21/07/2025
বৈবাহিক ধর্ষণ, একাধিক বিয়ে ও তিন তালাক প্রসঙ্গ
প্রতিটা লাইন ২ বার করে পড়বেন এরপর মন্তব্য করেন
বাস্তবঘটনা বলছি।
ফতওয়া-টেবিলের কাহিনী।
স্বামী-স্ত্রী দুজনই হাজির। সাথে স্ত্রীর মা, তথা স্বামীর শাশুড়িও রয়েছে। সমস্যা হলো স্বামী স্ত্রীকে ৩তালাক দিয়েছে। প্রেক্ষাপট জিজ্ঞাস করার পর যা জানা গেল, তা মোটামোটি এরূপ :
স্বামী আজ দু মাস থেকে ‘ক্ষুধার্ত’। স্ত্রী তাকে সুযোগই দেয় না। স্ত্রী ১৬/১৭বছর বয়সী নিজ কণ্যাকে নিয়ে নিয়মিত ঘুমায়, স্বামীর কাছে আসেও না, স্বামীকে ঘেষতেও দেয় না। স্বামী বেচারা কয়েকবছর বিদেশ করার পর এখন ছুটিতে বাড়িতে। মাঝবয়সের চল্লিষোর্ধ পুরুষ। প্রথম দিকে খুনসুটি ও মানঅভিমান পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল। পরে তা নিয়মিত ঝগড়াবিবাদে পরিণত হয়। সবশেষে একেবারে ৩তালাকে গিয়ে গড়ায়।
ঘটনার দিন দুপুর রাতে এ দম্পত্তির ঝগড়া বাঁধে। স্বামী সইতে না পেরে প্রথমে হাড়ি পাতিল পিটাপিটি করেছিল। পরে ক্রোধান্বিত হয়ে তালাক দিয়ে দেয়- ৩তালাক।
স্বামীর দাবী হল, আজ দু মাস থেকে সে একবারের জন্যেও আমাকে সুযোগ দেয়নি। বরং ডাকলে ও অশ্লীল গালাগাল শুরু করে দেয়।
স্ত্রীর কথা ছিল, বুড়াকালে এগুলি কী? মেয়ে ও ছেলেরা এখন বড় হয়েছে। এ বয়সে বেটা মাইষের সাথে কেমনে শুইবে? স্ত্রী মিলনে বিলকুল অনীহ ছিল। অথচ স্বামী পূর্ণ ক্ষুধার্ত ছিল। স্ত্রীর এ গোয়ার্তুমিতে পূর্ণ সমর্থন ছিল শাশুড়ির। এ বুড়ো মহিলার উচিত ছিল নিজ মেয়েকে বুঝানো, যেন স্বামীকে কিছু হলেও সময় দেয়। কিন্তু না, বরং দুজন মিলেই পুরুষের ওপর মানসিক নির্যাতন শুরু করে। তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। বৈধ স্ত্রীর সাথে সহবাসের ইচ্ছাপোষণ নাকি লুচ্চামি, বদমায়েশি। কী আশ্চর্য ব্যাপার।
শেষমেষ যখন এ ঝগড়া তালাক পর্যন্ত গড়াল, তখন তাদের হুঁশ আসলো। তারা বুঝতে পারলো তালাকের চাইতে বৈবাহিক ধর্ষণ অনেক ভালো। দ্বিতীয় বিয়েও অনেক সহনীয়। এখন দু মহিলার কান্নাকাটি শুরু, ছেলে-মেয়েদের বিয়ে করানোর বয়সে মা এখন কোথায় যাবে?
এঘটনা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য, কথিত বৈবাহিক ধর্ষণের হাকিকত বুঝা। অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বামীর যৌনাচাহিদা পূরণ না করলে কী কী ক্ষতি রয়েছে।
স্ত্রী তার স্বামী বৈধ সম্ভোগপাত্র। তার সাথে যখন তখন সহবাস করার অধিকার শরীয়ত স্বীকৃত। হাঁ, স্ত্রীর অসুস্থতা বা ওজরের বিষয়টি লক্ষ্য রাখা উচিত। না-রাখা নৈতিকতা পরিপন্থী, তবে আইনপরিপন্থী নয়।
একটু বয়েষ হলে স্ত্রীদের মধ্যে নানা কারণে যৌন অনীহা সৃষ্টি হয়। ছেলেমেয়ে বড় হয়েছে, গোসল করলে লোকেরা কী বলবে, সন্তান ধারণের ভয়, শারিরীক দুর্বলতা ইত্যাদি। পক্ষান্তরের পুরুষ থাকে সবল, শক্তিশালী, আগ্রহী, অনুভূতিশীল, ভয়-লজ্জাহীন। এক্ষেত্রে সমাধানের উপায় কি? সে কোথায় তার যৌনচাহিদা পূরণ করবে?
সেক্ষেত্রে ৪টি অপশনের যেকোনো ১টি অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। তন্মধ্যে ২টি বৈধ, ২টি সম্পূর্ণ হারাম।
১। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে পারিবারিক ও সামাজিক অসহযোগিতা পূর্ণ মাত্রায় রয়েছে। স্ত্রী গু দেখতে পারবে, কিন্তু সতীন দেখতে পারবেনা। তা ছাড়া বহু স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের অর্থিক সঙ্গতি নাই।
২। স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ে না-মানলে স্বামী পরনারীতে আসক্ত হয়ে পড়বে। পরকীয়া জড়িয়ে পড়লে দুনিয়াও বরবাদ, আখেরাতও বরবাদ।
৩। স্বামী পতিতালয়ে গিয়ে সাময়িক চাহিদা পূরণ করবে। এতেও উপরিউক্ত উভয়বিধ ক্ষতি রয়েছে। সাথে রয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। কোনো মুমিন এ দু অপশন গ্রহণ করতে পারে না।
এ দুই ক্ষেত্রে পাপের দায় এবং সংসারিক অশান্তির দায় স্ত্রী এড়াতে পারে না।
রইল স্বামীকে সহবাসে স্বাগত জানানো। খানিক কষ্ট হলেও স্বামীকে বিপথগামিতা হতে রক্ষা করা জরুরী। এতে উভয়ের নেকিও রয়েছে। তা ছাড়া স্বামীর যৌনচাহিদা নিবারণে স্ত্রীর হাতে নানা কৌশল রয়েছে, নির্ধারিত পদ্ধতি গ্রহণ জরুরি নয়।
মোটকথা, জোরপূর্বক স্বামীসহবাসকে অপরাধ সাব্যস্ত করলে স্ত্রীদেরই ক্ষতি। তাদের ঘরে হয়ত সতীন আসবে, নতুবা তারা স্বামীকে পাপাচারের দিকে ঠেলে দিবে, যার দায় স্ত্রীকেও বহন করতে হবে।
নারীরাই সিদ্ধান্ত নিক তারা কী করবে?