31/07/2025
যে বিকারকে সৌন্দর্য বলে তুলে ধরা হচ্ছে” — চিন্তার একটি আহ্বান
১০ বছর আগেও, ২০১৫ সালে, কেউ যদি কলেজ ক্যাম্পাসে কোনো মেয়েকে প্রশ্ন করত: “তুমি কি গে/সমকামী?”, তখন হয়তো মেয়েটি রেগে গিয়ে প্রতিবাদ করত। সমাজ তখনও এধরনের বিকৃত চিন্তাকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি।
কিন্তু ২০২৫ সালে এসে আমরা কী দেখছি? অনেক ক্ষেত্রেই এখন এমন প্রশ্নের উত্তর হয় হাস্যরস বা মুচকি হাসি। কেন? কারণ সমাজের মন-মানসিকতা পাল্টে যাচ্ছে। যা আগে ছিল ঘৃণিত, এখন তা ‘মুক্তচিন্তা’র নামে গ্রহণযোগ্য করে তোলা হচ্ছে।
❖ কী ঘটছে আমাদের সমাজে?
আজ আমরা দেখতে পাই, কিছু তরুণ এমনভাবে নিজেদের উপস্থাপন করছে—যেমন মেয়েলি ভঙ্গিতে কথা বলা, মেয়েদের পোশাক পরা, মেয়েদের স্টাইল অনুসরণ করা ইত্যাদি—যা ইসলামি শিক্ষা ও স্বভাবজাত ফিতরাহর পরিপন্থী।
তাদেরকে টিভি, ইউটিউব, নাটক, শো এবং বিজ্ঞাপনে ‘মডেল’ বানানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে বোঝানো হচ্ছে—“তোমার যেভাবে ভালো লাগে, সেভাবেই থেকো”, এমনকি লিঙ্গ পরিবর্তন বা সমকামিতাও একধরনের ‘ব্যক্তিগত পছন্দ’ বলে প্রচার করা হচ্ছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—ইসলাম এ বিষয়ে কী বলে?
📖 আল-কুরআনের দৃষ্টিতে:
“তোমরা তো নারীদের পরিবর্তে পুরুষদের সঙ্গে কামনা চরিতার্থ করো! বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী এক সম্প্রদায়।”
— (সূরা আশ-শু'আরা: ১৬৫-১৬৬)
“তোমাদের মধ্য থেকে যারা অশ্লীলতা করে, তাদের শাস্তি দাও, যতক্ষণ না তারা তাওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে।”
— (সূরা আন-নূর: ৫)
📜 রাসূল ﷺ কী বলেছেন?
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“আল্লাহ সেই পুরুষদের প্রতি লা‘নত করেছেন যারা নারীদের অনুকরণ করে এবং সেই নারীদের প্রতি লা‘নত করেছেন যারা পুরুষদের অনুকরণ করে।”
— (বুখারী: ৫৮৮৫)
আরও বলেছেন:
“আমার উম্মতের মধ্যে কিছু লোক এমন হবে যারা লওত (সমকামিতা) এর কাজ করবে। আল্লাহ তাদের প্রতি রাগান্বিত হবেন।”
— (তিরমিযি: হাদীস ১৪৫৮)
⚠️ এই একটি ষড়যন্ত্র নয় কি?
সমাজে একটি ধাপে ধাপে মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। মিডিয়া, ফ্যাশন, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সেলিব্রিটিদের ব্যবহার করে তরুণ-তরুণীদের এমন একটি পরিবেশে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে—যেখানে হারামকে হালাল, অসভ্যতাকে ‘সাহস’ আর বিকৃতিকে ‘ব্যক্তিস্বাধীনতা’ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে।
🎯 লক্ষ্য কী?
একটি ঈমানদার ও বিপ্লবী প্রজন্ম যেন নিজ নিজ পরিচয় ভুলে যায়, ইসলামি জীবনব্যবস্থা ভুলে গিয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতির দাসে পরিণত হয়। এইভাবেই ধ্বংস করে ফেলা যাবে আমাদের আত্মিক শক্তি ও একতা।
🔥 কী করণীয়?
সত্যের পথে অটল থাকা — সমাজ যা-ই বলুক, কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ন্যায়-অন্যায় বুঝে চলা।
সন্তানদের ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করা — মিডিয়ার বদলে দীনের আলোয় গড়া আদর্শ চরিত্র তৈরি করা।
মিডিয়া ও কনটেন্ট বাছাই করা — যা দেখছি, পড়ছি, শেয়ার করছি, সব কিছুর দ্বীনি দিক বিবেচনা করা।
সুন্দরভাবে মানুষকে বোঝানো — ঘৃণা নয়, হিকমাহ ও মমতার মাধ্যমে মানুষকে বুঝানো।
🤲 দোয়া:
“হে আল্লাহ! আমাদের অন্তরগুলোকে ফিতনার অন্ধকার থেকে বাঁচাও,
আমাদের সন্তানদের হিফাজত করো বিকৃত চিন্তা ও কু-প্রবৃত্তি থেকে।
আমাদেরকে হিদায়তের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখো। আমীন।”