Chatwa Kora Vlog

  • Home
  • Chatwa Kora Vlog

Chatwa Kora Vlog ᱦᱩᱞ ᱥᱟ.ᱭ ᱡᱚᱦᱟᱨ�
হুল সায় জঁহার
I am Chatwa Kora My Flows Page And YouTube Channel ���

03/02/2025

Tukary Dom Taha Kana // New Santali viral video song 2025

04/11/2023

Bahu nel nepel kana ku 👸👸 Santali traditional cultural 🥰

21/07/2023

সাঁওতাল সম্প্রদায়ের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের সাক্ষী হোন যখন তারা নিপীড়নের বিরুদ্ধে উঠেছিলেন এবং তাদের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন। 🌾 ✊..

18/07/2023









29/06/2023

ᱦᱩᱞ ᱡᱚᱦᱟᱨ
ᱥᱟᱱᱛᱟᱞ ᱦᱩᱞ (Santal Hul संथाल हुल)
30 June 1855 #ᱦᱩᱞ #ᱡᱚᱦᱟᱨ #संथालहुल

25/06/2023

ᱥᱤᱫᱳ ᱠᱟᱱᱦᱩ ᱦᱩᱞ ᱡᱚᱠᱷᱟᱜ ᱴᱟᱢᱟᱠ ᱫᱚ ᱟᱰᱤᱜ ᱞᱟᱜᱛᱤ ᱛᱟᱸᱦᱮᱠᱟᱱᱟ

20/06/2023

16_jun_gangarampur_rajshahi_bonodh_laita_saj_saprwo_santali_news_video_song_2023___Chatwa_Kora_Vlog

