CHT Journal

CHT Journal The voice of the Jumma Indigenous peoples’ struggle for rights, identity, and justice, an independent online platform.
(8)

24/08/2025

রাজনৈতিক কোনো দলকে সার্ভ করার উদ্দেশ্যে আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হইনি, ভবিষ্যতেও কোনো রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করার ইচ্ছা নেই। আমি সবসময় শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেছি এবং ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীদের হয়ে কথা বলবো।

সুর্মী চাকমা
'কমনরুম, রিডিং রুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক' পদপ্রার্থী
ডাকসু নির্বাচন ২০২৫

ভিডিও: ATN Bangla

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ছাত্র রাজনীতিতে প্রসিত চক্র ✍️--পলাশ খীসাসাবেক সভাপতি, পিসিপি, কেন্দ্রীয় কমিটিপর্ব-৬৬ জুন ’...
22/08/2025

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ছাত্র রাজনীতিতে প্রসিত চক্র
✍️--পলাশ খীসা
সাবেক সভাপতি, পিসিপি, কেন্দ্রীয় কমিটি

পর্ব-৬
৬ জুন ’৯৭ মিটিংএর গঠনতন্ত্র পরিপন্থী সিদ্ধান্ত শাখাসমূহে প্রেরণ করলে বিভিন্ন শাখায় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সর্বপ্রথমে রাঙ্গামাটি জেলা শাখার পক্ষ থেকে প্রতিবাদলিপি কেন্দ্রীয় কমিটির বরাবরে প্রেরণ করা হয়। এর পরপরই ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মহানগর ও রাজশাহী মহানগর শাখাসহ (সবগুলো জেলা শাখা মর্যাদা সম্পন্ন) বিভিন্ন থানা শাখা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির গঠনতন্ত্র পরিপন্থী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানানো হয় এবং গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষির্কী ও ৭ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ঢাকা অথবা চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত করা ও ৪টি মৌলিক দাবী সমুন্নত রাখার আহ্বান জানানো হয়। এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে থোয়াইঅং, জলি মং, পলাশ, মৃগাঙ্ক, ব্রজ কিশোর ও ডেভিড বমসহ ১২ জন কেন্দ্রীয় নেতা কর্তৃক শাখাসমূহের আবেদন গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করার আহ্বান জানানো হয় কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বরাবরে। গঠনতন্ত্রের ১৯ নং ধারার (চ) উপধারা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির যে কোনো সিদ্ধান্ত যদি দু’টি জেলা শাখা মর্যাদা সম্পন্ন শাখা লিখিতভাবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের দ্বিমত অথবা অনাস্থা জ্ঞাপন করলে কেন্দ্রীয় কমিটিকে ২১ দিনের মধ্যে বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন আহ্বান করে জনমত যাচাই করতে হয় এবং এই মেয়াদের মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি যেকোনো বৃহত্তর ও গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপের বৈধতা হারায়। প্রতিনিধি সম্মেলনের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিপক্ষে মত দিলে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত বাতিল হয়ে যায়। অথচ ৫টি জেলা শাখা (৭টির মধ্যে)/ জেলা মর্যাদা সম্পন্ন শাখা দাবী জানানোর পরও কোনো বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন আহ্বান করা হয়নি। উপরন্তু কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লেখার জন্য রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি তনয় দেওয়ান ও সাধারণ সম্পাদক বোধিসত্ব চাকমাকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় সভাপতি সঞ্চয়। অন্যথায় তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে। এখানেও তিনি গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করেন। গঠনতন্ত্র মোতাবেক কোনো সদস্য অপরাধ করলে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিন সময় দিতে হয় এবং সংগঠনের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ দলিলে স্বাক্ষর করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। অথচ রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সময় দেয়া হয়েছে মাত্র ৩ দিন (৭২ ঘন্টা) এবং সেই গুরুত্বপূর্ণ সার্কুলারে সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষর না করে স্বাক্ষর করেছেন সভাপতি হিসেবে সঞ্চয়। ৫টি জেলা শাখা মর্যাদা সম্পন্ন শাখা এবং কেন্দ্রীয় কমিটির ১২ জন নেতৃবৃন্দের যৌক্তিক দাবীর পরও প্রসিত চত্রের অন্যতম সহযোগী সঞ্চয় গঠনতন্ত্রকে উপেক্ষা করে বীরদর্পে ঘোষণা করে যে, কেন্দ্রীয় কমিটিসহ শাখা সমূহ থেকে কেউ না গেলেও তিনি পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসনের দাবী নিয়ে খাগড়াছড়িতে ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও ৭ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করবেন, এমনকি বোমা ফাটালে কিংবা তাকে গুলি করে মেরে ফেললেও তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করবেন না।

সবকিছুর মূলে রয়েছে প্রসিতের ষড়যন্ত্র ও কুপরামর্শ। পিসিপিসহ তিন সংগঠনকে দুর্বল করার জন্য দীর্ঘদিনের তিল তিল করে যে সংগ্রামী ভাবমূর্তি গড়ে তোলা হয়েছিল তা খন্ডিত করার মধ্য দিয়ে তার ক্ষতিসাধন করা হয়। সমস্ত গণতান্ত্রিক ও গঠনতান্ত্রিক নিয়ম নীতিকে উপেক্ষা করে প্রসিত চক্রের সহযোগী সঞ্চয় সংগঠনের ক্ষুদ্র একটি অংশকে নিয়ে খাগড়াছড়িতে ১৭ জুন ’৯৭ তারিখ ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করলে ১৮ জুন ’৯৭ পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের প্রগতিশীল বৃহৎ অংশটি গঠনতন্ত্রকে সর্বোচ্চ মেনে চলার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্রাবাসে বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন করতে বাধ্য হয়। সেই প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেদিন বিকাল ৫ ঘটিকার সময় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ৩০ জুন ’৯৭ ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও ১-২ জুলাই ’৯৭ ৭ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল করার ঘোষণা দেয়া হয়। সেই সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মৃগাঙ্ক খীসা এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তৎকালীন ছাত্র নেতা থোয়াই অং মারমা, জলি মং মারমা, পলাশ খীসা ও মৃগাঙ্ক খীসা প্রমুখ। এভাবে প্রিয় লড়াকু সংগঠন পিসিপি’র গৌরবময় ইতিহাসে প্রসিত চক্ররা কালিমা লেপন করে, সংগঠনের উজ্জ্বল ভাবমূর্তির উপর মারাত্মকভাবে আঘাত হানে।

প্রসিত চক্রের মূল ভিত্তিটা খাগড়াছড়ি কেন্দ্রিক। ফলে ১৭-২০ জুন ’৯৭ অষ্টম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও ৭ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ির একাংশ, দীঘিনালা, মহালছড়ি, খাগড়াছড়ি সদর, রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর ও কুতুকছড়ি শাখা সমূহ থেকে যোগদান করে। অন্যান্য এলাকা থেকেও ছিটেফোটা দু’একজন বিপথগামী কর্মী যোগদান করে। অপরদিকে সংগঠনের মূল নীতি-আদর্শে অনুপ্রাণিত এবং সংগঠনের গঠনতন্ত্রের অনুসারে অনুষ্ঠিত ৩০ জুন ’৯৭ ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও ৭ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে ঢাকা মহানগর, চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মহানগর, বান্দরবন জেলাধীন সকল শাখা, রাঙ্গামাটি জেলাধীন কুতুকছড়ি ও নানিয়ারচর ব্যতীত সকল শাখা, খাগড়াছড়ি জেলাধীন মাটিরাঙ্গা থানা শাখা, জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন শাখা থেকে সক্রিয়, ত্যাগী ও আদর্শিক কর্মীরা অনেকেই যোগদান করে। তৎসময়ে মানিকছড়ি ও রামগড়ে সংগঠনের শাখা ছিল না। লক্ষীছড়ি ও গুইমারা শাখা ছিল নিষ্ক্রিয়। তারা কোনো পক্ষে যোগদান করেনি।

পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসনের নামে প্রসিত চক্র পিসিপি’র মূল অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর সংগঠনকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য এবং জনমনে যে সকল বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে তা দূরীভূত করার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে গোটা পার্বত্য অঞ্চলে সাংগঠনিক সফর করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একটি টীম জলি মং মারমা, মৃগাঙ্ক খীসা, ব্রজ কিশোর ত্রিপুরা, মনিন্দ্র চাকমা ও আমি প্রসিতের ঘাঁটি হিসেবে খ্যাত খাগড়াছড়ির বিভিন্ন অঞ্চলে সফর করি। আগষ্ট মাসের শুরুতেই দীঘিনালার বাবুছড়া, বড়াদমসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় মতবিনিময় করি এলাকার মুরুব্বী ও ছাত্র যুবকদের সাথে। মতবিনিময় করার পর বিশেষ করে এলাকার ছাত্র-যুবকদের অনুরোধে এবং মুরুব্বীদের পরামর্শে ৪ আগষ্ট ’৯৭ বড়াদমে পিসিপি, দীঘিনালা থানা শাখার কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত হয়। ৩ আগষ্ট ’৯৭ সবাই বসে একটি খসড়া কমিটিও প্রস্তুত করি। কিন্তু ৪ আগষ্ট সকালে খবর পেলাম প্রসিত চক্র আমাদের মনোনীত সভাপতিসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে, হুমকি দিয়েছে কাউন্সিলে না আসার জন্য এবং তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে কাউন্সিল স্থলে হামলা করার জন্য।

আমাদের অনুষ্ঠান শুরু করার কথা ছিল সকাল ১০টায়। তার আগে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা বড়াদমসহ অন্যান্য জায়গার উপস্থিত ছাত্র-যুবক ও অভিভাবকদের সাথে প্রসিত চক্রের কর্মকান্ডের বিষয়ে আলাপ করলাম। বড়াদমের ছাত্র-যুবক বন্ধুরা আমাদের আশ্বস্ত করলো বড়াদমে এসে হামলা করার দুঃসাহস প্রসিত চক্রের নেই। যদি হামলা করে তাহলে একজনকেও সুস্থ শরীরে ফেরৎ দেওয়া হবে না। বড়াদমের সেই সাহসী বৃদ্ধদের যে অপরিসীম সাহস ও বিশ্বাসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে কাউন্সিল করার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি চলতে থাকলো। আমরা যখন অনুষ্ঠান শুরু করতে যাচ্ছি ঠিক সেই সময়ে ধর্মজ্যোতির নেতৃত্বে প্রসিত চক্র আমাদের কাউন্সিল স্থলে এসে যায় এবং আমাদেরকে কাউন্সিল না করার জন্য চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। ধর্মজ্যোতির বক্তব্য হলো পিসিপি-র থানা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে সে রয়েছে। তাকে না জানিয়ে আমরা কাউন্সিল করতে যাচ্ছি কেন? অথচ আমরা যখন বাবুছড়ায় মিটিং করেছি সেই সময়ে ধর্মজ্যোতির সাথে আলাপ হয়েছে। তারপরও তাদেরকে আমি বুঝিয়ে বললাম যে, পিসিপি থেকে একটি ক্ষুদ্র অংশ পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসনের নাম দিয়ে বের হয়ে গেছে। আমরা মৌলিক দাবীগুলি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই এটা স্পষ্ট যে এখন পিসিপি-তে দুটো ধারা সৃষ্টি হয়েছে। তোমরা যদি আমাদেরকে বিশ্বাস করে থাক এবং আমাদের দাবীর সাথে একাত্ম হতে পার তাহলে কাউন্সিলে ঢুকে পড়। আর যদি পূর্ণ স্বায়ত্ত্বশাসনে বিশ্বাস কর তাহলে কোনো প্রকার ঝামেলা করার চেষ্টা না করে এখান থেকে চলে যাও। আমরা কাউন্সিলের তারিখ নির্ধারণ করেছি, কাউন্সিল অবশ্যই হবে। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রসিত চক্র সেদিন পিছু হতে যায়। আমরা সুশৃঙ্খলভাবে দীঘিনালা থানা শাখার কাউন্সিল সুসম্পন্ন করি।

সেদিনই সন্ধ্যায় আমরা পানছড়ি পৌঁছে যায়। ৫ আগষ্ট’৯৭ পিসিপির পানছড়ি থানা শাখার কর্মী সমাবেশ পূর্ব নির্ধারিত ছিল। পানছড়ি কর্মী সমাবেশ হওয়ার কথা সকাল ১০টায় বাজারের পাশে একটি ক্লাবে। কিন্তু সেদিন ৯টার আগে প্রসিত চক্রের অনিমেষ চাকমার (পরবর্তীতে ভুল বুঝতে পেরে প্রসিত চক্র ত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে) নেতৃত্বে ৮/১০ জন সন্ত্রাসী ক্লাবে অবস্থান গ্রহণ করে। আমাদের কর্মীরা তাদেরকে সেখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য বললে তারা অপারগতা প্রকাশ করে এবং বলে যে পলাশ, জলিমং, মৃগাঙ্ক কাউকে ক্লাবে ঢুকতে দেবে না। তখন আমাদের ছাত্র সংখ্যা খুব বেশী ছিল না। পরবর্তীতে আমাদের ব্যাপক কর্মীর সমাগম ঘটলে প্রসিত চক্র সুর পাল্টায়। তখন বলে- তারা আসতে পারবে কিন্তু প্রসিত বিরোধী কোনো বক্তব্য দিতে পারবে না। তখন আমাদের কর্মীরা তাদেরকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে বের করে দেওয়ার অনুমতি চায়। আমরা অনেক কিছু ভেবে তা অনুমোদন করিনি। প্রথমতঃ আমরা কারও সাথে সংঘাত হোক সেটা চায় না। তাছাড়া তাদেরকে মারধর করলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি হতে পারে। কারণ সেদিন ছিল বাজারের দিন। প্রসিত চক্র মার খেয়ে যদি বাজারে গিয়ে কোনো বাঙালীকে মারধর করে তাহলে পরিস্থিতি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নেবে। তাই সবকিছু বিবেচনা করে পূর্ব নির্ধারিত স্থানের পরিবর্তে বৌদ্ধ বিহারের পাশে কর্মী সমাবেশ শুরু করি। এমন সময় খবর এলো, প্রসিত চক্র পেরাছড়াস্থ গিরিফুল শিশু সদন এলাকায় গাড়ী থামিয়ে তল্লাসী চালাচ্ছে আমাদেরকে অপহরণ, হত্যা বা গুম করার জন্য। কাজেই আমরা যেন পানছড়িতে অবস্থান করি। আমাদের কর্মী সমাবেশ যখন শেষ পর্যায়ে তখন খাগড়াছড়ি থেকে একটা চাঁদের গাড়ী (জীপ) নিয়ে আমাদের সমর্থিত ২০/২৫ জন ছাত্র পৌঁছে যায় আমাদেরকে নিয়ে আসার জন্য। আসার পথে গিরিফুল এলাকায় কিরিচ, হকিষ্টিক নিয়ে ১০/১৫ জন প্রসিত চক্রের সন্ত্রাসীকে দেখা যায়। আমাদের ছাত্র সংখ্যা বেশী হওয়ায় তারা হামলা করার সাহস পায়নি।

