17/10/2025
"কোনো এক বিকেল বিকেল বেলা মেসে, আমি বন্ধুর(রাহানের) সাথে রুমে বসে গল্প করতেছি, সময়টা হয়তো ২০২৪ সালের শেষের বা ২০২৫ এর শুরুর দিকের কথা।
হঠাৎ করেই একদিন রুমে একটা বিড়ালের বাচ্চা আসে। অনেক চিল্লা-চিল্লি করতেছিল। ভাবছি খিদা লাগছে, তাই তার জন্য দুধ আর কেক এনে খাইছিলাম। এর পর দেখি গায়ে অনেক উকুন, পরে আমরা দুইজন মিলে আমার একটা পুরাতন চিরুনি দিয়ে ওর গা চুলকিয়ে দিলাম, আর কিছু উকুনও বের করে দিলাম।
ছোটবেলা থেকেই আমার বিড়াল অনেক পছন্দের। তাই হয়তো সেই দিন অনেক রাত পর্যন্ত তার সাথে সময় কাটিয়েছি।
একদিন থাকার পর, পরের দিন কোথায় যে গেলো অনেক খোঁজা-খুঁজির পরও পাওয়া গেলো না; খুব খারাপ লাগছিল।
এর পর প্রায় মাস দুয়েক পর, আমি বিছানার উপর বসে আছি, হঠাৎ করে একটি বিড়াল রুমে ঢুকেই বিছানার উপর উঠে আমার পাশেই শুয়ে পরে। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি। আর ভাবতে থাকি, এটা আবার কেমন বিড়াল রুমে ঢুকেই বিছানায় উঠে আমার পাশের শুয়ে পড়ল।
তারপর মনে পরে গেলো সেই ছোট্ট বিড়ালটির কথা, আবার ভাবতে লাগলাম, যে ওটাই কি এটাই ? এত বড় হয়ে গেছে ?
এর পর ওর সাথে অনেকক্ষণ সময় কাটালাম, ওর গায়ে হাত বুলাচ্ছি, এমন সময় ও হয়তো ফাজলামির মতো মুখ দিয়ে আমার হাতে কামড় দেওয়ার মত করল, আমি তো পুরো ভয়ে হাত সরিয়ে নিলাম। এরপর ভাবলাম, ওই ও হয়তো আমার হাত বুলাতে সারা দিচ্ছে। এটা ভেবেই অনেক খুশি লাগতেছিল। এর পর রুমে কেক ছিল, সেটা দিয়েছিলাম, সেটি খেয়ে কিছুক্ষণ থেকে আবার চলে গেলো। আবার নিখোঁজ..!! আবারও কষ্ট পেলাম।
এর পর প্রায় মাস খানেক পর আবার একদিন আসলো, এসে আবার রুমে ঢুকে আমার কোলে শুয়ে পড়ল। এবার আমি কোনো অবাক হয় নি। আমি আবার রুমে থাকা খাবার দিলাম। খেয়ে আমার সাথে কিছু সময় থেকে পুনরায় চলে যায়। এবার অতটা কষ্ট লাগে নাই। এটা ভাবে ভালো লাগতেছিল যে, অন্তত আসছে তো।
এভাবে গত কয়েক মাসে ধরেই, মাসে অন্তত ২/১ বার আসে, কিছু সময় থেকে আবার নিজ ইচ্ছেই চলে যায়।
আজ ১৪অক্টোবর ২৫,
অন্য দিনের মতো আজকে এসে আমার কোলে বসে আছে। কিন্তু আজকে অনেক সময় ধরেই আছে। আজকেও ওর গায়ে হাত বুলাচ্ছি, আজকেও ও মুখ দিয়ে কামড় দেওয়ার মত করে সাড়া দিচ্ছে। ভালো লাগতেছে , আবার এটা ভেবে ভয় লাগতেছিল যে, এটা তো আমার পোষা বিড়াল না। এমনকি এটাকে ভ্যাকসিন ও দেওয়া নাই। আবার যদি একটু কামড় দিয়ে দেয় বা একটু আছর লেগেই যায় এর জন্য আবার ভ্যাকসিন দেওয়া লাগবে।
মনে আছে ছোটবেলায় একবার আমাকে ইঁদুর কামড় দিয়েছিল সেটার জন্য ভ্যাকসিন দিতে হয়েছিল। অনেক কষ্টে তিনটা ভ্যাকসিন দিয়েছিলাম।
অন্য দিনের মতো আজকে রুমে রুটি ছিল, সেটাই দিলাম। রুটি খেয়ে আবার আমার কোলে এসে শুয়ে পড়ল। এখন রাত দুইটা বাজে, আমিও পাশে শুয়ে ওর গায়ে হাত বুলাচ্ছি।
আমি আবার একটু কিছু হলেই ফোনের নোটে লিখে রাখি। হঠাৎ মনে হলো, এর ঘটনাটাও লিখে রাখি। অভ্যাসগত কারণে লিখতে শুরু করলাম।
এখন মাথার মধ্যে একটা কথা ঘুরপাক খাচ্ছে, একটা প্রাণী ছোট থাকতেই একদিন হয়তো খাবার দিয়েছিলাম, কিন্তু সে আজও আমার কাছে আসে। মনে প্রশ্ন জাগে কেনো আসে ?