18/06/2023

your neighbour:: Santal.. #সাঁওতাল #ইংরেজি : Santal। # Overview #

ভারত ও বাংলাদেশে বসবাসকারী আদিবাসী বিশেষ। প্রায় ৬৫ হাজার বৎসর আগে, আফ্রিকা থেকে নরগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ ধীরে ধীরে অন্যান্য মহাদেশের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল। এই দলটি প্রোটো-অস্ট্রালয়েড নামে বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছেন। এদের গায়ের রং কালো, নাক অনুচ্চ, চুল কালো ও কুঞ্চিত, উচ্চতা মাঝারি। প্রোটো-অস্ট্রালয়েড মানব হিসেবে এদের সাথে বিশেষ নৃতাত্ত্বিক ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে মুণ্ডা ও মালপাহাড়িদের সাথে। আবার দ্রাবিড় সংস্কৃতিরও কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য এদের ভিতরে পাওয়া যায়।
এদের ভাষার নাম সাঁওতালি। উল্লেখ্য এই ভাষাটি অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষা পরিবার-এর অন্তরর্গত। সাধারণভাবে এদের ভাষাকে অস্ট্রিক ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্গত ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অস্ট্রিক ভাষাভাষী মানুষদের একটি বড় অংশ ভারতবর্ষের প্রবেশ করেছিল খাইবার বোলান গিরিপথ দিয়ে। গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডাস-এর বিবরণ থেকে জানা যায়, সিন্ধু ও বেলুচিস্থানের কুটির শিল্পীদের বলা হতো সান্তাল। এই অঞ্চলে কিস্কু এবং মাণ্ডি গোষ্ঠীর লোকের সমভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠার কারণে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই সময় চাম্পা অঞ্চল ত্যাগ করে সান্তালরা উত্তর ও পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সাঁওতালরা ভারত-উপমহাদেশের কৃষির পত্তন ঘটিয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন।
আর্যদের ভারতবর্ষে প্রবেশের পর বিভিন্ন অনার্যগোষ্ঠীর ভিতরে বিবাহাদি হতে থাকে। এই সময় আর্যদের আধিপত্য স্বীকার না করায়, অনেক স্থলে অনার্যদের সাথে আর্যদের সংঘর্ষ হয়। আর্যরা অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী হওয়ায়, অনার্যদের অনেকে জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। দীর্ঘদিন ধরে নগর সভ্যতার সাথে সম্পর্কীহীন থাকায় এরা অরণ্যচারী আদিবাসীতে পরিণত হয়। একালের সাঁওতালরা হলো সেই বিদ্রোহী অরণ্যচারী সাঁওতালদের উত্তরপুরুষ। পূর্ব-ভারতে পালিয়ে আসা সাঁওতালরা বনে জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে এক সময় ছোটনাগপুর অঞ্চলে বসতী স্থাপন করে। যতদূর জানা যায়, এই অঞ্চলে মৌর্য সাম্রাজ্যের উত্থানের সময় পর্যন্ত (খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০ অব্দ) এরা বেশ শান্তিতেই ছিল। এরপর থেকে সাঁওতালদের সাথে ভারতীয় মিশ্রজাতির লোকদের তিক্ততার সৃষ্টি হতে থাকে। তবে গোড়ার দিকে এই অসন্তোষ বড় হয়ে দেখা দেয় নি। নবাবী আমল পর্যন্ত সাঁওতালরা নিজেদের মতও চলতো। ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা দখল নেওয়ার পর, স্থানীয় জমিদার এবং পুলিশ প্রশাসনকে কর ও উৎকোচ প্রদানের ভার, ইউরোপীয় নীল-ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তাদের নানাবিধ অত্যাচারে সাঁওতালদের জনজীবনকে দুর্বিসহ হয়ে উঠে। এই সূত্রে ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সাঁওতালরা কোম্পানির শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ইতিহাসে এই বিদ্রোহকে বলা হয় 'সাঁওতাল বিদ্রোহ'।
সাঁওতালরা নিজেদেরকে খেরওয়াল বংশ বলে পরিচয় দেয়। গিবার্সন তাঁর 'Linguistic survey of India' গ্রন্থে লিখেছেন সাঁওতাল, মুণ্ডারি, ভূমিজ, কোড়া হো টুরি, আসুরি এবং কোরওয়া একই ভাষার ভিন্ন ভিন্ন রূপ। এই সব আদিবাসীদের সকলকে এক সময়ে "খেরওয়ার বা থারওয়া' বলা হতো।