৪ সেপ্টেম্বর’৯৭ খাগড়াছড়ি জেলার মাইচছড়ির বলিপাড়া বৌদ্ধ বিহারে পিসিপি এক জনসভা আয়োজন করলে চুক্তি বিরোধী সন্ত্রাসী প্রসিত চক্র সমাবেশ শুরুর আগে হামলা চালায়। সেখানে ছাত্রনেতা নয়ন জ্যোতি চাকমাকে মারধর করে মারাত্মকভাবে আহত করে। ইসলামী ছাত্র শিবিরের কায়দায় তার হাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় ছাত্র জনতা সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে চলে যাওয়ার সময় তৎকালীন পিসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি জলিমং মারমার ব্যবহৃত ব্যাগ ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল সমাবেশ ভন্ডুল করে উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে আঘাত করা। সে সময় টার্গেট করা নেতৃবৃন্দ না থাকায় তারা নয়ন জ্যোতির উপর হামলা চালায়। তাদের সে দিনের উদ্দেশ্য সফল করতে দেয়নি মাইচছড়ির সচেতন ছাত্র-জনতা।

শুধু তাই নয়, ঘাগড়াতে পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের বর্তমান বিভেদের কারণ ও সঠিক পথটি সম্পর্কে ব্যাখ্যা করার জন্য ঘাগড়ার ইউপি কার্যালয়ে আয়োজিত কর্মী সভায় প্রসিতের পকেটকর্মী ও স্থানীয় সন্ত্রাসী বাবুর্শে মারমার (পরবর্তীতে নিজের ভুল বুঝতে পেরে স্বপক্ষ ত্যাগ করেন) নেতৃত্বে কয়েকজন কর্মী তনয় দেওয়ান ও বোধিসত্ব চাকমার উপস্থিতিতে কর্মী সভা আয়োজনে বাধা প্রদানের চেষ্টা করে। এসময় ঘাগড়ার দোদুল্যমান কর্মীরা বাবুর্শের এহেন আচরণ দেখলে নিজেরাই প্রতিহত করার জন্য এগিয়ে আসে এবং বাবুর্শে মারমাকে তার সাঙ্গপাঙ্গসহ হলরুম থেকে বের করে দেয়। অনুরূপভাবে নান্যাচর থানা সদরে সন্তোষ বিকাশ খীসা, বোধিসত্ব চাকমা ও সুদীর্ঘ চাকমার নেতৃত্বে একদল কর্মী সাংগঠনিক সফরে গেলে নান্যাচর বাজারে প্রসিত চক্রের পকেট কর্মী তপনজ্যোতি ও উথোয়াইচিং মারমা তাদেরকে বাধা প্রদান করেন। পরে সেখানে খুল্যাং পাড়ায় আয়োজিত জনসভায় তারা আবার বাধা প্রদানের চেষ্টা করে। কিন্তু জনগণের তরফ থেকে তখন তাদের বলা হয় যে, এভাবে বাধা না দিয়ে তোমাদের যা বলার আছে তা মিটিংএ এসে বলো। তখন উথোয়াইচিং মারমা জনতার রোষ দেখে সুর পাল্টিয়ে জনসভায় বলে যে, আমরা জনসংহতি সমিতির বিপক্ষে নই। জনসংহতি সমিতি যা বলবে তাই আমরা মেনে নেবো। তখন আমাদের নেতৃবৃন্দ বলেন যে, তাহলে তোমরা কার ইঙ্গিতে বাধা দিচ্ছো? তখন তারা কোনো যুক্তি দেখাতে না পেরে জনসভার স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। এভাবে প্রতিটি এলাকায় যেখানে প্রসিত চক্রের লোকজন রয়েছে সেখানে তারা মরণপণ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তাদের দুর্বলতা ছিল যে, তাদের সমর্থিত এলাকায় যদি আমরা প্রসিতের কুকীর্তিগুলো তুলে ধরি তাহলে তারা জনসমর্থন হারাবে। ফলে কোনো অবস্থায়ই তাদের সমর্থিত এলাকায় বিনা বাধায় সমাবেশ বা মত বিনিময় সভা করতে দেয়নি।

২ ডিসেম্বর ’৯৭ প্রসিত চক্রের সমস্ত বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণিত করে সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। প্রসিত চক্রের সমস্ত বক্তব্য মিথ্যা প্রমাণিত হলেও তাদের অন্ধ সমর্থকদের আরো অন্ধ করে রাখার জন্য সেদিনই বিকালে ঢাবি’র সড়ক দ্বীপে একটি মিছিল শেষে সমাবেশের মধ্য দিয়ে প্রসিত চক্র চুক্তির কপি নাম দিয়ে একগাদা কাগজ পুড়িয়ে ফেলে এবং বলে সরকার ও জনসংহতি সমিতির স্বাক্ষরিত চুক্তিতে জুম্ম জনগণের কোনো অধিকার অর্জিত হয়নি। এটা ছিল কেবলমাত্র আনুষ্ঠানিকতা। কারণ প্রসিত চক্র নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ১০ মার্চ ’৯৭ থেকে বৈঠক প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করে আসছিল। তখন থেকে তারা বিশ্বাস করতো জনসংহতি সমিতি সরকারের সাথে আলোচনার মাধ্যেমে চুক্তি করতে যাচ্ছে ’৯৭ সালের জুন মাসের মধ্যে, যে চুক্তিতে জুম্ম জনগণের অধিকার বা স্বার্থ অর্জিত হবে না। তারা এটাও বিশ্বাস করতো যে, জনসংহতি সমিতির বিরাট একটা অংশ চুক্তির বিরোধিতা করবে, অস্ত্র জমা দেবে না এবং সেই অংশটির সাথে তারা একাত্ম হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। তাদের সেই আশা ও বিশ্বাস মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়ে জনসংহতি সমিতির সকল সদস্য অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে, জুম্ম জনগণের ন্যুনতম বেঁচে থাকার অধিকার নিয়ে। আমরা যারা পিসিপির মূল ধারায় কাজ করে চলেছি অর্থাৎ সংগঠনের গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তিকে সমুন্নত রেখে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দৃপ্ত শপথ নিয়ে কাজ করে চলেছি চুক্তি হওয়ার সাথে সাথে আমরা চুক্তিকে সমর্থন করিনি। চুক্তির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে এবং পাশাপাশি জেলা পরিষদের আইনগুলো (১৯৮৯) দেখে সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে, এই চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে জুম্ম জনগণের ন্যূনতম বেঁেচ থাকার অধিকার থাকবে। আমরা এই চুক্তিকে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানের অগ্রগতির একটি উল্লেখ্যযোগ্য ধাপ হিসেবে চিহ্নিত করে ৬ ডিসেম্বর ’৯৭ খাগড়াছড়িতে ও ১৫ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটিতে চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল ও সমাবেশ করি।

