Deep Painッ

Deep Painッ পথ হারা পথিক।

 #ভালোবাসার_ঋতু [পর্ব : ৪] [ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]__ধরনীর বুকে আধার কাটিয়ে ভোরে আলো চারদিকে ফুঠে উঠেছে। অরুর ঘুম ...
21/05/2025

#ভালোবাসার_ঋতু
[পর্ব : ৪]

[ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]

__ধরনীর বুকে আধার কাটিয়ে ভোরে আলো চারদিকে ফুঠে উঠেছে। অরুর ঘুম ভেঙেছে অনেকক্ষন হয়। অরু দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সময় দেখে নিল। ৭ টা বাজে লেট করে ফেলেছে সে। আসলে রাতে ঘুমাতে ঘুমাতে লেট হয়ে গিয়েছে তার। রাতে যখন গিটারের আওয়াজ শুনতে পেয়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল অনুভব খেয়াল করছিল পর্দার আড়ালে দাড়ানো ছায়াকে। সে দিকে তীক্ষ দৃষ্টিতে তাকাতেই অরু ভিতরে ছুটে যায়। ইস সে ধরা খেল।
বিছানায় এসে শুয়ে বন্ধ করে তার ঘুম ধরা দেয় না। ভিতর থেকে এক উৎতেজনার সৃষ্টি হয়। তারপর কখন ঘুমিয়ে পরেছে সে জানে না।
রাতের কথা ভেবে বিছানা থেকে উঠে পরলো। দরজা খুলে বাইরে ছাদের দিকে পা বাড়ায় সে। ছাদে তার প্রিয় কিছু গাছ আছে। পানি দিতে হবে। যা রোদ শুরু হয়েছে। গাছ গুলো কেমন জানি নেতিয়ে যায়।
অরু ছাদে উঠে পানির পাইপ টেনে নিয়ে মোটর অন করে দিয়ে পানি দেয়। আশে পাশে তার খেয়াল নেই। পানি দিতে দিতে ঈশা আসে ছাদে হাতে এক টা কফির মগ। অরু একটু অভাক হয়। ইশা কখনোই এতো সকালে কফি খায় না। আর সে তো মাত্রই এলো তাহলে..?

_ঈশা ছাদের দরজা থেকে এগিয়ে এসে বলল, অরুপি তুমি উঠেছো আগে জানলে দুটো কফি আনতাম দাড়াও একটু আমি ভাইয়াকে দিয়ে তোমার জন্য আনছি। এই বলে ইশা অরুকে ক্রস করে যেতে নেয়। ঈশার কথা শুনে অরু যেন স্তব্ধ হয়ে যায়। ভাইয়া মানে! এখানে অনুভব ভাই আসবে কই থেকে। পিছন ফিরে তাকাতেই দেখতে পায় সুঠাম দেহের অধিকারী পুরুষকে বুক্ ডাউন দিচ্ছে। এতে যেন হাত কাটা গেঞ্জিতে উকি দিচ্ছে হাতের মাংসাল পেশিগুলো। বুক ডাউন দেওয়াতে সেগুলো যেন ফুলে উঠেছে। অরু শুকনো ঢোক গিলল। ঈশা কফির মগ টা ভাইয়ের হাতে দিয়ে আবার দৌরে নিচে চলে যায়। অরু অনুভবের দিকে তাকাতেই দেখে অনুভব তার বাদামী রঙ্গা চোখ দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে ভ্রু কুচকে। অরু দ্রুত চোখ নামিয়ে নেয়। অনুভবের এভাবে তাকানোর মানে বুঝতেছে না। নিজের দিকে ভালো করে পরখ করতেই অরু গলা শুকিয়ে যায়। পা দুটো কেপে উঠে লজ্জায় মিইয়ে যায়।হাতের পানির পাইপ ছেরে দুহাতে নিজেকে ঢেকে চলে যায় নিচে। পাইপ অনুভবের দিকে থাকায় পানি সোজা এসে তার শরীরে এসে পরে। মগ হাতে নিয়ে ভিজে একাকার সে।
অনুভব বিরবির করে বলে, ❝যে আগুনে আমি জ্বলছি সে আগুনে এই সামান্য পানি কিছুই হবে না❞। নিজের ভাবনাকে ধিক্কার জানিয়ে বলল, ননসেন্স ~

_২ মিনিটের মাথায় ছাদে আগমন হয় আহানের। অনুভব তাকে ডেকেছিল অফিসিয়ালী কিছু কাজের জন্য। ইব্রাহিম শেখ সরাসরি অনুভব কে বলেনি। ছেলের ট্যাড়ামিতে তিনি অতিষ্ঠ। তাই আহানের কাছে সব বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিছু নতুন ডিল এর সাইন করতে হবে। চিনা ক্লাইন্ড আসবে তাদের সাথে ডিল ফাইনাল করার জন্য। এর জন্য ইব্রাহিম শেখকে চট্টগ্রামে যেতে হবে।

_সকাল সকাল অনুভব কে কাক ভেজা দেখে বলল, এই সাত সকালে তোকে নাক চুবানি কে খাওয়াইলো অনু।

_অনুভবের কোন ভাবান্তর নেই। মুখ ভঙ্গি আগের মতো। তবে বিরক্তি চাহনি টা স্পষ্ট। আর কি কারন সেটা আহান জানে। অনু ডাকে সে বিরক্ত হচ্ছে। অনুভব বলেছিল আমাকে কি তোর মেয়ে মনে হয় যে নামের মধ্যে মেয়েলি ভাইব দিচ্ছিস।খবরদার আর বলবি না। কিন্তু তাতে আহানের কি সে এই ডাকে যেন কিছু একটা পায়। হয়তো অনুভবের রাগীরাগী চেহায়া।

_অনুভব হাতের মগ টা রেখে গম্ভীর কণ্ঠ বলল, ফাইল গুলো দে।
আহান হাতে ফাইল গুলো দিল। অনুভব ভালো করে ফাইল গুলো দেখে আহানকে সব বুঝিয়ে দেয়। অনুভব জানে আহান একজন দায়িত্ববান ছেলে। সে না গেলেও এই ডিল ফাইনাল হবে। তাছাড়া তার বাবা তো আছেন। চোখ বন্ধ করে ভরসা করে সে। সব কিছু বুঝিয়ে দিলে আহান চলে যায়। অনুভব হাতে কফির মগ টা নিয়ে নিচে নামে। সোজা কিচেনের এসে সেন্টার টেবিলে মগ টা রেখে উপরে চলে যায় ।

