![#ভালোবাসার_ঋতু [পর্ব : ৪] [ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]__ধরনীর বুকে আধার কাটিয়ে ভোরে আলো চারদিকে ফুঠে উঠেছে। অরুর ঘুম ...](https://img5.medioq.com/070/602/122129799260706022.jpg)
21/05/2025
#ভালোবাসার_ঋতু
[পর্ব : ৪]
[ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]
__ধরনীর বুকে আধার কাটিয়ে ভোরে আলো চারদিকে ফুঠে উঠেছে। অরুর ঘুম ভেঙেছে অনেকক্ষন হয়। অরু দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখে নিল। ৭ টা বাজে লেট করে ফেলেছে সে। আসলে রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে লেট হয়ে গিয়েছে তার। রাতে যখন গিটারের আওয়াজ শুনতে পেয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল অনুভব খেয়াল করছিল পর্দার আড়ালে দাড়ানো ছায়াকে। সে দিকে তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকাতেই অরু ভিতরে ছুটে যায়। ইস সে ধরা খেল।
বিছানায় এসে শুয়ে বন্ধ করে তার ঘুম ধরা দেয় না। ভিতর থেকে এক উৎতেজনার সৃষ্টি হয়। তারপর কখন ঘুমিয়ে পরেছে সে জানে না।
রাতের কথা ভেবে বিছানা থেকে উঠে পরলো। দরজা খুলে বাইরে ছাদের দিকে পা বাড়ায় সে। ছাদে তার প্রিয় কিছু গাছ আছে। পানি দিতে হবে। যা রোদ শুরু হয়েছে। গাছ গুলো কেমন জানি নেতিয়ে যায়।
অরু ছাদে উঠে পানির পাইপ টেনে নিয়ে মোটর অন করে দিয়ে পানি দেয়। আশে পাশে তার খেয়াল নেই। পানি দিতে দিতে ঈশা আসে ছাদে হাতে এক টা কফির মগ। অরু একটু অভাক হয়। ইশা কখনোই এতো সকালে কফি খায় না। আর সে তো মাত্রই এলো তাহলে..?
_ঈশা ছাদের দরজা থেকে এগিয়ে এসে বলল, অরুপি তুমি উঠেছো আগে জানলে দুটো কফি আনতাম দাড়াও একটু আমি ভাইয়াকে দিয়ে তোমার জন্য আনছি। এই বলে ইশা অরুকে ক্রস করে যেতে নেয়। ঈশার কথা শুনে অরু যেন স্তব্ধ হয়ে যায়। ভাইয়া মানে! এখানে অনুভব ভাই আসবে কই থেকে। পিছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পায় সুঠাম দেহের অধিকারী পুরুষকে বুক্ ডাউন দিচ্ছে। এতে যেন হাত কাটা গেঞ্জিতে উকি দিচ্ছে হাতের মাংসাল পেশিগুলো। বুক ডাউন দেওয়াতে সেগুলো যেন ফুলে উঠেছে। অরু শুকনো ঢোক গিলল। ঈশা কফির মগ টা ভাইয়ের হাতে দিয়ে আবার দৌরে নিচে চলে যায়। অরু অনুভবের দিকে তাকাতেই দেখে অনুভব তার বাদামী রঙ্গা চোখ দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে ভ্রু কুচকে। অরু দ্রুত চোখ নামিয়ে নেয়। অনুভবের এভাবে তাকানোর মানে বুঝতেছে না। নিজের দিকে ভালো করে পরখ করতেই অরু গলা শুকিয়ে যায়। পা দুটো কেপে উঠে লজ্জায় মিইয়ে যায়।হাতের পানির পাইপ ছেরে দুহাতে নিজেকে ঢেকে চলে যায় নিচে। পাইপ অনুভবের দিকে থাকায় পানি সোজা এসে তার শরীরে এসে পরে। মগ হাতে নিয়ে ভিজে একাকার সে।
অনুভব বিরবির করে বলে, ❝যে আগুনে আমি জ্বলছি সে আগুনে এই সামান্য পানি কিছুই হবে না❞। নিজের ভাবনাকে ধিক্কার জানিয়ে বলল, ননসেন্স ~
_২ মিনিটের মাথায় ছাদে আগমন হয় আহানের। অনুভব তাকে ডেকেছিল অফিসিয়ালী কিছু কাজের জন্য। ইব্রাহিম শেখ সরাসরি অনুভব কে বলেনি। ছেলের ট্যাড়ামিতে তিনি অতিষ্ঠ। তাই আহানের কাছে সব বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিছু নতুন ডিল এর সাইন করতে হবে। চিনা ক্লাইন্ড আসবে তাদের সাথে ডিল ফাইনাল করার জন্য। এর জন্য ইব্রাহিম শেখকে চট্টগ্রামে যেতে হবে।
_সকাল সকাল অনুভব কে কাক ভেজা দেখে বলল, এই সাত সকালে তোকে নাক চুবানি কে খাওয়াইলো অনু।
_অনুভবের কোন ভাবান্তর নেই। মুখ ভঙ্গি আগের মতো। তবে বিরক্তি চাহনি টা স্পষ্ট। আর কি কারন সেটা আহান জানে। অনু ডাকে সে বিরক্ত হচ্ছে। অনুভব বলেছিল আমাকে কি তোর মেয়ে মনে হয় যে নামের মধ্যে মেয়েলি ভাইব দিচ্ছিস।খবরদার আর বলবি না। কিন্তু তাতে আহানের কি সে এই ডাকে যেন কিছু একটা পায়। হয়তো অনুভবের রাগীরাগী চেহায়া।
