The Quran Verse

The Quran Verse Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from The Quran Verse, Digital creator, Satkhira.
(1)

   #একটুখানি_তাদাব্বুর সূরা আল বাকারাতে ২২২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ নারীদের মাসিকের বিষয়টা পরিষ্কার করে বলেছেন।  আয়াতটি হলো...
23/09/2025


#একটুখানি_তাদাব্বুর
সূরা আল বাকারাতে ২২২ নং আয়াতে মহান আল্লাহ নারীদের মাসিকের বিষয়টা পরিষ্কার করে বলেছেন। আয়াতটি হলো:

> وَيَسْـَٔلُونَكَ عَنِ ٱلْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَٱعْتَزِلُوا۟ ٱلنِّسَآءَ فِى ٱلْمَحِيضِ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ ٱللَّهُ ۚ إِنَّ ٱللَّهَ يُحِبُّ ٱلتَّوَّٰبِينَ وَيُحِبُّ ٱلْمُتَطَهِّرِينَ
(সূরা আল বাকারা ২:২২২)

সরল বাংলা অর্থঃ
“তারা আপনাকে মাসিক (ঋতুস্রাব) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে। বলুন, এটি কষ্টদায়ক (এবং অশুচি)। সুতরাং মাসিক অবস্থায় তোমরা স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। আর যখন তারা পবিত্র হয়ে যায়, তখন তাদের কাছে যাও সেই পথে যেভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য নির্দেশ করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং যারা পরিশুদ্ধ থাকে তাদেরকেও ভালোবাসেন।”

আয়াতের তাফসীর

১. প্রশ্নের প্রেক্ষাপট
সাহাবীগণ নবীজী ﷺ-কে মাসিক সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন, কারণ ইহুদিদের সমাজে মাসিক মহিলাকে সম্পূর্ণভাবে ঘরে আলাদা রাখা হতো, তাদের সাথে খাওয়া-দাওয়া করাও নিষিদ্ধ মনে করত। অন্যদিকে কিছু জাতি কোনো বিধিনিষেধ মানতো না। তাই ইসলাম সঠিক দিকনির্দেশ দিল।

২. মাসিক অবস্থার বাস্তবতা
আল্লাহ বলেছেন: “হুয়া আযা” অর্থাৎ এটি একটি শারীরিক কষ্ট ও অস্বস্তিকর অবস্থা। তাই এ সময়ে স্ত্রী সহবাস বৈধ নয়।

৩. নিষেধাজ্ঞার সীমা
এ আয়াতে বলা হয়েছে:
মাসিক অবস্থায় স্ত্রী-সহবাস হারাম।
তবে একসাথে খাওয়া, ঘুমানো, আলাপচারিতা ইত্যাদি বৈধ। শুধু যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪. পুনরায় বৈধ হওয়ার শর্ত
মাসিক শেষ হলে স্ত্রীকে গোসল করতে হবে। এরপর স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক আবার হালাল হবে।

৫. আল্লাহর শিক্ষা
আয়াতের শেষে আল্লাহ বলেন: “আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন, আর যারা পবিত্রতা অবলম্বন করে তাদেরকেও ভালোবাসেন।”
অর্থাৎ,
তওবা: গুনাহ থেকে ফিরে আসা।
পরিশুদ্ধতা: আত্মিক ও শারীরিক পবিত্রতা।

✅ সংক্ষেপে শিক্ষা

1. মাসিক অবস্থায় স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
2. তবে স্ত্রীকে ঘৃণা করা বা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রাখা ইসলামে নেই।
3. মাসিক শেষে পবিত্রতা অর্জন করলে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক পুনরায় হালাল হয়।
4. ইসলাম ভারসাম্যপূর্ণ জীবন বিধান দেয়, যেখানে না ইহুদিদের মতো চরমতা আছে, না অন্যদের মতো অবহেলা আছে।

রেফারেন্স:
-তাফসীর ইবন কাসীর, সূরা আল-বাকারাহ ২:২২২
-সহীহ বুখারী, হাদীস: ২৯৫
-সহীহ মুসলিম, হাদীস: ৩০২।

 #একটুখানি_তাদাব্বুর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং জীবন ঘনিষ্ঠ একটি আয়াত হলো সুরা ক্বাফ এর ১৬ নং আয়াত। আয়াতে বলা হয়েছে—وَنَحْنُ ...
18/09/2025

