ESDI FILMS

ESDI FILMS Esdi films is a production house, Main objects to Produce film,Drama,Advertising

With FilmFusion Studios – I just got recognised as one of their top fans! 🎉
18/01/2025

With FilmFusion Studios – I just got recognised as one of their top fans! 🎉

একসাথে পথ চলার ২৯ টি বছর পার করছেন তারা।যে থাকার আজীবন থেকেই যাবে। ভালোবাসা সুন্দর! ❤️
13/01/2025

একসাথে পথ চলার ২৯ টি বছর পার করছেন তারা।
যে থাকার আজীবন থেকেই যাবে। ভালোবাসা সুন্দর! ❤️

😁অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে আজয়াকে দেখার....১লা জানুয়ারী ২০২৫ বিকাল-৩.০০ টায়।শুভমুক্তি-"অজয়া"🧐📢"ESDI FILMS "YOUTUBE চ্যান...
31/12/2024

😁অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে আজয়াকে দেখার....

১লা জানুয়ারী ২০২৫ বিকাল-৩.০০ টায়।

শুভমুক্তি-"অজয়া"🧐

📢"ESDI FILMS "YOUTUBE চ্যানেলে-
✍অজয়া: কে এই রহস্যময়ী? | নতুন বাংলা থ্রিলার
👉অজয়া: যেখানে লুকিয়ে আছে একজন নারীর স্বপ্নের পথাচলার রহস্য
👉অজয়া: পারবে তো নিজের স্বপ্নকে বাঁচাতে?
Must Watch Thriller
👉অজয়া: একটি রোমাঞ্চকর রাঁতের গল্প | বাংলা শর্ট ফিল্ম

#অজয়া #বাংলা_থ্রিলার #স্বল্পদৈর্ঘ্য_চলচ্চিত্র #রহস্য

URGENTLY NEEDFILM CREW WANTED FOR ESDI FILMS1 Assistant Director2 Camera Assistant3 Light Assistant4 Production Assistan...
14/12/2024

URGENTLY NEED

FILM CREW WANTED FOR ESDI FILMS

1 Assistant Director

2 Camera Assistant

3 Light Assistant

4 Production Assistant

B: The first 6 months of apprenticeship

Will work as and commute only

Expenses and food will be received.

Adequate remuneration will be provided on completion of the apprenticeship period

Send [email protected]

❤❤❤❤❤❤ ❤শুভ জন্মদিন❤❤❤❤❤❤❤❤বাঘা যতীন: বাঙালির অবিস্মরণীয় বিপ্লবীবাঘা যতীন নামটি বাঙালির কাছে সাহস, বীরত্ব এবং দেশপ্রেমে...
07/12/2024

