19/08/2025
দল মত নির্বিশেষে ভালো মানুষের প্রশংসা করতে হয় সে যে দলেরই হোক সাধারণ জনগণের চাওয়া এলাকাবাসীর উন্নয়ন
উন্নয়নের কর্ণধার আধুনিক সরিষাবাড়ীর রূপকার বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার মরহুম আব্দুস সালাম তালুকদারের ২৬তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে বিনম্র শ্রদ্ধা।
আল্লাহ উনাকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুন (আমিন)
ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার: এক রাজনীতিকের জীবন ।
==================
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার এক অনন্য নাম। বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী হিসেবে তিনি শুধু একটি দলের নয়, বরং পুরো দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে রেখে গেছেন দৃঢ় ছাপ। আজ তাঁর ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা ফিরে তাকাই তাঁর জীবনের শুরুর পথ, রাজনৈতিক অঙ্গনে পদচারণা, উত্থান এবং জনগণের জন্য রেখে যাওয়া অবদানগুলোর দিকে।
---
শৈশব ও শিক্ষাজীবন:
জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীর মূল বাড়ি এক মধ্যবিত্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম নেন ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন জ্ঞানপিপাসু, তীক্ষ্ণ মেধাবী এবং নেতৃত্বদায়ী চরিত্রের অধিকারী। গ্রামীণ জীবনের সহজ-সরল পরিবেশে বেড়ে উঠলেও তিনি অল্প বয়সেই বুঝতে পেরেছিলেন শিক্ষা ও মানবিকতা সমাজ পরিবর্তনের প্রধান হাতিয়ার।
স্কুল-কলেজে ছাত্রনেতা হিসেবে তাঁর ত্যাগ, সাহস ও দূরদৃষ্টি তাঁকে সকলের কাছে বিশেষ করে তোলে। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য আইন পড়তে লন্ডন যাত্রা করেন এবং ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করে দেশে ফিরে আসেন। এই সময় থেকেই তাঁর ভেতরে দেশের রাজনীতি ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হওয়ার বীজ অঙ্কুরিত হয়।
------
রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ:
স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করছিল, তখন তিনি দেশের ভবিষ্যৎ গঠনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। জাতীয়তাবাদী চেতনা, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তাঁকে তৎকালীন বিএনপির সাথে যুক্ত করে।
তাঁর সংগঠনিক দক্ষতা, বক্তৃতার অনন্য ক্ষমতা এবং নির্ভীক নেতৃত্ব তাঁকে দ্রুত রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত করে তোলে। জনগণের পাশে দাঁড়ানো এবং দলীয় নেতৃত্বকে শক্তিশালী করার মধ্য দিয়ে তিনি নিজেকে দলের অপরিহার্য অংশে পরিণত করেন।
-------
রাজনীতিতে উত্থান:
ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার বিএনপির একজন নীতি নির্ধারক নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পান। তিনি শুধু রাজনীতির মাঠেই সক্রিয় ছিলেন না, প্রশাসনিক দক্ষতাতেও ছিলেন সমান পারদর্শী। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি গ্রামীণ উন্নয়ন, অবকাঠামো গড়ে তোলা, কৃষকদের উন্নয়ন এবং সমবায় ভিত্তিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।
পরে বিএনপির মহাসচিব হিসেবে তিনি দলের নীতি ও কার্যক্রম পরিচালনায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্ব, কৌশলগত চিন্তাশক্তি এবং সংগঠনের প্রতি নিবেদন বিএনপিকে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিতে রূপ দিতে সহায়তা করে।
-----
জামালপুর ও সরিষাবাড়ীর প্রতি অবদান:
ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের হৃদয়ের টান ছিল নিজের জন্মভূমি জামালপুর ও সরিষাবাড়ীর মানুষের জন্য। তিনি এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, কৃষি উন্নয়ন এবং গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করতে নানা পদক্ষেপ নেন।
• স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা স্থাপন ও উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ নেন।
• স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সড়ক, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণে কাজ করেন।
• কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে সেচ সুবিধা ও কৃষিঋণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেন।
• তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষিত ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক উন্নয়নের ওপর জোর দেন।
এলাকার সাধারণ মানুষ তাঁকে শুধু রাজনীতিবিদ হিসেবেই নয়, একজন অভিভাবক হিসেবেও মনে করতেন।
-------
জাতীয় পর্যায়ে অবদান:
ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদার শুধু স্থানীয় উন্নয়নেই সীমাবদ্ধ থাকেননি, বরং জাতীয় উন্নয়নেও রেখেছেন বিশেষ অবদান। তাঁর কর্মপ্রচেষ্টা ছিল—
• গণতন্ত্র রক্ষা ও সুসংহত করা।
• গ্রামীণ অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা।
• উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
• রাজনৈতিক নেতৃত্বে সুশাসন ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠা করা।
------
মৃত্যু ও উত্তরাধিকার:
১৯৯৯ সালে তাঁর অকালে মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক শূন্যতার সৃষ্টি করে। মাত্র মধ্যবয়সে চলে গেলেও তিনি রেখে গেছেন তার স্ত্রী,কন্যা,