#একটুখানি_তাদাব্বুর

খুবই তাৎপর্যপূর্ণ এবং জীবন ঘনিষ্ঠ একটি আয়াত হলো সুরা ক্বাফ এর ১৬ নং আয়াত। আয়াতে বলা হয়েছে—

وَنَحْنُ أَقْرَبُ إِلَيْهِ مِنْ حَبْلِ الْوَرِيدِ

"আর আমি মানুষের তার গ্রীবাস্থিত ধমনী থেকেও অধিক নিকটবর্তী।"

আয়াতের তাফসীরঃ
আয়াতে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা মানুষের প্রতি তাঁর নৈকট্য বর্ণনা করেছেন।

গ্রীবাস্থিত ধমনী (জুগুলার ভেইন বা ক্যারোটিড আর্টারি) মানুষের জীবনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরা। এটি যদি কেটে যায়, মানুষ মুহূর্তেই মৃত্যুবরণ করে।

আল্লাহ বলেন, তিনি মানুষের এই জীবন-রক্ষাকারী শিরার থেকেও কাছে আছেন।
সুবহানাল্লাহ।

তাফসীরকারদের ব্যাখ্যাঃ

১. ইবন কাসীর (রহঃ) বলেছেন—
আল্লাহর জ্ঞান, কুদরত ও ইলম মানুষের সাথে এতটাই ঘনিষ্ঠ যে, তার অন্তরের গোপন কথা, চিন্তা-ভাবনা ও নিয়তের খবর আল্লাহর কাছে গোপন থাকে না।

২. তাবারী (রহঃ) বলেন—
এর মানে হচ্ছে, আল্লাহর ফেরেশতারা মানুষের সঙ্গে থাকে, তার আমল রেকর্ড করে, এবং আল্লাহর ইলম সর্বদা তার সাথে থাকে।

৩. কুরতুবী (রহঃ) বলেন—
আল্লাহর নৈকট্য বলতে শারীরিক স্থান বোঝানো হয়নি। বরং বোঝানো হয়েছে— আল্লাহ তাঁর ইলম, দৃষ্টি ও ক্ষমতায় মানুষের সাথে আছেন, এমনকি নিজের রগ থেকেও নিকটবর্তী।

শিক্ষাঃ
আয়াতটি আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয় ভাবতে অনুপ্রাণিত করে।

>> আল্লাহ আমাদের অন্তরের সবকিছু জানেন, এমনকি মুখে প্রকাশ না করা চিন্তাও।

>> গুনাহ করতে গেলে মনে রাখতে হবে— আল্লাহ সবসময় আমাদের নিকট আছেন।

>> দোয়া, ইবাদত ও অন্তরের কথাও আল্লাহ শুনেন। তাই সদা সর্বদা তাঁকে স্মরণ করে জিকির আসকারে রত থাকা উচিত।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে আয়াতটি সম্পর্কে গভীর তাদাব্বুর করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।

📖 রেফারেন্স:

১.তাফসীর ইবন কাসীর, সুরা ক্বাফ ১৬

২. তাফসীর আল-জামি' লি আহকামিল কুরআন (কুরতুবী), সুরা ক্বাফ ১৬

 #একটুখানি_তাদাব্বুরআলহামদুলিল্লাহ 🌸,اللَّه تعالى বলেন—لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ ۖ"দ্বীনের ব্যাপারে কোন (জোর)জবরদস্তি ...
31/08/2025

#একটুখানি_তাদাব্বুর

আলহামদুলিল্লাহ 🌸,

اللَّه تعالى বলেন—

لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ ۖ
"দ্বীনের ব্যাপারে কোন (জোর)জবরদস্তি নেই।"
(সূরা আল-বাকারা ২:২৫৬)

আয়াতটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই আয়াত আসলে ইসলামের অসাধারণ দয়া, ভালোবাসা ও ন্যায়ের ঘোষণা প্রকাশ করে।

মানুষকে দ্বীনের পথে ডাকতে হবে—কিন্তু কখনো জোর করে নয়। এটা ইসলামের একটা অসাধারণ বৈশিষ্ট্য। কারণ, ঈমান মানুষের হৃদয়ের বিশ্বাস, জবরদস্তি দিয়ে কাউকে সত্যিকার ঈমানদার বানানো যায় না।

🔹 ইসলামের সৌন্দর্য এখানেই যে, মানুষকে সত্য জানানো হবে, প্রমাণ দেখানো হবে, আর বাকি অংশ আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। মানুষকে চিন্তা করতে দেওয়া হবে—সে চাইলে গ্রহণ করবে, না চাইলে না করবে।

