18/07/2020
সাতলা বিল
এক পলকে মনে হবে, লাল শাপলার কোনো চাদর। পুরো বিলজুড়ে বিছানো শাপলা। তাই গ্রামটির নামই হয়ে গেছে 'শাপলা বিল'। সবাই এই নামে ডাকে সাতলা গ্রামটিকে।
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের কালবিলা গ্রামে প্রাকৃতিকভাবেই এই শাপলার অবারিত রঙ্গিন রুপ যে কাউকে মুগ্ধ করবে। রুপসী বাংলার এই রুপের প্রশংসা এখন গ্রাম ছাড়িয়ে দেশ-দেশান্তরে।
সাধারণত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এই বিলে লাল শাপলা ফুল ফোটে। আর ওই বিলের জলে ফুটন্ত লাল শাপলা দেখতে জেলা ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকরা আসেন।
শিগগিরই এটি দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিনত হতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা।বিলের চারপাশে গাঢ় সবুজের পটভূমিতে এ যেন বাংলার এক মুখরিত “লাল স্বর্গ”।
দূর থেকে সবুজের মধ্যে লাল রঙ দেখে দুরূহ হয়ে উঠার মতো অবস্থা। দূরত্ব কমার সাথে সাথে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ফুলের অস্তিত্ব। আগাছা আর লতা পাতায় ভরা বিলে ফুটন্ত কোটি কোটি লাল শাপলা সত্যিই সৌন্দর্যের লীলাভূমি।
বিলের লাল শাপলার নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। মনোমুগ্ধকর এ বিলের শাপলা দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্নস্থান থেকে ছুটে আসছেন ভ্রমন পিপাসু প্রকৃতি প্রেমিরা।
ফলে দিন-দিন দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠছে সাতলার ‘শাপলার বিল’।ঠিক কত বছর ধরে বিলে এভাবে শাপলা জন্মাতে শুরু করেছে সঠিকভাবে সে তথ্য কেউ দিতে না পারলেও স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, তাদের জন্মের পর থেকেই এ বিলে এভাবে শাপলা ফুটতে দেখছেন তারা।
বছরের অধিকাংশ সময় জলমগ্ন এ বিলে লাল, সাদা ও বেগুনি রঙয়ের তিন ধরনের শাপলা জন্মালেও লাল শাপলার আধিক্য বেশি।
বিলের যতো ভেতরে এগুতে যাবেন ততোই লালের আধিক্য। এক পর্যায়ে মনে হবে শাপলার রাজ্যে বন্দি হয়ে আছেন আপনি।তাছাড়া শাপলার বিল শুধু সৌন্দর্য্য নয় বিল থেকে শাপলা তুলে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে ওইসব এলাকার অসংখ্য পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছেন। এখাকার বাসিন্দাদের অনেকেই এই বিলের শাপলার ওপর নির্ভরশীল। এদের কেউ শাপলা তুলে, কেউবা বিল থেকে মাছ শিকার করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন ওই এলাকার কয়েক শ’ পরিবার।
এখানে ডিসেম্বর মাসে শুরুর দিকে শীতের মৌসুমে যখন পানি কমে যায় তখন সব শাপলা মরে যায়। ওই সময় কৃষকরা এখানে ধান চাষ করেন। তবে একই সাথে ধান ও শাপলার এই সহাবস্থান আর কোথাও আছে কিনা সন্দেহ।