সাঁওতালরা বাংলাদেশের রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া জেলায় বসবাস করে। অন্যদিকে ভারতের রাঢ়বঙ্গীয় অঞ্চল, বিহার ও উড়িষ্যার অরণ্যাঞ্চল এবং ছোটনাগপুরে বসবাস করে।
১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারিতে দেখা যায় যে পাবনা, যশোর, খুলনা, এমনকি চট্টগ্রাম জেলায়ও অল্প সংখ্যায় সাঁওতালদের বসতি ছিল। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের জরিপ অনুযায়ী বর্তমান বাংলাদেশ এলাকায় সাঁওতালদের সংখ্যা ছিল প্রায় আট লক্ষ। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাক-ভারত বিভাগের পর লোকগণনার সময় সাঁওতালদের স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে গণ্য করা হয় নি। ফলে বহুদিন তাদের যথার্থ সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয় নি। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারি অনুযায়ী সাঁওতাল জনসংখ্যা দুই লক্ষের বেশি। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের জরিপে এদের মোট সংখ্যা জানা যায় নি।
সাঁওতাল নামের উৎপত্তি
ধারণা করা হয় সংস্কৃত সামান্ত পাল (সীমান্ত রক্ষক) শব্দটি মধ্যযুগে 'সামন্ত আল' শব্দে পরিণত হয়েছিল। প্রাচীন মেদেনীপুরের একটি অংশের নাম ছিল সাওন্ত বা সামন্তভূমি। এই শব্দই সাঁওতালদের ভিতরে শাওনতার হিসেবে প্রচলিত হয় বেশ আগে থেকে। কালক্রমে সাওন্ত>সাওন্তাল বা শাওনতার থেকে সাঁওতাল শব্দটির প্রচলন হয়।
সাঁওতালদের গোত্র-উপগোত্র
আফগানিস্তানের অংশবিশেষের নাম ছিল কান্দাহার বা গান্ধার। আর সমগ্র সিন্ধু প্রদেশের নাম ছিল চায় চাম্পা। চাম্পা অঞ্চলে সান্তালদের ছিল ১৪টি গোষ্ঠীর ১৪টি কেল্লা বা গড়। এই গড়গুলো হলো—
১.কুটামপুরি গড় (হাঁসদা গোষ্ঠী)
২. ময়নামতী গড় (হাঁসদা গোষ্ঠী)
৩. কঁয়ড়া গড় (কিস্কু গোষ্ঠী)
৪. চাম্পা গড় (মুর্মু গোষ্ঠী)
৫. যায়রি গড় (হেমবম গোষ্ঠী)
৬. বাদোলী গড় (মাণ্ডি গোষ্ঠী)
৭. চায়গড় (সরেন গোষ্ঠী)
৮. সিমগড় (টুডু গোষ্ঠী)
৯. লুই বাড়ি লুকুই গড় (টুডু গোষ্ঠী)
১০. হারবালোয়ং গড় (বাস্কে গোষ্ঠী)
১১, বানসারিয়া গড় (বেসরা গোষ্ঠী)
১২. জাঙ্গেকোডে গড় (চঁড়ে গোষ্ঠী)
১৩. বামাগড় (পাউড়িয়া গোষ্ঠী)
১৪. হলংগাড়া গড় (বোয়ালি গোষ্ঠী)
বর্তমানে সাওঁতালদের মোট ১২টি গোত্রের নাম পাওয়া যায়। এই গোত্র গুলো হলো— কিস্কু, হাঁসদা, মুর্মু, হেমব্রম, মাণ্ডি, সরেন, টুডু, বাস্কে, বেশরা, চঁড়ে, পাঁউরিয়া ও বেদেয়া। এদের ভিতরে বর্তমানে বেদেয়া গোত্রের লোক দেখা যায় না। এদের ভিতরে কিছু গোত্র কিছু কিছু বিশেষ কাজে দক্ষ ছিল। এই সকল গোত্রের লোকেরা কাজের সূত্রে বিশেষ নামে অভিহিত হতো।
#সরেন সেপাই: সরেনরা একসময় সৈনিক হিসেবে কাজ করতো।
#কিস্কু রাপাজ: রাজ্য চালনায় সুদক্ষ ছিল। এই কারণে এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো।
মাণ্ডি কিসাঁড়া বা কিলিপসাড়: মাণ্ডিরা কৃষিকাজ করতো বলে এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো।
#মুর্মু ঠাকুর: পৌরিহত্য করতো বলে, এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো।
এছাড়া অন্যান্যরা পৃথক নাম না পেলেও, তারাও বিশেষ কাজে পারদের্শী ছিল। যেম হেমব্রমরা করতো দেওয়ান-এর কাজ, বাস্কেরা করতো ব্যবসা, হাঁসদা এবং টুডু-রা ছিল লোহার কর্মকার। এই গোত্রের লোকেরা নাকাড়া জাতীয় মাদল বাজনাতেও দক্ষ ছিল। আগে সাঁওতালরা নিজ নিজ গোত্রের জন্য চিহ্ন ব্যবহার করতো। বিশেষ করে গরু মহিষের গায়ে এরা নিজ গোত্রের চিহ্ন ব্যবহার করতো। ফলে তাদের গোত্রের প্রাণী খুঁজে পাওয়া সহজ ছিল।
প্রতিটি গোত্রের রয়েছে নিজস্ব ধর্মীয় প্রতীক বা টোটেম। প্রতিটি গোত্রের রয়েছে বেশকিছু উপগোত্র। এ সকল উপগোত্রেরও রয়েছে পৃথক টোটেম। এই টোটেম নির্ভর ভাবনা থেকে এদের উপগোত্রে কিছু বিধিনিষেধ বা ট্যাবু মান্য করা হয়। নিচে গোত্র-ভিত্তিক পরিচয় তুলে ধরা হলো।
