Shafin's Gallery

Shafin's Gallery "Interested in self-development"

04/06/2025



জার্মান কবি, এমিল মার্টিন নিম্যোলা এর বিখ্যাত কবিতা, ❝ওরা প্রথমত এসেছিল❞
____________________________

যখন ওরা প্রথমে কমিউনিস্টদের জন্য এসেছিলো,
আমি কোন কথা বলিনি,
কারণ আমি কমিউনিস্ট নই।

তারপর যখন ওরা ট্রেড ইউনিয়নের লোকগুলোকে ধরে নিয়ে গেল,
আমি নীরব ছিলাম,কারণ আমি শ্রমিক নই।

তারপর ওরা যখন ফিরে এলো ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে ভরে মারতে,
আমি তখনও চুপ করে ছিলাম,কারণ আমি ইহুদি নই।

আবারও আসল ওরা ক্যাথলিকদের ধরে নিয়ে যেতে,
আমি টু শব্দটিও উচ্চারণ করিনি,কারণ আমি ক্যাথলিক নই।

শেষবার ওরা ফিরে এলো আমাকে ধরে নিয়ে যেতে,
আমার পক্ষে কেউ কোন কথা বলল না,
কারণ, কথা বলার মত তখন আর
কেউ বেঁচে ছিল না।

01/06/2025

ভালোবাসা সম্পর্কে একটা থিওরি আছে। আমার ধারণা প্রকৃতি প্রথমে একটি চমৎকার নকশা তৈরি করে। অপূর্ব একটি ডিজাইন। যা জটিল এবং ভয়াবহ রকমের সুন্দর। তারপর সেই ডিজাইনটি কাঁচি দিয়ে কেটে দুভাগ করে। এক ভাগ দেয় একটি পুরুষকে অন্য ভাগ একটি তরুণীকে। পুরুষটি তখন ব্যাকুল হয়ে ডিজাইনের বাকি অংশ খুঁজে বেড়ায়।মেয়েটিও তাই করে। কেউ যখন তার ডিজাইনের কাছাকাছি কিছু দেখে তখন প্রেমে পড়ে যায়। তারপর দেখা যায় ডিজাইনটি ভুল।তখন ভয়াবহ হতাশা। আমার মনে হয় প্রকৃতির এটা একটা মজার খেলা।
মাঝে মাঝে প্রকৃতি একটা কাজ করে। সেটা হলো-মূল ডিজাইনের দুই অংশকে কাছাকাছি এনে মজা দেখে, আবার সরিয়ে নিয়ে যায়। প্রকৃতি চায় না এরা একত্র হোক। দুজনে মিলে মূল ডিজাইনটি তৈরি করুক।প্রকৃতির না চাওয়ার কারণ আছে। মূল ডিজাইন তৈরি হওয়া মানে এ্যাবসলিউট বিউটির মুখোমুখি হয়। প্রকৃতি মানুষকে তা দিতে রাজি নয়। প্রকৃতির ধারণা মানুষ এখনো তার জন্য তৈরি হয়নি।

-( নীল অপরাজিতা )

31/05/2025



পৃথিবীতে কোন কিছুই success নয়!
এক মৃত ব্যক্তির পকেট থেকে পাওয়া চিঠি :

যখন জন্মালাম বাবা মা ভাবল এটা তাদের success,
যখন হাটতে শিখলাম মনে হল এটাই success,
যখন কথা বলতে শিখলাম মনে হল এটাই success,

ভুল ভাঙল,

এরপর স্কুলে গেলাম, শিখলাম First হওয়াটা success,
এরপর বুঝলাম না আসলে মাধ্যমিকে স্টার পাওয়াটা Success,
ভুল ভাঙল, বুঝলাম উচ্চমাধ্যমিকে এই রেসাল্টটা ধরে রাখাই Success,

এখানেই শেষ নয়,

এরপর বুঝলাম ভালো সাবজেক্ট নিয়ে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়াটাই Success,

