06/03/2025
✍️রাজবনবিহার সীমাঘরটি কেন পরিশুদ্ধ,ত্রিপিটকের প্রমাণ নিয়ে আবারো আসলাম আপনাদের মাঝে।
🙏রাজবন বিহারের সীমাঘরটি পরম পূজ্য বনভান্তে, ত্রিপিটক বিশারদ প্রজ্ঞাবংশ ভান্তেসহ সর্বমোট ২৫৩ জন মহান ভিক্ষু সংঘের সম্মতিতে এবং বিনয় বিশারদ সত্যপ্রিয় ভান্তের সাথে পরামর্শ করে ৪/৭/২০০৮ সালে স্থাপন করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০২৪/২৫ সালে এসে বনভান্তের শিষ্যসংঘের ১/২ জন ভিক্ষু রাজবন বিহারের সীমাঘরকে অপুরিশুদ্ধ বলে বেড়াচ্ছে।
👉 এখন সবার মনে প্রশ্ন ঘ্যাংঘরের মূল সমস্যা কি?
✅উত্তর- ছন্দ ও নিমিত্ত। আসুন এবার প্রমাণ সহ পড়ি,
👉৪। ছন্দ ও নিমিত্ত
ভিক্ষু বিনয়ে ছন্দ অর্থ অভিমত বা মতামত। নিমিত্ত অর্থ হল চিহ্ন। (যেমন কোন জায়গার চৌহদ্দির চিহ্ন বুঝায়।
বিনয় পিটকে পরিবার, পাচিত্তিয়, চূলবর্গ ও মহাবর্গে "ছন্দ" বিষয়ে বিধিবিধান আছে।
✍️ রাজবন বিহারের সীমাঘরটি তৈরির সময় নিমিত্ত নির্ণয়ের কাজটি করেছিল ভদন্ত ইন্দ্রগুপ্ত ভিক্ষু ও ভদন্ত সুমন ভিক্ষু। সার্বিক তত্ত্বাবধান ও কারিগরি দায়িত্বে ছিলেন ভদন্ত অনুমোদর্শী ভিক্ষু (বর্তমানে গৃহি) ও ভদন্ত প্রজ্ঞাবোধি ভিক্ষু। ভদন্ত সুমন ভান্তে, ভদন্ত প্রজ্ঞাবোধি ভান্তে ও উপাসক অনুমোদর্শীর মতে সীমাঘর নির্মাণে কোন প্রকার অনিয়ম, অবিনয় ও ত্রুটি রাখা হয়নি। রাজবন বিহারের সীমাঘরটি বিনয়সম্মত ও পরিশুদ্ধ আছে। একমাত্র এক জন ভিক্ষু বলে বেড়াচ্ছে অপরিশুদ্ধ।
✍️নিমিত্ত সম্পর্কে বিনয়ের মহাবর্গে ৮ প্রকারের নিমিত্ত (চিহ্ন) কথা উল্লেখ করা আছে; যথা : পর্বতনিমিত্ত, পাষাণনিমিত্ত, বননিমিত্ত, বৃক্ষনিমিত্ত, মার্গনিমিত্ত, বল্মীকনিমিত্ত, নদীনিমিত্ত, এবং উদকনিমিত্ত।
👉 রাজবনবিহার সীমাঘরটি পরিস্কারভাবে উদকনিমিত্ত দিয়ে তৈরি করা হয়, যে পরিমাণ পানি লাগে, যে দিকে পানি লাগে সঠিকভাবে করা হয়েছে, অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে তার প্রমাণ কি? প্রমাণ হলো সুমন ভান্তে,পুণ্য জ্যোতি ভান্তে তারা পানি ঢেলেছেন। এবং মৈত্রী লংকার ভান্তে সহ আরো অনেকে পানি ঢালতে দেখেছে। এবার আসি ছন্দ,
👉 কর্মক্ষম ভিক্ষু ও ছন্দদানের যোগ্য ভিক্ষু সম্পর্কে জানা দরকার।
✅কর্মক্ষম ভিক্ষু হল সবল, রোগহীন ভিক্ষু।
👉ছন্দ দানের যোগ্য ভিক্ষু হল রোগী ভিক্ষু। সমগ্র সংঘ কর্মের সময় রোগী ভিক্ষুটি অপর ভিক্ষুর মারফত সংঘকে তার ছন্দ বা অভিমত পাঠাতে হয়।
