
02/05/2023
ব্যাস্ত জীবনে একটু হাসুন !!!
পাবলিক বাসে করে আগ্রাবাদ যাচ্ছিলাম, সিট না পাওয়ায় দাঁড়িয়েই যেতে হচ্ছিলো মানুষের জ্যাম এর মধ্যে একটা টুশশ করে পাদ দিলাম...আর কেউ না শুনলেও পাশের লোকটা শুনে আমার দিকে থাকিয়ে রয়েছিলো। ১০-১৫ সেকেন্ড পর পাদের দূর্গন্ধ পুরো বাসে ছড়িয়ে পড়েছিলো সবাই কাপড় দিয়ে নাক ঢাকতে ব্যস্ত।
এইবার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটা খুবই রেগে বলতে লাগলো: ওই মিয়া পাদটাদ বাইরে থেকে দিয়ে আসতে পারোনা?? বাসে এসে মানুষদের ভিতরেই পাদ দিতে হলো??
এইবার পুরো বাসের মানুষেরাই আমাকে কথা শুনাতে লাগলো শুধুমাত্র আমাকে চিবিয়ে খেতে পারছেনা কেউ, তাদের কথার ভিতরেই দিলাম আরেকটা টুশশশ করে পাদ উফ আগেরটার চেয়ে অনেকবেশি বড় ও অনেকবেশি দূর্গন্ধ।
এইবার আর আমাকে বাসে রাখেনি বাসের হেল্পার আমাকে মাঝপথেই নামিয়ে দিলো।পাদ এসেছিলো তাই দিয়েছি এর উপরতো আমার হাত নেই এ অন্যায় আমি এখনো মানিনা।
এলাকায় একটি মেজবানের দাওয়াত পেয়েছিলাম তাই খুব পরিপাটি হয়ে মেজবান খেতে গেছিলাম.. খেতে টেবিলে বসলাম এলাকার আরো অনেকজনের সাথে।
খাওয়ার মাঝখানেই আসলো একটা পাদ, না এইবার ডাইরেক্টলি দিয়ে দিইনাই অনেক চিবিয়ে রাখতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি একটুপর টিয়িয়িয়িশ করে দিলাম ছেড়ে... অনেকক্ষণ চিবে রাখার কারণে পাদের শব্দটা অনেকটা বাঁশির সূরের মতো লেগেছিলো।
পাদের শব্দটা অন্যরকম হওয়ায় ভেবেছিলাম কেউ বুঝতে পারেনি কিন্তু না সবাই দেখি আমার দিকেই থাকিয়ে আছে...
সম্মান আর পেলাম কই??
আমাকে অর্ধেক খাওয়া থেকেই টেবিল থেকে তুলে দিয়েছে ওরা.. অনেক অসম্মানিত হয়ে ও রেগে গিয়ে টেবিল থেকে উঠার সময় টিশ,টাশ,টুশ,ফুটুশ করে আরো ৪-৫টা পাদ দিলাম ছেড়ে। আমাকে খেতে দিলিনা নে এইবার তুরাও খা দেখি এই দূর্গন্ধের ভিতর।
৪জনের কাছ থেকে চ্যাকা খেয়ে ৫নম্বর প্রেমিকার সাথে প্রথমবারের মতো দেখা করতে গেছিলাম একটা রেস্টুরেন্টে.... স্যুপ অর্ডার করে দু'জনেই কথা বলতে,বলতে স্যুপ খাচ্ছিলাম।
কথার মাঝেই দিলাম একটা টাশশ করে পাদ শব্দটা অনেকটা ককটেল এর আওয়াজের মতো। ৫নম্বর গফ দেখি কোন মাইন্ড করেনি আরো মিষ্টি সূরে বললো: এই দুষ্টু!! সকালে টয়লেট করে আসোনি??
আমাদের গল্পগুজব আবারো শুরু হলো.. প্রথম মিট তাই একে-অপরকে ভালোভাবে জেনে নিচ্ছিলাম। কথার মধ্যেই এইবার আরেকটা পাদ এসেছিলো ফাঁদটা একটু চেপে ধরে এইবার আমি বাথরুমে গিয়ে দিতে চেয়েছিলাম কিন্ত আমার গফ আমাকে যেতে দেয়নি ও বলে তোমার সাথে আরো অনেক কথা আছে বাথরুমে একটু পরে গেলেও চলবে...