❤❤❤❤❤❤ ❤শুভ জন্মদিন❤❤❤❤❤❤❤❤
বাঘা যতীন: বাঙালির অবিস্মরণীয় বিপ্লবী
বাঘা যতীন নামটি বাঙালির কাছে সাহস, বীরত্ব এবং দেশপ্রেমের প্রতীক। তাঁর জীবন ও কর্মকাণ্ড ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা। যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় নামে জন্মগ্রহণ করা এই বিপ্লবী বাঙালি যুবক ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে এক অনন্য ভূমিকা রাখেন।
জীবনের প্রারম্ভিক অধ্যায়
বাঘা যতীন জন্মগ্রহণ করেন ১৮৭৯ সালের ৭ ডিসেম্বর। তিনি ছিলেন একজন শক্তিশালী, সাহসী এবং দেশপ্রেমিক যুবক। অল্প বয়স থেকেই তাঁর মনে দেশপ্রেমের জ্বালা জ্বলে উঠেছিল। বঙ্গভঙ্গের মতো ঘটনা তাঁকে আরও বেশি করে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করে।
বিপ্লবী জীবন
যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (৭ ডিসেম্বর ১৮৭৯ – ১০ সেপ্টেম্বর ১৯১৫) ছিলেন একজন বাঙালি ব্রিটিশ-বিরোধী বিপ্লবী নেতা। তিনি বাঘা যতীন নামেই সকলের কাছে সমধিক পরিচিত।
ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। বাঘা যতীন ছিলেন বাংলার প্রধান বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর দলের প্রধান নেতা। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্বে কলকাতায় জার্মান যুবরাজের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে তিনি জার্মানি থেকে অস্ত্র ও রসদের প্রতিশ্রুতি অর্জন করেছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জার্মান প্লট তারই মস্তিষ্কপ্রসূত।[১]
সশস্ত্র সংগ্রামের এক পর্যায়ে সম্মুখ যুদ্ধে উড়িষ্যার বালেশ্বরে তিনি গুরুতর আহত হন এবং বালাসোর হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করার পর তিনি সাঁটলিপি ও টাইপ শেখেন এবং পরবর্তী সময়ে বেঙ্গল গভর্নমেন্টের স্ট্যানোগ্রাফার হিসেবে নিযুক্ত হন। যতীন ছিলেন শক্ত-সমর্থ ও নির্ভীক চিত্তধারী এক যুবক। অচিরেই তিনি একজন আন্তরিক, সৎ, অনুগত এবং পরিশ্রমী কর্মচারী হিসেবে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেন। একই সঙ্গে তার মধ্যে দৃঢ় আত্মমর্যাদা ও জাতীয়তাবোধ জন্মেছিল।
প্রাথমিক জীবন
বাঘা যতীনের জন্ম হয় কুষ্টিয়া জেলার কয়া গ্রামে। তার পিতার নাম উমেশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় এবং মাতার নাম শরৎশশী। ঝিনাইদহ জেলায় পৈতৃক বাড়িতে তার ছেলেবেলা কাটে। ৫ বছর বয়সে তার পিতার মৃত্যু হয়। মা এবং বড় বোন বিনোদবালার সাথে তিনি মাতামহের বাড়ি কয়াগ্রামে চলে যান। যতীন শৈশব থেকেই শারীরিক শক্তির জন্য বিখ্যাত ছিলেন। শুধুমাত্র একটি ছোরা নিয়ে তিনি একাই একটি বাঘকে হত্যা করতে সক্ষম হন বলে তার নাম রটে যায় বাঘা যতীন।
যতীনের মা বিধবা শরৎশশী দেবী ছিলেন স্বভাবকবি। সমসাময়িক বাঙালি চিন্তাবিদদের রচনাবলীর পাঠিকারূপে তিনি অবগত ছিলেন দেশের মঙ্গলের পথ এবং সেইমতো তিনি লালন করতেন তার সন্তান দু'টিকে। পরোপকার, সত্যনিষ্ঠা, নির্ভীক চিন্তায় ও কর্মে অভ্যস্ত যতীন পড়াশোনা ও খেলাধুলার পাশাপাশি কৌতুকপ্রিয়তার জন্যও সমাদৃত ছিলেন। পৌরাণিক নাটক মঞ্চস্থ ও অভিনয় করতে তিনি ভালোবাসতেন এবং বেছে নিতেন হনুমান, রাজা হরিশচন্দ্র, ধ্রুব, প্রহ্লাদ প্রভৃতি চরিত্র।[২]
যতীনের বড় মামা বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায় (বিপ্লবী হরিপদ চট্টোপাধ্যায়ের পিতা) ছিলেন কৃষ্ণনগরের আইনজীবী এবং আইনের অধ্যাপক। তার পরামর্শ নিতেন স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর - পার্শ্ববর্তী শিলাইদহে তার জমিদারী সংক্রান্ত নানা প্রয়োজনে। কৈশোর থেকে রবীন্দ্রনাথ যে অনুরাগ নিয়ে আন্দোলন চালিয়েছিলেন ব্রিটিশ শাসনে ভারতীয়দের প্রতি অবজ্ঞা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে, তারই প্রেরণায় শরৎশশী উদ্বুদ্ধ করেছিলেন যতীনকে। রবীন্দ্রনাথের ভাইপো সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন ইতিহাস-ভক্ত। যতীনের চরিত্রে মুগ্ধ হয়ে তিনি হাজির হতেন যতীনের ফুটবল ক্লাবে; সেখানে দামাল ছেলেদের সামনে সুরেন তুলে ধরতেন দেশপ্রেমের আদর্শ। গীতাপাঠের মধ্যে তাদের বুঝিয়ে দিতেন নিষ্কাম কর্মের উপযোগিতা। যতীন কৃষ্ণনগর শহরে কৃষ্ণনগর অ্যাংলো ভার্নাকুলার হাই স্কুল (এ ভি) বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।এই বিদ্যালয়ে তার স্মৃতি এখনো আছে।
১৮৯৫ সালে এন্ট্রান্স পাস করে তিনি কলকাতা সেন্ট্রাল কলেজে (বর্তমানের ক্ষুদিরাম বোস সেন্ট্রাল কলেজ) ভর্তি হন। কলেজের পাশেই স্বামী বিবেকানন্দ বাস করতেন। বিবেকানন্দের সংস্পর্শে এসে যতীন দেশের স্বাধীনতার জন্য আধ্যাত্মিক বিকাশের কথা ভাবতে শুরু করেন। এসময়ে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। বিবেকানন্দের আহবানে যতীন তার বন্ধুদের দল নিয়ে এই রোগে আক্রান্তদের সেবায় নিয়োজিত হন।
স্বামী বিবেকানন্দের পরামর্শে যতীন শরীরচর্চার জন্য অম্বু গুহের কুস্তির আখড়ায় যোগ দেন। সেখানে তার সাথে সেসময়ের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের দেখা হয়। এদের একজন শচীন বন্দোপাধ্যায়ের সাথে পরিচয়ের সূত্রে তিনি শচীনের পিতা যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণের সাক্ষাৎ পান। যোগেন্দ্রনাথ তখনকার ইউরোপের মাৎসিনি, গারিবল্ডি প্রমুখ ইতালীয় বিপ্লবীদের জীবনের আলেখ্য রচনা করেছিলেন।
কলেজ পাঠের সঙ্গে সঙ্গে যতীন অ্যাটকিনসন সাহেবের স্টেনো টাইপিংয়ের ক্লাসে ভর্তি হন। সদ্য প্রচলিত টাইপরাইটার ব্যবহার করার এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মোটা মাইনের চাকুরি পাওয়া সম্ভব ছিলো। ঔপনিবেশিক মনোবৃত্তিতে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠে ইস্তফা দিয়ে যতীন ১৮৯৯ সালে মজঃফরপুর চলে যান। সেখানে তিনি ব্যারিস্টার কেনেডীর সেক্রেটারি হিসাবে কাজে যোগ দেন। ভারতের জন্য মজুদ অর্থ দিয়ে ইংরেজ সরকার সৈন্যবাহিনী মোতায়েন করছে সাম্রাজ্য রক্ষার স্বার্থে, তার বিরুদ্ধে কেনেডি কংগ্রেসের মঞ্চ থেকে বক্তৃতা মারফৎ এবং তার সম্পাদিত ত্রিহুত কুরিয়ার পত্রিকায় প্রচারণা চালাতেন।[৩] কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তিভোগী এই ভারত প্রেমিক ব্যারিস্টার কেনেডি ছিলেন মোগল সাম্রাজ্যের উপরে মৌলিক গবেষণার জন্য বিখ্যাত। দুর্ভাগ্যক্রমে কেনেডি'র স্ত্রী ও কন্যার জীবননাশ ঘটে ক্ষুদিরাম বসু ও প্রফুল্ল চাকীর বোমায়। কেনেডির উৎসাহে মোজাফরপুরের তরুণদের জন্য যতীন ফুটবল ও অ্যাথলেটিক ক্লাব গড়ে তুলেন।