_অনুভব হাতের মগ টা রেখে গম্ভীর কণ্ঠ বলল, ফাইল গুলো দে।
আহান হাতে ফাইল গুলো দিল। অনুভব ভালো করে ফাইল গুলো দেখে আহানকে সব বুঝিয়ে দেয়। অনুভব জানে আহান একজন দায়িত্ববান ছেলে। সে না গেলেও এই ডিল ফাইনাল হবে। তাছাড়া তার বাবা তো আছেন। চোখ বন্ধ করে ভরসা করে সে। সব কিছু বুঝিয়ে দিলে আহান চলে যায়। অনুভব হাতে কফির মগ টা নিয়ে নিচে নামে। সোজা কিচেনের এসে সেন্টার টেবিলে মগ টা রেখে উপরে চলে যায় ।
______
_অরু নিজের ঘরে এসে লম্বা দম নেয়। কি লজ্জাজনক অবস্থা হয়েছিল। সে ঘুম থেকে নিজের দিকে না তাকিয়েই বের হয়ে গেছিল। অরু নিজেকে ইচ্ছা করলো এখন দুটো মেরে দিতে। কিন্তু নিজেই নিজেকে কিভাবে মারবে সে।
চোখে মুখে লজ্জা ভয় দেখা যাচ্ছে। সময় দেখে নিল ৮ টা বাজে তার ক্লাস আছে। তাই ওয়াসরুমে ঢুকে যায় সে।
_৯ টার দিক অনুভব নিচে নামে। পরনে তার সাদা শার্ট ইন করা ব্লাক প্যান্ট হাতে তার ব্যান্ডের ঘড়ি।
_অপরিচিত কড়া পারফিউয়ের সুঘ্রান নাকে আসতে অরু সিড়ির দিকে তাকায়। অনুভব আসছে নিচে। অরু গতোকাল সারাদিন নিচে না নামলেও আজ অহমিকা শেখের কাছে হার মানে। ইব্রাহিম শেখ বলে দিয়েছেন বাড়ির মেয়ে ডাইনিং না আসলে তিনি খাবার মুখে দিবেন না। ব্যাস! অরু পানি পানি আর যাই করুন এই মানুষ দুটোকে কষ্ট দিতে পারবে না সে। তাই নিচে এসেছে। পাশে আছে ঈশা। অনুভব অরুর সামনা সামনি বসে প্লেট তুলে নেয় রহিমা এসে অনুভবকে খাবার বেরে দেয়। অরু মাথা নিচু করে খাচ্ছে। কোন রকম খেয়ে অরু উপরে চলে যায়। সময় কম রেডি হতে হবে। অনুভব দেখলো অরুর পাতের খাবার গুলো। একরাশ বিরক্ত নিয়ে মনে মনে বলল, খাবার না খেয়ে কি প্রমান করতে চায়।? আজব।
_খাওয়া প্রায় শেষের দিকে। ইব্রাহিম শেখ ছেলেকে বললেন, শুনলাম ৬ মাস আগে দেশে আসা হয় তাহলে এতোদিন বাসায় এসো নাই কেন?
_অনুভব খেতে খেতে বলল, "কাজে এসেছিলাম। "
_ইব্রাহিম শেখ ছেলের কথা শুনে চরম বিরক্ত। এটা কেমন কথা গতো ৬ মাস থেকে দেশে আসে আবার চলে যায় অথচ বাসায় ফিরে না। তিনি আবার বলল, অরু তো ভার্সিটিতে যাবে। ড্রাইভার ছুটিতে আছে তুমি ওকে ড্রপ করে আসো।
_অনুভব বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, পারবো না সে কি নিজে যেতে পারে না, বলে সে গটগট করে চলে যায়। ইব্রাহিম শেখ দীর্ঘশ্বাস নেয়। তার ছেলে যে শুনবে না তিনি বুঝেছেন।
_অরু জ্যামে আটকে গেছে। এই শহরের এই যানযটে কোথাও যেন টাইমলি পৌছানো এক যুদ্ধের মতো। ১০ মিনিট রিক্সায় বসে আছে। সামনে লম্বা জ্যাম। অরু ঘড়ির দিকে তাকালো। ১০ টা বাজতে ৭ মিনিট বাকি। আজ আর টাইমলি যাওয়া হচ্ছে না। অরু রিক্সা থেকে নেমে ভারা দিয়ে পায়ে হেটে এগিয়ে গেল। ভার্সিটি আসতে আসতে ১০ মিনিট লেট। সিড়ি বেয়ে ডিপার্টমেন্ট এর সামনে দারিয়ে বলল, may i coming sir?
_"পার্মিশন পেয়েই অরু ফারহার পাশে গিয়ে বসলো। "
_"এতো লেট করলি যে..? "
_রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল।
_ফারহা আর কিছু বলল না। ক্লাস শেষে অরু আর ফারহা ভার্সিটির মাঠে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে যাচ্ছি পথিনমধ্যে দেখা হয় সেই বারবি চুলওয়ালার সাথে। অরু তাকে দেখে সালাম দিয়ে বলল, আসসালামু আলাইকুম।
_ছেলেটি মাথা তুলে তাকিয়ে বলল ওয়ালাইকুম সালাম। তোমরা কালকের মেয়ে দুটো না। ধাক্কা লাগলো যে।?
_"জ জ্বি ভাইয়া। "
_ ছেলেটি অরুকে পরক করলো পা থেকে মাথা অবধি। গোলগাল মায়াবী চেহারা তার লম্বা ঘন চুল। ছেলেটা একটু হেসে বলল",আমি তাসবীর খান" ।
"অরু ফারহা জানতে পারলো ইনি থার্ড ইয়ারের ক্লাস টপার। আরো দুকটা কথা বলে তাসবীর চলে যায়।
চলবে... পাঠক?