১. হাঁসদা গোত্র: সমাজে এদের প্রধান পরিচয় লোহার কর্মকার হিসেবে। এদের গোত্রীয় চিহ্ন এবং টোটেম ছিল হাঁস। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– সিঁদুর, সাদা রঙ, বুনো ছত্রাক, বেনা ঘাস ইত্যাদি। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র হাঁসদা। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ হাঁসদা, অবর হাঁসদা, কাঁড়া ওজা হাঁসদা, কাঁহু হাঁসদা, কুণ্ডা হাঁসদা, কুহি হাঁসদা, কেডওয়ার হাঁসদা, গাড় হাঁসদা, চিল বিন্দা হাঁসদা, জিহু হাঁসদা, নায়কে থিল হাঁসদা, পিট কাণ্ডা হাঁসদা, মাঝি থিল হাঁসদা, যুগী হাঁসদা, রকলুতুর হাঁসদা, রাতওয়ারা হাঁসদা, সলে হাঁসদা, সাঁক হাঁসদা, সাদা হাঁসদা,
২. কিস্কু: রাজ্য চালনায় সুদক্ষ ছিল। এই কারণে এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো। কিস্কুদের চিহ্ন ছিল লাঠি। এদের টোটেম শঙ্খচিল। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– কেয়াফুল, সাদা রঙঁ, শকুন, ঘোড়া, কাঠ বিড়াল এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র কিস্কু। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ কিস্কু, অবর কিস্কু, আড কিস্কু, আবে কিস্কু, কাডা কিস্কু, কাতওয়ার কিস্কু, গাড় কিস্কু, জিহু কিস্কু, টিকা কিস্কু, নায়কে মিল কিস্কু, পাটি কিস্কু, বাদার কিস্কু, বিটল কিস্কু, মাঝি মিল কিস্কু, লাৎ কিস্কু, রকলুতুর কিস্কু, লাহের কিস্কু, সন কিস্কু, সাদা কিস্কু।
৩. মুর্মু: পৌরিহত্য করতো বলে, এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো। এদের চিহ্ন ছিল লম্বা মই। এদের টোটেম নীলগাই। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– চাঁপাফুল, কুড়চিফুল, পলাশফুল, সাদা রং। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
#মূল উপগোত্র মুর্মু। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ মুর্মু, অবর মুর্মু, কাডা মুর্মু, কুড়াম মুর্মু, কোলহা মুর্মু, গাজার মুর্মু, চাপোয়ার মুর্মু, জিহু মুর্মু, টিকা বা তিলক মুর্মু, টুটি মুর্মু, টুরকু লুনাম মুর্মু, নায়কে মিল মুর্মু, পোণ্ডু মুর্মু, বাদাড় মুর্মু, পোয়ার মুর্মু, বিটল মুর্মু, বোওয়ারা মুর্মু, মাঝি মিল মুর্মু, যুগি মুর্মু, লাৎ মুর্মু, সাওয়ার মুর্মু, সাং মুর্মু, সাদা মুর্মু, হাণ্ড মুর্মু।
৪. মাণ্ডি: এদের অন্য নাম মাণ্ডি কিসাঁড়া বা কিলিপসাড়। এরা কৃষিকাজ করতো বলে এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো। এদের চিহ্ন ছিল তীর। এদের টোটেম খেরদা নামক ঘাস। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– পিয়াল গাছ, ধ গাছ, ঘোড়া, সোনা, মিরুবাহা নামক ফুল। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
#মূল উপগোত্র মাণ্ডি। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অবর মাণ্ডি, কাডা মাণ্ডি, কুলমি মাণ্ডি, কেদওয়ার মাণ্ডি, গদা মাণ্ডি, জনক মাণ্ডি, টিকা মাণ্ডি, টুরকু লুখাম মাণ্ডি, থাণ্ডা যোগাও মাণ্ডি, থিরু মাণ্ডি, নায়কে মিল মাণ্ডি, পোণ্ড মাণ্ডি, বাবড়ে মাণ্ডি, বিটল মাণ্ডি, বুবু বেরেৎ মাণ্ডি, ভগো মাণ্ডি, মাঝি মিল মাণ্ডি, মাড় মাণ্ডি, যারা মাণ্ডি, যুগী মাণ্ডি, রকলতুর মাণ্ডি, রত মাণ্ডি, রূপা মাণ্ডি, লাকি মাণ্ডি, সাদা মাণ্ডি, সিদুপ মাণ্ডি, হেগেল মাণ্ডি।
৫. হেবব্রম: দেওয়ান-এর কাজ করতো। এদের চিহ্ন ছিল আঁকশি। এদের টোটেম সুপারি। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– আমলকি গাছ, শকুন, তসর, শাঁখা, সাদা রং। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র হেবব্রম। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ হেবব্রম, অবর হেবব্রম, কুওয়ার হেবব্রম,গাড় হেবব্রম, গুয়া হেবব্রম, গুয়া সরেন হেবব্রম, ঠাকুর হেবব্রম, চাষা হেবব্রম, দাতেলা হেবব্রম, নায়কে মিল হেবব্রম, বাদার হেবব্রম,বিটল হেবব্রম, মাঝি মিল হেবব্রম, লাহের হেবব্রম, সলে হেবব্রম, সাৎ হেবব্রম, সাদা হেবব্রম, হাট হেবব্রম, হাণ্ডি হেবব্রম।