______

_অরু নিজের ঘরে এসে লম্বা দম নেয়। কি লজ্জাজনক অবস্থা হয়েছিল। সে ঘুম থেকে নিজের দিকে না তাকিয়েই বের হয়ে গেছিল। অরু নিজেকে ইচ্ছা করলো এখন দুটো মেরে দিতে। কিন্তু নিজেই নিজেকে কিভাবে মারবে সে।
চোখে মুখে লজ্জা ভয় দেখা যাচ্ছে। সময় দেখে নিল ৮ টা বাজে তার ক্লাস আছে। তাই ওয়াসরুমে ঢুকে যায় সে।

_৯ টার দিক অনুভব নিচে নামে। পরনে তার সাদা শার্ট ইন করা ব্লাক প্যান্ট হাতে তার ব্যান্ডের ঘড়ি।

_অপরিচিত কড়া পারফিউয়ের সুঘ্রান নাকে আসতে অরু সিড়ির দিকে তাকায়। অনুভব আসছে নিচে। অরু গতোকাল সারাদিন নিচে না নামলেও আজ অহমিকা শেখের কাছে হার মানে। ইব্রাহিম শেখ বলে দিয়েছেন বাড়ির মেয়ে ডাইনিং না আসলে তিনি খাবার মুখে দিবেন না। ব্যাস! অরু পানি পানি আর যাই করুন এই মানুষ দুটোকে কষ্ট দিতে পারবে না সে। তাই নিচে এসেছে। পাশে আছে ঈশা। অনুভব অরুর সামনা সামনি বসে প্লেট তুলে নেয় রহিমা এসে অনুভবকে খাবার বেরে দেয়। অরু মাথা নিচু করে খাচ্ছে। কোন রকম খেয়ে অরু উপরে চলে যায়। সময় কম রেডি হতে হবে। অনুভব দেখলো অরুর পাতের খাবার গুলো। একরাশ বিরক্ত নিয়ে মনে মনে বলল, খাবার না খেয়ে কি প্রমান করতে চায়।? আজব।

_খাওয়া প্রায় শেষের দিকে। ইব্রাহিম শেখ ছেলেকে বললেন, শুনলাম ৬ মাস আগে দেশে আসা হয় তাহলে এতোদিন বাসায় এসো নাই কেন?

_অনুভব খেতে খেতে বলল, "কাজে এসেছিলাম। "

_ইব্রাহিম শেখ ছেলের কথা শুনে চরম বিরক্ত। এটা কেমন কথা গতো ৬ মাস থেকে দেশে আসে আবার চলে যায় অথচ বাসায় ফিরে না। তিনি আবার বলল, অরু তো ভার্সিটিতে যাবে। ড্রাইভার ছুটিতে আছে তুমি ওকে ড্রপ করে আসো।

_অনুভব বাবার দিকে তাকিয়ে বলল, পারবো না সে কি নিজে যেতে পারে না, বলে সে গটগট করে চলে যায়। ইব্রাহিম শেখ দীর্ঘশ্বাস নেয়। তার ছেলে যে শুনবে না তিনি বুঝেছেন।

_অরু জ্যামে আটকে গেছে। এই শহরের এই যানযটে কোথাও যেন টাইমলি পৌছানো এক যুদ্ধের মতো। ১০ মিনিট রিক্সায় বসে আছে। সামনে লম্বা জ্যাম। অরু ঘড়ির দিকে তাকালো। ১০ টা বাজতে ৭ মিনিট বাকি। আজ আর টাইমলি যাওয়া হচ্ছে না। অরু রিক্সা থেকে নেমে ভারা দিয়ে পায়ে হেটে এগিয়ে গেল। ভার্সিটি আসতে আসতে ১০ মিনিট লেট। সিড়ি বেয়ে ডিপার্টমেন্ট এর সামনে দারিয়ে বলল, may i coming sir?

_"পার্মিশন পেয়েই অরু ফারহার পাশে গিয়ে বসলো। "

_"এতো লেট করলি যে..? "

_রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল।

_ফারহা আর কিছু বলল না। ক্লাস শেষে অরু আর ফারহা ভার্সিটির মাঠে কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে যাচ্ছি পথিনমধ্যে দেখা হয় সেই বারবি চুলওয়ালার সাথে। অরু তাকে দেখে সালাম দিয়ে বলল, আসসালামু আলাইকুম।

_ছেলেটি মাথা তুলে তাকিয়ে বলল ওয়ালাইকুম সালাম। তোমরা কালকের মেয়ে দুটো না। ধাক্কা লাগলো যে।?

_"জ জ্বি ভাইয়া। "

_ ছেলেটি অরুকে পরক করলো পা থেকে মাথা অবধি। গোলগাল মায়াবী চেহারা তার লম্বা ঘন চুল। ছেলেটা একটু হেসে বলল",আমি তাসবীর খান" ।

"অরু ফারহা জানতে পারলো ইনি থার্ড ইয়ারের ক্লাস টপার। আরো দুকটা কথা বলে তাসবীর চলে যায়।

চলবে... পাঠক?

 #ভালোবাসার_ঋতু[পর্ব : ৩] [ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]_রাতে ডিনারের সময় সবাই উপস্থিত আছে। ইহাম শেখ আজ রাতে ব্যবসার কাজ...
20/05/2025

#ভালোবাসার_ঋতু
[পর্ব : ৩]

[ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]

_রাতে ডিনারের সময় সবাই উপস্থিত আছে। ইহাম শেখ আজ রাতে ব্যবসার কাজে দেশের বাইরে যাবেন। তবে ইহাম শেখের মনের ভিতর ভয় কাজ করছে। অনুভব বাসায় আছেন। তিনি জানেন অনুভব কেমন রাগ চটা। ৪ বছর আগের কথা ভেবেই তিনি কেপে উঠে। মেয়েকে নিয়ে ভয়ে আছেন।
ডাইনিং এ সবাই থাকলেও অনুভব আর অরু এখনো উপস্থিত হয়নি। ইব্রাহিম শেখ বেজায় বিরক্ত হচ্ছেন ছেলের কর্মকাণ্ডে। অহমিকা শেখ রহিমাকে বললেন ডেকে দিতে। রহিমা উপরে উঠতে নিলেই অনুভব ঠকঠক করে জানান দেয় সে আসছে। নিচে নেমে কোন দিক না তাকিয়ে চেয়ারে বসে পরে। ঈষা অরুকে ডাকলে অরু নিচে অনুভব কে দেখে আর নিচে আসেনি। রহিমা ও অহমিকা শেখ খাবার পরিবেশন করছেন। ঈশাকে একা দেখে ইব্রাহিম শেখ বললেন, অরু কোথাও ঈষা।

_আপু রুমে আছে খাবার উপরে দিতে বলেছে। তার নাকি অনেক পড়া আছে।

__ইব্রাহিম শেখ আর কিছু বললেন না। তবে অহমিকা শেখ বুঝতে পারছেন তার ছেলের জন্য আসছে না সে। অনুভব সব কিছু শুনলো। কিন্তু তার কোন ভাব পতিক্রিয়া নেই। নিজ মনে মাথা নিচু করে খাচ্ছে। আশেপাশে তার কোন মন নেই যেন। খাওয়ার মাঝে ইব্রাহিম শেখ ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তোমার চাচ্চু তো কয়েকমাসের জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছে। তাছাড়া আমি একা হিমশিম খাচ্ছি।

__অনুভব খাওয়া বাদ দিয়ে বাবার দিকে তাকালো। গ্লাস নিয়ে পানি খেয়ে বলল আচ্ছা।

_নতুন ক্লাইন্ট আগামী কাল আসবে তুমি যাবে সেখানে..

