক্ত প্রমানের ভিত্তিতে, দেশের জন্য আতঙ্কের, এদেরকে স্বচ্ছতার এদেরকে ভরা হোক পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন জেলে। যেখান থেকে শুধুমাত্র মৃত্যু ব্যতীত এরা বের হতে পারবে না।
এদের জন্য কেন আমরা রাস্তায় বের হতে ভয় পাবো? কেন আমাদের মা বোনেরা ধর্ষিত হবে! জান মাল বাঁচাতে কেন আমরা কোপ খাবো!
কেন বাংলাদেশ এল সালাভাদরের মত ক্রাইম রেট জিরোতে আনতে পারবে না? কেন বাংলাদেশে ক্রিমিনালদের মধ্যে আতংক ঢুকিয়ে দিতে পারবে না!
কেন?
--অন্তর মাশঊদ