30/03/2025
রামাযান প্রসঙ্গ......
ইফতার------
রাসূলুল্লাহ (ছা:) বলেন সূর্যাস্তের সাথে সাথে ছায়েম তথা,ছিয়াম পালনকারী ব্যক্তি ইফতার করবে।
বুখারী হা/১৯৫৪
অথচ এই বাংলাদেশে সূর্যাস্তের তিন মিনিট পরে ইফতার করতে হবে বলে বিজ্ঞ আলেমগ মতবাদ দিয়ে এসেছে যুগের পর যুগ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করো কারণ ইহুদি নাসারারা তোমাদের মত ছিয়াম পালন করে এবং সূর্যাস্তের পরে তারা ইফতার করে তাদের থেকে বিরত থাকার জন্যই সূর্যাস্তের সাথে সাথে তোমরা ছিয়াম ভঙ্গ করো।
আলহামদুলিল্লাহ,
এই বছর থেকে ধর্ম উপদেষ্টা তিন মিনিট ভেঙ্গে দিয়ে সূর্যাস্তের সাথে সাথে সারা দেশে একযোগে ইফতার পালন করার জন্য প্রতিটা ইসলামিক বোর্ডে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।
মাঝখানে তিন মিনিট আগের বিজ্ঞ আলেমগণ কোথায় রাখত এটা প্রশ্ন।
সাহারী প্রসঙ্গ.......
সাহারীর আযান দেওয়া সুন্নত রাসূলুল্লাহ (ছা:) এর যামানায় তাহাজ্জুদ ও সাহারীর আযান বেলাল (রা:) দিতেন এবং ফজরের আযান অন্ধ ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম (রা:) দিতেন।তাই রাসূলুল্লাহ (ছা:) বলেন বেলাল রাত্রি থাকতে আযান দিলে তোমরা সাহারীর জন্য খানাপিনা কর,যতক্ষণ না ইবনে উম্মে মাকতূম আযান দেয়।কেননা সে ফজর না হওয়া পর্যন্ত আযান দেয় না।
(মুত্তাফাক্ব 'আলাইহ, মিশকাত হা/৬৮০, দেরিতে আযান অনুচ্ছেদ 6; নয়ল ২/১২০)
তিনি আরো বলেন,বেলালের আযান যেন তোমাদেরকে সাহারী খাওয়া থেকে বিরত না করে। কেননা সে রাত্রি থাকতে আযান দেয় এজন্য যে, যেন তোমাদের তাহাজ্জুদ গোযার মুছল্লীগণ (সাহারীর জন্য) ফিরে আসে ও তোমাদের ঘুমন্ত ব্যক্তিগণ (তাহাজ্জুদ বা সাহারীর জন্য ) জেগে ওঠে।
(মুসলিম মিশকাত হাদিস হা/৬৮১ কুতুবে সিত্তাহ্ র সকল গ্রন্থ তিরমিযী ব্যতীত, নায়ল ২/১১৭-১৮)
এটা কেবল রামাযান মাসের জন্য ছিল না।বরং অন্য সময়ের জন্যও ছিল। কেননা রাসুলুল্লাহ (ছা:) এর যামানায় অধিক সংখ্যক ছাহাবী নফল ছিয়াম রাখতেন।
(মির'আত ২/৩৮২, হা/৬৮৫ এর আলোচনা দ্রষ্টব্য)
আজও রামাযান মাসের সকল মসজিদে এবং অন্য মাসে যদি কোন মসজিদের অধিসংখ্যক প্রতিবেশী নফল ছিয়াম যেমন,আশূরার দু'টি ছিয়াম, আরাফাহ্ র একটি ছিয়াম, শাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম ও তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হন, তাহলে ওই মসজিদে নিয়মিত ভাবে উক্ত আযান দেয়া যেতে পারে। যেমন মক্কা ও মদীনায় দুই হারামে সারা বছর দেয়া হয়ে থাকে।
সুরুজী প্রমুখ কিছু সংখ্যক হানাফী বিদ্বান রাসুলুল্লাহ (ছা:) এর যামানার উক্ত আযানকে সাহারীর জন্য লোকজনকে আহ্বান ও সরবে যিকর বলে দাবি করেছেন।
সহীহ্ বুখারীর সর্বশেষ ভাষ্যকার হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেন, এ দাবী 'মারদূদ' বা প্রত্যাখ্যাত।
কেননা লোকেরা ঘুম জাগানোর নামে আজকাল যা করে, তা সম্পূর্ণরূপে 'বিদ'আত' যা ধর্মের নামে নতুন সৃষ্টি।
উক্ত আযান এর অর্থ সকলেই আযান বুঝেছেন।যদি ওটা আজান না হয়ে অন্য কিছু হ'ত, তাহ'লে লোকদের ধোঁকায় পড়ার প্রশ্নই উঠতো না।
আর রাসূলুল্লাহ (ছা:)- কেউ সাবধান করার দরকার পড়তো না।
(ফাতহুল বারী শরহ ছহীহ্ বুখারী 'ফজরের পূর্বে আযান' অনুচ্ছেদ ২/১২৩-২৪)
উক্ত হাদিস দ্বারা বোঝা যায় যে,সাহারীর জন্য আযান একজন মোয়াজ্জিন দিবে এবং ফজরের সালাতের জন্য আজান আর একজন মোয়াজ্জিন দিবে এটাই ছহীহ্।
বাংলাদেশ এর এর ব্যতিক্রম বিদ'আত অনেক জায়গায় রয়েছে সুতরাং আমাদেরকে এই বিদ'আত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
উক্ত বর্ণনায় আরো প্রমাণিত হয় যে ফজরের সাথে সাথে সালাতের জন্য আযান দিলে ছিয়াম পালনকারী ব্যক্তি সাহারী খাওয়া বাকি থাকলে তা পরিপূর্ণ করবে।
এই বাংলাদেশে ফজরের সালাতের ৩-৫ মিনিট আগে সাহারী খাওয়া সম্পূর্ণ করে নিতে হবে এবং এর পরে ফজরের আযান হবে বিভ্রান্তিকর রেওয়াজটি অতি বিলম্বের বন্ধ করতে হবে।
ইনশাল্লাহ ইফতারের যেভাবে নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে সাহারী এই নিয়মটাও পরিবর্তন হবেই হবে ইনশাল্লাহ।
আসুন পবিত্র,
কুরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে জীবন গড়ি।