01/06/2024
ইমাম মাহদী আছেন কোথায়,তাঁর জন্মস্থান ও তাকে পাবো কোন দলে?
বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা যাকঃ
আল্লাহর মনোনীত খলিফা ইমাম মাহদী ৪০ বছর বয়সে হজ্জ্বের সময় পবিত্র কাবা শরীফে তার আবির্ভাব হবে।
তবে ৪০ বছর পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা মাহদীকে গোপন রাখবেন, যাতে কাফেররা কোন ভাবেই চিনতে না পারে।
হাদিস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইমাম মাহদীর শত্রু সুফিয়ানী মক্কায় কুরাইশ বংশের কিছু লোকদেরকে হত্যা পর্যন্ত করবে, যাতে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ আল মাহদী নামে কারো আবির্ভাব হতে না পারে। তা সত্ত্বেও ঈমানদারেরা মক্কায় মাহদীকে ঠিকই চিনে ফেলবে এবং তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও জোর করেই তার হাতে বাইয়াত নিবে এবং খলিফার আসনে নিযুক্ত করবে।
মুসলিম উম্মাহর মুমিন ও ঈমানদারদের বোঝার জন্য চলুন কিছু বিষয় আলোচনা সাপেক্ষে দেখে নেওয়া যাক।
১.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, মাহদীর আগমন (জন্ম) হবে এমন একটি গ্রাম থেকে, যাকে" কারাহ " বলা হয়।
(লেখকঃ আল্লামা জালাল উদ্দিন সুয়ুতী (রহঃ), আল আরিফুল আরদি ফি আখবারিল মাহদী)
ইমাম মাহদী "কারাহ" নামক গ্রাম থেকে আসবেন (অর্থাৎ জন্ম গ্রহণ করবেন)।
(রিসালাত আল খুরুজ আল মাহদী পৃষ্ঠা নং - ৬৯)
২.রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, একজন লোক (মাহদী) মদিনা থেকে (একটি বড় থেকে) মক্কায় আসবেন, লোকজন তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাবা শরীফ ও মাকামে ইব্রাহিমের পাশে বাইয়াত গ্রহণ করবে (খলিফা নিয়োগ করবে)
(লেখকঃ মারী বিন ইউসুফ কারামী হাম্বলী, (ফাতাওয়ায়ে আল ফিকহ ফিল মাহদী আল মুনতাজার)
৩.সৈয়দ আহমেদ হিশামুদ্দিন (রাহঃ) ইমাম মাহদীর জন্মস্থান সম্পর্কে লিখেছেন, "কাকেশাশ" অঞ্চলের সর্বোচ্চ চুড়া, যেখানে সূর্যের রশ্মি পরে, সেখানকার মুসলমানদের থেকে একজন লোক (ইমাম মাহদী) আসবেন।
(উসমান ইউকসেল সারদেনগেকটিঃ মাবেদসিজ সাহের (যার বাংলা অর্থ হল, যেখানে কোন উপাসনালয় নাই) পৃষ্ঠা নং - ১০৭)
*** "কারাহ" বা, "কারাকুল" নামে মধ্যযুগে যে গ্রাম বা, শহরের নাম পাওয়া যায় সেগুলো হল মধ্য এশিয়ার দেশ তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, এবং পূর্ব তুর্কিস্থান এর সীমান্তবর্তী এলাকায়।
এ দেশে হয়তো ইমাম মাহদর আসতে পারেন। যদিও আল্লাহ আলম।আল্লাহ ভালো জানেন। চলুন এ বিষয়টা একটু দেখে আসা যাকঃ
হযরত জাফর সাদিক (রহঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, "বনি তামিম গোত্রের শুয়াইব ইবনে সালেহ প্রাচ্যের সমরখন্দ থেকে আবির্ভূত হবেন"। (উল্লেখ সমরখন্দ এলাকাটি বর্তমান উজবেকিস্তানের একটি এলাকার নাম). [কিতাবুল গাইবাত]
হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, মাহদী (আঃ) এবং শুয়াইব ইবনে সালেহ একই জেলা বা, প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত হবেন"।[কিতাবুল ফিতানঃ হাদিস নং - ৮৯৯]
একটি হাদীস থেকে জানা যায় , খোরাসানের কালো পতাকাবাহী দল যদি বের হয়, তাহলে তোমরা বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাদের সাথে যোগ দিবে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কেন বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও যোগ দিতে বলেছেন?