( রাজবন সীমাঘরটি স্থাপনের সময়ে অসতর্কতাবশত একের অধিক ভিক্ষু সংঘকর্মে অনুপস্থিত ছিল বলে দাবি করা হয়। যারা কর্মক্ষম ভিক্ষু ও ছন্দদানের অনুপযুক্ত। তারা কখনোই সীমাঘরটিকে বিরোধ করে না।)
*************বিস্তারিত *******
👉সীমা হল ভিক্ষুসংঘের বিনয় কর্মের প্রাণকেন্দ্র স্বরুপ। চাকমা কথায় "ঘরপাদা" বললেও ভুল হবে না। এখানে একজন শ্রামণের উপসম্পদা লাভ করা থেকে শুরু করে ভিক্ষু জীবনের যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিনয় কর্মগুলি সম্পাদিত হয়।
✍️রাজবন বিহারের সীমাঘরটি পরম পূজ্য বনভান্তে, ত্রিপিটক বিশারদ প্রজ্ঞাবংশ ভান্তেসহ সর্বমোট ২৫৩ জন মহান ভিক্ষু সংঘের সম্মতিতে এবং বিনয় বিশারদ সত্যপ্রিয় ভান্তের সাথে পরামর্শ করে ৪/৭/২০০৮ সালে স্থাপন করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০২৪ সালে এসে বনভান্তের শিষ্যসংঘের একদল ভিক্ষু রাজবন বিহারের সীমাঘরকে অপরিশুদ্ধ সীমাঘর হিসেবে ঘোষণা করেছে। বনভান্তের অনুশাসনে যা অত্যন্ত মর্মান্তিক ও বজ্রাঘাতের চেয়েও বেশি। তাদের সেই নেগেটিভ দৃষ্টিকে আমি কীভাবে পজেটিভ হিসেবে দেখি বা সীমাঘরকে কীভাবে পরিশুদ্ধ হিসেবে দেখি তা নিচে আলোচনা করছি।
সীমাঘরটি কীভাবে পরিশুদ্ধ আছে তা বুঝতে হলে কয়েকটি বিষয় সঠিক ভাবে জানতে হবে। যেমনঃ
১। সীমাঘর নির্মানের কর্মবাক্য।
২। সংঘ ও সংঘের ক্ষমতা।
৩। সংঘ কর্ম।
৪। ছন্দ ও সীমা সম্পর্কিত নিমিত্ত ( চিহ্ন)।
১। সীমা ঘর নির্মাণের কর্মবাক্যটি কি?
"হে ভিক্ষুগণ, আমি সীমা নির্ণয় করিবার আদেশ দিতেছি।”
হে ভিক্ষুগণ, এইভাবে সীমা নির্ণয় করিবে : প্রথম নিমিত্ত (চিহ্ন) সমূহের উল্লেখ করিবে; যথা : পর্বতনিমিত্ত, পাষাণনিমিত্ত, বননিমিত্ত, বৃক্ষনিমিত্ত, মার্গনিমিত্ত, বল্মীকনিমিত্ত, নদীনিমিত্ত, এবং উদকনিমিত্ত। নিমিত্তের (চিহ্নের) উল্লেখ করিয়া দক্ষ এবং সমর্থ ভিক্ষু সংঘকে এইরূপ প্রস্তাব জ্ঞাপন করিবে :
জ্ঞপ্তি : মাননীয় সংঘ, আমার প্রস্তাব শ্রবণ করুন। চতুর্দিকে যেই পর্যন্ত নিমিত্তসমূহ (চিহ্ন সকল) কীর্তিত (বর্ণিত) হইল, যদি সংঘ উচিত মনে করেন তাহা হইলে সংঘ এই নিমিত্তসমূহ দ্বারা ‘সমানসংবাস একুপোসথ সীমা নির্ণয় করিতে পারেন। ইহাই জ্ঞপ্তি।
অনুশ্রাবণ : মাননীয় সংঘ, আমার প্রস্তাব শ্রবণ করুন। চতুর্দিকে যেই পর্যন্ত নিমিত্তসমূহ কীর্তিত হইল, সংঘ এই নিমিত্তসমূহ দ্বারা ‘সমানসংবাস একুপোসথ’ সীমা নির্ণয় করিতেছেন। যেই আয়ুষ্মান উচিত মনে করেন এই নিমিত্তসমূহ দ্বারা ‘সমানসংবাস একুপোসথ’ সীমা নির্ণয় করা, তিনি মৌন থাকিবেন এবং যিনি উচিত মনে না করেন তিনি তাহার বক্তব্য ভাষায় প্রকাশ করিবেন।