🔹 এই আয়াত মানুষকে মর্যাদা ও স্বাধীনতা দিয়েছে। যেমন, আল্লাহ মানুষকে যখন সৃষ্টি করেছেন, তখনই তাকে বেছে নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন—ইচ্ছে করলে হিদায়াত গ্রহণ করবে, ইচ্ছে করলে অস্বীকার করবে। তাই দ্বীনের ব্যাপারে জবরদস্তি আসলে মানুষের ফিতরার (প্রকৃতির) বিরুদ্ধে।

🔹 এখানে ইসলামের মানবিকতা ফুটে উঠেছে। ইসলাম কেবল দাসত্ব থেকে মুক্ত করেনি, বরং চিন্তা-চেতনা, বিশ্বাস ও হৃদয়ের স্বাধীনতাও রক্ষা করেছে।

ইসলামের কিছু হৃদয় ছোঁয়া শিক্ষাঃ

১. দ্বীন ভালোবাসার নাম – কাউকে ভয় দেখিয়ে বা চাপ দিয়ে মুসলমান বানানো যায় না। বরং ভালোবাসা, দয়া, যুক্তি, ও সুন্দর আচরণের মাধ্যমে মানুষকে দ্বীনের দিকে ডাকতে হবে।

২. মানবিক স্বাধীনতা রক্ষা – ইসলাম মানুষকে স্বাধীনভাবে চিন্তা করার অধিকার দিয়েছে। এটা প্রমাণ করে ইসলাম কোনো অন্ধকারাচ্ছন্ন ধর্ম নয়, বরং জ্ঞানের, আলোচনার ও সত্যের ধর্ম।

৩. আমাদের দায়িত্ব – আমরা কাউকে মুসলমান বানাতে পারব না, এটা আল্লাহর কাজ। আমাদের কাজ হলো মানুষের সামনে সত্যকে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরা, যেমন রাসূল ﷺ করেছেন।

৪. ধর্মান্তরে শান্তি – যারা সত্যিকার অর্থে ইসলাম গ্রহণ করেছে, তাদের হৃদয়ে শান্তি নেমে আসে। কারণ তা আসে ভালোবাসা দিয়ে, জোর করে নয়।

এছাড়াও এই আয়াত আমাদের শেখায়, দ্বীনের দাওয়াত হবে করুণাময় আহ্বান, কখনো জোর-জবরদস্তি নয়। ইসলাম হলো হৃদয়ের আলো—এই আলো চাপিয়ে দেওয়া যায় না, বরং হৃদয়ে নিজে থেকেই জায়গা করে নেয়।

মহান আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেওয়ার তাওফিক দান করে আমাদের হৃদয়কে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দিন।
আমিন।

হিসাব নিকাশের সময় আসন্ন, অথচ আমরা বেখবর...
18/08/2025

হিসাব নিকাশের সময় আসন্ন, অথচ আমরা বেখবর...

‎ #একটুখানি_তাদাব্বুর  ‎‎‎أَفَرَأَيْتُم مَّا تُمْنُونَ‎"তোমরা কি ভেবে দেখেছো, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে?"‎— (সূরা আল-ওয়া...
01/08/2025

‎ #একটুখানি_তাদাব্বুর


‎أَفَرَأَيْتُم مَّا تُمْنُونَ
‎"তোমরা কি ভেবে দেখেছো, তোমাদের বীর্যপাত সম্পর্কে?"
‎— (সূরা আল-ওয়াকিয়া, আয়াত ৫৮)

‎🔍 একটু চিন্তা করি :

‎আল্লাহ তাআলা এই আয়াতে মানুষকে তাদের সৃষ্টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে বলছেন। মানুষ যখন সন্তান জন্ম দেয়, তখন সে মনে করে, তার বীর্যপাতই সবকিছু। অনেকেই তো আবার সন্তান হওয়ানোকেই নিজের ক্রেডিটও দিতে চায়! কিন্তু আল্লাহ জিজ্ঞাসা করছেন:

‎> "তোমরা কি সত্যিই ভেবে দেখেছো যে, তোমাদের বীর্য—যা দিয়ে সন্তান জন্ম নেয়—এর পেছনে কার ক্ষমতা কাজ করছে?"

