
26/07/2025
ভালোবাসা থেকে যায়… শুধু মানুষটাই আর থাকে না…"
পর্ব – "শেষ চিঠি, শেষ ভালোবাসা"
🕯️ আরশির মা’র স্বীকারোক্তি
মাটি দেওয়ার শেষ মুহূর্তে, চোখভেজা কণ্ঠে আরশির মা এগিয়ে এসে বললেন—
> “নাফিজ, তুই তো জানতিস না...
ওর বাবা জোর করছিল ওকে ওই ছেলের সাথে বিয়ে দিতে—
কারণ সেই পরিবারটা প্রভাবশালী, বিদেশে সেটেল্ড, আর রাজনৈতিকভাবে আমাদের বড় সহায় হতে পারত।
ও জানত, যদি বিয়ে না করে—ওর বাবার ভয়ংকর রূপ দেখতে হতো।”
“ও ভয় পেয়ে গিয়েছিল...
তাই তোকে আঘাত করেছিল, কথা কাটাকাটি করেছিল,
শুধু যাতে তুই দূরে চলে যাস… আর ওর বাবার হুমকির মুখে ওর প্রিয় মানুষটা বেঁচে থাকে।”
> “খুব দুঃখিত নাফিজ… আমরা দুজনের জীবনই শেষ করে দিলাম… মাফ করে দিস বাবা…”
এই বলে আরশির মা ওর হাতে একটা খামে মোড়া চিঠি দিয়ে দিয়ে বললেন—
> “এটাই ওর শেষ চিঠি… তোকে দেওয়ার জন্য আমার হাতেই দিয়ে গিয়েছিল।”
---
📬 চিঠির শুরু – হাতের লেখা, কাঁপা কাঁপা অক্ষর
হোস্টেলে ফিরে এসে, নাফিজ চুপচাপ বসে চিঠিটা খুলল।
খাম খুলতেই পড়ল একটা পুরনো মুহূর্তের ছবি—
তাদের হাসিমুখে তোলা সেই মুহূর্ত, যেদিন বৃষ্টিতে ভিজে কাঁদা মাখা শরীরে দুজন একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছিল।
ছবির পেছনে শুধু একটা লাইন:
> “ভুলে যাস না, এই দিনটাই ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর দিন…”
চিঠি শুরু হয়েছিল এমন—
---
✍️ আরশির শেষ চিঠি
প্রিয় নাফিজ,
আসসালামু আলাইকুম…
তুমি এখন যখন এই চিঠিটা পড়ছো, তখন আমি হয়তো এই পৃথিবীতে নেই।
তোমার মনে হচ্ছে হয়তো—আমি কিভাবে পারলাম?
তুমি ভাবছো, আমি কেন তোমার সাথে এমন ব্যবহার করলাম।
কিন্তু তোমাকে আঘাত করা আমার ইচ্ছা ছিল না, আমি শুধু চেয়েছিলাম… তুমি বেঁচে থাকো।
তুমি জানো না, বাবা আমাকে হুমকি দিয়েছিল—
তোমার ক্ষতি করার।
আমি… আমি কিভাবে মানতাম যে, আমার কারণে তোমার জীবন বিপন্ন হবে?
তাই আমি চুপ করে সব মেনে নিয়েছিলাম।
তোমার চোখে চোখ রেখে আমি "না" বলতে পারিনি।
তোমার সামনে কাঁদতেও পারিনি।
আমি শুধু ভেবেছিলাম, তুমি ঘৃণা করে দূরে সরে গেলে, হয়তো আমার থেকে ভালো থাকবে…
কিন্তু… তুমি ছাড়া আমি কিছুই নই।
আমার কাছে তোমাকে ছাড়া জীবন মানেই শূন্য।
তোমাকে ভালোবাসি…
ভালোবাসতাম…
ভালোবাসবো…
আমার এই ভুলগুলো মাফ করে দিও, নাফিজ।
আমি জানি না পরকালে মোবাইল থাকে কি না,
কিন্তু যদি থাকে, আমি তোমার সব কল রিসিভ করব,
আর যদি না থাকে…
তাহলে আমার কবরের পাশে এসে একটু কথা বলো, একটু দোয়া করো…
আর হ্যাঁ…
ভালো কোনো মেয়ে পেলে বিয়ে করো। সুখে থেকো।
আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, পরকাল থেকে তোমার অপেক্ষায় থাকবো।
খুব মিস করব।
– তোমার আরশি 🌸
---
💧শেষ দৃশ্য
চিঠি পড়া শেষ হতেই, নাফিজ আর নিজেকে ধরে রাখতে পারল না।
হাত কাঁপতে লাগল, চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ল অশ্রু।
সে সেই ছবিটা বুকে চেপে ধরে কাঁদতে লাগল—
> “তুই… তুই এমন করতে পারলি?
তুই যদি একবার বলতি… আমি সব ফেলে আসতাম তোর জন্য…”
follow for more story
আগের পর্ব কমেন্টে দেয়া আছে
#শেষচিঠি #শেষভালোবাসা #ভালোবাসারগল্প #চিরদিনেরআরশি #ভাঙাহৃদয় #বাংলাগল্প