ধারণা : সংঘ কর্তৃক এই নিমিত্তসমূহ দ্বারা ‘সমানসংবাস একুপোসথ’ সীমা নির্ণীত হইল। সংঘ এই প্রস্তাব উচিত মনে করিয়া মৌন রহিয়াছেন, আমি এইরূপ ধারণা করিতেছি।
উপরে উল্লেখিত নিয়মে একটি সীমাঘর বানানো হয়। এভাবে বিনয়সম্মত ও যথা নিয়মে সংঘকর্ম করা হলে পরে যদি কোন ভিক্ষু না মানলে তার বিনয়ের একটি পাচিত্তিয় শীল ভঙ্গ হয়। তার পরও কেন এক অংশ সীমাঘরকে অপরিশুদ্ধ দাবি করে? আর আমি কেন পরিশুদ্ধ দাবি করি? তার উত্তর পেতে হলে আরও পড়তে হবে।
♥মহাসংঘ কর্তৃক সীমাঘরটি সম্মতি প্রাপ্ত। কর্মবাচা সময়ে কোন ভিক্ষুই সীমাঘর সম্পর্কে দ্বিমত হয় নি।
২। সংঘ ও সংঘের ক্ষমতা
সংঘ অর্থ ভিক্ষু সমাজ। ভিক্ষু সংঘ বা কোরাম ৫ প্রকারের হয়। তাদের ক্ষমতা বা অধিকারও ভিন্ন ভিন্ন হয়।
পাঁচ প্রকার সংঘ; যথা : (১) চতুর্বর্গ (চারিজন) ভিক্ষুসংঘ, (২) পঞ্চবর্গ (পাঁচজন) ভিক্ষুসংঘ, (৩) দশবর্গ (দশজন) ভিক্ষুসংঘ, (৪) বিংশতিবর্গ (বিশজন) ভিক্ষুসংঘ এবং (৫) বিংশত্যধিক বর্গ (বিশজনের অধিক) ভিক্ষুসংঘ।
সংঘের ক্ষমতা
(১) হে ভিক্ষুগণ, চতুর্বর্গ ভিক্ষুসংঘ উপসম্পদাদান, প্রবারণা এবং আহ্বান এই ত্রিবিধ কর্ম ব্যতীত ধর্মানুসারে সমবেত হইয়া অন্য সমস্ত কর্ম করিতে পারে।
(২) হে ভিক্ষুগণ, পঞ্চবর্গ ভিক্ষুসংঘ মধ্যদেশে উপসম্পদাদান এবং আহ্বান এই দ্বিবিধ কর্ম ব্যতীত ধর্মানুসারে সমবেত হইয়া অন্য সমস্ত কর্ম করিতে পারে।
হে ভিক্ষুগণ, দশবর্গ ভিক্ষুসংঘ আহ্বানকর্ম ব্যতীত ধর্মানুসারে সমবেত হইয়া অন্য সমস্ত কর্ম করিতে পারে।
(৪) হে ভিক্ষুগণ, বিংশতিবর্গ ভিক্ষুসংঘ ধর্মানুসারে সমবেত হইয়া সমস্ত কর্ম করিতে পারে।
(৫) হে ভিক্ষুগণ, বিংশত্যধিক বর্গ ভিক্ষুসংঘ ধর্মানুসারে সমবেত হইয়া সমস্ত কর্ম করিতে পারে।
( মহাবর্গের অনুচ্ছেদ নং ৩৮৮)
♥বিশ জনের অধিক ভিক্ষু একত্রে ধর্মসম্মত সকল কর্ম করতে পারে।
৩।সংঘ কর্ম
সংঘের ৬ প্রকার কর্ম। যথা : (১) ধর্মবিরুদ্ধ কর্ম, (২) বর্গকর্ম, (৩) সমগ্রকর্ম, (৪) ধর্মপ্রতিরূপ বর্গকর্ম, (৫) ধর্মপ্রতিরূপ সমগ্রকর্ম, (৬) ধর্মসম্মত সমগ্রকর্ম
( প্রতিটি বিষয়ে লিখলে অনেক লম্বা হয়। এজন্য এখানে শুধু "ধর্মসম্মত সমগ্রকর্ম" সম্পর্কে তুলে ধরব। বিস্তারিত জানতে মহাবর্গের ৩৮৭ অনুচ্ছেদ পড়তে হবে।)
হে ভিক্ষুগণ, ধর্মসম্মত সমগ্রকর্ম কাহাকে বলে?