জননী শরৎশশীর অসুস্থতার সংবাদে যতীন কয়াগ্রামে এসে দেখেন এক কলেরা রোগীর সেবা করতে করতে তার সংক্রমণে যতীনের মা মৃত্যুবরণ করেছেন। দিদি বিনোদবালার কাছে যতীন জানতে পারেন, তার প্রয়াত মা কুমারখালীর উমাপদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ে ইন্দুবালার সাথে যতীনের বিয়ের সম্বন্ধ করেছিলেন। ১৯০০ সালে যতীন ইন্দুবালাকে বিয়ে করেন। তাদের ৪টি সন্তান হয় - অতীন্দ্র (১৯০৩-০৬), আশালতা (১৯০৭-৭৬), তেজেন্দ্র (১৯০৯-৮৯) এবং বীরেন্দ্র (১৯১৩-৯১)।
যতীন মজঃফরপুরে আর ফিরবেন না - এই খবর পেয়ে কেনেডি একটি সুপারিশ দেন তার বন্ধু হেনরি হুইলারের নামে, যিনি তখন বাংলা সরকারের অর্থসচিব। যতীনকে হুইলার নিজের স্টেনোগ্রাফার হিসাবে নিয়োগ করেন। যতীনের পেশাগত নৈপুণ্যের সঙ্গে তার আত্মসম্মানবোধ ও দেশপ্রেম মুগ্ধ করে হুইলারকে। ভারতীয় প্রজাদের উপরে ইংরেজ অফিসারদের অবর্ণনীয় অত্যাচারের বিরুদ্ধে তখন বিপিন চন্দ্র পাল নিউ ইন্ডিয়া (New India) পত্রিকায় প্রতিবাদ ছাপছেন; তারই প্রতিধ্বনি তুলে বংগদর্শনের পৃষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ লিখছেন মুষ্টিযোগের উপযোগিতা বিষয়ে - ব্যক্তিগতভাবে আক্রান্ত ইংরেজের পক্ষ নিয়ে সরকার যেভাবে তার বদলা নেয়, সে বিষয়ে হুঁশিয়ার করে রবীন্দ্রনাথ ইঙ্গিত দিচ্ছেন ভারতীয়দের সংঘবদ্ধ হতে। এর পিছনে প্রচ্ছন্ন আছে বিপ্লবীদের গুপ্ত সমিতি গঠনের পরিকল্পনা।
সশস্ত্র আন্দোলনে
১৯০৩ সালে যোগেন্দ্রনাথ বিদ্যাভূষণের বাড়িতে শ্রী অরবিন্দের সাথে পরিচিত হয়ে যতীন বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে জড়িত হন। সরকারী নথিপত্রে যতীন পরিচিত হন শ্রী অরবিন্দের দক্ষিণহস্ত হিসাবে।[৪] অরবিন্দ ঘোষের সংস্পর্শে এসে যতীন শরীর গঠন আখড়ায় গাছে চড়া, সাঁতার কাটা ও বন্দুক ছোঁড়ার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। যুগান্তর দলে কাজ করার সময় নরেনের (এম.এন রায়) সঙ্গে তার পরিচয় হয় এবং একে-অপরের আস্থাভাজন হন।
দেশপ্রেমিক, প্রতিবাদী ও কৌশলী দৃষ্টিভঙ্গী
১৯০০ সাল থেকে মূল অনুশীলন সমিতির প্রতিষ্ঠাতাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জেলায় জেলায় যতীন পত্তন করেন এই গুপ্তসমিতির শাখা। পথে-ঘাটে ভারতীয় নাগরিকদের লাঞ্ছনার প্রতিবাদে সদা প্রস্তুত যতীনের এই দেশাত্মবোধ গুণগ্রাহী হুইলারের মনে কৌতুক জাগাত।
১৯০৫ সালে যুবরাজের ভারত সফরকালে কলকাতায় বিরাট শোভাযাত্রা উপলক্ষে যতীন স্থির করলেন এদেশে ইংরেজদের আচরণ প্রত্যক্ষ করাবেন যুবরাজকে। একটি ঘোড়াগাড়ির ছাদে একদল সৈনিক বসে মজা লুটছে, তাদের বুটসমেত পা দুলছে গাড়ীর যাত্রী, কয়েকজন দেশী মহিলার নাকের সামনে। যুবরাজ নিকটবর্তী হওয়ামাত্র যতীন অনুরোধ করলেন গোরাদের নেমে আসতে। অশালীন রসিকতায় মুখর গোরাদের হতভম্ব করে একছুটে যতীন গাড়ীর ছাদে ওঠা মাত্র একজোটে গোরারা তাঁকে আক্রমণ করে। ইতোমধ্যে নিছক বাঙ্গালী থাপ্পড় মারতে মারতে যতীন তাদের ধরাশায়ী করছেন দেখে যুবরাজ তার গাড়ী থামাতে বলেন।[৫]
যতীন জানতেন, নিয়মিত লণ্ডনে ভারত-সচিব মর্লি'র দফতরে অভিযোগ পুঞ্জীভূত হয় এইসব দুষ্কৃতকারী ইংরেজদের বিরুদ্ধে। যুবরাজ দেশে ফিরে গিয়ে ১৯০৬ সালে ১০ মে দীর্ঘ আলোচনা করেন মর্লি'র সংগে এর প্রতিকার চেয়ে।[৬] তিনি একজন ভালো মানুষ ছিলেন।
বারীণের সাথে মতবিরোধ
অতীন্দ্রের অকাল মৃত্যুর শোকে মুহ্যমান যতীন দিদি বিনোদবালা আর স্ত্রী ইন্দুবালাকে নিয়ে তীর্থভ্রমণে বের হন। হরিদ্বারে তারা স্বামী ভোলানন্দ গিরি'র কাছে দীক্ষা নিয়ে অন্তরের শান্তি ফিরে পেলেন। গিরিজি জানতে পারেন যতীনের দেশসেবার কথা এবং পূর্ণ সম্মতি জানান এই পন্থায় অগ্রসর হবার সপক্ষে।
১৯০৬ সালের ডিসেম্বর মাসে স্বপরিবারে যতীন দেওঘরে বাস করতে থাকেন, বারীণ ঘোষের সঙ্গে একটি বোমা কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। এই কারখানার অভিজ্ঞতা নিয়ে অবিলম্বে কলকাতার মানিকতলায় বারীণ আরো বড় করে কারখানা খোলেন। যতীন চাইতেন প্রথমে একদল একক শহীদ এসে দেশের লোকের চেতনায় নাড়া দেবে; দ্বিতীয় পদক্ষেপে আসবে ছোট ছোট দল বেঁধে ইতস্তত খণ্ডযুদ্ধ; তৃতীয় পর্বে দেশব্যাপী এক সশস্ত্র অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণআন্দোলন। বারীণ চাইতেন আচমকা সন্ত্রাসের মধ্যে দিয়ে হাউইয়ের মতো জ্বলে উঠে ফুরিয়ে যেতে। সংগঠনের দিক থেকে বারীণ তার একচ্ছত্র নেতৃত্বে বিশ্বাস করতেন। যতীন চাইতেন জেলায় জেলায় আঞ্চলিক নেতাদের অধীনে গুপ্তসমিতি শক্তিশালী হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সহযোগিতা করবে। আপাতদৃষ্টে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গড়ে বন্যাত্রাণে, কুন্তিমেলায়, অধোদয়যোগে, শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মোৎসবে মিলিত হয়ে দলের ঐক্য ও শক্তি পরীক্ষার সুযোগ পেতেন তারা।[৭]
সামরিক অফিসারের সাথে মারামারি
১৯০৭ সালে বিশেষ কর্ম-দায়িত্ব নিয়ে হুইলারের সচিবদের সংগে যতীন সপরিবারে দার্জিলিংয়ে স্থানান্তরিত হলেন। সমস্ত উত্তর বাংলার মতো এখানেও যতীন "অনুশীলন"-এর সক্রিয় শাখা স্থাপন করেছিলেন। ১৯০৮ সালের এপ্রিল মাসে ক্যাপ্টেন মার্ফি ও লেফটেন্যান্ট সমারভিল প্রমুখ চারজন সামরিক অফিসারের সঙ্গে যতীনের মারপিট হয় শিলিগুড়ি স্টেশনে। চারজনের চোয়াল ভেঙ্গে ধরাশায়ী করে দেবার অপরাধে যতীনের নামে মামলা রুজ্জু হলে সারাদেশে বিপুল হর্ষ জাগে-কাগজে কাগজে এই নিয়ে লেখালেখির বহর দেখে সরকার চাপ দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করে। ঠাট বজায় রাখতে ম্যাজিস্ট্রেট যতীনকে শাসিয়ে দেন, “এমনটি আর যেন না ঘটে!” দর্পভরে যতীন জবাব দেন “নিজের সম্মান বা দেশবাসীর সম্মান বাঁচাতে যদি প্রয়োজন হয়, এমনটি যে আবার করব না, এ শপথ আমি করতে অপারগ।”[৮]