পরে বুঝলাম না বিশ্ববিদ্যালয় শেষে চাকরী পাওয়াটা Success,
এরপর বুঝলাম না, নিজের টাকায় একটা ফ্ল্যাট কেনাটা Success,
সেটাও নয়, নিজের টাকায় এরপর গাড়ি কেনাটাই আসল Success,

আবার ভুল ভাঙল,

এরপর দেখলাম বিয়ে করে সংসার করাটাই Success,

বছর ঘুরলো, দেখলাম আসলে বিয়ে করে বংশধর এনে তাকে বড় করাটাই Success,
ছেলে হলে সে প্রতিষ্ঠিত হওয়াটাই Success, মেয়ে হলে ভালো বাড়িতে বিয়ে দেওয়াটাই Success,

এরপর এলো রিটায়ারমেন্ট, সারা জীবনের জমানো টাকার সঠিক Utilization ই Success...

আসলে এখনই বুঝলাম পৃথিবীতে কোন কিছুই Success নয় ,

পুরো টাই competition, যার মুলে আকাশ ছোঁয়া আকাঙ্ক্ষা, যা কখনো পূর্ণ হয়না।

26/05/2025



(Franz Kafka) ফ্রান্ৎস কাফকা কখনো বিয়ে করেননি এবং তাঁর কোনো সন্তানাদিও ছিল না। তাঁর বয়স যখন ৪০, তখন একদিন তিনি বার্লিনের একটা পার্কে হাঁটছিলেন। এমন সময় তিনি একটি ছোট্ট মেয়েকে দেখলেন যে তার প্রিয় পুতুলটি হারিয়ে কাঁদছিল। সেই মেয়েটি এবং কাফকা, দু’জনে মিলে খুব খুঁজলেন হারিয়ে যাওয়া পুতুলটিকে। কিন্তু কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না তা।
কাফকা মেয়েটিকে পরের দিন আবার সেখানে আসতে বললেন। উদ্দেশ্য, আবার তাঁরা দু’জনে মিলে হারিয়ে যাওয়া পুতুলটি খুঁজবেন সেখানে।
কিন্তু পরের দিনও পুতুলটিকে খুঁজে পাওয়া গেল না। তখন কাফকা ছোট্ট মেয়েটিকে একটি চিঠি দিলেন। আর বললেন, ‘এই চিঠিটি তোমার হারিয়ে যাওয়া পুতুলের লেখা’। সে চিঠিতে লেখা ছিল, ‘দয়া করে তুমি কেঁদো না। আমি পৃথিবী দেখতে বেরিয়েছি। আমি আমার রোমাঞ্চকর ভ্রমণকাহিনী তোমাকে নিয়মিত লিখে জানাব।’
এভাবেই শুরু হয়েছিল একটি গল্পের, যা চলেছিল কাফকার মৃত্যু পর্যন্ত।
ছোট্ট মেয়েটির সঙ্গে কাফকার নিয়মিত দেখা হতো। আর যখনই দেখা হতো তখনই কাফকা একটি চিঠি দিতেন মেয়েটিকে, বলতেন সেই একই কথা, ‘চিঠিটি তার হারিয়ে যাওয়া পুতুলের লেখা’, এবং পড়ে শোনাতেন তার প্রিয় পুতুলের বিশ্ব-ভ্রমণের রোমাঞ্চকর সব বর্ণনা খুব যত্নের সাথে, যে বর্ণনাগুলো মেয়েটিকে ভীষণ আনন্দ দিত।
এর কিছুদিন পর একদিন কাফকা একটি পুতুল কিনলেন এবং মেয়েটিকে দিলেন। বললেন, ‘এই নাও, তোমার হারিয়ে যাওয়া সেই পুতুল।’
মেয়েটি বললো, ‘এই পুতুলটি মোটেও আমার হারিয়ে যাওয়া পুতুলের মতো দেখতে নয়।’
কাফকা তখন মেয়েটিকে আরও একটা চিঠি দিলেন যেটাতে তার প্রিয় পুতুলটি তাকে লিখেছে, ‘ভ্রমণ করতে করতে আমি অনেক পাল্টে গিয়েছি।’
ছোট্ট মেয়েটি তখন নতুন পুতুলটিকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরল এবং অপার আনন্দে ভাসল।
এর এক বছর বাদে কাফকা মারা যান।
বহু বছর বাদে, সেই ছোট্ট মেয়েটি যখন অনেক বড় হয়ে গেছে, তখন সে সেই পুতুলটির ভিতরে একটি ছোট্ট চিঠি পায়। কাফকার সই করা ছোট্ট সে চিঠিটিতে লেখা ছিল, ‘Everything you love will probably be lost, but in the end, love will return in another way.