জেএসএস সদস্যদের অস্ত্র জমা দেওয়ার আগ পর্যন্ত পত্রপত্রিকার লেখা ও বক্তব্যে প্রসিত চক্রের আক্রমণের টার্গেট ছিলেন জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা ও তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। জনসংহতি সমিতির সকল সদস্য অস্ত্র জমা দেয়ায় প্রসিত চক্রের নেতৃত্ব কর্মীদের ক্ষোভের মধ্যে পড়েন। কেননা প্রসিত চক্র বলেছিল জনসংহতি সমিতির একটা বিরাট অংশ অস্ত্র জমা দেবে না। অথচ তারা সবাই অস্ত্র জমা দিলেন কেন- কর্মীদের এই প্রশ্নের মুখোমুখী হতে হলো। সেদিন প্রসিত চক্র কর্মীদের এই বলে সান্তনা দেয় যে, কিছু দিনের মধ্যে আমাদের অটোমেটিক হাতিয়ার আসবে। কাজেই চিন্তার কোনো কারণ নেই। কিন্তু পরে অটোমেটিক হাতিয়ার দেখতে না পেয়ে কর্মীরা আরো ক্ষুব্ধ হয়। ফলে প্রসিত চক্র ছলনার আশ্রয় নেয়। বিশ্বস্ত কর্মীদের দিয়ে নকল অটোমেটিক হাতিয়ার সাধারণ কর্মীদের দেখায়। প্রসিত চক্রের এ ধরনের ভন্ডামী দেখে অনেকেই স্বপক্ষ ত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। অবশ্যই জনসংহতি সমিতির একটা অংশকে নিজেদের পক্ষে রাখার কম চেষ্টা করেনি তারা। চুক্তির পর পরই তাদের এক পকেট সাংবাদিককে দিয়ে আজকের কাগজে একটি রিপোর্ট লিখে দেয় যে, মেজর বাতায়ন তার গ্রুপ নিয়ে বিদ্রোহ করেছে। সে অস্ত্র জমা দিতে চায় না। কিন্তু সন্তু লারমার অনুগত বাহিনী তাকে নিরস্ত্র ও গ্রেপ্তার করেছে। এভাবে তারা পার্টির অভ্যন্তরে ভাঙ্গন সৃষ্টি করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে যায়। ফলে প্রসিত চক্রের টার্গেট হয়ে যায় পুরো পার্টি, অস্ত্র জমাদানকারী সকল সদস্য ও তিন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

চুক্তির পর পরই প্রসিত চক্র হত্যার রাজনীতি শুরু করে। সর্ব প্রথমে তারা খুন করে কুতুকছড়ির অশ্বিনী কুমার চাকমাকে। অশ্বিনী কুমার চাকমা ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মরত কুমার চাকমার ছোট ভাই। মরত কুমার ছিলেন চুক্তির একজন সমর্থক। তার দু’ছেলেও চুক্তি পক্ষের পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সাথে যুক্ত ছিল। ১৬ জানুয়ারি ’৯৮ চুক্তির সমর্থনে কুতুকছড়ি বাজারে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রসিত চক্রের বাধা সত্ত্বেও অনেক লোক জমায়েত হয় সেখানে। সেই সমাবেশ আয়োজনের ক্ষেত্রে মরত কুমারের ভূমিকা ছিল নজরে পড়ার মতো। অশ্বিনী কুমারও সেই সমাবেশে যোগ দেন। দু’দিন পর ১৮ জানুয়ারি ’৯৮ প্রসিত চক্রের সন্ত্রাসীরা মরত কুমারকে মারার জন্য যায়। তাকে না পেয়ে তার ছোট ভাই অশ্বিনী কুমার চাকমার উপর আক্রমণ চালায়। কিছু সময় মার খাওয়ার পর অশ্বিনী কুমার আত্মরক্ষার জন্য কোদাল হাতে নিলে প্রসিত চক্রের সন্ত্রাসীরা চারদিকে ঘিরে পাথর ছুড়ে মারতে থাকে। অশ্বিনী বাঁচার জন্য আর্মী ক্যাম্পের দিকে যেতে চেষ্টা করেন। কিন্তু এতগুলো সন্ত্রাসীর সাথে একজনের পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব হয়নি। একটার পর একটা পাথর দিয়ে বার বার আঘাত করতে থাকে সন্ত্রাসীরা। ফলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। এভাবেই চুক্তি বিরোধীদের হাতে প্রথম জীবন দিলেন অশ্বিনী কুমার চাকমা। রেখে গেলেন ছেলেমেয়েসহ অসহায়ভাবে নিজের স্ত্রীকে। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে কেটে যেতে থাকে অশ্বিনীর বিধবা স্ত্রীর দিনকাল। কিছুদিন আগে প্রসিত চক্রের তথাকথিত এক নেতা তার প্রতি দরদ দেখিয়ে মদ বিক্রির অনুমতি দেয়। মদ বিক্রি করে কোনোমতে চলছে বিধবার অভাবী সংসার।

অশ্বিনীর মৃত্যুর পর দাহক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য যখন আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মিটিং চলছিল তখনই ছাত্রনেতা বোধিসত্ব চাকমা সরেজমিনে ঘুরে এসে রিপোর্ট দেয় যে, প্রসিত চক্র রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছে। তারা চুক্তির যে কোনো সমর্থককে খুন করতে পারে। যদি অশ্বিনীর দাহক্রিয়ায় যাওয়া হয় তাহলে অবশ্যই আমাদের আঘাত করবে তারা। স্থল বা নৌ পথ কোনোটাই নিরাপদ নয়। তারপরও আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম উপস্থিত সকল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দাহক্রিয়ায় যাবো। একটা বাস ও একটা মাইক্রো নিয়ে ৬০/৭০ জনের একটা দল তৎকালীন সভাপতি থোয়াই অং মারমার নেতৃত্বে দাহ অনুষ্ঠানে যায়। যাবার পথে প্রসিত চক্রের অন্যতম সহযোগী অভিলাষসহ ৪/৫ জনকে দেখতে পেয়ে আমাদের কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে তাদেরকে গাড়ীতে তুলে নিয়ে আসার প্রস্তাব করে। আমরা গাড়ী না থামিয়ে কর্মীদের বলি আমরা অশ্বিনীর দাহক্রিয়ায় যাচ্ছি। তাই প্রধান হচ্ছে দাহক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করা, কাউকে ধরে নিয়ে যাওয়া নয়। আমরা অশ্বিনীর বাড়ীতে পৌঁছলে শত শত জনতা আমাদের স্বাগত জানান। তাদের চোখেমুখে ছিল শোকের ছায়া আর আতংকের প্রতিচ্ছবি। আমরা তাদের সাথে মত বিনিময় করি। তারা আমাদের জানান যে, তারা খুবই অসহায়, সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি। ফলে তারা চান না অশ্বিনীকে রাজনৈতিক মর্যাদায় দাহ করা হোক। এরমধ্যে আমরা খবর পেলাম সন্ত্রাসীরা আমাদেরকে হামলা করার জন্য অপেক্ষা করছে। দাহক্রিয়া ঘন্টা দুয়েক দেরী হতে পারে জেনে আমরা সেখান হতে শ্রদ্ধা জানিয়ে চলে এলাম।

বাজারে হামলা করার কথা শোনা গেলেও কেউ কিছু করেনি। আমরা আসতে থাকলাম। কিছুদূর এসে দেখা গেল অভিলাষসহ কয়েকজন রাস্তার কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আমাদের উদ্দেশ্যে গালিগালাজ করছে। আমাদের কর্মীরা তাদেরকে ধাওয়া করতে চাইলেও আমরা দিইনি। কিছু দূর এসে দেখি আবাসিক স্কুলের কাছে ধর্মঘরের পাশে সন্ত্রাসীরা ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে এবং তিন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে হামলার জন্য অবস্থান করছে। তখন আর কোনো উপায় না দেখে আমাদের কর্মীদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। মুহূর্তের মধ্যে সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করে ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেলে আমাদের কর্মীরা। সেদিন দেখেছি প্রসিত চক্রের সন্ত্রাসীদের ভীরুতা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের উপর হামলা করা। কিন্তু আমাদের কর্মীরা গাড়ী থেকে হুংকার দিয়ে নামার সাথে সাথে তারা পালিয়ে যায়। আমরাও নিরাপদে চলে আসি।