৬. সরেন: সরেনরা একসময় সৈনিক হিসেবে কাজ করতো। সেই থেকে সরেন সৈনিক নামে এরা পরিচিতি লাভ করে। এদের গোত্রীয় চিহ্ন ছিল হাঁস। এদের টোটেম সপ্তর্ষিমণ্ডল। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– আমলকি গাছ, শকুন, তসর, শাঁখা, সাদা রং, সিঁদুর। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র সরেন। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ সরেন, অবর সরেন, খাণ্ডা (বাদর) সরেন, গুয়া সরেন, চেহেল সরেন, জিহু সরেন, টুরকু সরেন, দাঁতেলা সরেন, নায়কে মিল সরেন, পেন্ড সরেন, বাজি সরেন, বিটল সরেন, মাও সরেন, মাঝি সরেন, মাণ্ডা সরেন, মাল সরেন, যুগী সরেন, রকতুল সরেন, লুমাম সরেন, সাঁক সরেন, সাজা সরেন, সাদা সিদুপ সরেন, সিদুপ সরেন।
৭. বাস্কে: এদের মূল পেশা ছিল ব্যবসা। এদের চিহ্ন ছিল লাঙ্গল। এদের টোটেম পান্তাভাত। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– কাঠ বিড়াল, সোনা, শকুন। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র বাস্কে। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ বাস্কে, অবর বাস্কে, কুহি বাস্কে, কেদওয়ার বাস্কে, গাড় বাস্কে, জাহের বাস্কে, জিহু বাস্কে, ঠুন্টা বাস্কে, নায়কে মিল বাস্কে, পটম বাস্কে, বিটল বাস্কে, বিন্দার বাস্কে, ভিডি বাস্কে, মাঝি মিল বাস্কে, মুণ্ডা বাস্কে, লাৎ বাস্কে, সাদা বাস্কে, সারুগতা বাস্কে, সুড়ে বাস্কে, হেন্দে বাস্কে।
৮. বেসরা: এদের চিহ্ন ছিল ঢেরা। এদের টোটেম বাজপাখি। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– কাক, শকুন, নিমকাঠি, হাঁড়িয়া। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র বেসরা। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ বেসরা, অবর বেসরা, কাহু বেসরা, কুসি বেসরা, গাড় বেসরা, গুয়া বেসরা, নায়কে মিল বেসরা, বাস্কে বেসরা, বিন্দাড় বেসরা, মন বেসরা, মাঝি বেসরা, রকলুতুর বেসরা, লাৎ বেসরা, সাদা বেসরা।
৯. টুডু: এর ছিল লোহার কর্মকার। এদের চিহ্ন ছিল টুইডুদের 'বৃত্তের ভিতর কাটা'। এদের মূল গোত্রে টোটেম জানা যায় নি। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– সোনা হাঁড়িয়া। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র টুডু। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ টুডু, অবর টুডু, আঙ্গারিয়া টুডু, কুডাম টুডু, খরহারা টুডু, গাড় টুডু, চিমি টুডু, চুরুচ টুডু, তিলক টুডু, দাতেলা টুডু, নায়কে মিল টুডু, বাঁবড়ে টুডু, বাস্কে টুডু, বিটল টুডু, ভক্তা টুডু, মাঝি মিল টুডু, যুগী টুডু, লাৎ টুডু, সাদা টুডু।
১০. চঁড়ে: এদের টোটেম গিরগিটি। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– শকুন ও সাদা রঙ। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র চঁড়ে। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ চঁড়ে, অবর চঁড়ে, কাহু চঁড়ে, গাড় চঁড়ে, চপেয়ার চঁড়ে, চাচারহাৎ চঁড়ে, ঠাকুর চঁড়ে, নায়কে মিল চঁড়ে, নিজ চঁড়ে, বিটল চঁড়ে, বিন্দার চঁড়ে, মাঝি মিল চঁড়ে, লাৎ চঁড়ে, সাদা চঁড়ে, সিঁদুর চঁড়ে।
১১. পাউরিয়া: এদের টোটেম পায়রা। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– শকুন কাঠ বিড়াল ও সাদা রঙ। এদের উপগোত্রগুলো হলো–
মূল উপগোত্র পাউড়িয়া। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ পাউড়িয়া, অবর পাউড়িয়া, গাড় পাউড়িয়া, চাউরিয়া পাউড়িয়া, নায়কে মিল পাউড়িয়া, নিজ পাউড়িয়া, পটম পাউড়িয়া, বিটল পাউড়িয়া, ভিতার পাউড়িয়া, মাঝি মিল পাউড়িয়া, মুণ্ডা পাউড়িয়া, লাৎ পাউড়িয়া, সাদা পাউড়িয়া, সিদুপ পাউড়িয়া, সোনা পাউড়িয়া।