_ কাল আমার সময় হবে না তুমিই যেও।

_ছেলের কথা ইব্রাহিম শেখ ক্ষেপে গেলেন। রাশভারি কন্ঠে বললেন, তোমার কি সব কিছু ছেলে খেলা মনে হয়।?

__আমার সব কিছু ছেলে খেলা মনে হয় না বাবা। তবে তোমরা আমার সাথে ছেলে খেলা করেছ সেটা নিশ্চয় জানো।!

__ইব্রাহিম শেখ দমে গেলেন। এখানে আর কিছু না বলাই ভালো। অনুভব খাবার ছেরে গটগট পায়ে উপরে চলে গেল। অহমিকা শেখ ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।

__খাওয়া দাওয়া শেষে ইহাম শেখ মেয়ের রুমে নক করেন। অরু তাকিয়ে দেখে তার বাবা দাঁড়িয়ে তাই ভিতরে আসতে বলল, ইহাম শেখ ভিতরে এসে মেয়ের কাছে বসে বলে পড়াশোনা কেমন চলছে মা.?

__আলহামদুলিল্লাহ ভালো।

__খেয়েছো কিছু।

__না আব্বু। খাবো পড়াটুকু শেষ করে।

__আচ্ছা। শুনো আমি কিছুদিনের জন্য বাইরে যাচ্ছি। নিজের খেয়াল রাখবে কিছু লাগলে আমায় ফোন দিবে। বুঝেছো?

__জ্বি আব্বু।

_ইহাম শেখ আর কিছু বললেন না মেয়ের ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন।
তার ফ্লাইট আছে। ঈশা অরুর রুমে আসলো। হাতে একটা চকলেট বক্স নিয়ে। তার ভাই অরুপির জন্য না আনলেও সে তো অরুপি কে রেখে খাবে না। আর অরু অনেক চকলেট পছন্দ করে তাই চকলেট এনেছে সে। ঈশা অরুর কাছে বসে বলল, জানো আপু ভাইয়া আমার জন্য অনেক কিছু এনেছে।
অরু ঈশার কথার ছোট করে জবাব দেয়" ভালো। "
ঈশা চকলেট বক্স টা অরুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে তোমার জন্য আমি এনেছি আপু। ভাইয়া ভুলে গেলেও আমি তো ভুলুনি।
অরু জবাব দেয় না। ওই লোকের আনা কোন জিনিস সে নিবে না। কিন্তু ঈশাকে না বলতেও পারছে না। হাত বাড়িয়ে চকলেট বক্স টা নেয়। ঈশা আর থাকলো না অরুর ঘর থেকে বের হতে নিবে তখনই অনুভব ডাক দেয় ঈশাকে। ঈশা ভাইয়ের ডাক শুনে ভাইয়ের রুমে যায়। অনুভব ল্যাপটপ নিয়ে ছোট বিভানের উপরে বসে। ঈশা আসা মাত্রই বলল লাগেজ আনতে। ঈশা ভাইয়ের আদেশ মতো লাগেজ নিতে যাবে চোখ যায় লাল রঙের এক লাগেজের উপর। ঈশা খেয়াল করলো এটা তো বিকালে সে দেখেনি। কখন আনলো এটা। হাত দিয়ে ধরতে নিবে অনুভব বলে উঠে ওটা ধরবি না। ওটায় আমার পার্সোনাল জিনিসপত্র আছে। ব্লু কালার টা নিয়ে আয়।

_ঈশা ভাইয়ের কথা মতো ব্লু কালার লাগেজ এনে দেয়। অনুভব লাগেজ খুলে সবার জন্য আনা গিফট গুলো বের করে। ঈশা ভাবে হয়তো এখানে অরুপির জন্য হয়তো কিছু আছে। কিন্তু সে নিরাশ হয়। তার ভাই আসলে কাটখোট্টা স্বভাবের। অনুভব একে একে সব গিফট ঈশাকে দিয়ে বলে সবাইকে দেয়ার জন্য। ঈশা ভাইয়ের দিকে তাকালো। অনুভব বলল কি হয়েছে?

_কিছু না ভাইয়া...।

__তাহলে এখন যা এখান থেকে।

__ইশা ভাইয়ার কথায় সেখান থেকে প্রস্থান করলো। অনুভব রুমের দরজা লক করে দিয়ে ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে বেলকনিতে চলে গেল। অন্ধকারে বেলকনিতে বসে আছে আসে। মনের ভিতর অশান্ত লাগছে তার কেন সেটা জানে না। কোন কিছুতে শান্তি পাচ্ছে না। গা থেকে টি-শার্ট টা খুলে ফেলল সে। চোখ বন্ধ করে নিতে অরুর দুপুরের সেই ভিতু ভিতু মুখটা ভেসে উঠলো। তৎক্ষনাৎ চোখ খুলে লম্বা শ্বাস নিল। পাগল হয়ে যাচ্ছে ।উঠে দাঁড়িয়ে পাসের বেলকনিতে থেকে আবছা আলো দেখা যাচ্ছে। অনুভবের বাদামি চোখ জোড়া মুহুর্তে লাল বর্ন ধারন করলো। বিরবির করে বলল আমায় অশান্তির মাঝে বন্ধি করে তুই শান্তিকে থাকবি এই অনুভব শেখ তা হতে দিবে না। তোর যন্ত্রণায় যতোটা পুড়ে নিশ্ব আমি তার দ্বিগুণ যন্ত্রনা দিব । তোকে অনুভবের দাবানলে জ্বালিয়ে ছারখার করবো অরু। আমায় তুই চিনিস না। আমি তোর ভাবনার থেকেও খারাপ মানুষ। অনুভব রুমে গিয়ের গিটার এনে আবার ও বেলকনিতে বসে পরে। রাত ১১ টা নিশীথে চারদিক যখন ঘন কালো অন্ধকার অনুভব তখন গিটার বাজিয়ে সুর তুলে।

