31/12/2024
➡️ পবিত্র কুরআনের রুকু গণনার ইতিহাস ও প্রচলন
পবিত্র কুরআন আল্লাহর বাণী, যা মানবজাতির হিদায়াতের জন্য প্রেরিত। মুসলিম উম্মাহ পবিত্র কুরআনের সংরক্ষণ ও এর পাঠ সহজতর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে কুরআনের আয়াত, শব্দ, এবং তিলাওয়াতের অংশবিশেষ ভাগ করে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে সাজিয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় রুকু নামে একটি বিশেষ পদ্ধতির প্রচলন হয়।
⏸️ রুকু প্রচলনের ইতিহাস
এটা নিয়ে একাধিক মত পাওয়া যায়
➡️ ইতিহাস থেকে জানা যায়, হযরত উসমান (রাঃ) জুমার দিনে যে পরিমাণ কুরআন তিলাওয়াত করতেন, সেই পরিমাণ অংশকেই রুকু নাম দেওয়া হয়েছে। তবে এই মতের কোনো সনদ পাওয়া যায়নি।
➡️ কারও মতে ইসলামের প্রথম যুগে পবিত্র কুরআনে রুকু ছিল না। হিজরি তৃতীয় শতকের শেষদিকে এবং চতুর্থ শতকের শুরুর দিকে মধ্য এশিয়ার বুখারা অঞ্চলের আলেমগণ রুকু পদ্ধতি প্রবর্তন করেন।
এটি মূলত তারাবিহ নামাজে নির্দিষ্ট পরিমাণ কুরআন পাঠের সুবিধার্থে তৈরি করা হয়। যাতে এক রাকাতে কতটুকু তেলাওয়াত করা হবে সেটা নির্দিষ্ট করা যায়।
এইভাবে ২০ রাকাতের তারাবিহ নামাজে প্রতিদিন ২০টি রুকু, পুরো রমজানে ২৭ দিন তারাবিহতে ২০×২৭= ৫৪০টি রুকু পাঠ করে কুরআন খতম করা হতো।
ইমাম আস-সারখাসী (রহ.) এবং ক্বাযী ইমাম ইমাদুদ্দীন (রহ.)-এর মত বিশিষ্ট আলেমগণ এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন ।
🟥 রুকুর অর্থ
"রুকু" শব্দটি কুরআনের নির্দিষ্ট অংশ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। আবার এটার অর্থ নামাজের রুকুর সাথেও সম্পর্কিত হতে পারে । যেমন, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ তেলাওয়াত শেষে মুসল্লিরা রুকুতে চলে যাবে।
অন্যদিকে, এটি একটি সূচকও হতে পারে, যা বিষয়বস্তু এক এমন আয়াত সমূহের সমাপ্তি বুঝায়।
⏸️ রুকুর বিভিন্ন পদ্ধতি
প্রাথমিকভাবে বুখারার আলেমগণ এটি ৫৪০টি রুকুতে ভাগ করেছিলেন। তবে ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত মুসহাফগুলোতে রুকুর সংখ্যা ৫৫৮টি।
⏸️ উপমহাদেশে রুকুর আধুনিক ব্যবহার
বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের মুসহাফগুলোতে রুকু সংখ্যা ৫৫৮টি। প্রতিটি রুকুর শুরুতে আরবি "আইন" চিহ্ন দিয়ে এটি ইন্ডিকেট করা হয়।
"আইন" চিহ্নের উপরে সূরার রুকু সংখ্যা ও নিচে পারার রুকুর সংখ্যা এবং মাঝে রুকুর আয়াত সংখ্যা উল্লেখ থাকে।
রুকু কোন কোন দেশের নুসখায় আছে❓
রুকু পদ্ধতি হিজাজ, আন্দালুসিয়া, মিসর ও সিরিয়ার মুসহাফগুলোতে কখনো প্রচলিত হয়নি।
তবে মধ্য এশিয়া, ভারতীয় উপমহাদেশ এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে এটি ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে। তুরস্কে এটি একসময় প্রচলিত ছিল, তবে উসমানি খেলাফতের পতনের পর বিলুপ্ত হয়।
⏹️ শেষ কথা
রুকু পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য ছিল কুরআনের তিলাওয়াত ও তারাবিহ নামাজে সুবিধাজনকভাবে কুরআন খতম নিশ্চিত করা। যদিও এই পদ্ধতি সবখানে সমভাবে প্রচলিত হয়নি, তবে এর প্রচলন মুসলিমদের কুরআন অধ্যয়নকে সহজ করেছে।
আল্লাহ তা’আলা আমাদের নিয়মিত কুরআন পাঠ করার তাওফিক দান করুন। (আমিন)
#তাজবিদ #কুরআন_শিক্ষা #তিলাওয়াত_শুদ্ধকরণ #মদ্দ #কুরআন_তাজবিদ #ইসলাম #তাজবিদের_নিয়ম #কুরআন_পাঠ