‎মানুষ কেবল মাধ্যম; মূল সৃষ্টিকর্তা হচ্ছেন আল্লাহ। তুমি বীর্যপাত করলে, কিন্তু তা থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ শিশু সৃষ্টি হওয়া, তার জীবন থাকা, আত্মা প্রদান, রূপ-রং, বুদ্ধি, স্বাস্থ্য — সবই আল্লাহর ইচ্ছা ও পরিকল্পনায়।

‎📖 এরপরের আয়াতগুলিতে আরও বলা হয়:

‎> “তোমরা কি এটা সৃষ্টি করো, না আমি সৃষ্টি করি?”
‎— (সূরা আল-ওয়াকিয়া, আয়াত ৫৯)

‎আল্লাহ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, আমরা যেন অহংকারী না হই। সন্তান জন্ম নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াই এক বিস্ময়কর, নিখুঁত ব্যবস্থা — যা একমাত্র আল্লাহর কুদরতেই সম্ভব।


‎📌 শিক্ষণীয় বিষয়:

‎১. 🧠 মানুষ যেন নিজের ক্ষমতায় গর্ব না করে, বরং স্রষ্টাকে চিনে নেয়।
‎২. 👶 সন্তানের জন্ম একটি অলৌকিক ব্যাপার যদিও তা মহান আল্লাহর কাছে অত্যন্ত সহজ।
‎৩. 🕋 এই আয়াত মানুষকে আত্ম-পর্যালোচনার দিকে আহ্বান জানায়—আরো জানায় আমাদের সৃষ্টি কেমন দুর্বল ও নির্ভরশীল!
‎৪. 💭 এই আয়াত থেকে তাওহিদের শিক্ষা মেলে—সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ একমাত্র আল্লাহর হাতে।

‎আল্লাহ তাআলা এই আয়াতের মাধ্যমে আমাদের আত্মতত্ত্ব, সৃষ্টিতত্ত্ব এবং তাঁর অসীম কুদরতের প্রতি মনোযোগ দিতে আহ্বান করছেন।

‎উৎস:
‎📘 আল-কুরআন, সূরা আল-ওয়াকিয়া (৫৬), আয়াত ৫৮-৫৯
‎📚 তাফসির ইবনে কাসীর, তাফসির আস-সা'দী।

25/07/2025
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَاعِبِينَআকাশ পৃথিবী এতদুভয়ের মধ্যে যা আছে, তা আমি (আল্লাহ) ক্...
18/07/2025

وَمَا خَلَقْنَا السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا لَاعِبِينَ
আকাশ পৃথিবী এতদুভয়ের মধ্যে যা আছে, তা আমি (আল্লাহ) ক্রীড়াচ্ছলে সৃষ্টি করিনি।
______
(সূরা আম্বিয়া, আয়াতঃ ১৬)।

হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের  নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন।(সূরা আত তাহরীম, আয়াত ৮)।
01/05/2025

হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন।
(সূরা আত তাহরীম, আয়াত ৮)।

 #একটুখানি_তাদাব্বুর "জীবনের কোনো এক মোড়ে আমরা সবাই হয়তো এমন কষ্ট পাই, যা কাউকে বলা যায় না…হৃদয়ের গভীর থেকে যখন কান্না ও...
24/04/2025

#একটুখানি_তাদাব্বুর

"জীবনের কোনো এক মোড়ে আমরা সবাই হয়তো এমন কষ্ট পাই, যা কাউকে বলা যায় না…
হৃদয়ের গভীর থেকে যখন কান্না ওঠে—তখন শব্দ হয়ে ওঠে ভারী, চোখ হয়ে যায় আর্দ্র।
কিন্তু তখন—আমরা কি কাউকে পাই?
পাই কি এমন একজনকে, যার সামনে কাঁদা যায় নির্ভয়ে, যিনি জানেন আমাদের চোখের অশ্রুর মানে?"