হে ভিক্ষুগণ, (১) যদি জ্ঞপ্তি দ্বিতীয়কর্মে প্রথম জ্ঞপ্তি স্থাপন করে, পরে একবার কর্মবাক্য অনুশ্রাবণ করিয়া কর্ম সম্পাদন করে, কর্মক্ষম ভিক্ষুগণ উপস্থিত থাকে, ছন্দদানের যোগ্য ভিক্ষুর ছন্দ সংগ্রহ করা হইয়া থাকে এবং উপস্থিত ভিক্ষুগণ বাধা প্রদান না করে, তবে তাহা ধর্মসম্মত সমগ্রকর্ম নামে কথিত হয়। (২) ভিক্ষুগণ, যদি জ্ঞপ্তি চতুর্থ কর্মে প্রথম জ্ঞপ্তি স্থাপন করে, পরে তিনবার কর্মবাক্য অনুশ্রাবণ করিয়া কর্ম সম্পাদন করে, কর্মক্ষম ভিক্ষুগণ উপস্থিত থাকে, ছন্দদানের যোগ্য ভিক্ষুর ছন্দ সংগ্রহ করা হইয়া থাকে, উপস্থিত ভিক্ষুগণ বাধা প্রদান না করে তবে তাহাও ধর্মসম্মত সমগ্রকর্ম নামে কথিত হয়। ভিক্ষুগণ, ইহাকে ধর্মসম্মত সমগ্রকর্ম বলে।
★ কর্মক্ষম ভিক্ষু ও ছন্দদানের যোগ্য ভিক্ষু সম্পর্ক জানা দরকার।
কর্মক্ষম ভিক্ষু হল সবল, রোগহীন ভিক্ষু। ছন্দ দানের যোগ্য ভিক্ষু হল রোগী ভিক্ষু। সমগ্র সংঘ কর্মের সময় রোগী ভিক্ষুটি অপর ভিক্ষুর মারফত সংঘকে তার ছন্দ বা অভিমত পাঠাতে হয়।
( রাজবন সীমাঘরটি স্থাপনের সময়ে অসতর্কতাবশত একের অধিক ভিক্ষু সংঘকর্মে অনুপস্থিত ছিল বলে দাবি করা হয়। যারা কর্মক্ষম ভিক্ষু ও ছন্দদানের অনুপযুক্ত। তারা কখনোই সীমাঘরটিকে বিরোধ করে না।)
৪। ছন্দ ও নিমিত্ত
ভিক্ষু বিনয়ে ছন্দ অর্থ অভিমত বা মতামত। নিমিত্ত অর্থ হল চিহ্ন। (যেমন কোন জায়গার চৌহদ্দির চিহ্ন বুঝায়। চাকমা কদায় কদ গেলে ঘর সুদত দেনা।)
বিনয় পিটকে পরিবার, পাচিত্তিয়, চূলবর্গ ও মহাবর্গে "ছন্দ" বিষয়ে বিধিবিধান আছে। ছন্দ বিষয়ে কয়েক দিন আগে একবার লিখেছি। সেজন্য এখানে শুধুমাত্র মহাবর্গ থেকে রেফারেন্স সংযুক্ত করছি। যেমন মহাবর্গে বুদ্ধ বলেছেন;
ভিক্ষুগণ, আমি অনুজ্ঞা করিতেছি : পীড়িত ভিক্ষুকে ছন্দ (স্বীয় অভিমত) জ্ঞাপন করিতে হইবে।”