হুইলার একদিন ঠাট্টা করে যতীনকে জিজ্ঞাসা করেন, “আচ্ছা, একা হাতে ক'টা লোককে আপনি শায়েস্তা করতে পারেন?” হেসে যতীন বলেন, “ভাল মানুষ হয় যদি, একটাও নয়; দুর্বৃত্ত হলে যতগুলি খুশি সামলাতে পারব।”
দৃঢ়চেতা মনোভাবী ও সমাজ সংস্কারক
১৯০৬ সাল থেকে স্যার ডেনিয়েল হ্যামিলটনের সহযোগিতায় যতীন একাধিক মেধাবী ছাত্রকে বৃত্তি দিয়ে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। শুরু হয় তারকনাথ দাসকে দিয়ে; পরপর তার পিছু পিছু রওনা হন গুরনদিৎ কুমার, শ্রীশ সেন, অধর লস্কর, সত্যেন সেন, জিতেন লাহিড়ি, শৈলেন ঘোষ। ...... এদের কাছে নির্দেশ ছিল, উচ্চশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক লড়াইয়ের কায়দা ও বিস্ফোরক প্রস্তুতের তালিম নিয়ে আসতে এবং বিদেশের সর্বত্র ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি করতে। ১৯০৮ সালে বারীণ ঘোষের প্রথম প্রচেষ্টা মারাত্মকভাবে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলে সবাই যখন হাল ছেড়ে দিয়েছে, তখন গোপনে শ্রী অরবিন্দের ঘনিষ্ঠ দুই প্রধান বিপ্লবী কানে কানে রটিয়ে দিলেন: "ওরে, হতাশ হস্‌নে! যতীন মুখার্জি হাল ধরে আছে!" এই দু’জনের নাম অন্নদা কবিরাজ ও মুন্সেফ অবিনাশ চক্রবর্তী। বাস্তবিক সভা-সমিতি যখন বেআইনি, সারাদেশ যখন ধর-পাকড়ের আতঙ্কে বিহ্বল, যতীন তখন স্যার ডেনিয়েলের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে গোসাবা অঞ্চলে পত্তন করলেন Young Bengal Zamindari Cooperative : পলাতক কর্মীদের গ্রাসাচ্ছাদনের সংগে তিনি সোদপুরের শশীভূষণ রায় চৌধুরী'র দৃষ্টান্ত অনুযায়ী শুরু করলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য নৈশ বিদ্যালয়, ছোট ছোট কুটির শিল্পের প্রতিষ্ঠান, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা। গ্রামাঞ্চলের সংগে বিপ্লবীদের এই প্রথম প্রত্যক্ষ পরিচয় অত্যন্ত সুফল আসলো।[৯]
বিপ্লবীদেরকে অস্ত্র শিক্ষা ও ইংরেজ সরকার
জেলার সুবিদিত অস্ত্র-ব্যবসায়ী নূর খাঁ'র কাছে আগ্নেয়াস্ত্র কিনে যতীন নিয়মিত বাদা অঞ্চলে গিয়ে নির্বাচিত কর্মীদের তালিম দিতেন। আলিপুর বোমা মামলার অভিযুক্ত বিপ্লবীদের ব্যয়ভার বহন, অস্ত্র সংগ্রহ ইত্যাদির জন্য অর্থের প্রয়োজন মেটানো ছাড়াও যতীন এইবার গণ-চেতনায় প্রত্যয় জাগানোর জন্য দুর্ধর্ষ কিছু স্বদেশী ডাকাতির আয়োজন করলেন। ১৯০৮ সালের ২ জুন থেকে ধাপে ধাপে এই অভিযান হয়ে উঠল ইংরেজ সরকারের বিভীষিকা। এই পর্যায়ের তুংগস্থান এসে পড়ল ১৯০৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি প্রসিকিউটর আশু বিশ্বাসের হত্যা এবং ১৯১০ সালের ২৪ জানুয়ারি ডেপুটি কমিশনার শামসুল আলমের হত্যাঃ এঁরা দু'জনে সোনায় সোহাগার মতো যথেচ্ছভাবে আলিপুর বোমার আসামীদের ঠেলে দিচ্ছিলেন মর্মান্তিক পরিণামের দিকে; মূল অভিসন্ধি ছিল শ্রীঅরবিন্দকে চরম দণ্ড দেওয়া। ২৫ জানুয়ারি প্রকাশ্য সভায় বড়লাট মিন্টো ঘোষণা করলেন: "অভিনব এক মানসিকতা আজ দেখা দিয়েছে ........ যা চায় ব্রিটিশ শাসন উচ্ছেদ করতে।"[১০]
একটিমাত্র অপরাধী
২৭ জানুয়ারি, ১৯১০ তারিখে যতীনকে গ্রেপ্তার করা হল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অভিযোগে। শুরু হল হাওড়া ষড়যন্ত্র মামলা। দশম জাঠ বাহিনীকেই বিপ্লবীদের সংগে সহযোগিতার অপরাধে ভেঙ্গে দেওয়ার আগে প্রধান অফিসারদের ফাঁসিতে ঝোলানো হল। এক বছর ধরে এই মামলা চলতে দেখে নতুন বড়লাট হার্ডিঞ্জ অসহিষ্ণু হয়ে দাবি করলেন "একটিমাত্র অপরাধী"কে দণ্ড দিয়ে বাকি আসামীদেরকে রেহাই দেবার। "একটিমাত্র অপরাধী" হিসেবে যতীন কারাগারে বসেই খবর পেলেন যে অদূর ভবিষ্যতে জার্মানির সঙ্গে ইংল্যান্ডের লড়াই বাঁধবে।
"দুই বাংলাতেই আজ শাসনব্যবস্থা বিফল", মরিয়া হার্ডিঞ্জ অনুযোগ করে ক্ষান্ত নন; কারামুক্ত যতীনকে গৃহবন্দী রেখে সরকার তৎপর হল শাসন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে। পুলিশী রিপোর্টে নিক্সন সাহেব লিখেছেন যে, মহাযুদ্ধ বেঁধে গেলে স্বাধীনতা-লাভের পথ প্রশস্ত হবে, এটা সম্যক উপলব্ধী করেন যতীন মুখার্জি। জার্মান যুবরাজ কলকাতায় সফর করতে এলে যতীন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং যুবরাজের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি পান-সশস্ত্র অভ্যুত্থানের জন্য জার্মানি থেকে অর্থ ও অস্ত্র সাহায্য পাওয়া যাবে।[১১] সমস্ত সন্ত্রাসমূলক কাজ স্থগিত রেখে যতীন পরামর্শ দিলেন জেলায় জেলায়, কেন্দ্রে কেন্দ্রে শক্তি সংহরণে নিবিষ্ট হতে। আকস্মিক এই সন্ত্রাস-বিরতি দিয়ে যতীন প্রমাণ করলেন যে, সুনিয়ন্ত্রিত পথেই তিনি হিংসাত্মক কর্মে নেমেছিলেন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার প্রয়োজনে, যেটা টোরিটোরার সময়ে গান্ধীজির হাত ফসকে শোচনীয় আকার নেয়।
পুলিশের চোখে ধুলো
কলকাতার পুরো দায়িত্ব অতুলকৃষ্ণ ঘোষের হাতে অর্পণ করে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে যতীন উপস্থিত হলেন তার পৈতৃক ভিটা ঝিনাইদহে। সেখানে ঠিকাদারের ব্যবসা শুরু করলেন তিনি যশোর-ঝিনাইদহ রেলপথ নির্মাণ উপলক্ষে। ব্যবসার সুবাদে তিনি সাইকেলে অথবা ঘোড়ার পিঠে চড়ে জেলায় জেলায় অবিশ্রাম ঘুরে গুপ্তসমিতির শাখাগুলোকে সন্নিহিত করে তুললেন।
১৯১৩ সালে বাংলা এবং বাংলার বাইরের বিভিন্ন শাখার কর্মী ও নেতারা মিলিত হলেন বর্ধমানে বন্যাত্রাণ উপলক্ষে। উত্তর ভারত থেকে রাসবিহারী বসু এসে যতীনের সংগে আলোচনা করে নূতন প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হলেনঃ অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মাধ্যমে যতীনের সংগে একাধিক বৈঠকে রাসবিহারী সিদ্ধান্ত নিলেন ফোর্ট উইলিয়ামের সৈন্য-বহরের পরিচালকদের সহযোগিতায় কলকাতা থেকে পেশোয়ার অবধি বিদ্রোহের আগুন জ্বলবে ১৮৫৭ সালের দৃষ্টান্তকে সামনে রেখে।[১২]
