22/07/2025
মাইলস্টোনের প্রিন্সিপালকে নোটিশ দেয়া হয়েছিলো এখানে ক্যাম্পাস না করার জন্য। মাইলস্টোনের আশেপাশে যারা থাকেন তারা জানেন। ফ্যাসিনা বলছিলো সেখানে র্যাবের অফিস করবে, স্কুল সড়াইতে কিন্তু মাদারবোর্ড নুরুন্নবী মানে নাই।
একটা রানওয়ে থেকে ৫ কি. মি দূরে একটা স্কুল, কলেজের ক্যাম্পাস কিভাবে থাকতে পারে ???
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের প্রথম সলো ফ্লাইট ছিলো। এই সলো ফ্লাইট সে আরবান এলাকার আকাশেও পরিচালনা করেছে, ট্রেনিং এর জন্য এই ফ্লাইট আরবান এলাকায় পরিচালনা করা যায়। গতোকাল এই বিমান টেক অফের পর বাড্ডা, রামপুরার আকাশেও উড়েছিলো। ল্যান্ডিং এর আগে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়, পাইলট তৌকির ল্যান্ডিং এর জন্য সেইফ প্লেস খুঁজে, পায়নি সে প্যারাসুট পরে ল্যান্ড করে বিমান যেখানে বিধ্বস্ত হয় তৌকিরের লাশ সেখানে পাওয়া যায় নি, তার লাশ সিটের সাথে ছিলো না। তার লাশ পাওয়া গেছে স্কুল কম্পাউন্ডের বাইরে অনেক খানি দূরে। তাই তৌকিরকে যারা হিরো বানাচ্ছেন থামেন, জিরো বানানোও থামান।
এতো বড় ট্র্যাজেডির পর বিমান বাহিনী প্রধান থেকে কোন বিবৃতি পাওয়া যায়নি। কারণ তিনি গতোকালকেই তুরস্ক সফরে গেছেন। বিমান বাহিনীর দায়িত্বে থাকা কেউ সরাসরি প্রেস ব্রিফিং করে নাই।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টার চোখ অপারেশনের জন্য এই ট্র্যাজেডিতে তার উপস্থিতিও মিসিং। কিন্তু তার সহকারী, তার পি এস বা সোশ্যাল মিডিয়ার এডমিনের কি অপারেশন হয়েছে আমার জানা নাই।
এই ট্র্যাজেডি পর্যন্ত মোটাদাগে দায়ভার বর্তাবে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর উপর, এই কথা আমি গতোকাল শুরুতেই বলেছি। বিমান বাহিনীর প্রধান কেনো মান্ধাতা আমলের যান্ত্রিক ত্রুটিযুক্ত ফাইটার জেট দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রেখেছে?
এর আগেও দুজন তরুণ পাইলট নিহত হয়েছেন, একই কায়দায়। তারপরেও তিনি সংস্কারের দাবী না তুলে কিভাবে ঘুমিয়ে ছিলেন?
ট্র্যাজেডি পরবর্তী দায়ভার স্কুল প্রধান নুরুন্নবীর। যেখানে প্লেন, ফাইটার জেট টেক অফ হয় ল্যান্ডিং করে সেই জোনের মধ্যে কেনো স্কুল থাকবে?
উত্তরার এয়ারপোর্ট এবং কুর্মিটোলা রানওয়ের আশেপাশে অন্তত ৫০ কি.মি. জুড়ে কোন আবাসিক এলাকা, স্কুল কলেজ হাসপাতাল হবার কথা না। কিন্তু অসভ্য করাপ্টেড লোভী বাংলাদেশীরা খালি জায়গা পেলেই তাতে নগর গড়ার স্বপ্ন দেখে, ফকিন্নির জাত।
একটা স্কুলের আইডি কার্ডে কেনো ব্লাড গ্রুপ আর গার্ডিয়ানের মোবাইল নাম্বার দেয়া নাই? স্কুলে একটানা তিনদিন না আসলে জরিমানার যেই কালচার তা কেনো থাকবে? একটা বাচ্চা অসুস্থ সে নাই আসতে পারে, এপ্লিকেশন দিবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিবে। জরিমানা কেনো হবে? নাম্বার কেনো মাইনাস হবে?
কেনো রাত ২টায় ক্যাম্পাসে পুলিশ আর এম্বুলেন্স প্রবেশ করবে? লাশের প্রকৃত সংখ্যা ফাঁস করা নিয়ে কেনো সেনাবাহিনি স্কুল শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত তুলবে?
