30/07/2024
প্রায় ছয়শ কোটি মানুষের বাস এই পৃথিবীতে। প্রতিটি মানুষের আছে আলাদা আলাদা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। কেউ নিঃস্বার্থ, ত্যাগী। আবার কেউ কেউ নিজের ভালো ছাড়া কিছুই বোঝে না। একমাত্র মহামানব ছাড়া আমরা সবাই কম বেশী স্বার্থপর। কেউ নিজের স্বার্থ দেখি অন্যের ক্ষতি না করে আবার কেউ নিজের স্বার্থে অন্যের বারোটা বাজাতেও দ্বিধা বোধ করিনা। এছাড়াও আর এক ধরণের স্বার্থপর আছেন, যাঁরা নিজের কিছু কষ্ট হবে জেনেও কোনো কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকেন পাছে অন্যেরা উপকৃত হয়। এঁদের আদর্শ হচ্ছে হোক না আমার সামান্য ক্ষতি কিন্তু আমিতো অন্যের বৃহৎ স্বার্থকে নস্যাৎ করতে পেরেছি!
সেই রকম একজন স্বার্থপরের ঘটনা বলি। আমরা দু'একটি দেশের জনা ছয়েক লোক একসাথে থাকি এই পরবাসে। আমাদের বাসাটি একটি ডুপ্লেক্স ভবন যাতে বৈঠক খানা, রসুই ঘর বাদেও গোটা সাতেক শোবার ঘর রয়েছে। বেশ বড় বাড়ি। এটার রক্ষনাবেক্ষন নিজেদেরই করতে হয়। এখানে বাঁধা কিংবা ঠিকে বুয়ার চল নেই। আমরা যে যার মতো, সময় মতো ঘরদোর পরিষ্কার রাখি। আমরা মানে বাকি পাঁচ জন, ওই স্বার্থপর ব্যক্তিটি ছাড়া। ধরে নেই এই বুদ্ধিমান লোকটির নাম জনাব `ক'। উনিও কাজ করেন, কিন্তু কিভাবে? নিচের বর্ণনায় তা চিত্রিত হবে।
আমাদের রান্নাঘরটি বেশ বড়। দুই অংশে বিভক্ত এই রান্না ঘরে দুটি উন্নত চুলা আছে। একপাশের চুলা আমরা তিন জন ব্যবহার করি অন্যটি বাকি তিন জন। আমরা যখন রান্নাঘর পরিষ্কার করি তখন ঘরের দুটি অংশই করি কিন্তু জনাব ক যেদিন করেন (কালে ভদ্রে যদি করেন) তিনি শুধু একটি অংশের মেঝে পরিষ্কার করেই ক্ষান্ত হন। আমাদের একজন উনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন ভাইজান পরিষ্কার যখন করলেনই তা এপাশটা করলেন না কেন? উনার উত্তরের বাংলা করলে যা দাঁড়ায় তা হচ্ছে `আমি তো ওই টাইলস গুলায় পারাই না'। জনাব ক বেশ হিসেবি মানুষ। উনি যখন পেয়াঁজ কাটেন তখন কাটিং বোর্ডের একটি কোনা ব্যবহার করেন মাত্র এবং কাজ শেষে বোর্ডের সেই অংশটিই পরিষ্কার করেন যেটুকু উনি ব্যবহার করেছেন। বিশ্বাস হচ্ছে না ? ছবির কাটিং বোর্ডটি তার প্রমাণ। শুধু তাই না যে প্লেটে উনি তরকারি রাখেন সেই প্লেটটির শুধুমাত্র ব্যবহৃত অংশটুকুই পরিষ্কার করেন।