27/07/2025
এত বছর পর আজ নিজেকে জিজ্ঞেস করি—এই এতটুকু জীবনে আমি কী করেছি? মনে হয়, প্রাপ্তির খাতায় নাম খুব বেশি নেই। বরং অপ্রাপ্তিগুলোর তালিকা যেন দিন দিন ভারী হয়ে উঠছে।
সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে অনার্স ভর্তি পরীক্ষার দিনগুলো। কত রাত জেগে পড়েছি, কত স্বপ্ন বুনেছি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার! প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর যেন জীবনের বড় কোনো পরীক্ষার মতো অনুভব হত। আশায় ছিলাম—হয়তো একদিন আমিও কারও গর্ব হবো, হয়তো একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট দিয়ে ঢুকেই এক নতুন জীবনের পথে হাঁটবো।
কিন্তু বাস্তবতা ছিল নিষ্ঠুর। সেই চেনা কাগজে আমি “চান্স পাইনি” শব্দটা দেখেছি। চোখের সামনে ভেঙে পড়েছে সব স্বপ্ন, সব পরিশ্রম। কেউ বলেছে, “আরও চেষ্টা করো”, কেউ সান্ত্বনা দিয়েছে—কিন্তু আমার ভেতরের আমি চুপ হয়ে গিয়েছিল।
মাঝেমাঝে ভাবি, এটাই কি সব? এত পরিশ্রম, এত আশা—আর শেষে শুধু একটুকরো অস্বীকৃতি?
তবে জীবন থেমে থাকেনি। আমি ভর্তি হলাম রাজশাহী কলেজে। তখন বুঝিনি—এই জায়গাটাই একদিন আমার আশ্রয় হয়ে উঠবে।
রাজশাহী কলেজ আমাকে শুধু শিক্ষার সুযোগই দেয়নি, দিয়েছে সাহস। আমার ডিপার্টমেন্টের স্যাররা ঠিক তখনই আমাকে নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছেন। তাঁরা শুধু ক্লাস নেন না—তাঁরা অনুপ্রেরণা দেন, ভরসা দেন। একজন শিক্ষকের চোখে নিজের সম্ভাবনা দেখতে পাওয়া, এটাই তো সবচেয়ে বড় পাওয়া।
এখন বুঝি, প্রাপ্তি শুধু বড় কোনো প্রতিষ্ঠানে পড়ার নাম নয়। প্রাপ্তি হলো সেখানে, যেখানে মানুষ নিজেকে নতুন করে গড়ে তোলে।
হয়তো প্রথম ধাপে হেরে গিয়েছিলাম, কিন্তু আজ রাজশাহী কলেজের এই পথচলায় আমি আবার হাঁটতে শিখেছি—নিজেকে বিশ্বাস করতে শিখেছি।
📝মাসুদ রানা তুহিন
বসুন্ধরা, ভাটারা জামে মসজিদ এলাকা, ঢাকা থেকে।