অত্যন্ত আশ্চর্যের ব্যাপার হল, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান ও পূর্ব তুর্কিস্থানের এই "কারাকুল" হল একটি পাহাড়ি এলাকা এবং এখানে সবসময়ই বরফ আচ্ছাদিত থাকে।
হযরত ছওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “তোমাদের ধনভাণ্ডারের (রাজত্বের জন্য) নিকট তিনজন বাদশাহ এর সন্তান যুদ্ধ করতে থাকবে। কিন্তু ধনভাণ্ডার (রাজত্ব) তাদের একজনেরও হস্তগত হবে না। তারপর পূর্ব দিক (খোরাসান) থেকে কতগুলো কালো পতাকাবাকী দল আত্মপ্রকাশ করবে। তারা তোমাদের সাথে এমন ঘোরতর লড়াই লড়বে, যেমনটি কোন সম্প্রদায় তাদের সঙ্গে লড়েনি”। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর নবীজি (সাঃ) আরও একটি বিষয় উল্লেখ করে বললেন, “তারপর আল্লাহর খলীফা মাহদির আবির্ভাব ঘটবে। তোমরা যখনই তাঁকে দেখবে, তাঁর হাতে বাইয়াত নেবে। যদি এজন্য তোমাদেরকে বরফের উপর দিয়ে হামাগুড়ি খেয়ে যেতে হয়, তবুও যাবে। সে হবে আল্লাহর খলীফা মাহদি”।
[সুনানে ইবনে মাজা; খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ১৩৬৭; মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৫১০]
এছাড়াও অসংখ্য হাদীসে বলা হয়েছে, মাহদী পূর্বদিকের একটি শহরে জন্মগ্রহণ করবেন।
তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের এই "কারাকুল" এলাকাটি কিন্তু মক্কা ও মদিনা থেকে পূর্ব দিকেই অবস্থিত।আর "কারাকুল" এলাকাটি থেকে বর্তমান আফগানিস্তানের দূরত্ব খুব একটা বেশি নয়। আর খোরাসানের কালো পতাকাবাহী দল যেহেতু এই এলাকা থেকেই বের হবে, তাই এখানেই মাহদীর জন্মস্থান হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে।
হযরত সুফিয়ান কালবী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মাহদীর দলে এক কম বয়সী, পাতলা দাড়ি বিশিষ্ট, এবং হলুদ বর্ণের এক তরুন যুবক(হারস হাররাস)বের হবে। আর ’ওয়ালীদ হলুদ বর্ণ’ উল্যেখ করেন নাই। যদি পাহাড়ের সাথে যুদ্ধ করে তাহলে পাহাড়কে কাপিয়ে দিবে। আর ওয়ালীদ বলেন ’ভেঙ্গে ফেলবে’।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯০২ ]
এক লোক মা-আরউন্নহর (নদীর ওপার) থেকে রওনা হবে, যার নাম হবে হারছ হাররাছ। তার বাহিনীর সম্মুখ অংশের সেনাপতির নাম হবে মানসুর, যে (খেলাফত বিষয়ে) মুহম্মদ বংশের জন্য পথ সুগম করবে বা শক্ত করবে, যেমনটি কুরাইশ আল্লাহর রাসুল (সঃ) কে ঠিকানা দান করেছিল। তার সাহায্য সহযোগিতা করা কিংবা তার ডাকে সাড়া দেওয়া প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য বলে বিবেচিত হবে”। [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪২৯০]
এখানে আমু নদীর ওপারে অবস্থিত বলতে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে ইসলামের পরিভাষায় ‘মা-আরউন্নহর’ বা ‘নদীর ওপার’ বলা হয়। উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান,কাজিকিস্তান এর অন্তর্ভুক্ত।
তাই যারা ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের অপেক্ষায় রয়েছেন, তাঁদেরকে অবশ্যই মধ্য এশিয়ার দেশ উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, পূর্ব তুর্কিস্থান, আফগানিস্তান, কাজাকিস্তান এসকল দেশ সমূহের উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখতে হবে।
এছাড়াও মধ্য এশিয়ার কালো পতাকাবাহী দল গুলো যেমনঃ
১.Cacusas emirate, vilayat (ইসলামিক ইস্টেট এর মধ্য এশিয়ার শাখা)
২.Islamic movement of Uzbekistan - (IMU)
৩.East Terkistan Islamic parties,
৪.আনসার আল ফুরকান (ইরানের আল কায়দার শাখা)