এর পর মনে হয়,
হয়তো মায়া,ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে আসে।
একটা অবুঝ প্রাণীকে একদিন ছোট্ট একটা সাহায্য করায়, বছর পেরিয়ে গেলো; কিন্তু এখনো সে মাসে অন্তত একবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে আসে।
কিন্তু, আমি অনেক মানুষকে ছোট্ট-বড় অনেক সাহায্য করেছি। অনেক সময় নিজের ক্ষতি করে হলেও। কিন্তু সেই ক্ষণিক মুহূর্ত ছাড়া কখনো কৃতজ্ঞতাবোধ তো দূরের কথা, বরং তারাদের দ্বারা আমি ক্ষতির সম্মুখীনও হয়েছি।
যদিও এটা জানি যে, কাউকে সাহায্য করার পর যে একটা প্রশান্তি পাওয়া যায়, সেটা হয়তো অন্য কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। আমি তাদের থেকে কোনকিছু চাই না; এটা ভেবে যে, আল্লাহ্ মানুষকে সাহায্য করতে বলেছেন, এটার প্রতিদান আমি একমাত্র তার কাছ থেকেই নিবো। ইনশাআল্লাহ্
তবে, সবাই এক না। অনেককেই কাছ থেকে অনেক ভালো ব্যবহার ও উপকারও পেয়েছি।
এখন আমার মনে প্রশ্ন জাগে,
তাহলে কি আমি বলতে পারি, মানুষ একটা পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট ?
আর, আমি কি তাদের থেকে অন্তত ভালো ব্যবহার কিংবা সুন্দরভাবে কথা বলার প্রত্যাশা করতে পারি না ?
#বিড়াল #আক্ষেপ #আমার_আক্ষেপ
©️ নাঈম বিল্লাহ্ "
কখনো ভাবি নাই যে এটা ফেইসবুকে দিবো। কিন্তু আজ মনটা ভীষণ খারাপ, অসহায়ের মত বিছানায় হেলান দিয়ে আছি; কেনো জানি চোখ দুটো পানিতে টলোমলো হয়ে আছে। এমনিতেই "ইনট্রোভার্ট" এর কাতারে আছি, যত দিন যাচ্ছে ততই কেনো জানি "হোমবডি" হয়ে যাচ্ছি। না জানি কোন, চিরস্থায়ীভাবে "হোমবডি" হয়ে যাবো।
তবে এখন ইচ্ছে করতেছে, আশে-পাশে কোথাও নদী থাকলে তার পাশে একটি একাকী বসে মন খুলে চিৎকার করে কান্না করতাম আর একান্তই কিছু সময় কাটাতাম। অন্তত কিছু সময়ের জন্য হলেও তো মন খুলে নিঃশ্বাসটা নিতে পারতাম।
এখন আমার এলাকার পাশ দিয়ে যাওয়া সেই ('চারালকাটা') নদীটাকে অনেক মনে পরে। একটু মন খারাপ হলেই চলে যেতাম তার কাছে। তার পাশে বসে/হেঁটে কিছু সময় কাটাতাম। সে আমার সকল দুঃখ কষ্ট ভাগাভাগি করে নিত।
আল্লাহ্ তায়ালার আমাদের প্রতি অশেষ রহমত, তাইতো নদীকে সেভাবেই তৈরি করেছে।
আমার কোনো দুঃখ কষ্ট হলে আর কেউ না নিলেও শুধু নদীই ভাগাভাগি করে নেয়। এখন নদী আমার কাছে আপন লাগে। কিন্তু কষ্ট লাগে, এখন আমার আশেপাশে কোন নদী নাই।
মাঝে মধ্যেই মনে হয়, আমি নিজের মন খারাপ কিংবা দুঃখ-কষ্ট ভাগাভাগি করার জন্যই নদীর কাছে যাই, তাহলে আমি কি বড্ডই স্বার্থপর ?