17/07/2025
"বিবেক থেকে"
--জুলফিকার বাবু --
ঘুমাচ্ছে শহর ঘুমাচ্ছে গ্রাম, মহল্লা। নিরব নিস্তব্ধ। কোথাও কোন সাড়া নেই। ক্ষুধার তাড়নায় গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি শিকারের উদ্দেশ্যে শেয়াল-বিড়ালেরা যখন দলগত মোহড়ায় ব্যস্ত তাদের দেখে হয়তো ওঁৎ পেতে থাকা লেলিহান কুকুরের চিৎকারের আওয়াজ মাঝে মাঝে কানে ভাসে। কাশবনের ধারে বাঁশ ঝাড়ের পাশে কিছু জোনাকি আর ঝিঁ ঝিঁ পোকার গুঞ্জনে সারা রাত ব্যাপী ব্যস্ত পূর্ণিমার চাঁদের জোছনা। প্রশান্তির নিরবতা। শান্তির চাঁদরে ঢাকা কোটি মানুষ। আমরা একবারও কি ভাবছি? তাদের অবস্থা ? মা হারিয়েছে কোলের শিশু, বাবা হারিয়েছে ছেলে, ভাই হারিয়েছে বোন, বোন হারিয়েছে ভাইকে। বুলেটের ধারালো আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে হাসপাতালের পাষাণ বিছানায় কাতরাচ্ছে মৃত্যু যন্ত্রণায়। কেউ কেউ মমতাময়ী মা বাবার মুখ দেখার আগেই ঘাতক বুলেটের কেরে নিল জীবন। একটু শান্তিময় বাঁচার আকুতি নিয়ে রাস্তায় দুহাত পেতে দাঁড়িয়েছিল আবু সাঈদ। তাকেও বাঁচতে দেয়নি নির্মম ঘাতকদের দোসড়রা। বিষাক্ত বুলেটের আঘাতে নিথর দেহ পড়ে রইলো পিচ ঢালা পথে। কি দোষ করেছিল মুগ্ধ? পানি খাইয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টাই ছিল তার লক্ষ। তাকেও বাঁচতে দেয়নি পিচাঁশের টার্গেট। নিরপরাধ জীবনের কি কোন মূল্যেই নেই এই বাংলার মাটিতে? বৈষম্য, ভেদাভেদ, সাম্প্রদায়িক দন্দ ভুলে বন্ধু সুলভ আচরণ চাওয়াটাই কি অপরাধ? এর জন্যই এত জীবন এত রক্ত। বিচার জাতির কাছে, বিচার বিবেকের কাছে ---যারা অন্যায়কে পদদলিত করে ন্যায়ের জন্য রক্ত দিল, জীবন দিল। শত বোন সম্ভ্রম হারিয়ে অর্জন করলো ২৪শের স্বাধীনতা সেই জুলাই যোদ্ধাদের সামান্য সম্মান টুকু জানানোর কি মানসিকতা নেই। রাষ্ট্রের কাছে প্রশ্ন---আগামী প্রজন্মের জানার কি প্রয়োজন নেই? ৭১এর স্বাধীনতা,২৪শের অভ্যুত্থান । যদি তাই হয় তাহলে অবিলম্বে দেওয়া হোক জুলাই যোদ্ধাদের জুলাই সনদ। পরিচিত করা হোক বিশ্ব দরবারে এই তরুণ যোদ্ধাদের। অমর স্মৃতির স্বর্ণাক্ষরে লেখা জুলাই যোদ্ধাদের নাম। যুগে যুগে পালিত হোক ২৪শের অভ্যুত্থান দিবস। তবেই সার্থক ও শান্তি পাবে নিহত আহত জুলাই যোদ্ধাদের আত্মা।