
18/07/2025
আমার হাসবেন্ড রা ২ ভাই ২ বোন,আমার নন্নাস খুব চমৎকার একজন নারী, উনার মত মহিলা আমাদের জীবনে পেয়েছি আমার জন্য অনেক বেশি ভাগ্যের🥰।তার ঠিক উলটা আমার ননদ😖।প্রচুর চঞ্চল আর প্রচুর বেয়াদব তার চেয়ে বেশি খুব খুব নাটকবাজ😤।
আমরা জয়েন্ট ফ্যামিলি তে থাকি।আমার চাচা শ্বশুর রা আসে পাশে বিল্ডিং এ থাকে।আমার বিয়ের পর দেখি ২ দিন পর পর সব কাজিনেরা একত্রিত হয়।
সবাই যখন সে একসাথে থাকে সে সবাইকে উস্কাই দে, চল আজকে ফুচকা বানায়,চল আজকে চটপটি খাই,চল বিরিয়ানি খাই।
সবাইকে উস্কাই দিবে,জিনিসপত্র আনাবে আর বলবে সবাই মিলে হাতে হাতে করবো কিন্তু করার সময় রুমে গিয়ে শুয়ে থাকে আর বলে আমার খুব পায়ে ব্যাথা😅।
আবার রান্না শেষ হলে আগে গিয়ে বেড়ে নিয়ে আসবে আর সবার আগে খেয়ে ফেলবে।যেহেতু তারা ১৫-২০ জন আয়োজন করে, খাওয়ার সময় তো সবাই একসাথে খাবে তাই না??সব চেয়ে বড় কথা সবাইকে উস্কাই দিয়ে সব কাজ আমার একা করতে হয়,তার কাজিন ম্যাক্সিমাম পুরুষ তারা আর কি রান্নাতে হেল্প করবে বলেন,মেয়েগুলারে সে নিয়ে শুয়ে শুয়ে গল্প করবে আর রান্না শেষ হলে আমি ফ্রেশ হয়ে আসতে আসতে দেখি সে নিয়ে একা একা খাচ্ছে মেহমান রেখে। ।
তারপর ২-৩ সপ্তাহ পর পর সবাই ট্যুরের প্লেন করবে,প্লেন ম্যাক্সিমাম টাইমে সে করে কিন্তু যাওয়ার ঠিক ১০ মিনিট আগে এমন ঝগড়া লাগাবে যাতে কেউ না যায়।প্রত্যেকবার সেইম আর সেইম।যেমন লাস্ট টাইম সবাই কক্সবাজার যাবে,তার ফুফাতো ভাই বিদেশ থেকে এসেছে তাই,সে নিজে আবদার করছে যাবে তাই উনি প্রায় ১৫ জনের জন্য গাড়ি বুকিং দিয়ে দিয়েছে।
সবার গুছানো শেষ, পরদিন সকাল ৫.৩০ 🧭এ রওনা দিবো।সবাই ভাত খেয়ে ঘুমাতে যাবে,আমি সব প্লেট ধুইতে বেসিনে নিচ্ছি তখন আমার শ্বাশুড়ি তাকে বলছে তুই একটু গিয়ে বউকে হেল্প কর,ওমা এই কথায় সে সবার সামনে উঠে রুমের দরজা লক করে দিছে।এরপর ঘর ভর্তি মানুষ অনেক চেস্টা করে ও তার দরজা খুলাতে পারেনি।
কি যে সিন ক্রিয়েট করেছে,রুমে ঢুকে রুমের সব জিনিস সে ভাংছে।পরদিন সকালে কোন ভাবে তাকে নিতে পারিনি।সে ভেবেছে অন্য বারের মত সবাই থেকে যাবে,কিন্তু তাকে ফেলে সবাই চলে গেছে,তার সাথে আমাদের এক নানীকে রেখে গেছে।আমরা ট্যুর থেকে আসার পর অনেকদিন আমাদের সাথে কথা বলেনি,কেন তারে ছাড়া আমরা বেড়াতে পারলাম এই তার দুখের বিষয়।
যাইহোক তার বিয়ে হয়েছে,শ্বশুড় শ্বাশুড়ি গ্রামে থাকে,সে হাসবেন্ড নিয়ে শহরে।সে জামাইকে এক দিনের জন্য শান্তি দিচ্ছেনা।একবেলা ও নাকি রান্না করেনা,জামাইকে রেস্টুরেন্ট থেকে আনতে বাধ্য করে।তাও তার জামাই এইসব মেনে নিচ্ছে,কিন্তু প্রবলেম হচ্ছে সে একটু সর্দি জ্ব্রর হলে পুরা ঘর মাথায় তুলে ফেলে,তার অবস্থা দেখে তার হাসবেন্ড ২ বার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।কিন্তু তার এমন কোন সিরিয়াস কিছু হয়নি যে হাসপাতাল ভর্তি করতে হবে।
