26/09/2023
শাকিব খান দুইটা বিয়ে করে, দুইটা ডিভোর্স দিলো। তার মধ্যে একজন অন্য ধর্মের। সেই মেয়ে এসে পাবলিকলি লাইভ টিভিতে বাচ্চাকে নিয়ে এসে বললো, আমি এখন কোথায় যাবো? মানুষ করলো ট্রল। হাসলো। অষ্ট্রেলিয়ার একজন নারী ধর্ষনের অভিযোগ আনলো। কেউ বললো না নারীর অধিকার হরণ হয়েছে, নারীর অবমাননা হয়েছে। শাকিব খান বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা তালি দিচ্ছি। বাহবা দিচ্ছি। নারীবাদিরা বলেন তো শাকিব কি তা ডিজার্ভ করে?
জায়েদ খান। একের পর এক, হাস্যকর মন্তব্য করছে নারীদের নিয়ে। সব মেয়ে তার জন্য পাগল হ্যান ত্যান। মানুষ হাসছে। সে হচ্ছে ট্রল। অথচ এইটা দেশের নারীদের কাছ হাস্যকর লাগছে। আমার কাছে লাগে না তা। আমার মনে হয়, হাস্যকর মন্তব্য করে 'নারী' শব্দটার ব্যবহার করে সে লাইম লাইটে আসতে চাচ্ছে। আমার কাছে তো এইটা নারীর অবমাননা!
সালমান মুক্তাদির ওপেন লাইভ পডকাস্টে এসে বললো শতাধিক নারীর সাথে সম্পর্কের কথা। কতজনের সাথে শুয়েছে এই বৃত্তান্ত। একজন সুশীলকে তো দেখলাম না এই কথার বিরুদ্ধে বলতে। তার মানে একজন প্রকাশ্য এসে বলবে সে ১০০ নারীর সাথে শুয়েছে, সেইটা নারীর অবমননা হবে না? অথচ খাতায় কলমে সে বিশাল সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার। মানুষ তাকে ফলো করে। মুক্তমনারা বলেন দেখি, সালমান মুক্তাদির কি অপরাধী? কিন্তু ইসলাম ধর্মে সে অপরাধী। সে যদি কোরআনের শাসন সম্বলিত দেশে থাকত, তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার আদেশ জারী হত। যেমনটা হত শাকিবের ক্ষেত্রেও।
ঠিক একই ঘটনা হত কেন্দ্রীয় মসজিদের মুসুল্লী কমিটির প্রধান উপদেষ্টা, সায়েম সোবহান আনভীরের সাথেও। ১৯ বছরে মেয়ে আত্মহত্যা করলো তার জন্য। দুই একটা নিউজ চ্যানেল তার নাম না নিয়ে নিউজ করলো। একদিন বেকসুর খালাস ও পেলো। প্রিয় ইসলাম বিদ্বেষী ইসলামকে জাজমেন্ট করা মানুষজন বলেন দেখি, এই যে মুনিয়ার রক্ষিতা হয়ে জীবন যাপন ও আত্মহত্যা এতে কি নারীর অবমাননা হয় না? যদি হয়, তবে আনভীর কিভাবে ভিআইপি মর্যাদা লাভ করে? ও সরি সিআইপি। আর এদের মত লোক যার থাকার কথা জেলে, সে মুসুল্লী কমিটির প্রধান উপদেষ্টা বলেই, বাঙ্গালী মুসলমানদের ইমানের এত দুর্ভিক্ষ।
ইসলাম মতে যারা অপরাধী আপনাদের কাছে তারা সেলিব্রেটি। অপরাধের পক্ষে থাকাও তো অপরাধ তাই না? সে হিসাবে তো আমরা সবাই নারী অবমাননাকারি? আত্মহত্যার প্ররচনাকারি তাই না?
সালমান, শাকিব, আনভীর বেশী অপরাধী নাকি বিশ বছর বয়স্ক একটা ছেলের ফেসবুক পোস্ট যা হয়ত তার ইসলামিক দর্শনের সাথে প্রাপ্ত সেটার সাথে মিলিয়ে ওই ছেলে বেশী অপরাধী?আবার আপনারাই না মত প্রকাশের স্বাধীনতাও চান? দুই চারটা পোস্টের জন্য তার ক্যারিয়ার শেষ করে দিতে চান? আমি যেই চার জনের নাম বললাম, তাদের ক্যারিয়ার আপনারা নিজেই চাঙা করছেন?