বেশিক্ষণ চেপে ধরে রাখতে না পেরে একটুপর ফটাশশশ করে দিলাম পাদটা ছেড়ে, শব্দটা অনেকটা এটম বুমের আওয়াজের মতো ছিলো।
রেস্টুরেন্টের সবাই দেখি হা করে আমার দেখে থাকিয়ে আছে.. আমার গফ নাক ধরে বসা থেকে দাঁড়িয়ে উঠে বললো: তোমার সাথে আমার কোনোভাবে যায়না, ব্রেকাপ... ব্রেকাপ... ব্রেকাপ এই বলেযে গেলো আর একটিবারের জন্যও সে পিছনে ফিরে থাকায়নি।
এতো কষ্ট আমি রাখি কই?? খুবই কষ্ট পেয়ে সেদিন ব্রিজ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি।
'' আত্মহত্যা মহাপাপ কথাটি মনে পড়ে গিয়েছিলতো তাই।''
বাসায় গিয়ে দাদিকে সব কষ্টের কথা শেয়ার করলাম.. দাদি বললো: কেউ পাদ দিয়ে পাদের কারনে সব হারাচ্ছে আবার কেউকেউ পাদ না দিয়েও অন্যর পাদের দায় স্বীকার করে কোটিপতি হচ্ছে।
পাদের দায় আরেকজনে স্বীকার করে কোটিপতি?? তা আবার কেমনে সম্ভব জিজ্ঞেস করলাম দাদিকে।
দাদি বললো: উগান্ডায় এক দাদা অনেক মানুষের ভিড়ে পাদ দিয়েছিলো.. কে পাদ দিছে সবাই জানতে চাইলে তার ছোট্ট নাতিটি তার দাদা পাদ দিছে জেনেও বলেছিলো সে নিজেই পাদটি দিয়েছে আর দাদা তা দেখে খুশি হয়ে পুরো সম্পত্তি ওই ছোট্ট নাতিটির নামেই করে দেয়।
আহা ভাগ্য.....
সেদিন বড় মামার সাথে স্টেডিয়াম গেছিলাম খেলা দেখতে.. স্টেডিয়ামে বসে,বসে খেলা দেখছিলাম আমাদের পাশে আরো অনেক লোকজন ছিলো।
কিছুক্ষণপর আমি পরিষ্কার শুনলাম মামা টুশ করে একটা পাদ দিছে, আশেপাশের লোকেরা গন্ধে জিজ্ঞেস করতে লাগলো পাদ কে দিছে.. আমার তাৎক্ষণিক দাদির বলা ঘটনাটি মনে পড়ে গেলো। মনে,মনে ভাবলাম মামারতো অনেক সম্পত্তি মামার পাদের দায় আমি স্বীকার করলে যদি কিছু সম্পত্তি পাই তাহলেতো আমি লাল হয়ে যাবো।
আমি আর দেরি না করে সাথেসাথে বলে দিলাম পাদটি আমি দিয়েছি।
আশেপাশের লোকেরা দেখি তেমন কিছু বললোনা।
আরেকটুপর আমি আবারো পরিষ্কার শুনতে পেলাম মামা আরেকটি টিশশ করে পাদ দিছে...গন্ধে আশেপাশের লোকজন আবারো বলতে শুরু করলো কে দিলো পাদ??
আমি আবারো বললাম আমি,আমিই দিয়েছি পাদ...
আশেপাশের লোকজনরা এইবার আর বসে থাকেনি বলতে শুরু করলো: এইখানে খেলা দেখতে এসেছিস?? নাকি আমাদের খেলা দেখাটা মার্ডার করতে এসেছিস??
আশেপাশের লোকেরা এসে আমাকে ধুমধাম করে পিটাতে লাগলো, এরপর আমার আর কিচ্ছু মনে নেয় আমার যখন জ্ঞান আসে আমি তখন বাসায়, আম্মুর কাছ থেকে জানতে পারিযে মামা আমায় রিজার্ভ গাড়ি ঠিক করে আমাকে একা বাসায় পৌঁছে দিয়েছে এবং মামা সেইখানে খেলা দেখতেছে।
ডাক্তার ও ঔষুধের খরচ ১০৭০টাকা আর গাড়ি ভাড়া ৩৫০টাকা দুটাই আম্মুর থেকে দিতে হয়েছে।
আহা কপাল আহা!! যে মামা ৩৫০টাকা অটো ভাড়া দিতে পারেনি সেই মামা দিবে আমায় সম্পত্তি??
আহা টুশ পাদ,আহা টাশ পাদ আমার জীবনটাই অতিষ্ঠ করে দিলি.