قَالَ إِنَّمَا أَشْكُو بَثِّي وَحُزْنِي إِلَى اللَّهِ
“তিনি বললেন, আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি…” (সূরা ইউসুফ ১২:৮৬)

"এ কথা বলেছিলেন এক পিতা, যিনি হারিয়েছিলেন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় পুত্র—ইউসুফ (আলাইহিস সালাম)।
বছরের পর বছর কেটে গেছে। কেবল স্মৃতি আর আশায় তিনি বেঁচে ছিলেন।
কিন্তু তিনি কাউকে অভিযোগ করেননি…
তিনি দুঃখ করেননি মানুষের কাছে…
তিনি শুধু বললেন—
'আমি আমার দুঃখ ও কষ্ট কেবল আল্লাহর কাছেই বলি।'"

এটি মূলত হৃদয়ভাঙ্গা কান্না ও আস্থার এক গল্প যা ইয়াকুব আঃ আমাদেরকে শিখিয়ে গিয়েছেন।

"এটা ছিলো ধৈর্যের চূড়ান্ত রূপ।
এটা ছিলো ঈমানের গর্বিত ঘোষণা।
এটা ছিলো সেই কান্না—যার প্রতিধ্বনি আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
একজন নবীর অশ্রু, যার শক্তি ছিল আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল।

এই আয়াত আমাদের শেখায়—
যখন পৃথিবী বোবা হয়ে যায়, তখন আকাশ কথা বলে।
যখন কেউ বোঝে না, তখন রব বোঝেন।"

এই আয়াত আমাদেরকে আরো যা যা শেখায় তা হলো:

১. আত্মার গভীর কষ্টের মুক্তি:
এই আয়াতে ইয়াকুব (আ.) প্রকাশ করছেন—তিনি তাঁর কষ্ট মানুষকে বোঝান না, বরং একমাত্র আল্লাহর কাছেই তা বলেন। এটি একজন মুমিনের জন্য বড় শিক্ষা—আমাদের দুঃখ-ব্যথা, যন্ত্রণার গভীরতর অনুভূতিগুলো সবচেয়ে ভালোভাবে আল্লাহই বোঝেন।

২. আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা:
ইয়াকুব (আ.) অনেক বছর ধরে তাঁর প্রিয় পুত্র ইউসুফ (আ.)-কে হারিয়ে ছিলেন। তবুও তিনি আশা হারাননি। তিনি বলছেন, “আমি আল্লাহ সম্পর্কে এমন কিছু জানি যা তোমরা জানো না”—এখানে বুঝা যায় যে তিনি আল্লাহর করুণা, প্রজ্ঞা ও প্রতিশ্রুতির উপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন।

৩. অশ্রুভেজা হৃদয়ের দোয়া:
ইবনে কাসীর (রহ.) বলেন, ইয়াকুব (আ.) এই কথাগুলো বলার সময় এতটাই ব্যথিত ছিলেন যে তাঁর চোখ অন্ধ হয়ে গিয়েছিল কান্নার কারণে (সূরা ইউসুফ ৮৪)। এটি বোঝায় যে দুঃখ প্রকাশ করলে তা কেবল আল্লাহর দরবারেই করা উচিত, যিনি সৃষ্টিকর্তা ও দয়াময়।

৪. আধ্যাত্মিক শক্তি ও ধৈর্যের অনন্য দৃষ্টান্ত:
এই আয়াত ধৈর্য ও ঈমানের এক চরম নিদর্শন। যেকোনো বিপদে একজন মুমিন কিভাবে আত্মা ও হৃদয়ের কান্না আল্লাহর সামনে উন্মুক্ত করে তাতে শান্তি ও সাহায্য পায়—এই আয়াত তার নিখুঁত প্রতিচ্ছবি।

৫. তাওয়াক্কুল (আল্লাহর উপর ভরসা) এর শিক্ষা:
মানুষ অনেক সময় বলতেই পারে না তার ভেতরের দুঃখ। কিন্তু আল্লাহ জানেন সব কিছু। ইয়াকুব (আ.)-এর মতো আমরাও শিখি—কান্না, দুঃখ, আশা—সব কিছুর ঠিকানা আল্লাহ।

এই আয়াত এমন এক দোয়া ও কান্নার ভাষা যা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ বোঝে না। এটি প্রমাণ করে, কষ্ট যত গভীরই হোক না কেন, মুমিন তার ফয়সালা কেবল আল্লাহর কাছেই রাখে।

"আপনারও যদি আজ হৃদয় ভারী হয়…
কারো সাথে কিছু বলার না থাকে…
তাহলে এই আয়াত মনে রাখুন—
‘আমি তো আমার দুঃখ ও শোক কেবল আল্লাহর কাছেই বলি।’
তিনিই যথেষ্ট। তিনিই সবচেয়ে দয়াময়।"

 #খোলা_চিঠিকাকে পূজা দিচ্ছেন? ===============মানব জাতির জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সর্বশেষ বার্তা হলো আল কুরআন। এতে ব...
22/04/2025