তার চিন্তাতে ভূল থাকতে পারে। আমার কাছে তার লেখা পড়ে মনে হয়েছে, সে অনেক বেশী স্ট্রিক। এইটা তো দোষের না তাই না? আর সে যদি কট্টোর ধার্মিক ও হয়, এতে সমস্যা কি? তবে হয়ত কিছু মন্তব্য সে না করলেও পারত। আমরা অনেক কিছুই বিশ্বাস করি, যা আমরা লিখি না। আমরা অনেক কিছুই জানি ও বুঝি, যা আমরা প্রকাশ করি না। এইটা বয়সের সাথে ম্যাচুরিটি লেভেল তৈরী হবে।
মুশফিক ভাইয়ের বিরুদ্ধেও একটা সিন্ডিকেট আছে। নামাজের জন্য টাইগার লোগোর উপর উনি টেপ মেরে রেখেছিলেন। কুরবানী দিয়ে ছবি দিয়ে ছিলেন। ওরে সোশ্যাল মিডিয়ার খিস্তি। তালেবান জঙ্গী কত টাইটেল দিলো। কিন্তু তার সাথে আল্লাহ ছিলো। আল্লাহ তার মান রাখছে।
আবার এই ঘটনার বিপরীতের শিকার হন, লিটন দাস। পূজার ছবি দিলে এক গ্রুপ সিন্ডিকেট সেইখানে আক্রমণ করে। সেইটা তার ধর্মের রিচুয়াল। তার উৎসব। সে তো ভক্তদের সাথে শেয়ার করবেই। একই ঘটনার শিকার হত দেখেছি শুভাগত হোমকেও। অথচ ইসলাম বলে, তোমরা অন্য ধর্মকে গালি দিও না।
যারা গালি দেয়, আমি অনেকের টাইম লাইন ঘেটেছি, মনে হয় না ম্যাক্সিমাম ইসলামের জ্ঞ্যান রাখে। টিকটক জেনারশনের পোলাপাইন। অনেকের দাড়ি টুপিও আছে। আমি দাড়ি টুপি দিয়ে মুসলিম বিচার করি না। কারন দু:খজনক ভাবে দেশের বড় বড় টাউট বাটপারগুলা ইসলামি লেবাশ ধারন করে মানুষকে ঠকানোর জন্য।
এই যে শুরুতে শাকিব খান আনভীর মুক্তাদির জায়েদ খানদের নিয়ে শুরু করলাম ক্যান জানেন? আপনারা যারা জুনিয়র সাকিবকে নিয়ে বিভিন্ন কথা বলছেন, এদের সময় চুপ থাকেন। সাপের মত ঘাপটি মেরে থাকেন। হাজার হাজার ইস্যু সামনে দিয়ে যাবে আপনারা কিছু বলবেন না। উদাহরন দি, এই যে ভারতে হিজাব পরিহিত একটা মেয়ে একা হিজাব পড়ে শত শত যুবকের সামনে যখন প্রতিবাদ করলো, আমার বন্ধু তালিকার একটা মুক্তমনা চোখে বাধে নাই, যে এসে বলেছে, ওই মেয়ে ঠিক বলেছে, ওই নারীর স্বাধীনতা চাই, ওই নারীর পোষাকের স্বাধীনতা চাই।
কিন্তু যেই কোন মুসলিমকে একটু উনিশ বিশ করতে দেখবে, আপনারা লাফালাফি শুরু করবেন, আপনাদের মুক্ত ইমানী চুলকানী শুরু হবে। দেশ তালেবান হয়ে গেলো। জঙ্গী হয়ে গেলো। এইদিকে সালমান মুক্তাদিররা দেশকে পর্ণহাব বানাচ্ছে তখন চুপ।
দেখেন, ইসলাম নিয়ে কথা বললে যে ভাবে খুব সহজেই মৌলবাদি ট্যাগ দেন, আপনাদের মনোভাবে কিন্তু আমরাও বুঝি, যে আপনার চুলকানী ইসলাম নিয়েই। মুক্তমনার আড়াল নিয়ে থাকলেও প্রতিটা মানুষই জানে এইটা আসলে আদতে এন্টি ইসলামিক মনোভাব। ইসলাম যদি সাম্প্রদায়িক হয়, এন্টি ইসলামিজম ও কিন্তু বড় দাগে সাম্প্রদায়িকতায়।
আমি নিজে এইসব নিয়ে লেখা বাদ দিছি। হেদায়েত আল্লাহ দেবেন। আজকে সারাদিন ধরে টাইম লাইনে এই সব ফ্যাদা প্যাচাল দেখে শেষ পর্যন্ত নিজে কন্ট্রোল করতে না পেরে দুই চার লাইন লিখলাম। কাউকে আঘাত দিলে দু:খিত। কেউ ব্যাক্তিগত ভাবে নিলে সেইটা একান্ত তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। কারন আমি 'মুক্তমনা সম্প্রদায়'কে কথা শুনিয়েছি, ব্যাক্তি কাউকে না।
যাইহোক, পোলাডারে দেন নিষিদ্ধ করে সমস্যা নাই। ওই ছেলে জাতীয় দলে না খেললে ওর ক্যারিয়ার ধংস হবে না। যার আল্লাহ আছে, তাকে দুনিয়া টানে না। তার দুনিয়া ধংস হওয়ার ও কারন নাই।