৫.Islamic state of Khurasan এই সকল কালো পতাকাবাহী দল গুলোর উপরও তীক্ষ্ণ নজর রাখা খুবই জরুরী।
উপরোক্ত সবগুলো দলের সাথে সবগুলো দলের কম বেশি সম্পর্ক রয়েছে তাছাড়া তালেবান ও পাকিস্তানের জিহাদীপন্থীদের সাথে তাদের যোগাযোগ রয়েছে। এ দলগুলো তৈরি হয়েছে শুধু আল্লাহ এর জন্য খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করতে। তবে বিশ্বের অপশক্তিগুলো এদের কে টেরোরিস্ট বলে আখ্যা দিয়েছেন। তবে বুঝুন ব্যপারটা।
তবে মনে রাখতে হবে, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সব কিছু ভালে জানেন তাছাড়া আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা ছাড়া কেউ গায়েব জানেন না তবে তিনি তার মনোনীতদের মধ্যে যাকে যতটুকু জানানোর প্রয়োজন মনে করেন তাকে ততটুকু জানিয়ে থাকেন।
আল্লাহ আমাদের সহিহ বুঝ দান করুক ও ইমাম মাহদীর সহযোগী যোদ্ধা হিসেবে কবুল করুন। এবং তার হাতে বাইয়াত নিতে পারি আর ইসলামের খিলাফাহ প্রতিষ্ঠায় নিজের জান কুরবান করে দিতে পারি।
হে খোদা! তুমি অনাদি ও অনন্ত। তুমি ব্যতীত আর কেউ উপাস্য নেই। যখন তুমিই অসীম, তখন তুমি ব্যতীত আর দ্বিতীয় কে থাকতে পারে? আমার মতো জ্ঞানহীন অজ্ঞ ব্যক্তি আল্লাহ্কে কিভাবে চিনতে পারে? আমি এ পৃথিবী থেকে সে পবিত্র স্বত্বা পর্যন্ত কিভাবে পৌঁছতে পারি? সেখানে পৌঁছার মত আমার জ্ঞান নেই, শক্তি নেই।
তুমি লাভ-লোকসানের সীমা থেকে পবিত্র। না হযরত মূসার (আঃ) দ্বারা তোমার কোন উপকার হয়, না ফেরআউন তোমার কোন ক্ষতি করতে পারে। পৃথিবীর কোন বস্তুই তোমার মতো প্রশস্ত নয়! যখন কেউই তোমার স্বত্বার মূলতত্ত্ব জানতে সক্ষম নয়, তখন আমি তোমার পরিচয় জ্ঞান কিভাবে লাভ করতে পারি?
হে খোদা! সমস্ত পৃথিবী হয়রান, আর তুমি পর্দার পিছনে গোপনে রয়েছ। তোমার সম্মুখের পর্দা উন্মোচন কর, আমাকে আর কষ্ট দিও না! এ পর্দার ব্যবধানে রেখে আমার অন্তরকে আর দগ্ধ করিও না। আমি এ সমুদ্রে (পৃথিবীতে) বিলীন হয়ে গেছি, আমাকে মুক্তি দাও। আমি আকাশের সমুদ্রের মধ্যে পড়ে রয়েছি এবং রহমতের বেষ্টনী থেকে বাইরে রয়েছি। আমাকে এ সমুদ্র থেকে বের করে রহস্যের সন্ধান দাও! তুমিই আমাকে এ সমুদ্রে নিক্ষেপ করেছ এবং তুমিই উদ্ধার করবে।
আমি আপাদমস্তক লোভ-লালসায় ডুবে রয়েছি। তুমি আমার হাত না ধরলে, আমায় সাহায্য না করলে আমার অবস্থা খুবই দুর্দশাগ্রস্ত হবে। আমার অন্তকরণ অযথা ও অর্থহীন চিন্তাধারায় ভরপুর; পাপ করার শক্তিও আমার আর নেই। তুমি আমাকে এ নিন্দনীয় কাজ ও পাপ থেকে মুক্তি দাও, তা না হলে আমি অধম ধ্বংস হয়ে যাব। সকলেই তোমাকে ভয় করে, আর আমি আমাকে ভয় করি! কেননা, আমি সর্বদা তোমাকে মঙ্গলময়রূপে দেখি, আর আমাকে আমি খান্নাসরুপেই বেশি দেখতে পাই।
হে মুখাপেক্ষীহীন খোদা! আমার এ ইচ্ছাকে দেখ এবং আমাকে ভয় থেকে মুক্তি দাও!
হে দয়াময় আল্লাহ তুমি বলেছো যারা অন্ধকারচ্ছন্ন এই সময়ে তোমার পথে জিহাদ করবে তুমি তাদেরকে মুক্তি দিবে এবং তুমি বলেছ যারা শহীদ হবে তাদের মর্যাদা তোমার কাছে অনেক ঊর্ধ্বে। হে আল্লাহ আমাকে গাজী বানানোর দরকার নেই আমাকে শহীদি মৃত্যু নসিব করুন।
হে আল্লাহ এখন গোটা বিশ্ব বিপদের মধ্যে রয়েছে তার থেকে বেশি বিপদে রয়েছে তোমার পথে কালেমার পতাকা উত্তোলন করা মুজাহিদিন ও তার পরিবারবর্গ । হে দয়াময় যদিও আপনি সবকিছু জানেন ও নির্দিষ্ট সময়ের আগে কোন কিছুই সম্ভব নয়। তাই আমাদেরকে আপনি ধৈর্য,ইমান,পেশিশক্তি ও হিকমাহ জ্ঞান দান করুন। হে আল্লাহ সকল মুজাহিদদের আপনি দিনের জন্য কবুল করুন এবং আমাদেরকে মাফ করুন আমিন।