_১০ টার দিক অহমিকা শেখ খাবার হাতে নিয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়ে গেছেন। অরুর বয়স যখন ৫ বছর তখনই তার মা মারা যায়। তখন থেকে অহমিকা শেখ অরুকে বুকে আগলিয়ে নেয়। অরুর মায়ের লাভ ম্যারেজ হওয়ায় প্রথমে কেউ না মানলেই বোনের মৃত্যুতে অরুর মামারা সবাই ভেঙে পরেছিল। সব কিছু ঠিক ঠাক করার আগেই অরুর মা দুনিয়া ছেড়ে চলে যায় তবে বোনের অস্থিত্ব তার বোনের শেষ স্মৃতি টুকুকে মেনে নিয়েছিলেন। পরম যত্নে ভাগ্নী কে নিজেদের কাছে রাখতে চেয়েছিল রাখতে চেয়েছিলেন। ইহাম শেখ ও চেয়েছিলেন মেয়ের ভালো জন্য মামাদের কাছে রাখতে। কারন তাকে বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরে থাকতে হয়। কিন্তু ইব্রাহিম শেখ বাড়ির বড় মেয়েকে দেন নি। তার কথা এই শেখ ম্যানশনের বড় মেয়ে অরুনিকা শেখ তার স্থান সবার আগে এই বাড়িতে। ইব্রাহিম শেখ যেতে দেয়নি ছোট অরুকে। ঈশা যেমন তার মেয়ে অরুও তেমন তার মেয়ে।

_অরু পড়াশোনা শেষ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সে ১২ অবধি পড়াশোনা করে।তবে আজ আর মন সায় দিচ্ছে না। সময় দেখলো রাত ১১ টা ১৩ মিনিট বাজে। উঠে ওয়াসরুমে চলে যায়। ওয়াসরুম থেকে বের হবে শুনতে পায় গিটারের সুর। অরু এগিয়ে বেলকনির দিয়ে যায়। গিটারের সুরের উৎপত্তি খোজার জন্য। বুঝতে পারে পাসের বেলকনি থেকে ভেসে আসছে এই আওয়াজ। মিনিট পাচেক সেখানে দাঁড়িয়ে উঠাৎ এক পুরুষালি অবয়বকে দাড়াতে দেখে সে পর্দার আড়ালে লুকিয়ে যায়। এটা যে অনুভব সে বুঝতে পেয়েছে।
অনুভব উঠে দাঁড়িয়ে পকেট হাতরে কিছু খুজে বের করে লাল ঠোঁটে বন্ধি করে নেয়। লাইটার জ্বালিয়ে সামনে ধরতেই অরু দেখতে পায় অনুভবের রক্তিম চেহারা টা। অনুভব সিগারেটে আগুন জ্বালিয়ে আকাশের পানে তাকিয়া ধোয়া ছেড়ে বলে...

❝আমার এই বিভীষিকা ময় পথে নিকোটিনের ধোঁয়া আর ওই দূর আকাশের ঘন কালো অন্ধকার সঙ্গি।❞

চলবে...পাঠক?
[সবাই রেস্পন্স করবেন]

 #ভালোবাসার_ঋতু [পর্ব : ২ ]   [ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]_অরু ভার্সিটি এসে অতি পরিচিত মুখের দেখা পেয়ে যায়। অরু দৌড়ে য...
19/05/2025

#ভালোবাসার_ঋতু
[পর্ব : ২ ]

[ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]

_অরু ভার্সিটি এসে অতি পরিচিত মুখের দেখা পেয়ে যায়। অরু দৌড়ে যায় তার কাছে। তার কাছে গিয়েই ফারহা অভিযোগের সুরে বলল, এতো লেট করলি কেন অরু আমি সেই কখন থেকে ওয়েট করছি।

_ফারহা মেয়েটা ইন্টার পড়াকালীন বান্ধুবি। কলেজ শেষ করে ভার্সিটির অ্যাডমিশন নেয় ভাগ্য ক্রমে একই ভার্সিটিতে চাঞ্জ হয়ে যায়।

_আরে আর বলিস না রেডি হতেই লেট হয়ে গেল। চল এখন ক্লাসে। তারা ক্লাসের দিকে যায়। সামনে এগিয়েই যেন কারোর সাথে ধাক্কা লেগে যায়। অরু আর ফারহা তাকিয়ে দেখে একটা লম্বা চৌড়া ছেলে। বারবি চুলের পিছনে ছোট ঝুটি।

_সরি সরি ভাইয়া আসলে খেয়াল করিনি।

_ইটস ওকে । তাদের দেখে বলল কোন ইয়ার?

_জ্বি ফাস্ট ইয়ার। ইংরেজি ডিপার্টমেন্ট।

_বাম পাসে গিয়ে সোজা ৩য় তলায় এই বলে ছেলেটি চলে যায়।

_ফারহা অবাক চোখে তাকায় এই ছেলের এতো ভাব। অরু তারা দিয়ে বলল চল চল তাড়াতাড়ি।

_রুমে গিয়ে ১ম সারিতে বসে পরে। একটু পরেই প্রিন্সিপাল স্যার আসলেন ডিপার্টমেন্ট এর সব টিচারের সাথে সাথেই পরিচয় করে দিলেন। আজ যেহেতু প্রথম দিন ছিল, তাই ক্লাস হয়নি।
ফারহা খেয়াল করলো অরু অনেক্ষন যাবত আনমনে কি যেন ভাবছে।
তাই ফারহা অরুকে মৃদ্রু থাক্কা দিয়ে বলে অরু এই অরু কই হারাইলি। কখন থেকে ডাকছি শুনছিস না।

__হ্যা কি বল শুনছি তো।

__শুনছি মানে চল আজ আর ভার্সিটিতে কাজ নাই। চল পুরো ভার্সিটি ঘুরে দেখি। কিন্তু তুই কোন গ্রহে কিসের ভাবনায় ঘুরছিস।

__কোথাও ঘুরছি না মেরি মা চল এখন।

__দুজনে ডিপার্টমেন্ট থেকে বের হয়ে নিচে আসলো। পুরো ভার্সিটি চক্কর দিল।
তাদের সামনে সেই সকালের ছেলেটাকে দেখতে পেল। বাইকের উপর দাঁড়িয়ে কথা বলছিল কয়েকজন মিলে। অরু আর ফারহা সেদিকে আর পাত্তা না দিয়ে বের হয়ে আসতে লাগলো। হঠাৎ পিছন থেকে তাদের কে ইঙ্গিত করে কেউ ডাক দিল। অরু এবং ফারহা পিছনে ফিরে তাকিয়ে দেখে সেই মধ্যে একজন দেখেছে। সকালের ছেলেটা ফোনে কথা বলতেছিল। সেই ছেলেটা হয়তো তাদেরকে খেয়াল করেনি। অরু এবং ফারহা ডাক দেওয়া ছেলেটার সামনে দাঁড়িয়ে বলল। ছেলেকে জিজ্ঞাসা করল কোন ইয়ার।