হে ভিক্ষুগণ, এইভাবে ছন্দ দিতে হইবে : সেই পীড়িত ভিক্ষুকে জনৈক ভিক্ষুর নিকট উপস্থিত হইয়া, দেহের একাংশ উত্তরাসঙ্গ দ্বারা আবৃত করিয়া, পদাগ্রে ভর দিয়া বসিয়া, কৃতাঞ্জলি হইয়া এইরূপ বলিতে হইবে : “আমি ছন্দ দিতেছি, আমার ছন্দ লইয়া গমন করুন, আমার ছন্দ (সংঘকে) জ্ঞাপন করুন।” এইরূপ ইশারায় জ্ঞাপন করে, বাক্যে জ্ঞাপন করে, ইশারা ও বাক্যে জ্ঞাপন করে, ছন্দ প্রদত্ত হইয়া থাকে। ইশারায় জ্ঞাপন না করিলে, বাক্যে জ্ঞাপন না করিলে, কিংবা ইশারায় ও বাক্যে জ্ঞাপন না করিলে ছন্দ প্রদত্ত হয় না এরূপে যদি পারা যায় তবে ভালো, যদি পারা না যায় তাহা হইলে সেই পীড়িত ভিক্ষুকে মঞ্চ অথবা চৌকিতে করিয়া সংঘসভায় আনিয়া কর্ম (বিবাদ নিষ্পত্তি আদি) করিতে হইবে। [অবশিষ্টাংশ পরিশুদ্ধি প্রদান সদৃশ।]
“হে ভিক্ষুগণ, আমি অনুজ্ঞা করিতেছি : উপোসথ দিবসে পরিশুদ্ধি দিবার সময় ‘সংঘের করণীয় আছে’ এই ভাবিয়া ছন্দও (অভিমত) প্রদান করিবে।”
(বিস্তারিত জানার জন্য মহাবর্গের ১৬৪-১৬৭ অনুচ্ছেদ গুলি পড়তে হবে।)
নিমিত্ত সম্পর্কে বিনয়ের মহাবর্গে ৮ প্রকারের নিমিত্ত (চিহ্ন) কথা উল্লেখ করা আছে; যথা : পর্বতনিমিত্ত, পাষাণনিমিত্ত, বননিমিত্ত, বৃক্ষনিমিত্ত, মার্গনিমিত্ত, বল্মীকনিমিত্ত, নদীনিমিত্ত, এবং উদকনিমিত্ত। কিন্তু কিভাবে নিমিত্ত দিতে হয় সে বিষয়ে মূল পিটকে সুস্পষ্ট কোন কিছুই নেই। সেজন্য রাজবন বিহারের সীমাঘরটি নির্মাণের সময় পরম্পরা বা বার্মায় যেভাবে নিমিত্ত দেওয়া হয় ঠিক সে নিয়মে করা হয়েছে। (মূলতঃ এটিই সীমাঘর বির্তক। বিরুদ্ধবাদীদের প্রশ্ন কেন অর্থকথা অনুসারে সীমাঘরের নিমিত্ত করা হয় নি? যেহেতু অর্থকথা অনুসারে সামান্য গরমিল হচ্ছে তাই আমরা রাজবন সীমাঘরটি মানি না।)
অপরদিকে রাজবন বিহারের সীমাঘরটি বানানোর সময় নিমিত্ত নির্ণয়ের কাজটি করেছিল ভদন্ত ইন্দ্রগুপ্ত ভিক্ষু ও ভদন্ত সুমন ভিক্ষু। সার্বিক তত্ত্বাবধান ও কারিগরি দায়িত্বে ছিলেন ভদন্ত অনুমোদর্শী ভিক্ষু (বর্তমানে গৃহি) ও ভদন্ত প্রজ্ঞাবোধি ভিক্ষু। ভদন্ত সুমন ভান্তে, ভদন্ত প্রজ্ঞাবোধি ভান্তে ও উপাসক অনুমোদর্শীর মতে সীমাঘর নির্মাণে কোন প্রকার অনিয়ম, অবিনয় ও ত্রুটি রাখা হয় নি। রাজবন বিহারের সীমাঘরটি বিনয়সম্মত ও পরিশুদ্ধ আছে।
সমাধান
১। বিনয় অনুসারে বিশ জনের অধিক ভিক্ষু কর্তৃক সম্মতিপ্রাপ্ত সীমাঘর।
২। সীমাঘরটি স্থাপনের সময়ে কোন ভিক্ষু দ্বিমত করেনি।
৩। যথাযথ, বিনয় সম্মত ও পরিশুদ্ধ সীমাঘর।