08/07/2025
এখন বাজে রাত ৪.২০আমি এখন ও জেগে অনেক ঘুমানোর চেষ্টা করছি কিন্তু জানিনা কেনো ঘুম আসছে না। একটু চোখ বন্ধ করতেই হঠাৎ
রাত গভীর। চারপাশে নিস্তব্ধতা। ঘরের ভেতরে ছায়া আর আলো মিশে আছে মশারির পাতলা কাপড়ে।
আমি তখন বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে, আমার বড় ছেলে ঘুমিয়ে আছে পাশের রুমে।
আর আমার ছোট ছেলে – সে ঘুমাচ্ছে পাশে, নির্ভার নিদ্রায়। আমি ঘুম থেকে উঠে বড়ছেলের রুমে গেলাম তাকে দেখতে সে ঠিকঠাক ভাবে ঘুমিয়ে আছে কিনা তার গায়ে কাঁথাটা আছে কিনা।
হঠাৎ আমার চোখ পড়লো বড় ছেলের মাথার কাছে।
একটা ছোট্ট বাচ্চা শুয়ে আছে সেখানে।
আমি থমকে গেলাম।
এই বাচ্চা কে?
সে তো একদম অবিকল আমার ছোট ছেলের মতো — যখন সে দেড় বছর বয়সী ছিল, ঠিক তখনকার মতই!
একদম সেই চেহারা, সেই নিষ্পাপ মুখ, সেই হাসি!
আমি ধীরে ধীরে তাকে কোলে নিলাম।
সে ঘুমিয়ে আছে, কিন্তু তার মুখে এক অপার্থিব শান্তি।
আমার মন ভরে গেল স্নেহে, ভালোবাসায়।
তবুও মনে একটা অজানা ভয় —
"এই ছোট্ট ছেলেটা এখানে কিভাবে এলো? কেন?"
আমি চারপাশে তাকালাম।
না, আমার বর্তমান ছোট ছেলে তো খাটেই শুয়ে আছে, সে তো এখন বেশ বড় 4 এ পড়ে।
তাহলে...
এই দেড় বছরের অবিকল সেই রূপের শিশুটা কোথা থেকে এলো?
তবুও আমি তাকে বুকে জড়িয়ে রাখলাম।
আমার আম্মাও পাশে এসে দাঁড়ালেন।
আমরা দুজনে মশারি টাঙিয়ে দিলাম তার চারপাশে।
সে মশারির ভেতরেই খেলা করছে — ছোট ছোট হাত নাড়িয়ে, খিলখিলিয়ে হেসে উঠছে।
কখনো চোখ বন্ধ করে হাসছে, কখনো চোখে চোখ রেখে মুখে হাসি ফুটাচ্ছে।
এক অপার্থিব আনন্দে সে খেলা করছে —
হয়তো সে এসেছিল কিছুক্ষণ ভালোবাসা নিতে, কিংবা ভালোবাসা দিতে।
সে ক্ষুধার্ত ছিল — কিন্তু তৃপ্ত।
সে যেন জানতো, এখানে তার ভালোবাসার মানুষ আছে — তার মা, তার নানী — যাদের কোলেই সে নিরাপদ।
আমি সেই ঘুমন্ত স্বপ্নের মাঝেই বুঝে গিয়েছিলাম,
এই বাচ্চাটা সময় নয়, রক্ত নয় —
সে আমার ভালোবাসার স্মৃতি।
সে আমার স্নেহের ছায়া।
সে আমার হারিয়ে যাওয়া সময়ের জীবন্ত ছবি।
এই রাতে ঘুম ভাঙার পরেও, বুকের ভেতর থেকে একটা নরম আর স্পর্শকাতর উষ্ণতা রয়ে গিয়েছে
হয়তো সত্যিই, আমাদের ভালোবাসা কখনো হারায় না —
তা স্মৃতির রূপ নিয়ে, স্বপ্নের পর্দা ভেদ করে ফিরে আসে…
আবার আদর নিতে, আবার আদর দিতে।