(পুরো লেখাটি মোট ৭টি পর্বে প্রকাশিত হবে। পরবর্তী পর্ব প্রকাশিত হওয়ার পর লিংক যুক্ত করে দেওয়া হবে।
প্রথম পর্বের লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1F7bXDUj4D/
দ্বিতীয় পর্বের লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1JS433DWyY/
তৃতীয় পর্বের লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1EoMgNdaQA/
চতুর্থ পর্বের লিংক:
https://www.facebook.com/share/p/1GggZtTKaz/
পঞ্চম পর্বের লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1CBZrKN1Du/

বি.দ্র.: উপরের লেখায় যদি কোনো অসংগতি বা তথ্যগত ভুল থেকে থাকে, অনুগ্রহ করে আমাদেরকে অবহিত করুন। নির্ভরযোগ্য ও যথাযথ তথ্য উপস্থাপন আমাদের অঙ্গীকার।
#পলাশখীসা #প্রসীত #প্রসীতচক্র #পার্বত্যরাজনীতি

লংগদুতে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাক্তন ইউপি সদস্য অপহৃতলংগদু, ২২ আগস্ট ২০২৫পার্বত্য চুক্তিবিরোধী সশস্ত্র সংগঠন ইউপি...
22/08/2025

লংগদুতে ইউপিডিএফ সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাক্তন ইউপি সদস্য অপহৃত

লংগদু, ২২ আগস্ট ২০২৫
পার্বত্য চুক্তিবিরোধী সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ (ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট) সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় এক প্রাক্তন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, অবৈধ চাঁদার দাবি পূরণ না করায় এ অপহরণের ঘটনা ঘটে। অপহৃত ব্যক্তি হলেন নন্দ কুমার চাকমা (৫৮), প্রাক্তন সদস্য, ৭নং লংগদু ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড। তিনি কাট্টলী কুকিছড়া গ্রামের বাসিন্দা।
গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের কমান্ডার চিরজ্যোতি চাকমা (ওরফে প্রবল) ও কালাইয়ে চাকমা (ওরফে মংপ্রু/পলক)-এর নেতৃত্বে ১৪-১৫ জনের একটি দল তার নিজ বাড়ি থেকে নন্দ কুমার চাকমাকে তুলে নিয়ে যায়।

অপহরণের প্রায় দেড় ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে অপহৃতকে কাট্টলী ভাজ্যাঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউপিডিএফ কোম্পানি কমান্ডার শ্রাবণ চাকমা ও প্রদীপময় চাকমা (ওরফে বিশাল/পাগানা)। তাদের কাছে অপহৃতকে হস্তান্তর করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, ইউপিডিএফ দীর্ঘদিন ধরে লংগদু এলাকায় নানা অজুহাতে চাঁদা আদায় করছে। এর মধ্যে তথাকথিত “গণবাজেট”-এর নামে ৪০,০০০ টাকা, “ভূমি রক্ষা বাজেট”-এর নামে ১০,০০০ টাকা, “বৌদ্ধবিহার নির্মাণ বাজেট”-এর নামে ৩০,০০০ টাকা এবং “বিদ্যালয় পরিচালনা বাজেট”সহ বিভিন্ন খাতে বেনামে লক্ষাধিক টাকা দাবি করা হয়। এছাড়া সময়ে-অসময়ে খাবার সরবরাহ, ছোট কাট্টলীতে জলাধার বন্ধ করে জাল বসানোসহ নানা হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডও চালিয়ে যাচ্ছে।প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি হিসেবে নন্দ কুমার চাকমা এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তাকে অপহরণ করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারণা।

অপহরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যাদের নাম উঠে এসেছে, তাদের মধ্যে তিনজনই অপহৃত নন্দ কুমার চাকমার পাশের এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয়দের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে ইউপিডিএফের হয়ে সশস্ত্র কর্মকাণ্ডে লিপ্ত।
১. প্রদীপময় চাকমা (ওরফে বিশাল/পাগানা): ইউপিডিএফ পরিচালক; বড় কাট্টলী, ৭নং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
২. চিরজ্যোতি চাকমা (ওরফে প্রবল): ইউপিডিএফ সশস্ত্র গ্রুপ কমান্ডার; বড় খারিখাটা, ৭নং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
৩. কালাইয়ে চাকমা (ওরফে মংপ্রু/পলক): ইউপিডিএফ সশস্ত্র গ্রুপ কমান্ডার; ছোট কাট্টলী, ৭নং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। স্থানীয়দের দাবি, গ্রামে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার পর তিনি ইউপিডিএফে যোগ দেন।

রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অপহৃত নন্দ কুমার চাকমাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে কিনা বা কোথায় রাখা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উদ্বেগ-আতঙ্ক বিরাজ করছে।

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও রাজশাহীর তানোরে সাঁওতালদের ওপর নৃশংস হামলা, শেরপুরে গারোদের স্বত্বদখলীয় জমি দখলের ষড়যন্ত্র, সিল...
22/08/2025

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও রাজশাহীর তানোরে সাঁওতালদের ওপর নৃশংস হামলা, শেরপুরে গারোদের স্বত্বদখলীয় জমি দখলের ষড়যন্ত্র, সিলেটে খাসিয়াদের পানজুম কর্তন ও উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং দীর্ঘদিন মিথ্যা মামলায় কারাবন্দী নিরীহ নারী, শিশু সহ নিরপরাধ বম আদিবাসীদের মুক্তির দাবিতে-

"বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ"

২৩ আগস্ট ২০২৫, শনিবার, সময় : বিকাল ৩টা
জাতীয় জাদুঘরের সামনে, শাহবাগ, ঢাকা

আয়োজনে: আদিবাসী ছাত্র, যুব, সাংস্কৃতিক ও প্রগতিশীল সংগঠনসমূহ





*বম আদিবাসী নাগরিকদের কারাবন্দী জীবনের ৫০০ দিন*আজ ২১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে নিরপরাধ বম আদিবাসী নাগরিকদের অমানবিক ও অন্যায় কার...
21/08/2025

*বম আদিবাসী নাগরিকদের কারাবন্দী জীবনের ৫০০ দিন*

আজ ২১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে নিরপরাধ বম আদিবাসী নাগরিকদের অমানবিক ও অন্যায় কারাবাসের ৫০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে একটি অনলাইন সংহতি ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে নিজের ফেসবুক প্রোফাইল ছবিতে ব্যবহার করার উপযোগী ফ্রেম তৈরি করা হয়েছে। কমেন্টে দেয়া লিঙ্ক থেকে ফ্রেমটি ব্যবহার করতে পারবেন।

আসুন নিরপরাধ বম নাগরিকদের মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হই এবং রাষ্ট্রের জাতিগত নিধন প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জানান দেই।


নিরপরাধ বম আদিবাসী নাগরিকদের কারাবন্দী জীবনের ৫০০ দিনবান্দরবান, ২১ আগস্ট ২০২৫আজ ২১ আগস্ট ২০২৫। পার্বত্য চট্টগ্রামের বম আ...
21/08/2025

নিরপরাধ বম আদিবাসী নাগরিকদের কারাবন্দী জীবনের ৫০০ দিন

বান্দরবান, ২১ আগস্ট ২০২৫
আজ ২১ আগস্ট ২০২৫। পার্বত্য চট্টগ্রামের বম আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য এটি এক গভীর বেদনা ও অবিচারের ৫০০তম দিন। রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হয়ে বিনা বিচারে কারাগারে বন্দী নিরপরাধ বম নাগরিকদের জীবনের ক্যালেন্ডার থেকে খসে পড়ল আরও একটি দিন।

এই দীর্ঘ সময়ে শতাধিক বম নারী-পুরুষ, শিক্ষার্থী ও সাধারণ গ্রামবাসী শুধুমাত্র সন্দেহের বশে কারাজীবন ভোগ করছেন, যাদের বিরুদ্ধে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ বা প্রমাণ।