ভারত-জার্মান ষড়যন্ত্র
১৯১৪ সালের নভেম্বর মাসে সানফ্রান্সিসকো থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন 'গদর'-নেতা সত্যেন সেন; সংগে এলেন বিষ্ণুগণেশ পিংলে, কর্তারসিং সরাংগা ও বিশাল একদল 'গদর'-কর্মী। সত্যেন জানালেন যে, বার্লিনে বীরেন চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত বিপ্লবীরা খোদ কাইজারের সঙ্গে চুক্তি সই করেছেন ভারতে অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থ পৌঁছে দেবে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পাঠানো কয়েকটি জাহাজ; এর দায়িত্ব নিয়েছেন ওয়াশিংটনে জার্মান রাষ্ট্রদূত ব্যার্নস্টর্ফ ও তার মিলিটারী আতাশে ফন্‌পাপেন। কাইজারের সনদ নিয়ে একটি বিপ্লবী মিশন রওনা হচ্ছে কাবুল অভিমুখে; পথে তারা জার্মানির হাতে বন্দী ব্রিটিশ সৈন্যবহরের ভারতীয় জওয়ানদের নিয়ে গড়ে তোলা বাহিনী নিয়ে কাবুল থেকে কুচকাওয়াজ করে হাজির হবে দিল্লীতে, যোগ দেবে সশস্ত্র অভ্যুত্থানে। বার্মা সীমান্তেও সৈন্যবাহিনী প্রস্তুত থাকছে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দখল করে বিদ্রোহ ঘোষণা করবে বলে। দূরপ্রাচ্যে বিভিন্ন জার্মান দূতাবাস ও কনস্যুলেট সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।
যতীনের চিঠি নিয়ে পিংলে ও কর্তারসিং গেলেন রাসবিহারী'র সঙ্গে দেখা করতে। টেগার্টের রিপোর্টে দেখা যায়, এই সময়ে সত্যেন সেনকে নিয়ে যতীন কলকাতার বিভিন্ন রেজিমেন্টের অফিসারদের সংগে আলোচনায় ব্যস্ত।[১৩] ভারতের এই যজ্ঞ-অনলে ইন্ধন দেবার জন্য সাজসাজ পড়ে গেল দূরপ্রাচ্যে আমেরিকায়, ইউরোপে, মধ্যপ্রাচ্যে। ভূপতি মজুমদার স্পষ্ট লিখে গিয়েছেন যে, আন্তর্জাতিক এই সহযোগিতার উদ্ভাবন করেন স্বয়ং যতীন মুখার্জি। ইতিহাসে একে অভিহিত করা হয় "ভারত-জার্মান ষড়যন্ত্র" নামে।
সমাগত 'গদর' কর্মীরা কাজে নামতে চান, জার্মান অস্ত্র আসার জন্য তাঁদের তর সইছে না। যতীনের সঙ্গে পরামর্শ করে রাসবিহারী দিন ধার্য্য করলেন ২১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের জন্য। মিঞাসির (মহীসুর), লাহোর, ফিরোজপুর, রাওয়ালপিণ্ডি, জব্বলপুর, বেনারস-সর্বত্র তেরংগা ঝাণ্ডা উড়িয়ে দেওয়া হবেঃ নীল হবে মুসলমান কর্মীদের প্রতীক; হলদে শিখ; লাল হিন্দু। কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম দখল করে সমস্ত রেলপথ উড়িয়ে দেওয়া হবে, যাতে করে সরকার পক্ষ প্রত্যুত্তরের জন্য সৈন্যবাহিনী না আনাতে পারে। ইতোমধ্যে ২৬ আগস্ট ১৯১৪ সালে কলকাতার রডা কোম্পানী থেকে বিপ্লবীরা যথেষ্ট শক্তিশালী মাউজার পিস্তল সংগ্রহ করেছেন, প্রয়োজনমতো যা দূরপাল্লার রাইফেলের মতো ব্যবহার করা চলে। রাসবিহারী'র অনুরোধে অর্থ সংগ্রহ করতে যতীন নতুন একপ্রস্থ হিংসাত্মক অভিযানের শরণ নিলেন- মোটরচালিত ট্যাক্সির সাহায্যে অভিনব এই ডাকাতির পদ্ধতি অবিলম্বে ফ্রান্সে দেখা যাবে, প্রখ্যাত নৈরাজ্যবাদী সর্দার "বোনো"র পরিচালনায়। পরিশীলিত, শৃংখলাবদ্ধ দুঃসাহসিক এই কীর্তির সামনে মুগ্ধ আতঙ্কে ইংরেজ সরকার হতবুদ্ধি হয়ে রইল।[১৪] আর পুলকে মুগ্ধ দেশবাসী প্রত্যয় ফিরে পেল বিপ্লবীদের কর্মক্ষমতায়। ১২/২/১৯১৫, ২২/২/১৯১৫ - দুই দু'টো চোখ ধাঁধানো ডাকাতির সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল সারাদেশে। ২৪/২/১৯১৫ যতীন এক গুপ্ত বৈঠকে কর্মসূচী নির্ধারণ করছেন, এমন সময়ে এক সরকারী গোয়েন্দা সেখানে উপস্থিত দেখে নেতার ইংগিতক্রমে চিত্তপ্রিয় তাকে গুলি করেন। গুপ্তচরটি তখনো মরেনি। মরার আগে সে যতীনকে তার হত্যাকারী বলে শনাক্ত করে।
থরহরিকম্পা পুলিশ রিপোর্টে অসহায় টেলিগ্রাম দেখা যায় "চড়া ইনাম ঘোষণা করেও যতীনের হদিশ মিলছে না। এখনো তিনি ছদ্মবেশে কলকাতায় বহাল তবিয়তে যাতায়াত করছেন, কিন্তু তাঁর মতো উগ্র চরিত্রের নাগাল পাবার যোগ্য চর পাওয়া দুর্লভ, বিশেষত সর্বদাই তিনি সশস্ত্র থাকেন"। যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায় তার আত্মজীবনীতে লিখেছেনঃ "কলকাতায় Flying Squad, Armoured Car-এর সশস্ত্র পাহাড়ার ব্যবস্থা হল। বড় রাস্তাগুলোতে ড্রপ-গেট করা হল - রেললাইন বন্ধ করার যেরূপ লোহার পাল্লা খাড়া রাখা হয়, ঠিক তেমনি। থানায় সাইরেন বসানো হল। কলকাতা থেকে উত্তর ও পূর্বদিকে খাল পার হবার যত পোল আছে - চিৎপুর, টালা, বেলগেছে, মানিকতলা, নারকেলডাংগা ও হাওড়ার পোলে সশস্ত্র প্রহরী দেওয়া হল। যাকে-তাকে এবং যে-কোনও গাড়ীকে ধরে তল্লাশ করা হতে লাগল। **তথ্যসূত্র অস্পষ্ট, .......... ২য় সংস্করণ, ১৯৮২, পৃ. ৩২৮
কৃপাল সিং: বিশ্বাসঘাতক 'গদর' কর্মী
কোন মহৎ সাধনার পথে যতীন নেমেছেন, তা স্মরণে রেখে পুলিশের দেশী কর্মচারীরা পর্যন্ত মনেপ্রাণে যতীনের অনুরাগী হয়ে উঠলেন। ব্যতিক্রম ছিলেন পুলিশ ইন্সপেক্টর সুরেশ মুখার্জি। তিনি বিপ্লবীদের জব্দ করতে বদ্ধপরিকর। বারেবারে সুরেশের ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে একদিন যতীন বললেন, "যতক্ষণ না সুরেশকে সরানো হচ্ছে, ততক্ষণ আমি জলস্পর্শ করব না"। ২৮/২/১৯১৫ তারিখে ভোরবেলা সুরেশ সদলবলে টহলে বেরিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বড়লাট যাবেন-তার নিরাপত্তার ব্যবস্থা পাকা করতে। নিপুণহাতে সুরেশকে নিধন করে যতীনের সহকারীরা গা ঢাকা দিলেন। এদেঁর কর্মতৎপরতায় এমনকি টেগার্টও মুগ্ধ হয়ে পরবর্তীকালে স্বীকৃতি জানিয়েছেন যে, বাঙ্গালী এই বিপ্লবীদের চরিত্রের সমতুল জগতে আর কোথাও পাওয়া বিরল। এদেঁর আত্মবিশ্বাস ও দেশের কাজের জন্য সর্বস্বত্যাগের ব্রত টেগার্টকে মনে করিয়ে দিয়েছে গাঁন্ধীর কথা।[১৫]
