06/09/2025
আহারে রাবিপ্রবি ভিসি'র ফটোশুটের রাজনীতি!
আজকের ঘটনাটা শেয়ার করার আগে মামুনের কন্ডিশনটা শেয়ার করি,
মামুন আহত হওয়ার পর থেকে প্রায় সারাক্ষণই আমি ওর সঙ্গে আছি। অপারেশনের পরদিন সকালে জ্ঞান ফেরার পর মামুনের সেন্স ছিল—ও তখন নিজের ভাইকে চিনতে পারছিল। আইসিইউ থেকে কেবিনে শিফট করার দিনও স্পষ্ট কথা বলসিল। এরপর থেকে ধীরে ধীরে সেন্স হারাতে হতে থাকে। কাউকে চিনতে পারছে না। শুধু একটাই কথা বলে— “ভাল্লাগতাছে না।” মাঝে মাঝে উত্তেজিত হয়ে নিজের ব্যান্ডেজ খুলতে যায়, তাই বাধ্য হয়ে ওর হাত বেঁধে রাখা হয়েছে। রাতে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়াতে হয়। দাঁড়ানোর শক্তি নেই। যাকেই দেখে তাকেই হাই দেয়। এমনকি আমাদের সম্মানিত চেয়ারম্যান স্যারকেও হাই দিয়েছে—যা সেন্স থাকা অবস্থায় সম্ভব নয় বলেই আমি মনে করি। এদিকে মাথার খুলির অংশটা এখনও ফ্রিজে সংরক্ষিত আছে।
আজকের ঘটনার দিকে আসি—
বিকেল ৪টা ২১ মিনিটে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভিসি, ড. আতিয়ার রহমান স্যারসহ আরও কয়েকজন কেবিনে ঢুকতে চাইলে আমি তাদের বাধা দিই। কারণ ডাক্তারের নিষেধাজ্ঞা ছিল— এতে ইনফেকশনের ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সদস্যদেরও কেবিনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বললেন, কোনো সমস্যা নেই, ওনাদের ঢুকতে দিন। এরপর ডাক্তার মামুনকে উঠিয়ে বসান এবং ছবি তোলা শুরু করেন। আমি থামাতে গেলে তিনি নিষেধ করেন। তারপর মামুনকে চেয়ারে বসিয়ে আরও ছবি তোলেন। শুধু তাই নয়, বাইরে নিয়ে গিয়ে সব স্টাফদের ডেকে এনে আবার ছবি তোলেন। মামুন হাত তুলতে না পারলে ডাক্তার নিজেই তার হাত তুলে কিছুক্ষণ ধরে রাখতে বলেন—এভাবেই চলে ফটোশুটের ফাইনাল পর্ব। এমনকি ভিডিওও করা হয়। অথচ মামুন বারবার বসে যেতে চাইছিল, কিন্তু তাঁরা বসতে দেননি।
কিছুক্ষণ পর ফেসবুকে দেখতে পাই— নানান এঙ্গেলের ছবি এবং ভিডিওসহ ক্যাপশন “মামুন সুস্থ হয়ে গেছে।”
তাহলে সারারাত যার পাশে বসে ছিলাম, সে কি অন্য কেউ? মামুনের ভাই এগুলো দেখে ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন— “মামুনের জ্ঞান ফিরেছে ঠিকই, কিন্তু সুস্থ মানুষের যে বৈশিষ্ট্য থাকে, তার কিছুই এখনও নেই।”
– Rasel Rana