১২. বেদেয়া: এই গোত্রের নাম কিছু বই পত্রে পাওয়া যায়। কিন্তু এদের সন্ধান পাওয়া যায় না। সম্ভবত এরা অন্য কোনো গোত্রের সাথে মিশে গেছে।
টোটেম-এর উপর ভিত্তি করে সাঁওতালদের গোত্রে নানা ধরনের প্রাণী হত্যা বা আচরণগত ট্যাবু মান্য করে। যেমন যে সকল গোত্রে সাদা রঙ টোটেম। তাদের মেয়েরা শাঁখা পড়ে না, সাদা মুরগী খায় না। যাদের ঘোড়া টোটেম। তারা ঘোড়া হত্যা করে না, ঘোড়া স্পর্শ করে না। দূর থেকে ঘোড়াকে প্রণাম করে।
সাঁতালদের ধর্ম বিশ্বাস
সাঁওতালরা মূলত ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে সর্বপ্রাণবাদী ও প্রকৃতি উপাসক। তবে মূর্তি পূজার চল নেই। এদের সৃষ্টিকর্তার নাম 'ঠাকুরজিউ'। তবে সাঁওতাল পৌরাণিক কাহিনীতে একজন পরমস্রষ্টার কথা পাওয়া যায়। সাঁওতলাদের সৃষ্টি তত্ত্ব মতে,
আদিতে পৃথিবীতে জল ছাড়া আর কিছু ছিল না। একদিন চাঁদের মেয়ে স্নান করার সময়, তার শরীরের ময়লা দিয়ে এক জোড়া হাঁস তৈরি করলো। হাঁস দুটি অনেকদিন জলে ভেসে থাকার পর, এরা সৃষ্টিকর্তার কাছে খাবার প্রার্থনা করলো। সৃষ্টিকর্তা এই সময় মাটির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করলেন। সমুদ্রের তলদেশ থেকে মাটি তুলে আনার জন্য রাঘব বোয়াল, কাঁকড়া ও কচ্ছপদের দায়িত্ব দেওয়া হলো। এরা ব্যর্থ হলে, এই কাজ সম্পন্ন করলো কেঁচো। কেঁচো জলের উপর ভেসে থাকা কচ্ছপের পিঠের উপর লেজ রেখে, সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে মাটি খেতে থাকল এবং তা লেজ দিয়ে বের করে দিতে থাকলো। এই ভাবে বিরাট কচ্ছপের পিঠের উপর সরের মতো মাটি জমে জমে পৃথিবী তৈরি হলো।
এর কিছুদিন পরে হাঁসা দু'টো ডিম পাড়ল, এই ডিম ফুটে জন্ম নিল এক নারী ও পুরুষ। এদের নাম ছিল পিলচু হাড়াম ও পিলচু বুড়ি। পৃথিবীর আদি মানব-মানবী বাস করতো হিহিড়ি-পিহিড়ি নামক স্থানে একটি জায়গায়। এদের মাধ্যমে আদিতে সাত কন্যা ও সাত পুত্রের জন্ম হয়। পিলচু হাড়াম ও পিলচু বুড়ি ঈশ্বরের নির্দেশমতো পুত্র ও কন্যাদের নিয়ে সিংবীর ও মান্বীর নামক দুটি পৃথক স্থানে রাখা হলো। হাড়াম ছেলেদের বারণ করল কখনও মান্বীরে না যেতে। বুড়িও কন্যাদের নিষেধ করল সিংবীরে না যেতে। কিন্তু ঘটনাক্রমে এদের ভিতর দেখা হয়ে যায় এবং এরা বিবাহ করে। এই সূত্রে তৈরি হয় সাতটি বংশের- হাঁসদা, মুমু, কিস্কু, হেমব্রম, মারান্ডি, সোরেন ও টুডু৷ গোত্রের লোকেরা। পৌরাণিক কাহিনী ভেদে সাঁওতালদের গোত্রের সংখ্যা ১৪ বা ১২টিও পাওয়া যায়।
এদের প্রধান উপাস্য দেবতা সিং বোঙ্গা (সূর্য দেবতা)। পর্বত দেবতা মারাং বুরু এদের ধর্মে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এই দেবতা সমতলের সাঁতালদের কাছে গ্রামদেবতা হিসেবে পূজিত হয়ে থাকে। আর গৃহদেবতা হিসেবে তাই 'আবে বোঙ্গা'-কে মান্য করা হয়। নতুন গ্রামের পত্তন হলে, গ্রামের ভিতর দিয়ে একটি রাস্তা তৈরি করা হয়। এই রাস্তার মুখে শালকুঞ্জ তৈরি করে, তাতে মারাংবুরুকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। একে বলা হয় জাহের থান। এরূপ আর এজন দেবীকে গ্রামবাসী পূজা করে। এই দেবীর নাম জাহের এরা।
সাঁওতালদের বিশ্বাস আত্মা অমর এবং সেই অনৈসর্গিক আত্মাই (বোঙ্গা) সব ঐহিক ভালমন্দ নির্ধারণ করে থাকে। তাই দৈনন্দিন পূজা-অর্চনায় বোঙ্গা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
সাঁওতালদের উৎসব
সাঁওতালরা খুবই উৎসবপ্রিয় জাতি। বাঙালিদের মতো এদেরও বারো মাসে তেরো পার্বণ। এদের বছর শুরু হয় মাঘ মাসে। প্রায় প্রতিমাসে পরব বা উৎসব। এই উৎসবে নৃত্যগীতবাদ্য সহযোগে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই উৎসবগুলো বিভিন্ন নামে অভিহিত হয়ে থাকে। যেমন—
স্যালসেই: নববর্ষের মাস ফাল্গুনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
বোঙ্গাবোঙ্গি: চৈত্র মাসে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