এই মর্মান্তিক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল প্রায় দেড় বছর আগে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে। তখন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (KNF) বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়। এর জবাবে সরকার যৌথ অভিযান শুরু করে। কিন্তু সন্ত্রাস দমনের নামে সেই অভিযানের লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে পুরো বম জনগোষ্ঠী। *“যৌথ শাস্তি”*র এক নির্মম দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিভিন্ন গ্রাম থেকে সাধারণ কৃষক, দিনমজুর ও শিক্ষার্থীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়।

এই দীর্ঘ ও অমানবিক কারাবাস কেবল তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতাই কেড়ে নেয়নি, বরং চট্টগ্রাম কারাগারে বিনা চিকিৎসায় ইতোমধ্যেই নিভিয়ে দিয়েছে তিনটি অমূল্য জীবন।

আজকের এই ৫০০তম দিন তাই কেবল একটি সংখ্যা নয়— এটি একটি নিরীহ জনগোষ্ঠীর ওপর নেমে আসা রাষ্ট্রীয় অবিচারের জীবন্ত দলিল।



20/08/2025

ঢাকায় আদিবাসী শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ নামক সংগঠনের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে শিবির। তারা গুপ্ত রাজনীতির মাধ্যমে নানা ধরণের ভয়-ভীতি ও মিথ্যা প্রোপাগান্ডা তৈরি করে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি ও আদিবাসীদের বিরুদ্ধে সমতলের বাঙালী ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মাঝে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের এক আদিবাসী শিক্ষার্থী। বিস্তারিত শুনুন ভিডিওতে...

রুমায় স্কুল পড়ুয়া মারমা ছাত্রীধর্ষণের শিকার, গ্রেপ্তার ৩ যুবকবিস্তারিত কমেন্টে...
20/08/2025

রুমায় স্কুল পড়ুয়া মারমা ছাত্রী
ধর্ষণের শিকার, গ্রেপ্তার ৩ যুবক
বিস্তারিত কমেন্টে...

20/08/2025

“আমাদের প্যানেলে কোনো ‘উপজাতি’ নাই, আমাদের প্যানেলে ৩ জন ‘আদিবাসী’ প্রতিনিধি আছে।”

মেঘমল্লার বসু
সভাপতি, ছাত্র ইউনিয়ন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷

#ঢাবি #ডাকসু #ছাত্ররাজনীতি #মেঘমল্লারবসু

আসন্ন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এ জগন্নাথ হল সংসদের ‘বহিরঙ্গন ক্রীড়া সম্পাদক’ পদে প্রার্থী সমতলের আদিবাসী গারো জনগোষ...
20/08/2025

আসন্ন ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এ জগন্নাথ হল সংসদের ‘বহিরঙ্গন ক্রীড়া সম্পাদক’ পদে প্রার্থী সমতলের আদিবাসী গারো জনগোষ্ঠীর চমক জাম্বিল।
বিস্তারিত কমেন্টে...

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ছাত্র রাজনীতিতে প্রসিত চক্র ✍️--পলাশ খীসাসাবেক সভাপতি, পিসিপি, কেন্দ্রীয় কমিটিপর্ব-৫১০ নভেম...
19/08/2025

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী ছাত্র রাজনীতিতে প্রসিত চক্র
✍️--পলাশ খীসা
সাবেক সভাপতি, পিসিপি, কেন্দ্রীয় কমিটি

পর্ব-৫
১০ নভেম্বর ’৮৩ জুম্ম জাতীয় ইতিহাসে একটি কলংকজনক দিন। এই দিনে বিভেদপন্থী গিরি-প্রকাশ-দেবেন-পলাশ চক্রের হাতে আটজন সহযোগীসহ নির্মমভাবে শহীদ হন আমাদের জুম্ম জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা, জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাতা মহান নেতা এম এন লারমা। ঠিক তেমনিভাবে ১০ মার্চ ’৯৭ জুম্ম জাতীয় ইতিহাসে রচিত হয় আরও একটি কালো অধ্যায়। ১০ নভেম্বর ’৮৩ মহান নেতা এম এন লারমাকে খুন করেছে বিভেদপন্থী চক্ররা। অনুরূপভাবে ১০ মার্চ ’৯৭ পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের ডাক দেয়ার মধ্য দিয়ে প্রসিত-সঞ্চয় চক্র জনসংহতি সমিতি ও জুম্ম জনগণের যোগ্য নেতৃত্বকে ধ্বংস করতে অব্যাহতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ১০ মার্চ ’৯৭ পিসিপি-পিজিপি-এইচডব্লিউএফ এর নাম ব্যবহার করা হয় এবং সেদিন একটি মিছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি’র সড়ক দ্বীপ থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিলি করা হয় লিফলেটগুলো। সেই মিছিলে আমরা অনেকেই ছিলাম। সেই মিছিল থেকে এ ধরনের জুম্ম জাতীয় ঐক্য পরিপন্থী লিফলেট প্রচার করা হবে সেটা অনেকেই জানতাম না। অত্যন্ত সুকৌশলে প্রসিত চক্র এ কাজটি করেছে। এরপর এই লিফলেটটা নিয়ে প্রচন্ড সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয় প্রসিত চক্রকে। শুধু তাই নয় লিফলেটটি রাঙামাটি পাঠানো হলে তৎকালীন রাঙামাটি জেলার সভাপতি তনয় দেওয়ান তা বিলি না করে রেখে দেন। পরে লিফলেটের বিষয়টা নিয়ে ১৯ মার্চ ’৯৭ কেন্দ্রীয় কমিটির এক জরুরী সভা জগন্নাথ হল উপসনালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে সঞ্চয় চাকমা বলেন, “তিন সংগঠনের নামে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের ডাক অত্যন্ত যুগোপযোগী। কারণ আগামী কিছু দিনের মধ্যে সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে একটা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে – যে চুক্তিতে জুম্ম জনগণের অধিকার রক্ষিত হবে না।” তিনি আরো বলেন, “তিন সংগঠনে আমাদের মধ্যকার যে মত পার্থক্য অতীতে সৃষ্টি হয়েছে সেটার জন্য আমরা কেউ দায়ী নয়। এর জন্যে একমাত্র জনসংহতি সমিতিই দায়ী। আমরা আগেও সুখে দুঃখে একসাথে কাজ করেছি, ভবিষ্যতেও করতে চাই। তাই অতীতের সমস্ত মতভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন আদায়ের সংগ্রামকে আমাদের জোরদার করতে হবে।” সেদিন সঞ্চয়কে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম- ‘আপনি পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম্ম জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কোন আন্দোলনটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন, সশস্ত্র না গণতান্ত্রিক?’
তিনি উত্তরে বলেছিলেন, অবশ্যই সশস্ত্র। আমি আরো বলেছি যে, আপনি বলেছিলেন জনসংহতি সমিতি চুক্তি করবে, যেখানে জুম্ম জনগণের কিছুই থাকবে না। বর্তমানে আপনি কিভাবে আন্দোলন করতে চান?
তিনি বললেন, মনে করুন, আমরা যেখানে রয়েছি তার সামনে বিশাল একটি লেইক। লেইকের ওপাড়ে আমাদের অধিকারগুলো রয়েছে। আমাদের অবশ্যই সেখানে যেতে হবে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
আমি আরো প্রশ্ন করলাম, আপনি তো বলেছেন সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। অধিকারগুলো রয়েছে লেইকের ওপাড়ে। যেতে হলে লঞ্চে বা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় যেতে হবে। বর্তমানে জনসংহতি সমিতিকে যদি আমরা লঞ্চ ধরি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, তাহলে আমাদের সশস্ত্র আন্দোলনে বা জনসংহতি সমিতিতে কি যাওয়া প্রয়োজন ছিল না?