17/05/2025



ম্যাক্সিম গোর্কি__________

তিনি শুধু লেখক নন, ছিলেন সমাজের তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষক। মানুষের কথা শুনতেন, চলাফেরা দেখতেন, ভেতরের গল্পগুলো খুঁজে বেড়াতেন।

একদিন প্যারিসের এক রাস্তায় এক অদ্ভুত মানুষের সঙ্গে দেখা। কথায় কথায় গোর্কি জিজ্ঞেস করলেন, "আপনার পেশা কী?"

লোকটি হেসে উত্তর দিল, “বাসে-ট্রামে মেয়েদের বিরক্ত করি, হুটহাট ধাক্কা দিই, উত্ত্যক্ত করি। মাঝে মাঝে মারও খাই। কিন্তু সেটাই আমার রোজগার।”

গোর্কি তো স্তব্ধ! “মার খাও আর তাতে লাভ! এটা কেমন পেশা?”

লোকটি জানাল, “মার খেলে সাত দিনের এক্সট্রা পয়সা পাই, যদি রক্ত বের হয় তো এক মাসের বোনাস, হাত-পা ভাঙলে তিন মাসের ছুটি, আর গুরুতর হলে বউ-বাচ্চার চাকরিও হয়। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে ইনক্রিমেন্ট পাই।”

গোর্কি ভেবেছিলেন লোকটা পাগল। কিন্তু তখনই লোকটি পরিচয়পত্র দেখিয়ে বলল, "প্যারিসে আমার মতো আরও তিন হাজার কর্মী আছে!"

গোর্কি আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি তো লাভে আছ, কিন্তু তোমাকে টাকা দেয় কারা?”

লোকটি হাসল—
“বড় বড় শিল্পপতি আর রাজনীতিকরা। আমরা রাস্তায় বাসে ট্রেনে ট্রামে যে সব ছোটখাট কেচ্ছা ঘটাই তা দেখে লোকে উত্তেজিত হয় আর সারাদিন তা নিয়ে আলোচনা করে। অফিসে ঘটনার রোমহর্ষক বিবরণ দেয়, বাড়িতে বউকে গিয়ে বলে, এই সমাজটা কী খারাপ হয়ে গেছে। এ দেশে আর থাকা চলে না। আর এই সময় শিল্পপতিরা যে ব্যাংকের টাকা ফেরত দেয় না, কর ফাঁকি দেয়, পুকুর নয় নদী চুরি করে, লোকের জমি ভয় দেখিয়ে কেড়ে নেয়, জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেয়—সে নিয়ে কোন আলোচনাই হয় না। আমাদের ছোটখাট কেচ্ছা ওদের বড় বড় কেচ্ছাগুলোকে নিপুণভাবে চাপা দিয়ে দেয়। রাজনীতিকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে কেউ টুঁ শব্দটি করে না।
আমাদের এই সামান্য নাটক তাদের বিরাট অন্যায় ঢেকে দেয়।"
গোর্কি নির্বাক হয়ে গেলেন।
পুঁজিবাদী সমাজে গণতন্ত্রের আড়ালে কী ভয়ানক পর্দার খেলা চলছে।

মাঝেমাঝে যাদের আমরা অপরাধী ভাবি, তারা আসলে শুধু নাটকের চরিত্র। আসল পরিচালক থাকে ছায়ার আড়ালে।

14/05/2025

মিথ্যা বলা মহাপাপ।
তবে সত্য বলাও তো মহাপূণ্য নয়.!!