#খোলা_চিঠি

কাকে পূজা দিচ্ছেন?
===============
মানব জাতির জন্য মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সর্বশেষ বার্তা হলো আল কুরআন। এতে বর্ণিত হয়েছে কি আমাদের করণীয় আর কিসে আসবে প্রকৃত সফলতা। এতে সতর্ক করা হয়েছে যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কিছুর পূজা করছে তাদেরকেও।
কিছু স্পষ্ট ও শক্তিশালী কুরআনের আয়াত দেওয়া হলো—যা মূর্তিপূজা, বহু উপাস্যে বিশ্বাস ও শিরকের বিরুদ্ধে সরাসরি সতর্ক করে। হিন্দু ভাইয়েরা মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

১. সূরা বাকারা, আয়াত ১৬৫

وَمِنَ ٱلنَّاسِ مَن يَتَّخِذُ مِن دُونِ ٱللَّهِ أَندَادًۭا يُحِبُّونَهُمْ كَحُبِّ ٱللَّهِ ۖ وَٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓا۟ أَشَدُّ حُبًّۭا لِّلَّهِ

অর্থ:
"মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহর পরিবর্তে অন্যদেরকে শরীক বানিয়ে নেয়, এবং তাদেরকে আল্লাহর মতো ভালোবাসে। অথচ ঈমানদাররা তো সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে আল্লাহকে।"

বার্তা:
আল্লাহর সমতুল্য অন্য কাউকে ভালোবাসা বা উপাসনা করা শিরক, যা মারাত্মক অপরাধ।

২. সূরা আর-রূম, আয়াত ৪০

ٱللَّهُ ٱلَّذِى خَلَقَكُمْ ثُمَّ رَزَقَكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ۖ هَلْ مِن شُرَكَآئِكُم مَّن يَفْعَلُ مِن ذَٰلِكُم مِّن شَىْءٍۢ ۚ سُبْحَـٰنَهُۥ وَتَعَـٰلَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ

অর্থ:
“আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, রিজিক দেন, মৃত্যু দেন ও আবার জীবন দান করবেন। তোমরা যাদের শরীক করো, তাদের কেউ কি এসবের কিছু করতে পারে? তিনি মহাপবিত্র, তারা যা শরীক করে তার ঊর্ধ্বে।”

বার্তা:
আল্লাহ ছাড়া কেউ সৃষ্টিকর্তা, রিজিকদাতা, জীবনদাতা হতে পারে না—তাদের উপাসনা করা অর্থহীন ও বিপজ্জনক।

৩. সূরা আল-আনবিয়াঃ আয়াত ৯৮–৯৯

إِنَّكُمْ وَمَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِ ٱللَّهِ حَصَبُ جَهَنَّمَ ۖ أَنتُمْ لَهَا وَارِدُونَ

অর্থ:
“তোমরা এবং তোমরা যাদের আল্লাহ ছাড়া উপাসনা করো—তোমরা সবাই জাহান্নামের জ্বালানি; তোমরা অবশ্যই সেখানে প্রবেশ করবে।”

বার্তা:
আল্লাহ ছাড়া যাদের উপাসনা করা হয় (যেমন মূর্তি, দেব-দেবী), তারা এবং তাদের উপাসকেরা—সবাই জাহান্নামের জ্বালানি হবে।

৪. সূরা যুমার, আয়াত ৬৫

لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ ٱلْخَـٰسِرِينَ

অর্থ:
“(হে নবী!) আপনি যদি শিরক করেন, তবে আপনার সব আমল নিষ্ফল হয়ে যাবে, এবং আপনি অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।”

বার্তা:
যদি নবীর মতো ব্যক্তি শিরক করতেন, তিনিও রক্ষা পেতেন না! তাহলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা হবে?

এরপরও আল্লাহকে বাদ দিয়ে আর কাকে ডাকছেন আপনার পালনকর্তা রুপে?