___ফারহা বলল জ্বী আমরা ফার্স্ট ইয়ারে।

__সিনিয়র দেখলে যে সালাম দিতে হয় তোমরা জানো না।

___জ্বী ভাইয়া আসলে আমরা সেভাবে খেয়াল করিনি। এরপর আর ভুল হবেনা।

___শুধু যে তুমি বলছো। তোমার পাশে একজনকে কথা বলতে জানে না। [অরুকে ইঙ্গিত করে বলল ]

__জ্বী ভাইয়া আসলে _

___নাম কি তোমাদের?

__জি আমি ফারহা ও হচ্ছে অরুণিকা।

__আচ্ছা তোমরা এখন যাও।

__ফারহা এবং অরুণিকা ভার্সিটির গেট দিয়ে বেরিয়ে গেল।

___অরু ফারহার থেকে বিদায় নিয়ে শেখ ম্যানসনে চলে গেল। কলিং বেল বাজাতেই একজন সার্ভেন্ট দরজা খুলে দিলেন। অরু সামনে থাকা রহিমা কে জড়িয়ে ধরলো। রহিমা এই বাড়িতে অনেক বছর যাবত কাজ করেন। অরুকে অনেক ভালোবাসেন তিনি।

__কেমন গেল আমাগো অরু মায়ের ভার্সিটির প্রথম দিন।
সব মিলে ভালো। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি তুমি খাবার রেডি কর খালা। এই বলে সে উপরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়। অহমিকা শেখ অরুকে দেখা মাত্রই বলল অরুমা ফিরেছিস।
জ্বি বড় মা। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।
__আচ্ছা যা।
________
_অরু নিজের রুমে এসে কলেজ ব্যাগটা টেবিলের উপরে ছেলে টপ আর একটা প্লাজো নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়। চট জলদি গোসল করে মাথায় টাওয়া পেঁচিয়ে বের হয়ে আসে। তার লম্বা ঘন চুল গুলো মুছতে অনেক সময় লাগে। তাই গোসল সেরে টাওয়াল মাথাম পেচানো অবস্থায় ঘর থেকে বের হয়ে আসে। নিচে ড্র-ইং রুমে অহমিকা শেখকে দেখতে পেয়ে নিচে চলে আসে। নিচে নেমেই চোখ পরে পাসের সোফায় বসা পুরুষদের দিকে। শক্ত চোখ মুখ করে তার দিকে তাকিয়ে আছে। অরু তাকে দেখে কেপে উঠে যেন। পাসে রয়েছে অচেনা এক ছেলে অরু তাকে চিনলো না। ইব্রাহিম শেখ ও ইহাম শেখ ও উপস্থিত রয়েছে। ইহাম শেখ মেয়ে কে দেখে বলল অরু মা কিছু বলবে ~

__অরু কিছু না বললেই আবার উপরে দৌড়ে চলে যায়।রুমে এসে বুকে হাত দিয়ে লম্বা দম নেয় সে। চোখ বন্ধ করলে আবার সেই ভয়ংকর রক্তিম চোখ জোড়া ভেসে ঊঠে। তারাতাড়ি চোখ খুলে ফেলে। কি ছিল ওই চোখে..! আগুন,?

___ড্র-ইং রুমে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। ইব্রাহিম শেখ ও ইহাম শেখ বসে আছে। অনুভব সামনের সিংগেল সোফায় বসে ফোন দেখছে। পাসে দাড়ানো ছেলেটা সব কিছু দেখছে। কেমন যেন গুমোট হয়ে আছে সব কিছু। অহমিকা শেখ ছেলের আসার খবর পেয়ে ছূটে আসে।

_ইব্রাহিম শেখ বললে তোমার ফ্রাইট সকালেই ল্যান্ড করেছে তাহলে তুমি এখন আসলে কেন, আমি আর তোমার চাচ্চু মিলে যে গেলাম।

_অনুভব আলেশহীম ভাবে জবাব দিল, কাজ ছিল।

__কি এমন কাজ ছিল অফিসেও তো যাও নি তাহলে ফার্মহাউসে কেন গিয়েছিলে। তুমি আমাকে কাজ শিকাচ্ছো?

__অনুভব কিছু বলল না দৃষ্টি তার ফোনের মাঝে আবন্ধ। ইব্রাহিম শেখ ছেলের নিরবতা দেখে গর্জে উঠে, বেয়াদব হয়েছ বাহিরে থেকে তাই না এই জন্য তোমায় বিদেশে পাঠিয়েছিলাম।

__অনুভব ফোন থেকে দৃষ্টি সরিয়ে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, উহু আমি জোর করে গিয়েছিলাম। বলে উঠে দাঁড়ায়। অহমিকা শেখের দিকে তাহিয়ে বলল, মা

__অহমিকা শেখ অনুভবের কাছে গিয়ে বলল কিছু লাগবে বাবা।

__আমাকে একগ্লাস ঠান্ডা পানি রুমে দিও তো। পাসে ফিরে বলল, আহান!

__ছেলেটির নাম আহান। অনুভবের ডাকে তার দিকে তাকালো। অনুভব ট্রলি নিয়ে উপরে উঠে যায় সাথে তার বন্ধুটিকে নিয়ে।
অহমিকা শেখ ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে কিচেনে চলে গেল।

___দুপুরে খাওয়ার সময় সবাই উপস্থিত হলেও অরু সেখানে ছিল না। সেই যে রুমে ঢুকেছে আর বের হয়নি মূলত অনুভবের মুখোমুখি হতে চাছে না সে। সে ভয় পায় প্রচুর। রহিমা অরুর রুমে এসে খাওয়ার জন্য ডাকলে অরু বলে নিচে যেতে ইচ্ছে করছে না খালা তুমি উপরে নিয়ে এসো খাবার।
রহিমা আর কিছু বললেন না।

___বিকাল বেলা ঈসা কোচিং থেকে বাসায় ফিরেই ভাইয়ের রুমে যায়। অনুভব তখন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। ঈসা ভাইয়ের কাছে গিয়েই বলল ভাইয়ায়ায়া--

___অনুভব পিছন ফিরেই বোনকে দেখে কাছে ডাকলো।ঈশা কাছে যেতেই অনুভব বলল কেমন আছিস বুড়ি।? অনেক বড় হয়ে গেছিস।

___আমি ভালো আছি ভাইয়া তুমি লেট করলে কেন সকালে কতোক্ষন ওয়েট করেছি তুমি জানো!

___আচ্ছা সরি আমার একটু কাজ ছিল তাই তো দেড়ি হয়েছে।
বলেই সে ঈশাকে নিয়ে রুমে গিয়ে ৪ টা ল্যাগেজের মধ্যে একটা লাগেজ ঈশাকে দিয়ে বলে এটা তোর। যা যা বলেছিস সব আছে দেখে নিস। ইশা সব কিছু দেখে বলল অরুপুর জন্য কিছু আনোনি ভাইয়া...?