14/05/2025



দেশ একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান।
আমরা সেই প্রতিষ্ঠানের চাকর।
অথচ আমরা স্বপ্ন দেখি-
প্রতিষ্ঠানের সরদার আমাদের ভাই হবে।

13/05/2025

"পৃথীবীতে সবাই গরীব-পাগল।" কেন?

কেহ গরীব অর্থের জন্য,
কেহ গরীব রুপে,
এই দুনিয়ায় সবাই গরীব,কাঁন্দে চুপে চুপে।

কেহ পাগল বাড়ি-গাড়ির,
কেহ পাগল অর্থের,
কেহ আবার নারীর পাগল,কেহ পাগল স্বার্থের।

07/05/2025



দুনিয়ার সবচেয়ে স্টুপিড লাভ স্টোরিটার নাম সম্ভবত, রব নে বানা দি জোডি। আর এই সিনেমার গল্প আমার খুব পছন্দ। তানি নামের এক যুবতীর গল্প এটি; যার বিয়ে ঠিক হয়। এবং বিয়ের দিন দুর্ঘটনায় পড়ে হবু স্বামীর মৃত্যু হয়। কন্যার মৃত্যুপথযাত্রী পিতা মৃত্যুর আগে কন্যার হাত মধ্যবয়স্ক ভীষণ সাধারণ এক ভদ্রলোকের হাতে তুলে দেন। ভদ্রলোকের নাম সুরিন্দর। বিয়ের কন্যা সুরিন্দরের বাড়ি আসেন। একই বাড়িতে দুইজন আলাদা থাকেন। তারপর সুরিন্দর সিদ্ধান্ত নেন তিনি বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে বউয়ের সমস্ত দুঃখ দুর করে দেবেন, সব বিষাদ মুছে দেবেন এবং মন জয় করে নেবেন তার। টিপিক্যাল অতি সাধারণ জলসা সিরিয়ালের একটা গল্প মাঝখানে গিয়ে ভয়াবহ এক মোড় নেয়।

একজন মানুষের দু’টো সত্তা আলাদা করে মাঝখানে এক যুবতীর প্রেম ঠেসে গুঁজে দেওয়া এই সিনেমা লিখেছেন আদিত্য চোপড়া। একটা সময় যখন মানসিক পরিপক্বতা আসেনি আমার, আমি দেখতে বসে ভাবছিলাম- সুরিন্দরের সমস্যাটা কোথায়?

তানি তখন স্বামী সুরিন্দরের ভীষণ সাধারণ জীবন যাপন পছন্দ করতে শুরু করেছেন। পাশাপাশি বিষাদ কাটিয়ে হাসতে শুরু করেছেন কারণ তার একজন চমৎকার বন্ধুও হয়েছে। ওই বন্ধুর নাম রাজ। এখন তানি যদি স্বামীকে বেছে নেয়, তাও ভালো। যদি রাজকে বেছে নেয়, তবেও তো সমস্যা নাই, কারণ সুরিন্দর আর রাজ দুইজন একই ব্যক্তি। দিনশেষে সুরিন্দরই তানিকে পাবেন। তাহলে সুরিন্দরের সমস্যা কোথায়?

পরে আমি বুঝলাম, সুরিন্দরের সমস্যা অন্য কোথাও। প্রশ্নটা তানিকে পাওয়া নয়, প্রশ্নটা নিজেকে পাওয়া। যখনই তানির মন জয় করার জন্য সুরিন্দর নিজের একটা আলাদা পার্সোনালিটি সৃষ্টি করেছেন, তখনই মূলত তারা আলাদা হয়ে গেছেন। সুরিন্দর আর রাজ একই ব্যক্তি নয় তখন আর। তারা দুইজন আলাদা। এবং দুইজনের মধ্যে একটা চুপচাপ প্রতিযোগিতা চলছে। সেটা তানিকে পাওয়ার প্রতিযোগিতাও নয়। একে অন্যকে হারানোর প্রতিযোগিতা। সুরিন্দর অথবা রাজ দুঃখ পাচ্ছেন কারণ তানি যদি রাজকে বেছে নেয়, সারাজীবনের জন্য রাজ হারাবেন সুরিন্দর। তানি যদি সুরিন্দরকে বেছে নেয়, সুরিন্দর বাকি জীবনের জন্য হারাবেন রাজ।

