17/05/2025
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো শিক্ষক যদি গ্রেফতার (arrest) হয়ে জেলে যান, তাহলে তার বেতন এবং হাজিরা (presence) সংক্রান্ত বিষয়গুলো কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম অনুসারে পরিচালিত হয়। নিচে বিস্তারিতভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হলো:
---
গ্রেফতার হওয়া শিক্ষকের বেতন ও হাজিরা: বিস্তারিত নিয়ম (বাংলাদেশ প্রসঙ্গে)
১. প্রথম অবস্থায় (গ্রেফতার হওয়ার পরপর):
শিক্ষক যদি গ্রেফতার হয়ে থাকেন এবং ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হন, তবে গ্রেফতারের দিন থেকেই তিনি বরখাস্ত (suspended) বলে গণ্য হন।
এটি সাধারণত পরিচালনা পর্ষদ (Governing Body) বা ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করা হয়।
---
২. বরখাস্ত অবস্থায় বেতন:
গ্রেফতারকৃত শিক্ষক বরখাস্ত হলে, তিনি সম্পূর্ণ বেতন পাবেন না। তার পরিবর্তে তাকে "আধা বেতন (subsistence allowance)" দেওয়া হয়ে থাকে।
আধা বেতন কী?
এটি সাধারণত মূল বেতনের ৫০% হয় (কখনও ৩৩% হতে পারে, প্রতিষ্ঠানের নীতিমালাভেদে)।
শিক্ষক যতদিন বরখাস্ত থাকবেন (অথবা বিচারাধীন থাকবেন), ততদিন পুরো বেতনের পরিবর্তে এই ভাতা পাবেন।
---
৩. হাজিরা (Attendance) সংক্রান্ত:
এই সময়কালকে শিক্ষক অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য হন, তবে এটিকে "বাধ্যতামূলক অনুপস্থিতি" (Compulsory Leave / Under Suspension) হিসাবে রেকর্ড করা হয়।
হাজিরা রেজিস্টারে তার অনুপস্থিতি উল্লেখ থাকবে, তবে মন্তব্য হিসেবে লেখা থাকে:
"Under suspension due to legal detention" বা "Absent due to arrest" ইত্যাদি।
---
৪. মামলা নিষ্পত্তির পর কী হয়?
(ক) যদি তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন বা মুক্তি পান:
তখন বরখাস্ত আদেশ বাতিল করা হয়।
তার অনুপস্থিত দিনগুলোকে ডিউটি (duty) হিসেবে গণ্য করা হয়।
সেই সময়ের পুরো বেতন বকেয়া হিসেবে প্রদান করা হয় (আধা বেতনের অতিরিক্ত অংশ)।
অবসরের হিসাবেও সেই দিনগুলো যুক্ত হয়।
(খ) যদি তিনি দোষী সাব্যস্ত হন:
তখন বরখাস্ত চূড়ান্ত হয় এবং তার চাকরি বহিষ্কার (dismissed) করা হতে পারে।
সেই সময়ের জন্য তাকে কোনো বেতন দেওয়া হয় না (যা আগেই আধা বেতন হিসেবে পেয়েছেন, তাও ফেরত দিতে হতে পারে)।
হাজিরা স্থায়ীভাবে অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য হয়।
---
৫. আইন ও বিধিমালা অনুসরণ:
এসব বিষয়ে "মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের বিধিমালা", "চাকরি প্রবিধান ১৯৭৯" (বা সংশোধিত), এবং "সরকারের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (শৃঙ্খলা) বিধিমালা" প্রযোজ্য।
---
উদাহরণ:
মোঃ রফিকুল ইসলাম নামে একজন শিক্ষক মাদকের মামলায় ৩ মাস জেল খাটলেন।
প্রথম দিন থেকেই বরখাস্ত করা হলো।
তিনি প্রতি মাসে ৫০% করে বেতন পেলেন (যদি এটি ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন করে)।
মামলার রায়ে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হলেন।
পরে তার পূর্ণ বেতন দিয়ে দেওয়া হলো এবং সেই সময়ের হাজিরা ডিউটি হিসেবেই গৃহীত হলো।
---
সংক্ষেপে:
বিষয় অবস্থান
গ্রেফতারের পর চাকরি বরখাস্ত (সাময়িক)
বেতন ৫০% বা নির্ধারিত পরিমাণ
হাজিরা অনুপস্থিত (সাসপেনশন হিসেব)
নির্দোষ প্রমাণিত হলে পূর্ণ বেতন ফেরত ও চাকরি বহাল
দোষী হলে চাকরি বাতিল ও বেতন কাটা
সংগৃহীত