হোম: বৈশাখে অনুষ্ঠিত উৎসব।
দিবি: আশ্বিন মাসে অনুষ্ঠিত উৎসব
সোহরাই: পৌষ পৌষ সংক্রান্তির দিন অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে এই উৎসব উদ্‌যাপিত হয়। এই উৎসবে ফসলের দেবতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। নাচ-গান-বাদ্য এবং ফুলের মনোরম শোভায় উৎসবটি বর্ণাঢ্য হয়ে থাকে। এর বড় আকর্ষণ সাঁওতাল তরুণীদের দলবদ্ধ নৃত্য করে।
বাহা: বসন্তকালে এই উৎসব হয়ে থাকে। একে বলা হয় ফুলফোটার উৎসব। বসন্তের শুরুতে এ উৎসবের উদ্দেশ্য নানা রঙের ফুলফোটার সৌন্দর্যকে অভ্যর্থনা ও অভিনন্দন জানানো। এই উৎসবেও থাকে নাচ-গান ও বাদ্যের সমারোহ। বসন্ত উৎসবের অন্যতম দিক হলো তরুণ-তরুণীদের জন্য চিত্তবিনিময়ের সুযোগ তৈরি করা। এ ধরনের চিত্তবিনিময় বা সঙ্গী-সঙ্গিনী নির্বাচনের কেন্দ্রস্থল হলো 'আখড়া'।
সাঁতালদের সমাজ
সাঁওতাল সমাজ প্রধানত কৃষিজীবী। কিন্তু আর্থ-সামাজিক কারণে দারিদ্র্য তাদের নিত্যসঙ্গী। তাই বাধ্য হয়ে অতি অল্প বিনিময়মূল্যে এরা চা বাগানে বা অন্যত্র শ্রম বিক্রয় করে। এছাড়া এরা মাটি কাটে, মোট বয় বা অনুরূপ দিনমজুরির কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে। এরা কঠোর পরিশ্রমে অভ্যস্ত। সাঁওতাল নারী-পুরুষ ওরাওঁদের মতো দেহে উল্কিচিহ্ন ধারণ করে। সাঁওতাল সমাজ এখনও ঐতিহ্যবাহী পঞ্চায়েতি ব্যবস্থায় পরিচালিত এবং গ্রামপ্রধান সমাজে বিশেষ মর্যাদা ভোগ করে থাকে। এই পঞ্চায়েত ৭টি পদস্থ ব্যক্তি পরিচালনা করে। এরা হলো- মাঝি, জগমাঝি, পারণিক, জগ-পারণিক, গোডেত, নায়কে ও কুডাম নায়কে।
মাঝি: গ্রামের সর্বময় কর্তা। জন্ম, মৃত্যু বিবাহ, পূজা ইত্যাদির জন্য অনুষ্ঠান এর নির্দেশে করা হয়। সাধারণত কোনো গ্রাম পত্তন হলে মাঝি আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে তা উদ্বোধন করেন। এছাড়া নতুন ঘর তৈরি, বাড়ির সীমানা নির্ধারণ, পূজার স্থান নির্বাচন, গ্রাম দেবতার প্রতিষ্ঠায় মাঝির নির্দেশই মান্য করা হয়। গ্রামের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মাঝির অধীনে কিছু কর্মী কাজ করে। মাঝির মৃত্যু হলে, তাঁর পুত্র বা ভাই মাঝি হয়। যদি এরূপ কোনো জ্ঞাতি না থাকে, তবে পরাণিক মাঝি হয়।
পরাণিক: মাঝির সহকারী এবং মাঝির পরবর্তী ক্ষমতাধর ব্যক্তি হলেন পরামাণিক। মাঝি গ্রামের বাইরে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে পরামাণিক মাঝির দায়িত্ব পালন করে। মাঝির মৃত্যু হলে, তাঁর পুত্র বা ভাই মাঝি হয়। যদি এরূপ কোনো জ্ঞাতি না থাকে, তবে পরাণিক মাঝি হয়।
জগমাঝি: মাঝির নির্দেশে গ্রামের যুবক-যুবতীদের নিয়ন্ত্রণ করে জগমাছি। বিশেষ করে যুবক-যুবতীরা অনৈতিক কাজ করলে, তার শাস্তির বিধান দেন জগমাঝি। সোহরাই উৎসবে গ্রামের সকল কম বয়সী ছেলেমেয়েরা জগমাঝির বাড়িতে অবস্থান করে। এই সময় যুবক-যুবতীদের ভিতর কোনো অসমাজিক কাজ হলে, জগমাঝিকে সমাজের কাছে কৈফিয়ত দিতে হয়। জগমাঝি তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে, তাকে মাঝির গোয়াল ঘরে বেধে রাখা হয়। উৎসবে জগমাঝি সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকা পালন করেন।
জগ পরাণিক: জগমাঝির সহকারী। জগমাঝির অবর্তমানে জগ পরাণিক তার দায়িত্ব পালন করেন।
গোডেত: মাঝির বার্তাবাহক এবং প্রচারক। মাঝির যে কোন আদেশ বা সংবাদ জানানো গোডেতের কাজ। অনেক সময় মাঝির নির্দেশে গোডেত, পুলিশের
মতো অপরাধীকে ধরে, মাঝির কাছে হাজির করে।
নায়কে: গ্রামের সকল ধরনের পূজার পৌরিহিত্য করেন।
কুডাম নায়কে: নায়কের সহকারী।
সাঁওতালদের বিবাহ ও পারিবারিক অবস্থা