জটিল এই পরিস্থিতিতে যতীনের আর কলকাতা থাকা সমীচীন নয়, বিবেচনা করে তার শিষ্য ও সহকারীরা খুঁজে পেলেন বালেশ্বর (বালাসোর)-এর আশ্রয়। ওখানকার উপকূলেই জার্মান অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রধান জাহাজটি আসার কথা। তার প্রতীক্ষায় যতীন ওখানে চার-পাঁচজন কর্মীকে নিয়ে আস্তানা গাড়লেন। স্থানীয় অভিভাবকরূপে রইলেন মনীন্দ্র চক্রবর্তী। দীর্ঘ ছ'মাস তিনি বুকের পাঁজরের মতো আগলে থেকেছেন মহানায়কের এই অজ্ঞাতবাসের আস্তানা। যতীনকে বালেশ্বরে নিরাপদ দেখে নরেন ভট্টাচার্য (এম.এন. রায়) রওনা হলেন বাটাভিয়া অভিমুখে, বীরেন চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশমাফিক; সেখানে হেলফেরিষ্‌ ভ্রাতাদের কাছে বিশদ অবগত হলেন জার্মান অস্ত্র নিয়ে জাহাজ আসার পাকা খবর; ফিরে এসে নাটকীয়ভাবে গুরুর চরণে একথলে মোহর ঢেলে দিয়ে প্রণাম করে জানালেন, জার্মান সহযোগিতার দরুন প্রাপ্য অর্থের এটি প্রথম কিস্তি। মনীন্দ্র সবই দেখেছেন। সবই জানতেন। বিশাল ঝুঁকি নিয়ে তবু তিনি এঁদের আশ্রয় দিয়েছেন। মুগ্ধ হয়ে এঁদের সান্নিধ্য উপভোগ করেছেন।[১৬] ইতোমধ্যে রাসবিহারী'র প্রচেষ্টা যেমন উত্তরাঞ্চলে ভেস্তে যায় কৃপাল সিং নামে বিশ্বাসঘাতক 'গদর' কর্মীর জন্য, তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চেকোস্লোভাকিয়া থেকে সমাগত বিপ্লবীরা ইন্দো-জার্মান সহযোগিতার সংবাদ ফাঁস করে দেয় মার্কিন ও ব্রিটিশ সরকারের দপ্তরে-প্রতিদানে নিজেদের সংগ্রামের অনুকূল সহানুভূতি পাবার প্রত্যাশায়। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের উদ্যোগে জার্মান সরকারের সংগে জার্মান বিভিন্ন দূতাবাসের পত্র ও তারবার্তা হস্তগত করে ব্যাপক এই আন্তর্জাতিক সংগঠনের মূল উপড়ে ফেলতে উদ্যত হল সমবেত ব্রিটিশ ও মার্কিন সুরক্ষা বিভাগ।[১৭] পেনাং'এর একটি সংবাদপত্রের কাটিং থেকে যতীন খবর পেলেন যে, অস্ত্রশস্ত্রসমেত জাহাজ ধরা পড়ে গিয়েছে। মারাত্মক এই নিরাশায় তিনি ভেঙ্গে পড়বেন ভয় ছিল সহকারীদের। পরিবর্তে তিনি হেসে উঠলেন, যেন কিছুই তেমন ঘটেনি: "দেশের সুরাহা বাইরে থেকে নয়, তা আসবে অভ্যন্তর থেকে!" রোজ বিকেলে বনভূমির নীরব আশ্রয়ে যতীন গীতার ক্লাস নিতেন। শিষ্য নলিনীকান্ত কর তার স্মৃতিকথায় লিখেছেন, "মনে হত যেন গৌতম মুনির কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে বেদমন্ত্র"। ক্লাসের শেষে অস্তসূর্যের আলোকে একাকী যতীন কিছুক্ষণ ধ্যান করতেন। একদিন মনীন্দ্রও বসে রইলেন। হঠাৎ যতীন অদূরবর্তী মনীন্দ্রের হাত ছুঁয়ে বলে উঠলেন: "ওই দ্যাখ! কৃষ্ণ আমাদের দিকে হাসিমুখে চেয়ে আছেন!" মনীন্দ্র সেই দৃষ্টির অভাবে প্রত্যক্ষ করলেন-যতীনের স্পর্শে এক তীব্র পুলকের স্রোত।
বুড়ি বালামের তীরে খণ্ডযুদ্ধ ও যতীনের আত্মদান
কলকাতা থেকে খবর এল, একের পর এক বিপ্লবীদের কেন্দ্রগুলোতে তল্লাস চালাচ্ছে পুলিশ। বালেশ্বরের সন্ধান পেতে দেরী নেই। দুর্গম ডুভিগর পর্বতশ্রেণী দিয়ে গা ঢাকা দেবার উপযোগিতা নিয়ে কেউ কেউ যখন জল্পনা-কল্পনা করছেন, যতীন দৃঢ়স্বরে জানালেন, "আর পালানো নয়। যুদ্ধ করে আমরা মরব। তাতেই দেশ জাগবে।"[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ৭ সেপ্টেম্বর গভীর রাত্রে যতীন নিজের সাময়িক আস্তানা মহলডিহাতে ফিরে এলেন। সঙ্গে চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী, জ্যোতিষচন্দ্র পাল, মনোরঞ্জন সেনগুপ্ত এবং নীরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত। ৮ সেপ্টেম্বর সারাদিন কেটে গেল গভীর জঙ্গলে। সারারাত পায়ে হেঁটে ৯ সেপ্টেম্বর ভোরবেলা পৌঁছলেন বালেশ্বরের নদী বুড়ি বালামের উপকণ্ঠে। সাঁতার কেটে নদীর ওপারে গিয়ে যুদ্ধের পক্ষে মোটামুটি উপযুক্ত শুকনো এক ডোবার মধ্যে আশ্রয় নিলেন। বিপরীতপক্ষে চার্লস টেগার্ট, কমান্ডার রাদারফোর্ড, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কিলভি অসংখ্য সশস্ত্র পুলিস ও সামরিক বাহিনী নিয়ে হাজির হয়েছিল। পরীখার আড়ালে বাঘা যতীনের নেতৃত্বে মোট পাঁচজন, হাতে মাউজার পিস্তল। যুদ্ধ শুরু হলে পুলিসের গুলিতে ঘটনাস্থলে শহীদ হলেন চিত্তপ্রিয় রায়চৌধুরী।[১৮][১৯] এই যুদ্ধের এমন নজির ইতঃপূর্বে দেখেননি বলে মেনে নিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ইংরেজ কুশীলবেরা। ৯ সেপ্টেম্বর ১৯১৫ সালে সূর্যাস্তের সংগে অবসান হল এই যুদ্ধের। পরদিন বালেশ্বর সরকারি হাসপাতালে যতীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন। তখনো রক্তবমি হচ্ছে। হেসে বললেন:
বিপ্লবী জীবন
যুগান্তর দল: বাঘা যতীন যুগান্তর দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন। এই বিপ্লবী সংগঠন ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
জার্মানির সঙ্গে যোগাযোগ: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বাঘা যতীন জার্মানির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনার চেষ্টা করেন। তাঁর এই প্রচেষ্টা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে একটি নতুন মাত্রা যোগ করে।
বালেশ্বরের সংগ্রাম: ১৯১৫ সালে বালেশ্বরে ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে এক তীব্র সংগ্রামে লিপ্ত হয়ে বাঘা যতীন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর এই মৃত্যু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অমর অধ্যায় হয়ে থাকবে।
বাঘা যতীনের অবদান
সশস্ত্র বিপ্লবের পথ প্রশস্ত করা: বাঘা যতীন ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সশস্ত্র বিপ্লবের পথ প্রশস্ত করেন। তাঁর নেতৃত্বে যুগান্তর দল ব্রিটিশ শাসকদের জন্য এক বড় হুমকি হয়ে ওঠে।
দেশপ্রেমের প্রেরণা: বাঘা যতীন দেশপ্রেমের জ্বালা জ্বালিয়ে তরুণ প্রজন্মকে স্বাধীনতা সংগ্রামে উৎসাহিত করেন।
বীরত্বের প্রতীক: তাঁর বীরত্বপূর্ণ মৃত্যু বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি বাঙালির কাছে সাহস এবং বীরত্বের প্রতীক।
স্মরণীয় বাঘা যতীন
আজও বাঙালির মনে বাঘা যতীনের স্মৃতি অমর হয়ে আছে। তাঁর জীবন ও কর্মকাণ্ড ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। বাঘা যতীনের মতো বীর সন্তানদের বলিদানের ফলেই আজ আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হতে পেরেছি।
আপনি কি বাঘা যতীনের জীবন ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আরও কিছু জানতে চান?
তথ্য সংগ্রহ-google & উইকিপিডিয়া
#বাঘা_যতীন #বাঙ্গালী #ইতিহাস