সুরিন্দর একজন অতি সাধারণ মানুষ, চুপচাপ, কাজপাগল, ঝগড়াঝাঁটি থেকে দূরে থাকেন সবসময়, ভালোবাসতে পারেন প্রচণ্ড কিন্তু প্রকাশ করেন কম। অন্যদিকে রাজ অসাধারণ একজন মানুষ, বাচাল, ক্যাঁচাল পাকানোর ওস্তাদ, হাসাতে পারেন, ভালোবাসতে পারেন যেমন, প্রকাশও করতে পারেন তেমন। তানি রাজের প্রেমে পড়েছিল কারণ রাজের ভালোবাসা তার খুঁটিয়ে দেখার চেষ্টাটুকুনও করতে হয়নি। রাজ নিজেই প্রকাশ করেছেন সব অবলীলায়। তারপরও তানি শেষ পর্যন্ত সুরিন্দরকে বেছে নেয়।

তানি সুরিন্দরকে বেছে নিয়েছিল কারণ সুরিন্দরের ভালোবাসার প্রকাশ ছিল আলাদা, কিন্তু প্রবল। সদ্য বিয়ের লগ্ন ভাঙা এক যু্বতী, সদ্য হারিয়ে ফেলা প্রেমিক, পিতা, চারপাশ- সম্পূর্ণ একলা একজন, যার হাত সুরিন্দর ধরেছিলেন ভালোবেসে। যতটা স্পেস চেয়েছে তানি, দিয়েছেন তার সবটুকুন। অনুমতি ছাড়া একটা স্পর্শও না। আর দশজন পুরুষের মতোন স্ত্রীর নাচানাচির শখ জেনে চোখ কপালে তুলে ফেলেননি। বরং নিজ থেকেই চেয়েছেন, বউ ব্যস্ত থাকুক যেমন ইচ্ছে তার। বউ যাতে ওই শোক কাটিয়ে উঠতে পারে।

সুরিন্দরের সিনেমা পছন্দ নয়। সুরিন্দর অফিস থেকে ছুটি নিয়ে সিনেমা দেখতে যান। কারণ বউয়ের পছন্দ সিনেমা। মেলায় বউকে জাপানি স্টলের সামনেই শুধু আগ্রহ নিয়ে দাঁড়াতে দেখে জাপানি সুমো কুস্তিগিরের সঙ্গে লড়তে উঠে যান। কারণ, ওখানকার প্রথম পুরস্কার জাপান বেড়াতে যাওয়া। জাপান যাওয়া সুরিন্দরের আকাঙ্খিত পুরস্কার নয়, সুরিন্দরের জন্য পুরস্কার হলো- জাপান দেখে মুগ্ধ বউয়ের চোখ।

সুরিন্দরের টিফিনবক্স থেকে শুরু করে গাড়ির রঙ হলুদ, এমনকি কল্পনায় তার পেছনে নাচতে থাকা ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যান্সারদের পরনের জামাটাও হলুদ রঙের। কারণ, প্রথমবার সুরিন্দর তানিকে যে জামা পরে হাসতে দেখেছিলেন, ওই জামার রঙ হলুদ।

সুরিন্দরের ভালোবাসার প্রকাশ ছিল অন্যরকম, অদ্ভুত, কিছুটা উদ্ভটও। ওইসব ভালোবাসা অবলীলায় বলে দেওয়া যায় না। গণনা করা যায় না হাতের আঙুলে। দেখা যায় না। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তি চট করে খুঁজেও পায় না তা। এইসব ভালোবাসা খুঁজে নিতে হয়।