সাঁওতাল সমাজে বাল্য বিবাহ এবং বহু বিবাহ নেই। বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তাদের বিবাহের ব্যবস্থা আছে। এদের স্বগোত্রের ভিতর বিবাহ হয় না। সাধারণভাবে পিতামাতা বা অভিভাবকদের পছন্দে এবং অনুমোদনে বিবাহ হয়। তবে জোর করে বিবাহ করার রীতিও সাঁতাল সমাজে আছে। বিবাহ বহির্ভুত যৌন সম্পর্ক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিবাহের প্রকৃতি অনুসারে, বিবাহ রীতিকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো–
কিরিঞ বীহু বাপলা: বিবাহযোগ্য সন্তানের জন্য, পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের অনুমতি নিয়ে ঘটকের সাহায্যে এই বিবাহ হয়। সাঁওতালি ভাষায় ঘটককে বল হয় 'রায়বার'।
টুঙকি দিপিল বাপলা: এই বিবাহ পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের অনুমতি সাপেক্ষে হয়। তবে এক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর পরিবার খুব দরিদ্র হলে এই বিবাহ সম্পন্ন হয়। এই জাতীয় বিবাহে কোনো অনুষ্ঠান হয় না। পাত্রপক্ষ সাধ্যমতো কন্যাপণ দিয়ে বিবাহ করে। এই বিবাহে কনে বাড়িতে কোনো আয়োজন হয় না।
অর আদের বাপলা: হিন্দুদের রাক্ষস বিবাহের মতো। এক্ষেত্রে কন্যার অমতে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে বিবাহ করা হয়।
ঞির বল বাপলা: পাত্র-পাত্রীর মধ্যে প্রণয় হলে এবং যদি পাত্রপক্ষ এই বিবাহে রাজি না থাকে, তাহলে মেয়েটি জগমাঝিকে জানায়। এরপর মেয়েটি জোর করে ছেলের বাড়িতে গিয়ে ঢুকে পড়ে। প্রথমাবস্থায় ছেলের বাড়ির লোকেরা মেয়েটিকে নানাভাবে অপমান করলেও যদি মেয়েটি নাছোড়অ বান্দার মতো থেকেই যায়, তখন জগমাঝি এদের বিবাহের ব্যবস্থা করে দেয়।
ইতুৎ সিঁদুর বাপলা: পাত্র-পাত্রীর মধ্যে প্রণয় হলে এবং যদি পাত্রীপক্ষ এই বিবাহে রাজি না থাকে, তাহলে ছেলেটি জোর করে মেয়েটির সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেয়। এর ফলে মেয়েটি ওই ছেলের বৌ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। উল্লেখ্য কোনো ছেলে যদি ইচ্ছাপূর্বক কোনো মেয়ের সিঁথিতে সিঁদুর বা কোনো গুঁড়ো লাগিয়ে দেয়, তাহলেও তা বিবাহ হিসেবেও গণ্য হয়। সাঁওতালরা সিঁদুরের প্রদানের প্রথাকে গভীরভাবে মান্য করে। সাঁওতাল মেয়েরা সারা জীবনের জন্য একজন পুরুষের সিঁদুরকেই গ্রহণ করে। বিধবা বিবাহের পর, তারা নতুন স্বামীর সিঁদুর পরে না। যদি মেয়েটিকে ছেলেটি তালাকও দেও, তাহলেও ওই মেয়ের পরে বিবাহ হলে সিঁদুর পরে না। উল্লেখ্য তালাকপ্রাপ্তা মেয়েকে বলা হয় 'ছাড়ুই'। ছাড়ুই হওয়া মেয়েকে সাঁওতাল সমাজের কেউ সম্মান করে না। এদের পরে বিবাহ হলে তাকে 'সাঙ্গা' বলে। সাঙ্গা বিবাহে কন্যাপণ কম লাগে।
কিরিঞ জাওয়ার বাপলা: এই জাতীয় বিবাহ সর্বসম্মতিতে হয়। তবে এক্ষেত্রে বরপণ দিতে হয়। এই জাতীয় বিবাহ সাঁওতাল সমাজে খুব কম দেখা যায়।
সাঁওতালদের মৃতদেহ সৎকার:
সাধারণত এরা মৃতদেহ দাহ করে। তবে অন্তঃসত্তা নারী এবং শিশুদের কবর দেওয়া হয়। কারো মৃত্যু হলে, গডেথ সেই সংবাদ গ্রামবাসীকে জানায়। আত্মীয়রা মৃতদেহে তেল হলুদ মাখে এবং কপালে সিঁদুর দেয়। এরপর একটি খাটিয়া করে মৃতদেহকে চৌরাস্তায় এনে কিছুক্ষণ রাখা হয়। অশরীরী আত্মা যাতে মৃত্সৎকারে বাধা না দেয়, সে জন্য তারা তুলাবীজ ও খই ছিটায়।
শ্মশানের চিতায় মৃতদেহকে দক্ষিণ দিকে মাথা রেখে শোয়ানো হয়। এই সময় মুরগির বাচ্চা বলি দেওয়া হয়। এদের বিশ্বাস মুরগির বাচ্চার আত্মা মৃত ব্যক্তির আত্মাকে স্বর্গে নিয়ে যাবে। মুখাগ্নি করে পরিবারের বড় ছেলে। বড় ছেলে না থাকলে আত্মীয়দের ভিতরে কোনো একজন। মুখাগ্নির পরে পরিবারের সবাইও চিতায় আগুন দেয়। চিতাভস্ম কোনো গাছের নিচে পুঁতে রেখে স্নান করে শুদ্ধ হয়। পরবর্তী পাঁচদিন ধরে শ্রাদ্ধ হয়। একে বলা হয় 'তেল নাহান'।
সূত্র :
বাংলাপেডিয়া
উত্তরবঙ্গের সাঁওতাল জাতি। দুলাল দাস।

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Chatwa Kora Vlog posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Chatwa Kora Vlog:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share