 #একটুখানি_তাদাব্বুর আয়াত:إِنَّ اللَّهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَالنَّوَىٰঅনুবাদ: “নিশ্চয় আল্লাহই বীজ ও আঁটি থেকে অঙ্কুর সৃষ্...
08/04/2025

#একটুখানি_তাদাব্বুর

আয়াত:
إِنَّ اللَّهَ فَالِقُ الْحَبِّ وَالنَّوَىٰ
অনুবাদ: “নিশ্চয় আল্লাহই বীজ ও আঁটি থেকে অঙ্কুর সৃষ্টিকারী।”
সূরা আল-আন‘আম (৬), আয়াত ৯৫

মহান আল্লাহর সর্বশেষ নির্দেশনা সম্বলিত মহা গ্রন্থ "আল কুরআন" বিশ্বাসীদের জন্য এক অপার নেয়ামত। এর পরতে পরতে লুকিয়ে রয়েছে আমাদের জন্য দিক নির্দেশনা। সূরা আল আনআম এর এমনই এক চিন্তা জাগানিয়া আয়াত হলো ৯৫ নম্বরের এই আয়াতটি।

১. আয়াতের মূল বার্তা:
আল্লাহ তাআলা এখানে তাঁর সৃষ্টিশক্তি ও একক নিয়ন্ত্রণের পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি সেই সত্তা যিনি মৃত, কঠিন বীজ ও আঁটির ভেতর থেকে জীবনের অঙ্কুরোদ্গম ঘটান। এটি একটি নিখুঁত উদাহরণ যে কিভাবে আল্লাহ মৃত বস্তু থেকেও প্রাণ সৃষ্টি করেন।

২. শব্দার্থ:

فَالِقُ (ফালিক):
চিরে ফেলা, বিভাজনকারী, অঙ্কুরোদ্গমকারী।

الْحَبِّ (হাব্ব):
সাধারণ বীজ, যেমন গম, ধান, যব ইত্যাদি।

النَّوَىٰ (নাওয়া):
আঁটি, যেমন খেজুর, আম, পীচ প্রভৃতি ফলের কাষ্ঠল অংশ।

৩. বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা:
আল্লাহর এই কর্মপ্রক্রিয়া আধুনিক বিজ্ঞানের সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ। বীজ বা আঁটির ভিতরে লুকিয়ে থাকা ভ্রূণের (embryo) একটি নির্দিষ্ট পরিবেশে পানির সংস্পর্শে এসে সক্রিয় হয়ে ওঠা এবং ধীরে ধীরে অঙ্কুরোদ্গম করা, এটি আল্লাহর কুদরত ছাড়া অসম্ভব।

৪. তাফসীরকারীদের ব্যাখ্যা:
তাফসীর ইবন কাসীর:
ইবন কাসীর বলেন, “এখানে বীজ ও আঁটির মাধ্যমে সাধারণ খাদ্যশস্য এবং ফলমূল বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা এগুলোকে চিরে এমন গাছ উদ্গত করেন যা মানুষ ও জীবজন্তুর জন্য খাদ্য হয়।”

তাফসীর আল-কুরতুবী:
কুরতুবী বলেন, “এই আয়াত আমাদেরকে বুঝিয়ে দেয় যে আল্লাহ ছাড়া কেউ বীজে প্রাণ দিতে পারে না। এতে তাওহীদের শক্তিশালী যুক্তি আছে।”

৫. আধ্যাত্মিক শিক্ষা:
এই আয়াত আমাদের শেখায়, কঠিন পরিস্থিতিতেও আল্লাহ তাআলা নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেন—যেমন কঠিন আঁটির ভিতর থেকেও নবজীবন বের হয়।

এটি আল্লাহর সৃষ্টি ও পুনরুত্থানের (resurrection) প্রমাণ, যেভাবে মৃত বীজে প্রাণ সঞ্চার হয়, তেমনি মৃত্যুর পর মানুষকেও পুনরায় জীবিত করা আল্লাহর পক্ষে সহজ।

এই আয়াত আল্লাহর সৃষ্টিশক্তি, একত্ববাদ এবং পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের একটি দৃষ্টান্তমূলক প্রকাশ। প্রতিটি বীজ এবং আঁটি অঙ্কুরিত হওয়া শুধু প্রাকৃতিক নিয়ম নয়, বরং তা আল্লাহর কুদরতের জীবন্ত নিদর্শন।
মহান আল্লাহ আমাদেরকে এই সত্য উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন।
আমিন।

রেফারেন্সসমূহ:

১. সূরা আল আনআম, আয়াত ৯৫ (আংশিক)
২. তাফসীরে ইবনে কাসীর (Arabic & Bengali Translation)
৩. তাফসীরে আল কুরতুবি
৪. Scientific sources on seed germination (e.g., Britannica, botany texts)

Address

Satkhira
9421

Telephone

+8801722645508

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when The Quran Verse posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share