___অনুভব মুখভঙ্গি আগের মতো রাখলো। বোনের সামনে রাগ প্রকাশ করবে না সে। ঈশা এখনো ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। তার জন্য এতো কিছু আনলো তার অরুপুর জন্য আনেনি কিছু?

___অনুভবের থেকে উওর না পেয়ে ঈশা ভাইয়া বলে ডাক দিলো। অনুভব ঈশাকে দেখে বলল রহিমা খালাকে বল আমি কফি চেয়েছি। ঈশা কিছু বলল না,তাই নিজের জিনিস পত্র নিয়ে নিজের রুমে যায়।

চলবে..পাঠক?

[সবাই রেস্পন্স করবেন। যারা গল্প দেখেন বা পড়েন তারা একটু লাইক কমেন্ট করিয়েন। আপনারা আমায় একটু উৎসাহিত করিয়েন। ]

 #ভালোবাসার_ঋতু [পর্ব : ১ ]  [ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]'ধিকি ধিকি জ্বালা বুকের মাঝেএ প্রেমের ফাগুনেগলে যায় মন মোমের ...
18/05/2025

#ভালোবাসার_ঋতু
[পর্ব : ১ ]
[ কপি করা কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ ❌]

'ধিকি ধিকি জ্বালা বুকের মাঝে
এ প্রেমের ফাগুনে
গলে যায় মন মোমের মত
''হৃদয়ের আগুনে~

''মনে যন্ত্রণা নেই সান্তনা
তবু আশা কি থামে?
কিছু স্বপ্ন যে পেলো রঙ খুজে
আজ তোমারই নামে~

__আমেরিকার একটা বড় হোটেলে ৭ তলার বিশাল বহুল রুমে অবস্থান করছে এক যুবক। হাতে গিটার নিয়ে গানের মাঝে ডুবে। সুঠাম দেহের অধিকারী যুবকের বয়স ২৯ এর কোঠায় । প্রায় ৪ বছর আগে সে এই বিদেশের মাটিতে পা রেখেছে। চোখে মুখে গম্ভীরতা ভরা। তার পাশে দাড়িয়ে আছে তারই প্রান প্রিয় বন্ধু। যুবকটি তার বন্ধুকে কে বলল কাজ কতোদুর?

__কাজ শেষ। কিন্তু জাফর খানের দলের লোকেরা ঝামেলা করতে চাচ্ছে। এই ডিল করে তুই ঠিক করছিস। আংকেলের উপর হামলা হতে পারে।

__বিসনেস কি এমনি হয়। তবে যদি জাফর যদি লেজে পা দেয় সাপ ঠিক ছোবল মারবে।

ডিপার্টমেন্ট থেকে কল এসেছিল তোকে জলদি.......

জানি আমি। এইদিকের মেয়াদ আমার শেষ সেটাও জানি।

_ ৬ মাস থেকে দেশে আছিস শেখ ম্যানশনে যাচ্ছিস না কেন। লুকিয়ে আছিস কেন?
তার বন্ধুর কথায় যুবকটি ক্ষিন হেসে বলল, কাউকে কঠিন যন্ত্রনা দিতে।
আসছি আমি "lovebird."এই বলে উচ্চ স্বরে হেসে উঠলো যুবক টি।

********************************************************
__সকাল প্রায় ৮ পার হয়ে গেছে । শেখ ম্যানসনের আনাচে কানাচে আজ খুশির রেখা দেখা দিয়েছে। বিশিষ্ট শিল্পপতি শেখ গ্রুপ অফ ইইন্ডাস্ট্রির মালিক এই শেখ পরিবার। বাড়ির আনাচে-কানাচে আভিজাত্যের ছোঁয়া। বড় শেখ সাহেবেত গড়া এই শেখ ইন্ডাস্ট্রি। পুরো বাড়ি জুড়ে রয়েছে আভিজাত্যে মোড়ানো। বাড়ির কর্তৃ ভিষণ ব্যস্ত হয়ে পরেছে আজ। সার্ভেন্টরা শেখ ম্যানশন পুরোটা খুব ভালো ভাবে ক্লিনিং করছে। বড় শেখ সাহেব ইব্রাহিম শেখ ও তার ছোট ভাই ইহাম শেখ। তারা নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা করছে। চারদিকে বিভিন্ন পদের রান্নার সুঘ্রান বেড়িয়েছে। অহমিকা শেখ কিচেনে রান্নার কাজে ব্যস্ত। বড় শেখ সাহেব ও ছোট সাহেব নাস্তার শেষ করে গাড়ির ড্রাইভার কে বললেন গাড়ি বের করতে এয়ারপোর্টে যাবে।

__অরুপি অরুপি কই তুমি?

__এইতো আমি বল কি বলবি ডাকছিস কেন ঈশা.?

__তুমি জানো আব্বু এয়ারপোর্টে গেল। ভাইয়া আসতেছে তুমি জানো?

__ছোট বোনের কথা শুনেই থমকে গেল অরু। এয়ারপোর্টে গেছে আব্বু আর বড় আব্বু তাকে আনতে। তাহলে সে সত্যি আসছে? আমাকে আবার জ্বালিয়ে শেষ করে দেওয়ার জন্য আবার আসছে? এসব বলে বির বির করতে লাগলো।

অতীত
অরু তখন সবে মাত্র নাইনে উঠেছ আর এই বাড়ির একমাত্র ছেলে অনুভব শেখ। দেখতে ৫'৯ ফিট লম্বা উজ্জ্বল ফর্সা চেহায়া বাদামি রঙের চোখের মনি এক কথায় সুদর্শন তাগড়া যুবক। পড়াশোনা করার জন্য শেখ ম্যানসনের সবাইকে জানায় সে মাস্টার্স দেশের বাইরে করবে। এতে তার মা দ্বিময় পোষন করেন, বাড়ির এক মাত্র ছেলে সে যদি বাইরে যায় তাহলে থাকলো কি এই বাড়িতে। কিন্তু অনুভব তো অনুভবই। যার নাকের ডোগায় রাগ সব সময়। সবার মতের বিরুদ্ধে সে এপ্লাই করে। ভাগ্য ক্রমে সুযোগ হয়। তার মা অহমিকা শেখ কে কোন রকম বুঝিয়ে রাজি করায়। কিন্তু অহমিকা শেখ শর্ত জুড়ে দেন। বিদেশে গিয়ে সেখানের হাওয়া লাগবে ছেলের ঘরে ফিরতে চাইবে না। তাই ছেলে ঘরের ফিরার শক্তপক্ত খুটি গাড়তে চান।