স্বাভাবিকতই তানির খুঁজে পেতে দেরী হয়েছিল তাই। যখন খুঁজে পেয়েছিল তখন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভালোবাসাকে খুব সহজেই বলে দিতে পেরেছে, আমি সুরিন্দরের হাত ছাড়তে পারবো না। আমি উনার মাঝে ঈশ্বর দেখতে পাই। মানুষটাকে আমি ছাড়তে পারবো, ঈশ্বরকে তো না।

আমাদের হুমায়ূন আহমেদ ‘হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম’ উপন্যাসে মানুষের মাঝে ভালোবাসার ঈশ্বর দেখতে পাওয়ার রোমান্টিক একটা সংজ্ঞা দিয়েছিলেন। ওখানে ঈশ্বরের রুপক হিসেবে ছিল নীলপদ্ম।

পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই পাঁচটা নীলপদ্ম নিয়ে জন্মায়। যখন তারা কাউকে প্রচণ্ড ভালোবাসে, তখন তারা নিজের ওই নীলপদ্মগুলো ওই মানুষটিকে দিয়ে দেয়। এই দিয়ে দেওয়ার কাজটা কখনো-সখনো জেনেবুঝে করে মানুষ, কখনো-সখনো নিজের অজান্তে। এমনকি যাকে নীলপদ্ম দিচ্ছে, অনেক সময় তারও অজান্তে। একবার দিয়ে ফেলার পর ওই নীলপদ্ম কখনই ফেরত নেওয়া যায় না। কারোর কাছ থেকে উপহার পাওয়া নীলপদ্ম কখনই অন্য কাউকে দেওয়া যায় না আর। আজীবন একটা মানুষ আরেকজন থেকে উপহার পাওয়া পাঁচটা নীলপদ্ম নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, বেঁচে থাকে। তানির নিকট ছিল সুরিন্দরের পাঁচটা নীলপদ্ম। মানুষটাকে তিনি ছাড়তে পারবেন। ওই নীলপদ্মগুলোকে নয়।

তানি যখন সুরিন্দরকে বেছে নেন, স্বাভাবিকতই রাজ হারিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু একলা স্টেজে তানিকে হারতে দেখে সাহায্য করার জন্য যে ব্যক্তি এগিয়ে আসেন- তাকে না সুরিন্দর বলা যায়, না রাজ। আলাদা করা যায় না। আর দুই সত্তার মধ্যকার অন্তর্দ্বন্দ্বের উপসংহার মিলে যায় তখন।

তানি সুরিন্দরের ভেতর ঈশ্বর দেখতে পায় কারণ, রাজ সুরিন্দরেরই সৃষ্টি। তানির দুঃখ মোছার জন্যই সৃষ্টি করা একটা ফুল। এখানে বৃক্ষ সুরিন্দর স্বয়ং। স্রষ্টা আর সৃষ্টির খেলায় দিনশেষে সবাইকে পৌঁছুতে হয় স্রষ্টার নিকট। স্রষ্টাই শুরু, স্রষ্টাই শেষ।

এমুভির কিছুদৃশ্যপট আমার কাছে অসাধারন লেগেছে

প্রথম দৃশ্য। তানি ও রাজ, দুইজন আলাদা ট্রায়ালরুমে, রাজ জিজ্ঞেস করেন, তানিজি, একটু বলুন তো, নারী আসলে কী চায়? তানি হেসে উত্তর দেয়, একজন নারী কী চায়, সেটা একজন নারীই সবচেয়ে ভালো বুঝতে পারে, পুরুষ নয়। একজন নারী চায়, কেউ তাকে এত বেশী ভালোবাসুক, যত বেশী ভালো পৃথিবীর আর কেউ কাউকেই বাসেনি। ট্রায়ালরুম থেকে তানি বের হওয়ার পর দেয়ালে মাথা হেলান দিয়ে রাজ বলে, ওইরকম ভালো তো সুরিন্দরও আপনাকে বাসে। আপনিই শুধু দেখতে পাচ্ছেন না।

