01/08/2025
#রক্তের গ্রুপ জানা কেন প্রয়োজন?
1. জরুরি অবস্থায় দ্রুত চিকিৎসা:
দুর্ঘটনা, অপারেশন, প্রসবকালীন জটিলতা বা হঠাৎ রক্তক্ষরণের মতো পরিস্থিতিতে তৎক্ষণাৎ রক্তের প্রয়োজন হতে পারে। তখন যদি নিজের রক্তের গ্রুপ জানা থাকে, চিকিৎসক দ্রুত সঠিক রক্ত সরবরাহ করতে পারেন।
2. অপারেশন ও চিকিৎসায় নিরাপত্তা:
বড় ধরনের অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি, ডায়ালাইসিস ইত্যাদির সময় সঠিক গ্রুপের রক্ত দিতে হয়। ভুল রক্ত দিলে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া (Hemolytic reaction) হতে পারে, যা প্রাণঘাতী।
3. গর্ভাবস্থার জটিলতা এড়ানো:
মায়ের রক্তের গ্রুপ (বিশেষত Rh-negative) এবং শিশুর রক্তের গ্রুপের অমিল হলে জটিলতা (Erythroblastosis fetalis) দেখা দিতে পারে। আগে থেকে রক্ত গ্রুপ জানা থাকলে এটি প্রতিরোধ করা যায়।
4. রক্তদাতা ও গ্রহণকারী হিসেবে প্রস্তুতি:
নিজের গ্রুপ জানলে অন্যকে রক্তদান সহজ হয়, আর নিজের প্রয়োজন হলে কার কাছ থেকে রক্ত নেওয়া যাবে, সেটাও আগেভাগে পরিকল্পনা করা যায়।
5. ব্যক্তিগত পরিচয়ের অংশ হিসেবে:
দুর্ঘটনা বা অজ্ঞান অবস্থায় (যখন যোগাযোগ সম্ভব নয়) পরিচয়পত্রে রক্ত গ্রুপ থাকলে দ্রুত চিকিৎসা পাওয়া যায়।
রক্তদান করার উপকারিতা
রক্তদান শুধু অন্যের জীবন বাঁচায় না, দাতার জন্যও উপকারী।
১. শারীরিক উপকারিতা
নতুন রক্তকণিকা তৈরিতে সহায়তা: রক্তদানের পর শরীর নতুন রক্ত তৈরি করে, যা রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখে।
আয়রন জমে যাওয়া প্রতিরোধ: নিয়মিত রক্তদান শরীরে অতিরিক্ত আয়রন জমে গিয়ে হৃদরোগ বা লিভারের ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস: গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত রক্তদান রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
২. মানসিক উপকারিতা
মানবিক সন্তুষ্টি: একজন দাতা জানেন যে তাঁর রক্ত অন্যের জীবন বাঁচিয়েছে—এটি মানসিক প্রশান্তি দেয়।
সামাজিক দায়বদ্ধতা পূরণ: রক্তদান একটি মহান সামাজিক কাজ, যা সমাজে একতা ও সহমর্মিতা বাড়ায়।
৩. বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা:
রক্তদানের আগে দাতার রক্তচাপ, হিমোগ্লোবিন, সংক্রামক রোগের স্ক্রিনিং ইত্যাদি পরীক্ষা হয়, যা নিজের স্বাস্থ্যের সম্পর্কে ধারণা দেয়।
কত ঘনঘন রক্তদান করা যায়?
সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ: প্রতি ৩–৪ মাসে একবার।
সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক নারী: প্রতি ৪–৬ মাসে একবার।
কে রক্তদান করতে পারবেন না?
অল্প বয়সী (১৮ বছরের নিচে) বা খুব বেশি বয়স্ক।
ওজন ৫০ কেজির কম।
গুরুতর অসুস্থতা, সংক্রামক রোগ (হেপাটাইটিস, এইডস ইত্যাদি) থাকলে।
গর্ভবতী বা সদ্য সন্তান জন্মদান করা নারী।
সংক্ষেপে:
নিজের রক্ত গ্রুপ জানা জরুরি কারণ এটি জীবন বাঁচানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করে। আর রক্তদান করলে অন্যের জীবন রক্ষা হয় এবং দাতার নিজের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যেরও উপকার হয়।
সৌজন্যে SNT মানুষ মানুষের জন্য.