_বেশ তুই যেহেতু যাবিই তাহলে এক শর্তে

__কি শর্ত? ভ্রু কুচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো।

__অরুকে বিয়ে করে যা। অরু এই পরিবারের মেয়ে আর সবার আদরের ঘরের মেয়ে ঘরে থাকবে। আমি ইহাম কে এই বিষয়ে বুঝিছি। সে রাজি। তোর বাবাও তাই চায়। তাছারা অরুকে আমার অনেক পছন্দ। নিজের হাতে গড়ে তোলা ।

_মায়ের এমন কথা শুনে অনুভের চোয়াল শক্ত হয়ে যায়।কপালে বুড়ো আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে থাকে। ঠোঁট কামরে নিজেকে আটকাতে চায়। ফর্সা মুখ লাল হয়ে যায়।কিন্তু দমিয়ে রাখতে পারে না। পাশেই কাচের টেবিলে জোড়ে লাথি মারে মুহুর্তের ভিতর সব ভেংগে চুরমার হয়ে চায়। গর্জে উঠে সে।

_তুমি কি পাগল মা।অরু একটা বাচ্চা মেয়ে।তাকে আমার গলায় ঝুলাতে চাইতেছো। আমি কি পালিয়ে যাচ্ছি।

_তো কি হয়েছে অরু এই শেখ বাড়ির মেয়ে তোর সমস্যা কই তুই বিয়ে করে চলে যাবি সংসার তো করছিস না।

_এটা সম্ভব নয়। করবো না বিয়ে যা ইচ্ছা করো বলে হেটে চলে যেতে ধরে।

_তুই যদি বিয়ে না করে যাস তাহলে তুই আমার মরা মুখ দেখবি।

__মায়ের এমন কথায় অনুভব থমকে যায়। নিজেকে এই মুহুর্তে খুন করতে ইচ্ছে করে। গটগট করে নিজের রুমে গিয়ে ঠাস করে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়।

_অহমিকা শেখ ছেলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখ চেপে কান্না করেন।

_রাতের খাওয়ার সময় ও অনুভব নিচে নামেনি। ইব্রাহিম শেখ জিজ্ঞেস করে অনুভবের কথা। খাওয়ার জন্য ডাকলেও আসে না অনুভব। তাই অহমিকা শেখ বলেন তুই যদি না খাস আমি খাবো না এই বলে দিলাম। মিনিট দশের পর অনুভব দরজা খুলে মায়ের কাছে গিয়ে বসে।

_অনুভব বলে, তোমরা যা চাও তাই হবে। নিজের ক্ষতি করো না।

_ছেলের কথা শুনে অহমিকা শেখ ছেলের দিকে তাকালো। ছেলে তার মায়ের খুশির জন্য বলতেছে সে বুঝতে কিন্তু কিন্তু পিছু পা হটা যাবে না ।আজ না বুঝলেও একদিন ঠিক বুঝবে। তাই আগামীকাল ঘরোয়া ভাবে কাজি ডাকবেন ।

_অনুভব খেয়ে কোন দিক না তাকিয়েই নিজের রুমে চলে যায়। অন্ধকার সুনশান ঘরে ব্যালকনি বসে নিকোটিন এর ধোয়া উড়াতে ব্যস্ত অনুভব।
আমার সাথে কেন জড়িয়ে যাচ্ছিস অরু । তোকে ভালো থাকতে দিব না আমি। শুনছিস তুই দিব না ভালো থাকতে বলতে থাকে। তখনই অনুভবের ফোন আসে রিসিভ করেই করে আমি কাল আসছি সব রেডি আছে এটুকু বলে ফোন কেটে দেয়।

_পরের দিন সকাল থেকে শেখ ম্যানসনে ছোট খাটো আয়োজন করা সব। পিচ্ছি অরু কিশোরী মন অনুভবকে ঘিরে চারদিকে রঙিন। সে বুঝতে পারছে না তার সাথে আগামীতে ঠিক কি হবে। ছোট অরুকে শাড়ী পরিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দেয় অহমিকা শেখ। তার পাসে বসা অনুভবের ছোট বোন ঈশা। তার থেকে ২ বছরের ছোট। সব কিছুর বন্দবস্ত করে ফেললো মুহুর্তেই। কাজি এসে বিয়ে পড়ানো শুরু করে। অনুভব তখনো কোন এক চিন্তায় বিভোর। সে চুপ চাপ আছে এটা দেখে ইব্রাহিম শেখ এর খটকা লাগে। নিশ্চই এই ছেলে কোন ফন্দি আকছে। সে আর মাত্র ১৫ দিন আছে। তারপর চলে যাবে। ইব্রাহিম শেখ ছেলের ভাব সাব বুঝতে চেষ্টা করছে।ইহাম শেখ ও সাথে আছে । বিয়ে পড়ানো শেষ হলে অনুভব নিজের মতো কারো দিক না তাহিয়ে চলে যায়। ভাব এমন যেন কিছুই হয়নি এখানে। অরু কে অহমিকা শেখ উপরে নিয়ে যায়।

_সন্ধ্যার দিক অনুভব রহিমা খালাকে ডাক দেয়। অহমিকা কিচেনে রাতের রান্নায় করতেছে। এই বাড়ির সমস্ত কাজ সার্ভেন্ট করলেও রান্না নিজের হাতে করেন তিনি ।অনুভব নিচে এসে বলে এক কাপ কফি দেওয়ার জন্য এই বলে চলে যায়। অহমিকা শেখ চুলো বসায় দেয়। কফি হয়ে গেলে ঈশা কে খুজে কফি টা দেওয়ার জন্য হাতে কাজ তাই। কিন্তু ঈশা উপরে। ঠিক ওই সময় অরু নিচে নামে। অহমিকা শেখ বলে অরুমা যাও তো অনুভব কে কফি টা দিয়ে আয়। অরু আর কিছু বললো না কিশোরী মন মগ টা নিয়েই উপরে চলে গিয়ে দরজায় টোকা দিল। পার্মিশন পেয়েই সে ভিতরে ঢুকে যায়। অনুভব উলটো পাশে কিছু তাই কে এসেছে বুঝতে পারেনি। পিছন ঘুরেই অরুকে দেখেই মেজাজ টা খারাপ হয়। রক্তচক্ষু নিয়ে তাকায় তার দিকে।অরু ভয় পেয়ে যায়। কাপা কাপা হাতে এগিয়ে দেয় মগটা। অনুভব মগটা নিয়েই সব কফি ছিটছে দিয়ে থাপ্পড় দেয়। শক্ত পেশিবহুল হাতের থাপ্পড় খেয়ে ছিটকে বসে যায় টেবিলের কাছে। মাথা কেটে যায়। অরুর বাহু ধরে বলে ~