প্রত্যুত্তরে সঞ্চয় জবাব দিলেন, জনসংহতি সমিতি নামে যে লঞ্চটির কথা আপনি বললেন সেটি মোটেই চলছে না। এখনো ঘাটেই রয়েছে। সেখানে গেলেও অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না।

আমি আরো বললাম, লঞ্চটা যখন চলছে না তাহলে লঞ্চের কোনো না কোনো ত্রুটি রয়েছে। হয় ফুয়েল নেই; নয়তো মেশিনের কোনো যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে আছে। আমাদের কি উচিৎ নয় ত্রুটি কোথায় সেটা খুঁজে বের করে সেই লঞ্চ নিয়ে অধিকার নিয়ে আসা?

জবাবে তিনি বললেন, লঞ্চের বর্তমানে যিনি মালিক আছেন, তিনি এমনভাবে রয়েছেন মেশিনটা ধরতে, দেখতে বা চালাতে দিচ্ছেন না। কাজেই আমরা যদি সেই লঞ্চে উঠি তাহলে বেশী মানুষের ভারে লঞ্চটা ঘাটে ডুববে, কোনোদিনও লেইকের ঐ পাড়ে গিয়ে অধিকার নিয়ে ফিরে আসতে পারবে না।

তাহলে আমাদের কি করা উচিৎ? আমি আবার প্রশ্ন করলাম।
আমাদের আবারো নতুন করে গাছ লাগিয়ে বড় করে কাঠ চিড়ে লঞ্চ বানাতে হবে। সেখানে ভালো মেশিন এবং ভালো চালক দিয়ে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেই কাজে আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা থাকা প্রয়োজন বলে তিনি উত্তর দিলেন।

সেদিনের সেই মিটিং-এ সঞ্চয় স্পষ্টভাবে কিছু না বললেও প্রদীপন খীসা আরো কিছুটা স্পষ্ট ভাষায় বলেছিল জনসংহতি সমিতির সভাপতি সন্তু লারমা তিনি আর আন্দোলন করতে চান না, চুক্তি করতে চান। কিছু না পেলেও তিনি চুক্তি করবেন। অপর পক্ষে জনসংহতি সমিতির একটা বড় অংশ অশোক বাবুর নেতৃত্বে এখনো আন্দোলন করতে চান। সেই দিনের সেই মিটিংএ সিদ্ধান্ত হয় যে, ২১-২২ এপ্রিল কেন্দ্রীয় বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। সেই মিটিং-এ বিস্তারিত আলোচনা করে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবী বিষয়ে মীমাংসা করা হবে। যেহেতু পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের ডাক পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির নয়, ব্যক্তিগতভাবে সঞ্চয় সেই দাবীর সাথে সংশ্লিষ্ট।

২০-২১ এপ্রিল ’৯৭ চট্টগ্রাম বুড্ডিষ্ট ফাউন্ডেশন মিলনায়নে কেন্দ্রীয় বিশেষ প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনে ১০ মার্চ ’৯৭ সালে তিন সংগঠনের নামে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবী সম্বলিত লিফলেটের ব্যাপারে ব্যাপক আলোচনা-পর্যালোচনা ও সমালেচনা করা হয়। বিভিন্ন শাখার প্রতিনিধিরা সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। কতিপয় কর্মী এই দাবীটা যুগোপযোগী বলে আখ্যায়িত করলেও বেশীর ভাগ প্রতিনিধি কেন্দ্রীয় কমিটিকে তীব্র সমালোচনা করেন। এমন যুক্তি উপস্থাপন করেন যে, সেখানে কেন্দ্রীয় কমিটির কিছুই বলার থাকে না। প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে বলা হয়, পিসিপি তার জন্মলগ্ন থেকে বলে আসছে যে, পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা একটি রাজনৈতিক সমস্যা। এই সমস্যাটাকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করার জন্য সরকার ও জনসংহতি সমিতির মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে জনসংহতি সমিতির যখন আলোচনা কিছুটা অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে বলে আমরা পত্রিকায় খবর দেখছি তখন পিসিপির পক্ষ থেকে এ ধরনের লিফলেট ছাপানোর মধ্য দিয়ে সমাধানের প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটি একতরফাভাবে এ ধরনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত (পূর্ণ স্বায়ত্বশাসন দাবী সম্বলিত লিফলেট ছাপানো ও বিতরণ করা) নিতে পারে না। প্রতিনিধিদের সমালোচনা-পর্যালোচনামূলক বক্তব্যের পর কেন্দ্রীয় কমিটির একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সঞ্চয় প্রস্তাব করেন কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে কেবলমাত্র দু’একজন বক্তব্য রাখবেন। তখন কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকেই তার প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বলেন, “যে বিষয়টা নিয়ে আজ প্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় কমিটিকে সমালোচনা করছে তার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি দায়ী নয়। কারণ কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লিফলেট ছাপানো হয়নি। কাজেই প্রত্যেকের বলার রয়েছে।” ফলে সিদ্ধান্ত হয় যে, সবাই নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করবেন বিষয়টা নিয়ে। কেন্দ্রীয় কমিটির অনেকেই পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবী সম্বলিত লিফলেটের জন্য সঞ্চয়কে দায়ী করেন। সভার সমাপ্তি বক্তব্যে সঞ্চয় তার অপরাধ স্বীকার করে বলেন যে, “পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের ডাক আমি কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে দিয়েছি। এজন্য যদি শাস্তি ভোগ করতে হয় আমি করবো, যদি সংগঠন থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয় তাতেও আমার আপত্তি নেই। তবে আপনারা জেনে রাখুন, আগামী জুন মাসের মধ্যে জনসংহতি সমিতি সরকারের সাথে চুক্তি করবে- যে চুক্তিতে জুম্ম জনগণের কোনো অধিকার সংরক্ষিত হবে না। কারণ জনসংহতি সমিতির বর্তমান নেতৃত্ব অচল, ঘরের নষ্ট হওয়া খুঁটির মতো নড়েবড়ে, যে কোন মুহূর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে। তারা আর আন্দোলন করতে চায় না। তাই কোনো কিছু না পেলেও জনসংহতি সমিতি চুক্তি করতে বাধ্য সরকারের সাথে।”

সেই প্রতিনিধি সম্মেলনে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবী বাতিল করা হলো। তবে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধি মনে করেন পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবীটা যৌক্তিক তাহলে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে সেটা চূড়ান্ত হবে। আরো সিদ্ধান্ত হয় যে, পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের পরিবর্তে ৪টি মৌলিক দাবী নিয়ে পিসিপি’র ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষির্কী ও ৭ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। দাবীগুলো হলো –
১. সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ স্বায়ত্বশাসন দিতে হবে।
২. ভূমি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
৩. সেনাবাহিনী ও সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করতে হবে।
৪. বহিরাগত বাঙালীদের ফেরত নিতে হবে।
এই ৪টি দাবীতে ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষির্কী ও ৭ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ১৭-২০ জুন ’৯৭ তারিখে ঢাকা অথবা চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে।