এই জবাবগুলো স্কুল প্রধানকে দিতে হবে।
অতি উৎসাহী জনতা দূর্ঘটনাস্থলে যেয়ে ভীড় বাড়িয়ে উদ্ধারকাযে ব্যাঘাত ঘটালো। স্কুল ক্যান্টিনে পানির দাম বাড়িয়ে দিলো, পয়সা ছাড়া একটা আহত শিক্ষার্থীকে পানি দেয় নাই। পরে ক্যান্টিন বন্ধ করে দেয়। দূর্ঘটনার আশেপাশে রিকশা সি এন জি ওয়ালা আহতদের দেখে ভাড়া বাড়িয়ে দিলো।
কোন ফুটেজ দেখে এই কয়টা বর্বরদের ধরতে পারলে মানবিকতা শিখায় দিবেন।
মেডিকেলে জামায়াত গেলো অনুদান দেয়ার জন্য, দুই তিনজন সহ যেয়ে সেই অনুদান দিতে পারতো না? একটা অসুস্থ ক্ষত পোড়া ক্রিটিক্যাল পেশেন্টদের সামনে কেনো পংগপালের মতো শ খানেক নেতা কর্মী নিয়ে প্রবেশ করবে? বি এন পি তো যাচ্ছে তাই করলো, বার্ণ ইউনিটে যাবার রাস্তা প্রথমে হাইকোর্ট, গুলিস্থান, প্রেস ক্লাবের রাস্তা ব্লক করে মিছিল এরপর পংগপালেরা হাসপাতালে গেলো।
জাতীয় ক্রাইসিসের মধ্যে যেখানে আমরা ট্রমায় চলে গেছি সেই অবস্থাতেও রাতে শুনি চিটাগাং চকবাজারে ছাত্রদল আর শিবিরের ধাওয়া পালটা ধাওয়া চলছে, শিবিরের একজন আহত হয়েছে।
এই দেশ তো লীগ, বি এন পি, জাশি আর অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের তাইনা? একটা সুস্থ পরিবেশ যখন আমাদের মতোন নন পলিটিক্যাল ম্যাংগো পিপলদের দিতে পারবেন না, তাইলে আমরা এই দেশে থেকে কি করবো? আপনাদের তামশা দেখবো? আপনাদের করাপশন দেখবো? আপনাদের অসুস্থ, অসভ্য, বর্ববরতা দেখবো, ট্যাক্স দিবো আর ক্ষমতার জন্য আপনাদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা দেখার জন্য এই দেশে গায়ের ঘাম পায়ে ফেলবো?
কাদের জন্য রাজনীতি করেন? আমাদের জন্য, হয় শান্তি দেন নয়তো আমরা একে একে এই দেশ ছেড়ে চলে যাবো। নিজেরা নিজেদের গায়ের চামড়া খেয়ে বেঁচে থাকবেন তখন।
এরই মধ্যে লীগ গতোকাল নানান প্রোপাগাণ্ডা শুরু করে। সামন্ত লালকে ফিরিয়ে আনার গুঞ্জন উঠায়। কেনো? সামন্ত লাল ছাড়া কি দেশে কোন সার্জন নাই?
সামন্ত লাল ছাড়া এই দেশের বার্ন ইউনিট চলছে না? লীগের কোন প্রোপাগাণ্ডায় পা দিবেন না।
শিক্ষা উপদেষ্টা ও তার সচিব রাতভর নাটক করলো। দেশের এই শোকাবহ অবস্থায় বেদনাদায়ক অন্তর নিয়ে শিক্ষার্থীরা কিভাবে এইচ এস সি পরীক্ষা দিবে? সিদ্ধান্ত নিলো রাত ৩টায়। যারা এই নিউজ জানবে না, তারা আজকে এক্সাম হলে যাবে এবং হতাশ হবে।
আজকে মাইলস্টোনের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। আহত নিহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবী সহ যৌক্তিক দাবী করছে। এসব দাবীর মধ্যে যেনো প্রকৃত কালপ্রিটরা ছাড়া না পেয়ে যায়।
একটা নগরের কোন পরিকল্পনা নাই, নিয়ম না মেনেই গড়ে উঠে বিল্ডিং, ক্যাম্পাস, কমার্শিয়াল অফিস। তারপর? আগুন লাগে, দূর্ঘটনা ঘটে, অকালে প্রাণ ঝরে যায়।
কয়েকদিন আগেও অনলাইনে একদল বলে বেড়াচ্ছিলো, এখন আর দেশের কোথাও আগুন লাগে না, বাজার পুড়ে না। অনলাইনে ষড়যন্ত্রকারীরা নজর রাখে, কখন কোন ইস্যুকে চোখের পানি মোছার টিস্যু বানায় দিবে আমরা জানিও না। তাই সোশ্যাল মিডিয়া খুব দায়িত্বশীল ব্যক্তির মতোন ব্যবহার করেন অথবা ছাপড়িদের মতোন ব্যবহার করেন।
গতোকালের ট্র্যাজেডিকে আমি কোন ভাবেই দূর্ঘটনা মানতে রাজি না। দায়িত্বশীলরা যখন বেখেয়ালি আচরণ করে তখন তা দূর্ঘটনা বলে ছাড় দেয়া যায় না, এইটা ছিলো একটা হত্যাকান্ড। যেই দায়ভার থেকে বিমান প্রধান, স্কুল প্রধান মুক্ত হতে পারে না।