04/12/2024
তারিন কয়েক মাস পর পর ই মেসেজ রিকুয়েস্ট অপশন টা চেক করে অচেনা মানুষ জন রা মাঝে মধ্যে টেক্সট পাঠায় সেসব পড়ার জন্য। আসলে নিজেকে কিছু টা হলেও গুরত্বপূর্ণ ভাবার জন্য কারণ পরিচিত মানুষ গুলো আজ কাল মেসেজ করে না বললেই চলে তবে এর জন্য সে নিজেই দায়ী সংসার সামলাতে সামলাতে কখন যে একঘেয়ে জীবন বেছে নিয়েছে সে নিজেই জানেনা। এনিওয়ে চেক করেও লাভ হলো না কেউ মেসেজ করে নি তাই স্ক্রোলিং করে পুরনো মেসেজ গুলো দেখছিল এই মেসেজ রিকুয়েষ্ট অপশন টা তে কত আনসীন মেসেজ পরে আছে পুর্বের তার হিসেব নেই ওসব ই সীন করে পড়ছে বেচারি.....
বেশিরভাগ ই সালাম দোয়া কেমন আছেন, ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট একসেপ্ট করেন হেন তেন টাইপ টেক্সট... ওসব পড়ে খারাপ ভাল কিছুই লাগছেনা
তবে সামিয়া আইরিন নামের আইডির টেক্সট গুলো দেখে কিছু টা গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো অনেক পুরনো টেক্সট প্রায় পাঁচ বছর আগের যখন এসব মেসেজ টেসেজ পড়ার সময় ছিল না তারিনের তখনকার " অনেক গুলা পিকচার শেয়ার করা " সেসব সে খুব মনযোগ সহকারে দেখতে লাগলো... একটা মেয়ে এবং তারিনের গুনধর হাজব্যান্ড মুশফিকের বিভিন্ন পোজে বসা দাড়ানো পিক।
পিক গুলা দেখে তারিন ভাবতে লাগলো মুশফিক তখন কত টা স্লিম ছিল সব চেয়ে বড় কথা ওর পেট টা পারফ্যাক্ট পজিশনে ছিল এখনত অনেক টা ৬-৭ মাসের প্রেগন্যান্ট মহিলা দের মত লাগে... এটা ভেবেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো তারিন।
সব গুলা পিক ই সে খুব গভীর মনোযোগ দিয়ে দেখল মুশফিকের পরা এসব পিকের বেশির ভাগ জিন্স আর শার্ট দিয়ে তারিন হাড়ি পাতিল নিয়ে ফেলেছে ফেরিওয়ালা থেকে আর কিছু কিছু ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করেছে ইনফ্যাক্ট মেয়েটি আর মুশফিকের হলুদ পাঞ্জাবী আর নীল শাড়ি পরা পিক টা দেখে নিজেকে অপরাধী মনে হলো তার হয়তো দুজন দুজন কে উপহার দিয়েছিল কিন্তু দিন কয়েক আগে আলমারি থেকে পাঞ্জাবী টা বের করে ঘর মোছার কাজে ব্যবহার করছে সে ইনফ্যাক্ট আজ ও মুছেছে ঘর এটাই অপরাধ বোধের কারণ ।
আসলে এসব এখন আর মুশফিকের সাইজের নাই অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে তাই এসব কাজেই ব্যবহার করা হয় । তবে এখানে আরও একটা বিষয় তারিন খেয়াল করেছে নীল আর হলুদ বেশ সুন্দর ফুটে উঠে একসাথে।নীল কালারের কাপড়ে হলুদ সুতো দিয়ে নকশীকাঁথা সেলাই করলে দারুণ লাগবে...
ধ্যাত-ত্যাড়িকা এসব কি চিন্তা করছে সে! বড়ই বিরক্তিকর মনে হলো নিজেকে এই সিচুয়েশনে তার উচিৎ হাজব্যান্ড এবং হাজব্যান্ডের প্রাক্তন নিয়ে ভাবা আর সে কিনা নকশিকাঁথার কথা ভাবছে..
এনিওয়ে কাম টু দ্যা পয়েন্ট; মুশফিক বিয়ের সময় বলেছিল তার লাইফে কেউ ছিল তবে বিয়ের অনেক আগেই সেই অধ্যায় শেষ সেটা ও বলেছিল
তখন অবশ্য তারিনের খুব মন খারাপ হয়েছিল
সে ভাবতেই পারছিল না সে ছাড়া তার হাজব্যান্ডের জীবনে অন্য কেউ ছিল অভিমানে গাল ফুলিয়ে ছিল বেশ কয়েক দিন। তখন জীবন রঙিন ছিল তাই মনে ও অভিমান ছিল আর এখন সংসার বাচ্চা কাচ্চা সামলাতে সামলাতে অভিমান করার ব্যপার টা বড়লোকি ব্যাপার স্যাপার মনে হয়...
বিয়ের প্রায় পাঁচ বছর হতে চললো এই সময় এমন হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে ও খারাপ লাগছেনা .. বরং আফসোস হতে লাগলো এটা ভেবে এক সময়ের জমকালো প্রেমের আবেগ মাখানো উপহার গুলো বিয়ের পর হাড়িপাতিল কেনা আর ঘর মোছার কাজে ব্যবহৃত হয় এসব কি কোনো এক্স খবর রাখে??
সব এক্সদের উচিৎ এমন একটা সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা যে সংগঠনের কাজ হবে ব্রেক আপের পর প্রিয়জনকে দেয়া উপহার বা প্রিয়জনের পরা প্রিয় ড্রেস গুলা উদ্ধার করা..🙄
#গল্প_এক্স_সংগঠন