
04/05/2025
আমি রুমে ঢুকেই দেখি, সাজিদ কম্পিউটারের সামনে উবু হয়ে বসে আছে। খটাখট কী যেন টাইপ করছে। আমি জগ থেকে পানি ঢালতে লাগলাম। প্রচন্ড রকম তৃষ্ণার্ত। তৃষ্ণায় বুক ফেটে যাওয়ার জোগাড়। সাজিদ কম্পিউটার থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল__' কি রে, কিছু হইল?'
আমি হতাশ গলায় বললাম___ ' নাহ। '
' তার মানে তোকে এক বছর ড্রপ দিতেই হবে? 'সাজিদ জিজ্ঞেস করল।
আমি বললাম__ ' কী আর করা। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। '
সাজিদ বলল___ ' তোদের এই এক দোষ, বুঝলি? দেখছিস পুওর অ্যাটেন্ডেন্সের জন্য এক বছর ড্রপ খাওয়াচ্ছে, তার মধ্যেও বলছিস, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। ভাই, এইখানে কোন ভালোটা তুই পাইলি, বল তো? '
সাজিদ সম্পর্কে কিছু বলে নেওয়া দরকার। আমি আর সাজিদ রুমমেট। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রোবায়োলজিতে পড়ে। প্রথম জীবনে খুব ধার্মিক ছিল। নামাজ -কালাম করত। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কীভাবে কীভাবে যেন অ্যাগনোস্টিক হয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে স্রষ্টার ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে এখন পুরোপুরি নাস্তিক হয়ে গেছে। ধর্মকে এখন সে আবর্জনা জ্ঞান করে। তার মতে, পৃথিবীতে ধর্ম এনেছে মানুষ। আর ' ঈশ্বর ' ধারণাটাই এই রকম স্বার্থান্বেষী কোনো মহলের মস্তিষ্কপ্রসূত।
সাজিদের সাথে এই মুহূর্তে তর্কে জড়ানোর কোনো ইচ্ছে আমার নেই। কিন্তু তাকে একদম ইগনোর করেও যাওয়া যায় না।
আমি বললাম __ ' আমার সাথে তো এর থেকেও খারাপ কিছু হতে পারত, ঠিক না? '
' আরে, খারাপ হওয়ার আর কিছু বাকি আছে কি?'
' হয়তো। '
' যেমন?'
' এ রকমও তো হতে পারত, ধর, আমি সারা বছর একদমই পড়াশোনা করলাম না। পরীক্ষায় ফেইল মারলাম। এখন ফেইল করলে আমার এক বছর ড্রপ যেত। হয়তো ফেইলের আপমানটা আমি নিতে পারতাম না। আত্মহত্যা করে বসতাম।'
সাজিদ হা হা হা করে হাসা শুরু করলো। বলল___' কী বিদঘুটে বিশ্বাস নিয়ে চলিস রে ভাই!'
এই বলে সে আবার হাসা শুরু করলো। বিদ্রুপাত্মক হাসি।
রাতে সাজিদের সাথে আমার আরও একদফা তর্ক হলো।
সে বলল__ ' আচ্ছা তোরা যে স্রষ্টায় বিশ্বাস করিস, কীসের ভিত্তিতে? '
আমি বললাম__' বিশ্বাস দুই ধরনের। একটা হলো, প্রমাণের ভিত্তিতে বিশ্বাস। অনেকটা শর্তারোপে বিশ্বাস বলা যায়। অন্যটি হলো, প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস। '
সাজিদ হাসল। সে বলল__' দ্বিতীয় ক্যাটাগরিকে সোজা বাংলায় অন্ধ বিশ্বাস বলে রে আবুল, বুঝলি?'
আমি তার কথায় কান দিলাম না। বলে যেতে লাগলাম __
' প্রমাণের ভিত্তিতে যে বিশ