সাধারণ দৃশ্য, সাধারণ কথোপকথন। কিন্তু সাধারণ হয়ে থাকে নাই। রাজের দেয়ালে হেলান দেওয়া মাথা, হাত রাখা, কাতর দৃষ্টি সঙ্গে ভায়োলিনের সুর- কি তীব্র সুন্দর অসহায়ত্ব আর বিষাদে আচ্ছন্ন করে ফেলে মুহূর্তেই। একটা গল্প বলে ফেলে কয়েক সেকেন্ডেই।

দ্বিতীয় দৃশ্য। একটা উঁচু জায়গার উপর। রাজ তানিকে নিয়ে শহরের সবচেয়ে উঁচু জায়গার কোনো একটা পার্কের কিনারে পৌঁছেছেন। তানি উপর থেকে রাত্তিরের শহর দেখে মুগ্ধ। হঠাৎ শহরের সমস্ত লাইট নিভে যায়। তানি চমকান। পরক্ষণেই শহরের বিভিন্ন জায়গার নির্দিষ্ট কিছু বিল্ডিং-এর লাইট জ্বলতে শুরু করে এক এক করে। সবগুলো জ্বলার পর দেখা যায়, শহরের মাঝখানে আলো দিয়ে লেখা- আমি তোমায় ভালোবাসি।

কত শত সিনেমায়, কত শত প্রপোজ দৃশ্য লেখা হয়েছে, বানানো হয়েছে, নির্মাণ করা হয়েছে। সাধারণ একটা দৃশ্য, কিন্তু সাধারণ থাকে নাই। রাজের কৌতুহলী মুখ, তানির অপ্রত্যাশিত, হতভম্ব, বিস্মিত, মুগ্ধ ও ভয়ংকর সুন্দর একজোড়া চোখ আর ব্যাকগ্রাউন্ডের টানা গলার স্বর- একটা মুহূর্ত তৈরী করে দিয়ে যায়। বিশেষ একটা এক্সপেরিয়েন্স-এর অংশ করে নেয়।

শুধু গোঁফ ফেলে জিন্স-প্যান্ট পরার কারণে তানি নিজের স্বামী সুরিন্দরকে চিনতে পারে নাই- এটা একটা লেইম স্ক্রিপ্ট। এই লেইম স্ক্রিপ্ট কি এটাও ইঙ্গিত দেয় না? যে- তানি আদৌ কখনো সুরিন্দরকে মনোযোগ দিয়ে দেখেইনি। যতদিন রাজের সঙ্গে তার দেখা হয় নাই। যতদিন সে ভেতর থেকে সুখী অনুভব করে নাই। যতদিন দ্বন্দ্ব শুরু হয় নাই। যতদিন চোখে পড়ে নাই, অগোচরে বাড়ির কোথাও ফুটে আছে একটা নয়নতারা ফুল।

ভালোবাসার প্রকাশ জরুরি। সব সুরিন্দর সিনেমার শেষে জিতে যায় না। পৃথিবীর সব তানি খুঁটিয়ে দেখতে যায় না অপ্রকাশিত ভালোবাসা। মানুষ ভালোবাসার কাঙাল হয়। ওরা খুঁজে যায়। মাঝে মাঝে ওরা হাঁটতে হাঁটতে অনেক উঁচুতে উঠে যায়। ওখান থেকে দেখা যায় আস্ত শহর। ওরা ওদিক তাকিয়ে খুঁজে তুমুল ভালোবাসা। তখন কেউ যদি একটা ফানুস উড়িয়ে দেয় তার নামে, ওখানেই পাঁচটা নীলপদ্ম রেখে আসে ওরা। বাকি জীবন কাউকে দেওয়ার মতো একটা নীলপদ্ম খুঁজে পায় না আর।

    "পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না।"
04/05/2025




"পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না।"

03/05/2025



পুরুষ মানসের প্রথম শখ একটা BEN 10 ঘড়ি, আর শেষ শখ একটা গরুর ফার্ম দেওয়া....!!

29/04/2025



মস্তিষ্কের চেয়ে বড় কোন কবরস্থান নাই।
কত স্বপ্ন, কত শখ দাফন করে কেউ জানে না...!!!

Address

Saghata
5750

Telephone

+8801755328957

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Shafin's Gallery posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Shafin's Gallery:

Share