১১ মে ’৯৭ খাগড়াছড়িতে নির্মাণাধীন ষ্টেডিয়ামে রাজশাহী মহানগর শাখার সাবেক সভাপতি ও সাবেক কেন্দ্রীয় সহ সাধারণ সম্পাদক উষাময় খীসাকে (বর্তমানে আইনজীবী) প্রসিত চক্রের সন্ত্রাসীরা দীপ্তিশংকরের নির্দেশে মারধর করে। সেদিন উষাময় ও অমিয় চাকমা (বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার) নির্মাণাধীন ষ্টেডিয়ামে ছোট বোন স্বর্ণাশ্রী ও রূপাশ্রী (তটিনী ও এল্টনি)সহ বেড়াতে গিয়েছিল। বিকাল বেলায় ষ্টেডিয়ামের গ্যালারীতে বসে তারা যখন গল্প করছিল ঠিক সেই সময়ে একজন ছেলে এসে জিজ্ঞাসা করে- উষাময় কার নাম? উষাময় তখন নিজের পরিচয় দেয়। ছেলেটি বলে “আপনার সাথে কথা আছে। একটু আমার সাথে যেতে হবে।” উষাময় বিষয়টা সহজভাবে নিয়ে ছেলেটার সাথে যায়। ছেলেটা তাকে নিয়ে যায় ষ্টেডিয়ামের ভেতরের একটি রুমে। সেখানে গিয়ে দেখে অনেকগুলো ছেলে। তখন কোনো কথা না বলে দরজা বন্ধ করে উষাময়কে মারতে শুরু করে সন্ত্রাসীরা। যে যেভাবে পারে মারছে আর উষাময় চিৎকার করছে। কিন্তু শব্দটা অমিয়দের কাছে পৌঁছে না। তারা অপেক্ষা করছে উষাময় কখন আসবে। প্রায় ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করেও যখন আসছে না তখন তারা খুঁজতে যায়। খুঁজতে খুঁজতে চিৎকার শুনতে পায়। দরজা খুলে দেখে উষাময়কে ১৫/২০ জন ছেলে মারছে। দরজা খোলার সাথে সাথে অমিয়কে দু’চারজন এসে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয় এবং চলে যেতে বলে। তখন অমিয়রা হুয়াং বোইও বা-তে যায়। সেটি পিসিপি’র অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সেখানে দীপ্তিশংকর ছিল। তাকে ঘটনাটা বিস্তারিত বলা হয়। কিন্তু সে জবাব দেয় অপরাধ করলে তো মার খেতে হবে। তাদের করার কিছু নেই। তখন স্বনির্ভর বাজারে আসা লোকদের কাছে উষাময়কে বাঁচানোর জন্য আহ্বান করে অমিয়রা। বাজারে আসা লোকজন উদ্ধারের জন্য গেলে সন্ত্রাসীরা চলে যায় এবং উষাময়কে মুমুর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পর সে আপাততঃ ভালো হয়ে যায়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই সময়ের আঘাতের ব্যাথাগুলো জ্বালাতন করে। শুধু তাই নয় আমাদের পক্ষ থেকে খাগড়াছড়িতে দায়িত্ব পালনরত তনয় দেওয়ান ঊষাময় খীসাকে দেখাশুনা ও চিকিৎসা করার পর রাঙামাটি ফিরে আসার সময়ে ১৫ মে তারিখে তাকে খাগড়াছড়ি বাস ষ্টেশন থেকে প্রসিত চক্রের সন্ত্রাসীরা অপহরণের চেষ্টা চালায়।

৬ জুন ’৯৭ চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্রাবাসে কেন্দ্রীয় কমিটির একটি বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মৃগাঙ্ক খীসা যখন বক্তব্য রাখছিলেন তখন তার বক্তব্যের উপর কথা বলতে থাকে চম্পানন, নিকোলাস, মিন্টুসহ আরো দু’একজন। মৃগাঙ্ক বক্তব্য রাখতে পারছেন না, কারণ প্রতিটি কথায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তখন আমি সভাপতির অনুমতি নিয়ে প্রশ্ন করলাম- “এখানে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিং হবে নাকি মাছের বাজারের মতো তর্ক-বিতর্ক হবে? মাছের বাজারের মতো হলে আমিও শুরু করতে পারি কি-না? যদি না হয় তাহলে মৃগাঙ্ক বাবুকে তার বক্তব্য উপস্থাপন করার সুযোগ দেয়া হোক।” তখন সভাপতি হিসেবে সঞ্চয় হস্তক্ষেপ করে বলেন- একজনের বক্তব্য শেষ না হলে আরেকজন কথা বলতে পারবে না। তখনই মৃগাঙ্ক বাবু বক্তব্য রাখার সুযোগ পান। তার বক্তব্যকে সমালোচনা করে প্রসিত চক্রের দু’একজন বলেছিল তিনি নাকি জনসংহতি সমিতির সদস্যের মতো বক্তব্য রাখছেন এবং তাদের দালালী করছেন। সেই মিটিংএ প্রসিত চক্রের দীপ্তি শংকর বাদে সবাই উপস্থিত ছিল। দীপ্তি শংকরও লিখিতভাবে কাগজ পাঠিয়েছে যে, সে আসতে পারবে না, তবে সংখ্যাগরিষ্ঠের সিদ্ধান্ত মেনে নেবে। সেদিনের মিটিংএর উদ্দেশ্য ছিল কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধাকেন্ত পরিবর্তন করা। সে কারণে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের জন্য প্রসিত চক্র সবাই মিটিংএ উপস্থিত হয়। সেই মিটিংএ প্রস্তাব করা হয় যে, প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ৮ম প্রতিষ্ঠা বার্ষির্কী ও ৭ম কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ঢাকা ও চট্টগ্রামের পরিবর্তে খাগড়াছড়িতে অনুষ্ঠিত করা এবং যে ৪টি মৌলিক দাবী নিয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও কাউন্সিল করার সিদ্ধান্ত ছিল তা পরিবর্তন করে পূর্ণ স্বায়ত্বশাসনের দাবী অন্তর্ভুক্ত করা। কোনো প্রকার যুক্তি দেয়ার সুযোগ সেখানে দেয়া হয়নি। প্রস্তাবের পক্ষে না বিপক্ষে শুধুমাত্র এই মতামত চাওয়া হয়। যেহেতু প্রসিত চক্রের সবাই উপস্থিত কাজেই সংখ্যাগরিষ্ঠের মত হিসেবে সেটা চাপিয়ে দেয়া হয়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবর্তন করার ক্ষমতা নেই। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সংগঠনের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা হচ্ছে কেন্দ্রীয় কাউন্সিল, এরপরে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন, তারপর কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রীয় কমিটির যে কোনো সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলন বা কেন্দ্রীয় কাউন্সিল বাতিল করে দিতে পারে, কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয কমিটি বাতিল করে দিতে পারে না।

শুধু তাই নয় সঞ্চয় চাকমা উদ্ধত কন্ঠে বলেন যে, আমি পার্টির (জেএসএস) সবকিছু দেখেছি। কোথাও কিছু নেই। তাদের পক্ষে আর আন্দোলন করা সম্ভব নয়। মূলতঃ প্রতিনিধি সম্মেলনের সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে প্রসিতের নির্দেশ মোতাবেক কাজ করার জন্য সঞ্চয় এসব বক্তব্য দিয়েছিল।

প্রথম পর্বের লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1F7bXDUj4D/
দ্বিতীয় পর্বের লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1JS433DWyY/
তৃতীয় পর্বের লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1EoMgNdaQA/
চতুর্থ পর্বের লিংক: https://www.facebook.com/share/p/1GggZtTKaz/

বি.দ্র.: উপরের লেখায় যদি কোনো অসংগতি বা তথ্যগত ভুল থেকে থাকে, অনুগ্রহ করে আমাদেরকে অবহিত করুন। নির্ভরযোগ্য ও যথাযথ তথ্য উপস্থাপন আমাদের অঙ্গীকার।

#পলাশখীসা #প্রসীত #প্রসীতচক্র #পার্বত্যরাজনীতি

Address

Rangamati, Chittagong
Rangamati
4580

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when CHT Journal posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share