
23/09/2025
#একটুখানি_তাদাব্বুর
সূরা আল বাকারাতে ২২২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ নারীদের মাসিকের বিষয়টা পরিষ্কার করে বলেছেন। আয়াতটি হলো:
> وَيَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَٱعْتَزِلُوا۟ ٱلنِّسَآءَ فِى ٱلْمَحِيضِ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ ٱللَّهُ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلتَّوَّٰبِينَ وَيُحِبُّ ٱلْمُتَطَهِّرِينَ
(সূরা আল বাকারা ২:২২২)
সরল বাংলা অর্থঃ
“তারা আপনাকে মাসিক (ঋতুস্রাব) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে। বলুন, এটি কষ্টদায়ক (এবং অশুচি)। সুতরাং মাসিক অবস্থায় তোমরা স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। আর যখন তারা পবিত্র হয়ে যায়, তখন তাদের কাছে যাও সেই পথে যেভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য নির্দেশ করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং যারা পরিশুদ্ধ থাকে তাদেরকেও ভালোবাসেন।”
আয়াতের তাফসীর
১. প্রশ্নের প্রেক্ষাপট
সাহাবীগণ নবীজী ﷺ-কে মাসিক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, কারণ ইহুদিদের সমাজে মাসিক মহিলাকে সম্পূর্ণভাবে ঘরে আলাদা রাখা হতো, তাদের সাথে খাওয়া-দাওয়া করাও নিষিদ্ধ মনে করত। অন্যদিকে কিছু জাতি কোনো বিধিনিষেধ মানতো না। তাই ইসলাম সঠিক দিকনির্দেশ দিল।
২. মাসিক অবস্থার বাস্তবতা
আল্লাহ বলেছেন: “হুয়া আযা” অর্থাৎ এটি একটি শারীরিক কষ্ট ও অস্বস্তিকর অবস্থা। তাই এ সময়ে স্ত্রী সহবাস বৈধ নয়।
৩. নিষেধাজ্ঞার সীমা
এ আয়াতে বলা হয়েছে:
মাসিক অবস্থায় স্ত্রী-সহবাস হারাম।
তবে একসাথে খাওয়া, ঘুমানো, আলাপচারিতা ইত্যাদি বৈধ। শুধু যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. পুনরায় বৈধ হওয়ার শর্ত
মাসিক শেষ হলে স্ত্রীকে গোসল করতে হবে। এরপর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক আবার হালাল হবে।
৫. আল্লাহর শিক্ষা
আয়াতের শেষে আল্লাহ বলেন: “আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন, আর যারা পবিত্রতা অবলম্বন করে তাদেরকেও ভালোবাসেন।”
অর্থাৎ,
তওবা: গুনাহ থেকে ফিরে আসা।
পরিশুদ্ধতা: আত্মিক ও শারীরিক পবিত্রতা।
✅ সংক্ষেপে শিক্ষা
1. মাসিক অবস্থায় স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
2. তবে স্ত্রীকে ঘৃণা করা বা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রাখা ইসলামে নেই।
3. মাসিক শেষে পবিত্রতা অর্জন করলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক পুনরায় হালাল হয়।
4. ইসলাম ভারসাম্যপূর্ণ জীবন বিধান দেয়, যেখানে না ইহুদিদের মতো চরমতা আছে, না অন্যদের মতো অবহেলা আছে।
রেফারেন্স:
-তাফসীর ইবন কাসীর, সূরা আল-বাকারাহ ২:২২২
-সহীহ বুখারী, হাদীস: ২৯৫
-সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৩০২।