With Md. Jasim Uddin Emon – I just got recognized as one of their top fans! 🎉
06/12/2024

With Md. Jasim Uddin Emon – I just got recognized as one of their top fans! 🎉

শাকিব খান: ঢালিউডের কিং খানের জীবন ও অর্জনবাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় নামগুলোর মধ্যে অন্যতম হলেন শাকিব খা...
01/12/2024

শাকিব খান: ঢালিউডের কিং খানের জীবন ও অর্জন
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় নামগুলোর মধ্যে অন্যতম হলেন শাকিব খান। তিনি শুধু একজন অভিনেতা নন, বরং একজন প্রযোজক, গায়ক এবং জনপ্রিয় সংস্কৃতির প্রতীক। তার অভিনীত ছবিগুলি প্রায়শই বক্স অফিসে হিট হয়েছে এবং তিনি দর্শকদের মনে চিরস্থায়ী হয়ে আছেন। আসুন, শাকিব খানের জীবন, কর্মজীবন এবং অর্জনের কথা জেনে নেওয়া যাক।

শাকিব খান: এক নজরে
জন্ম: ২৮ মার্চ, ১৯৭৯
জন্মস্থান: রাঘদী, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ
পেশা: অভিনেতা, প্রযোজক, গায়ক
ডাকনাম: কিং খান, ঢালিউড কিং
কর্মজীবনের শুরু
শাকিব খানের চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। তার প্রথম চলচ্চিত্র ছিল "অনন্ত ভালবাসা"। ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা হিসেবে।

ব্যবসাসফল ছবি
শাকিব খানের অনেক ছবিই ব্যবসায়িকভাবে সফল হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু ছবি হল:

আমার স্বপ্ন তুমি: এই ছবিটি শাকিব খানের ক্যারিয়ারের একটি টার্নিং পয়েন্ট।
চাচ্চু: এই ছবিটি শাকিব খানের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবিগুলির মধ্যে একটি।
প্রিয়া আমার প্রিয়া: এই ছবিটিও বক্স অফিসে হিট হয়েছিল।
ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না: এই ছবির জন্য শাকিব খান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
খোদার পরে মা: এই ছবিটিও তার জনপ্রিয় ছবিগুলির মধ্যে একটি।
ব্যক্তিগত জীবন
শাকিব খানের ব্যক্তিগত জীবনও প্রায়শই গণমাধ্যমে আলোচিত হয়। তিনি দু'বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।

অর্জন ও পুরস্কার
শাকিব খান তার চলচ্চিত্র জীবনে অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার: শাকিব খান একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার: তিনি মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারেও একাধিকবার বিজয়ী হয়েছেন।
বাচসাস পুরস্কার: বাচসাস পুরস্কারেও তিনি বেশ কয়েকবার পুরস্কৃত হয়েছেন।
শাকিব খানের জনপ্রিয়তা
শাকিব খান শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিদেশেও বেশ জনপ্রিয়। তার ছবিগুলি বিভিন্ন দেশে মুক্তি পেয়েছে এবং তিনি অনেক ভক্তের প্রিয়।

সামাজিক কর্মকাণ্ড
শাকিব খান কেবল চলচ্চিত্র জগতেই সক্রিয় নন, তিনি বিভিন্ন সামাজিক কাজেও যুক্ত থাকেন। তিনি অনেক দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত এবং সমাজের দুঃস্থ মানুষদের সাহায্য করেন।

শাকিব খান বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে একজন অনন্য প্রতিভা। তার অভিনয়, তার জনপ্রিয়তা এবং তার সামাজিক কর্মকাণ্ড তাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করেছে। তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একজন স্বর্ণাক্ষরের নাম হয়ে থাকবেন।

আপনারা কি শাকিব খানের কোনো পছন্দের ছবি সম্পর্কে জানতে চান?

আপনি যদি এই আর্টিকেলটি ভালো লাগে, তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আপনার মতামত আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ধন্যবাদ।

#শাকিবখান #ঢালিউড #বাংলাছবি #বাংলাদেশিঅভিনেতা

বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশন কিং: জসিমবাংলা চলচ্চিত্রে অ্যাকশনধর্মী ছবির কথা উঠলেই যে নামটি প্রথম মনে পড়ে তা হল জসিম। তার ...
30/11/2024

বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশন কিং: জসিম
বাংলা চলচ্চিত্রে অ্যাকশনধর্মী ছবির কথা উঠলেই যে নামটি প্রথম মনে পড়ে তা হল জসিম। তার অভিনয়, তার ফাইট সিক্যুয়েন্স, আর তার জনপ্রিয়তা এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছিল যে তাকে ছাড়া বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশনধর্মী ছবির কথা ভাবাই যায় না। আজকে আমরা জানবো এই কিংবদন্তি অভিনেতার জীবন ও ক্যারিয়ার সম্পর্কে।

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা
জসিম শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন তা নয়, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যুদ্ধের ময়দান থেকে এসে তিনি চলচ্চিত্রের পর্দায় দেশপ্রেমিকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন।

চলচ্চিত্র জীবনের শুরু
জসিমের চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয় খলনায়কের চরিত্রে। কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি তিনি দর্শকদের প্রিয় নায়ক হয়ে ওঠেন। তার অ্যাকশন সিক্যুয়েন্সগুলো ছিল এতই জনপ্রিয় যে, তাকে অনেকে বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশন কিং বলে ডাকতেন।

উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র
জসিম অভিনীত অনেক চলচ্চিত্রই বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে। তার কিছু উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হল:

দোস্ত দুশমন: এই ছবিটি হিন্দি চলচ্চিত্র শোলের বাংলা রিমেক। জসিমের অভিনয় এখানে দর্শকদের মন জয় করেছিল।
সবুজ সাথী: এই ছবিটিতে জসিম প্রথমবারের মতো নায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন।
লালু মাস্তান: এই ছবিটিও জসিমের জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের মধ্যে একটি।
টাইগার: এই ছবিটিতে জসিমের অ্যাকশন সিক্যুয়েন্স দর্শকদের মন জয় করেছিল।
নাগ নাগিনী: এই ছবিটিতে জসিমের অভিনয়ের পাশাপাশি গানগুলোও জনপ্রিয় হয়েছিল।
ব্যক্তিগত জীবন
জসিমের ব্যক্তিগত জীবনও ছিল বেশ রঙিন। তিনি একাধিকবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিল।

মৃত্যু
দুর্ভাগ্যবশত, জসিম ১৯৯৮ সালে মারা যান। তবে তার অবদান বাংলা চলচ্চিত্রে সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সারসংক্ষেপ
জসিম ছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তি। তিনি শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন তা নয়, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও ছিলেন। তার অ্যাকশনধর্মী ছবিগুলো দর্শকদের মনে সবসময় জায়গা করে নিয়ে থাকবে।

অভিনেত্রী আনোয়ারা: বাংলা চলচ্চিত্রের এক আইকনবাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের একজন অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হলেন আনোয়ারা।...
30/11/2024

অভিনেত্রী আনোয়ারা: বাংলা চলচ্চিত্রের এক আইকন
বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের একজন অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী হলেন আনোয়ারা। তিনি তার অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে দর্শকদের মনে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। আনোয়ারার জীবন, ক্যারিয়ার এবং অর্জনের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ নিম্নে দেওয়া হলো:

জীবন ও ক্যারিয়ার
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন: আনোয়ারা জামাল ১৭ জানুয়ারি, ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই নাচের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট ছিলেন এবং নৃত্যশিল্পী হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয়।
চলচ্চিত্রে আগমন: ১৯৬১ সালে অভিনেতা আজিমের হাত ধরে তিনি চলচ্চিত্রে পা রাখেন। প্রথমদিকে তিনি সহশিল্পী চরিত্রে অভিনয় করলেও পরবর্তীতে নায়িকা হিসেবেও দর্শকদের মন জয় করেন।
ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র: আনোয়ারা অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো: নবাব সিরাজউদ্দৌলা, প্রীত না জানে রীত, ১৩ নং ফেকু ওস্তাদাগার লেন, কাগজের নৌকা, শহীদ তিতুমীর, বাঁশরী, দেবদাস, সুন্দরী, এতিম, জন্ম থেকে জ্বলছি, দুই পয়সার আলতা, সবুজ সাথী, গোলাপী এখন ট্রেনে, ভাত দে, নসীব, শুভদা1 ইত্যাদি।
বিভিন্ন চরিত্র: আনোয়ারা বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি রোমান্টিক নায়িকা হিসেবে যেমন দর্শকদের মন জয় করেছেন, তেমনি মায়ের চরিত্রেও তার অভিনয় দারুণভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
পুরস্কার: আনোয়ারা মোট ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেছেন। এছাড়া ২০২০ সালে তাকে আজীবন সম্মাননা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করা হয়।
অর্জন
বাংলা চলচ্চিত্রের আইকন: আনোয়ারা বাংলা চলচ্চিত্রের একজন আইকন হিসেবে পরিচিত। তার অভিনয় দক্ষতা এবং জনপ্রিয়তা তাকে চলচ্চিত্র জগতে অনন্য করে তুলেছে।
দর্শকদের প্রিয়: তিনি দর্শকদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একজন অভিনেত্রী। তার অভিনীত চলচ্চিত্রগুলি আজও দর্শকদের মনে স্মরণীয় হয়ে আছে।
পুরস্কার: অসংখ্য পুরস্কারের পাশাপাশি, আনোয়ারা দর্শকদের হৃদয় জয় করেছেন, যা তার সবচেয়ে বড় অর্জন।
সারসংক্ষেপ: আনোয়ারা বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একজন অবিস্মরণীয় অভিনেত্রী। তার অভিনয় দক্ষতা, জনপ্রিয়তা এবং অসংখ্য পুরস্কার তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা অভিনেত্রীদের একজন করে তুলেছে।

বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের রানি: ফারিদা আক্তার ববিতাবাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ফারিদা আক্তার ববিতার নাম স্বর্ণাক্ষ...
29/11/2024

বাংলা চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের রানি: ফারিদা আক্তার ববিতা
বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ফারিদা আক্তার ববিতার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা। তিনি একজন প্রতিভাবান অভিনেত্রী যিনি নিজের অভিনয় দক্ষতায় দর্শকদের মন জয় করেছিলেন। তাঁর সুন্দর চেহারা, মধুর কণ্ঠ এবং অভিনয়ের প্রতি আন্তরিকতা তাকে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম জনপ্রিয় তারকা বানিয়েছিল।

জীবন:

ফারিদা আক্তার ববিতা ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা নিজামুদ্দিন আতাউর একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এবং মা জাহান আরা বেগম ছিলেন একজন চিকিৎসক। ছোটবেলা থেকেই তিনি অভিনয়ের প্রতি আগ্রহী ছিলেন।

চলচ্চিত্র জীবন:

ববিতা তাঁর চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন ১৯৬০ এর দশকের শেষ দিকে। তিনি তাঁর কেরিয়ারে প্রায় ৩৫০টিরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর প্রথম উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ছিল সত্যজিৎ রায়ের 'অশনি সংকেত'। এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তিনি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনেও পরিচিতি লাভ করেন।

অর্জন:

ববিতা তাঁর অভিনয় জীবনে অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। তিনি ১৯৭৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রবর্তনের পর টানা তিনবার শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এছাড়া ১৯৮৫ সালে আরেকবার শ্রেষ্ট অভিনেত্রী, ১৯৯৬ সালে শ্রেষ্ট প্রযোজক, ২০০২ ও ২০১১ সালে পার্শ্বচরিত্রে শ্রেষ্ট অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।

ববিতার চলচ্চিত্রের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক:

স্বাভাবিক অভিনয়: ববিতা তাঁর চরিত্রগুলোকে খুবই স্বাভাবিকভাবে উপস্থাপন করতেন। তাঁর অভিনয় দেখে মনে হতো তিনিই সেই চরিত্র।
বিভিন্ন ধরনের চরিত্র: ববিতা বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তিনি রোমান্টিক নায়িকা থেকে শুরু করে কমেডি, ড্রামা সব ধরনের চরিত্রে দক্ষতা দেখিয়েছেন।
জনপ্রিয়তা: ববিতা তাঁর সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী ছিলেন। তাঁর ছবি মুক্তির দিন দর্শকদের ভিড় লেগে থাকত।
উপসংহার:

ফারিদা আক্তার ববিতা বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একটি স্বর্ণ অধ্যায় যোগ করেছেন। তাঁর অভিনয়, সৌন্দর্য এবং ব্যক্তিত্ব তাকে অনন্য করে তুলেছে। তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের একজন কিংবদন্তি।

Address

Barisal Sador
Sador
8620

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ESDI FILMS posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ESDI FILMS:

Share

Category