তার বিয়ের ১ মাস পর আমার দেবরকে বিয়ে করিয়ে আনি,বউ এখন ও কলেজে পরে,বয়স কম।খুব আদুরে তেমন কাজ জানেনা বাট আমাকে খুব সম্মান করে আর কাজ শিখার ট্রাই করে,সারাক্ষণ আমাকে কাজে হেল্প করে।খুব লক্ষি মেয়ে।সে এখন প্রেগন্যান্ট, তার ৮মাস রানিং।
গতমাসে আমার দেবরের বন্ধুর বিয়ে ছিলো,ওই বিয়ের কথা শুনে ননদ সিলেট থেকে ঢাকা চলে আসছে যেকোন মুল্যে এই বিয়ে সে খাবে।কথা ছিলো সে আর তার ভাই মানে আমার দেবর যাবে বিয়ে খেতে।যেহেতু বিয়ে ফ্রাইডে ছিলো তার ২ দিন আগে আমি আমার বাপের বাড়ি ফেনিতে আসি।
বিয়ের দিন শুনলাম ননদ যেকোন মুল্যে দেবরের বউকে বিয়েতে নিবেই নিবে।আমি অনেক অনেক মানা করেছি এই সময় বাইরে না যেতে।তার মধ্যে ওইদিন প্রচন্ড ঝড়,এক হাটু পানি।আমি কোন ভাবে বাইরে যেতে নিসেধ করেছি,দেবরের বউ ও যেতে চায়নি,কিন্তু ওই মেয়ে নাছোড়বান্দা, সে নিবেই আর বলে গাড়িতে যাবে এত কিসের অসুবিধা।
আমি ফোন রেখে,বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছি,এর ১০ মিনিট পর ননদের ফোন।কি যে চিতকার দিচ্ছিলো,বলতেছে তার ভাই এর গাড়ি এ*ক্সি*ডেন্ট করছে, দেবর আর দেবরের বউ এর অবস্থা খুব সিরিয়াস তাদের ঢাকা মেডিকেল নিয়ে যাচ্ছে লোকজনে।এইটা শুনে রীতিমত চোখ অন্ধকার হয়ে গেছে আমার।
দেবরকে ফোন দিচ্ছি ফোন ধরেনা,এইদিকে ননদ ত চিল্লাই চিল্লাই কাদতেছে,বলে তুমি তাড়াতাড়ি আসো,আমাদের ত সব শেষ। বাচ্চা পেট থেকে বের হয়ে গেছে।বিলিভ করবেন কিনা যানিনা দুধের শিশুকে বাসায় রেখে ঝড়ের রাতে ছোট ভাইকে নিয়ে ঢাকার জন্য বের হয়েছি,কয়টা যে গাড়ি চেইঞ্জ করেছি মনে নাই।
রাত ৪ টা ২০ এ আমি ঢাকা মেডিকেল পৌছাইছি।গিয়ে দেখি দেবরের বউ এর তেমন কিছু হয়নি,ও দের রিকশায় পিছনে ধাক্কা দেওয়ার কারনে সে পরে যায় কিন্তু পেটে কোন আঘাত পায়নি তারপর ও সিকিউরিটির জন্য তাকে মেডিকেলে আনা হয়েছে।একদিন পর আল্ট্রা করিয়ে রিলিজ দিয়েছে।
আমার গিয়ে রীতিমত রাগে মাথা ঘুরাচ্ছিলো,আমার ননদকে সবার সামনে ২ টা থাপ্পড় লাগিয়ে দিয়েছি।বদমাইশ দেখছি কিন্তু এমন বদমাশ আমি দেখি নাই।
গত এক।মাস শ্বাশুড়ি আমার সাথে ঠিক মত কথা বলেনা।
গত পরশু দেখতেছি ননদ বিলাপ ধরে কান্না করছে কারন তার সিস্ট হয়েছে।ডাক্তার ৩ মাসের ওষুধ দিয়েছে।সে চিল্লাই চিল্লাই কান্না করে আর শ্বাশুড়ি কে বলে এখন তুমি সিলেট আসো।আমার শ্বাশুড়ি ও রেডি তাই আমি উনাকে বাধা দিয়েছি,কারন যেকোন সময় দেবরের বউ এর বাচ্চা হবে,টিউমার ত এখন সবার হয়,একজন্য এত টেনশন করার কিছু নাই।সবাই আমার সাথে রাগ,সে ঘরের ছোট মেয়ে আমি কেন হাত তুললাম,তাকে কেউ ফুলের টোকা দেইনি।
আচ্ছা আপুরা বলেন তো আমি কাজ টা ঠিক করেছি???
আমার মনে হচ্চে আমার শ্বাশুড়ি তার মেয়েকে নস্ট করেছে।
এমন ননদ আপনাদের হলে কিভাবে ডিল করতেন???
(নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)
#কালেক্টেড পোস্ট