_তুই এই রুমে কেন এসেছিস। অরু ভয়ে চুপ করে আছে হাত টা অনেক চেপে ধরায় ব্যথা পায় সে। ফুপিয়ে উঠে। আবার অনুভব বলে কেন এসেছিস তুই কখনো আসবি না এই রুমে। আমি মানি না তোকে বুঝতে পেরেছিস। একটা কথা মাথা ঢুকে নে কখনো আমার সামনে আসবি না। অনুভবের রাগ দেখে অরু ভয়ে কুকরে কায়। সে কখনো তার অনুভব ভাইকে এভাবে রাগতে দেখেনি সে। তার শরীর কাপুনি দিয়ে উঠে। নিজেকে সামলাতে পারে না।তার চোখ বন্ধ হয়ে আসছে। গরম কফি হাতের উপর পরে ফোস্কা ফুটে গেছে। মাথা ঘুড়ে পরে গেল ছোট অরুনিকা।

_অনুভবের চিৎকারের আওয়াজ শুনেই অহমিকা শেখ ছেলের রুমে যায়। অরুর অবস্থা দেখে আতকে উঠেন উঠেন। অহমিকা শেখ এগিয়ে গিয়ে অরুকে ধরে। ছোট অরুর অবস্থা দেখে কলিজা কেপে উঠে। তাদের ভুলের জন্য মেয়েটার এই অবস্থা । অহমিকা শেখ ছেলের কাছে গিয়ে বলে তোর থেকে এটা আশা করি নাই অনুভব। অরু তো ছোট।ভুল আমরা করেছি সেই রাগ তুই ওই মা হারা বাচ্চা মেয়েটার উপর ঝাড়লি বলেই একটা থাপ্পড় দিয়ে বেড়িয়ে যায়।

_অচেতন অরু বিছানায় পড়ে অহমিকা পাশে। মেয়ের অবস্থা দেখে তিনি ডুকরে কেদে উঠে। অরুর গা আগুনের মতো গরম হয়ে যায়। ডক্টর এসে দেখে যায় মাথায় বেন্ডেস করে দেয়। সেই রাতেই অনুভব চলে যায় আমেরিকা।

বর্তমানে *****

"অরুনিকা শেখ। "এই শেখ ম্যানসনের বড় রাজকন্যা সে। এবং ইহাম শেখের একমাত্র মেয়ে অরুনিকা শেখ। এবার ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে ইংরেজি বিভাগে। দুধে আলতা গায়ের রঙ যেমন সুন্দর তেমন ঘন কালো রেসমি চুলের অধিকারীনি।নাকের উপর বাদামি রঙের তিল জ্বল জ্বল করছে। সবার অতি আদরের এই অরুনিকা শেখ।

আরুনিকা তারাতারি রেডি হচ্ছে কারন আজ তার ভার্সিটির প্রথম দিন। প্রথম দিন সে কোন রকম লেট করতে চায় না। তার ফোনে একটা কল আসলো দেখেই মুচকি হেসে ফোন।
ওপাস থেকে বলল তুই কইরে অরু কখন আসবি।

_ এইতো আসছি তুই কই?

_আমি তো মাত্র আসলাম তোকে খুজতেছি তুই নাই জলদি আয়।

_আচ্ছা আমি আসতেছি বলে রেখে দিলাম।

__ অরু রেডি হয়ে নিচে অহমিকা শেখ কে ডাকতে লাগতো। তার ডাকে কিচেন থেকে বের হয়ে আসলেন তিনি।

__কি হয়েছে চেচাচ্চো কেন।
অরু বলল তুমি ভুলে গেল বড় আম্মু আজ আমার প্রথম দিন ভার্সিটির। অহমিকা শেখ জিব্বাহ কাটলেন। ইস তিনি তো ভুলেই বসেছেন।

___অরু চোখ ছোট ছোট করে বলল আচ্ছা বড় আম্মু সত্যি করে বলোতো তুমি কি সতি ভুলে গেছিলে?

__আরে না আমার রাজকন্যার কথা কি ভুলতে পারি তাড়াতাড়ি নাস্তা শেষ করো। এই বলে নাস্তার টেবিলে বসিয়ে দিয়ে নাস্তা আনলেন। খাওয়া শেষে অহমিকা শেখ কে বলল দোয়া করিও আমি আসি এখন।

___আচ্ছা মা সাবধানে যেও।
অরু বেড়িয়ে গাড়িতে উঠে পরলো।ইব্রাহিম শেষ ড্রাইভার কে বলে গিয়েছেন তার ভার্সিটিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

__ইব্রাহিম শেখ এয়ারপোর্টে প্রায় ১৫ মিনিট যাবত দাড়িতে আছে। রীতিমতো তিনি বিরক্ত হচ্ছেন। আমেরিকার ফ্রাইট আরো ২০ মিনিট আগেই ল্যান্ড করেছে কিন্তু যার জন্য অপেক্ষা সে কই???

___ইব্রাহিম শেখ কাঙ্খিত নম্বরে ফোন লাগায় ৩/৪ বার রিং হয়,ওপাস থেকে রিসিভ হওয়া মাত্রই ইব্রাহিম শেখ বললেন কই আছো তুমি?

___ওপাস থেকে বলল ফার্ম হাউসে আসছি।

___তুমি দেশে এসে আগে ফার্ম হাউসে কেন গিয়েছো তোমার মা যে পথ চেয়ে আছে।

___আর কিছু বলনা শুধু বললো কাজ আছে বলে ফোন কেটে দিল।

___ছেলের এমন ত্যাড়ামি দেখে ইব্রাহিম শেখ অফিসের দিকে যায়।

চলবে...পাঠক?

[সবাই রেস্পন্স করবেন [

আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এই পেজে গল্প আপলোড গল্পের নাম ❝ ভালোবাসার ঋতু ❞ আপনারা সবাই আমন্ত্রিত। সময় বিকাল ৩:০০ টায়...
17/05/2025

আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এই পেজে গল্প আপলোড গল্পের নাম ❝ ভালোবাসার ঋতু ❞ আপনারা সবাই আমন্ত্রিত। সময় বিকাল ৩:০০ টায়।

Address

Rangpur
5600

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Deep Painッ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share