Moniya akhtar

Moniya akhtar Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Moniya akhtar, Serpur.

শেষ নয়, শুরুলেখিকা: মনিয়া সকালবেলার রোদ যেন আজ একটু বেশি উজ্জ্বল। গ্রামের খোলা মাঠ, পাখির ডাক আর কুয়াশা ভেজা ঘাস—সব মি...
26/06/2025

শেষ নয়, শুরু

লেখিকা: মনিয়া

সকালবেলার রোদ যেন আজ একটু বেশি উজ্জ্বল। গ্রামের খোলা মাঠ, পাখির ডাক আর কুয়াশা ভেজা ঘাস—সব মিলিয়ে যেন ছবির মতো এক দৃশ্য। এই গ্রামের নাম শ্যামপুর। আর এখানেই থাকে আছিয়া, এক সাহসী, প্রাণবন্ত মেয়ে। সে যেমন মেধাবী, তেমনি উদার হৃদয়ের অধিকারিণী। বাবাকে হারানোর পর মায়ের সাথে ছোট্ট ঘরে দিন কাটছে তার। কিন্তু অভাব তাকে থামাতে পারেনি। আছিয়ার চোখে স্বপ্ন—শিক্ষক হবে, গ্রামের মেয়েদের শিক্ষা দেবে।

গ্রামেরই এক প্রান্তে থাকে আলামিন। শান্ত, লাজুক, কিন্তু মনের ভেতর বিশাল এক জগত। তার দৃষ্টি সবসময় আকাশে, মেঘে, নদীতে। কবিতা লেখে, গান গায়, আর স্বপ্ন দেখে শহরে গিয়ে বড় কিছু করার। সে আছিয়াকে দূর থেকে দেখেছে বহুবার। আছিয়ার হাসিতে তার মনে ঝড় ওঠে, কিন্তু মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না।

একদিন গ্রামের পাঠাগারে দেখা হয় তাদের। দু’জনেই বই নিতে এসেছিল। আছিয়া "বেগম রোকেয়া"র জীবনী খুঁজছিল, আর আলামিন খুঁজছিল জীবনানন্দ দাশের কবিতার বই। আছিয়া হঠাৎ বই খুঁজতে খুঁজতে নিচে পড়ে যেতে বসেছিল, তখন আলামিন দ্রুত এগিয়ে এসে তাকে ধরে ফেলে। কিছুক্ষণ চোখাচোখি, তারপর একটা হালকা হাসি। সেই প্রথম কথা, তারপর থেকে প্রতি সপ্তাহে দেখা হতে থাকে। বই নিয়ে আলোচনা, পড়াশোনার স্বপ্ন, জীবনের গল্প—সব কিছুতেই মিল খুঁজে পায় তারা।

ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে একটা অদৃশ্য বন্ধন তৈরি হয়। আছিয়া বুঝতে পারে, আলামিন শুধু শান্ত ছেলেই না, তার ভেতরে রয়েছে এক বিশাল হৃদয়। আর আলামিনও অনুভব করে, আছিয়ার সাহসিকতা তাকে সাহসী করে তোলে।

কিন্তু জীবন কি আর শুধু সুখের গল্প? হঠাৎ একদিন খবর আসে, আছিয়ার মামা তাকে শহরে নিয়ে যেতে চায় পড়াশোনার জন্য। মা রাজি হয়। আছিয়াও দ্বিধায় পড়ে যায়—শিক্ষার স্বপ্নের জন্য শহরে যাওয়া দরকার, কিন্তু আলামিনকে ছেড়ে যাওয়াটা কষ্টকর।

শেষ বিকেলে নদীর পাড়ে তারা দেখা করে। আছিয়ার চোখে জল, আলামিন নীরব। অনেকক্ষণ চুপচাপ থাকার পর আছিয়া বলে,
— “তুমি জানো, আমি চলে যাচ্ছি।”
আলামিন হালকা মাথা নেড়ে বলে,
— “জানি। আর জানি, তুমি ঠিকই ফিরে আসবে। নিজের স্বপ্ন নিয়ে, আর আমাদের স্বপ্ন নিয়ে।”
আছিয়া কান্না চেপে বলে,
— “তুমি অপেক্ষা করবে?”
আলামিন হেসে বলে,
— “জীবনের সব কবিতা লিখে ফেলব, শুধু তোমার ফেরার অপেক্ষায়।”

আছিয়া শহরে চলে যায়। আলামিন প্রতিদিন চিঠি লেখে, পাঠায় না। শুধু জমিয়ে রাখে একেকটা খামে। আছিয়াও প্রতিদিন নতুন কিছু শিখে, ফিরে আসার দিন গোনে।

দুই বছর পর, একদিন সকালে শ্যামপুরের পথে একটি রিকশা থামে। আছিয়া নেমে আসে, চোখে আত্মবিশ্বাস। পাঠাগারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণ এগিয়ে আসে—আলামিন, এখন সে শিক্ষক। আছিয়া হেসে বলে,
— “আমি ফিরেছি। এবার আমরাও এই গ্রামকে বদলাবো।”

আলামিন একটুও না হেসে বলে,
— “তুমি দেরি করেছ, আমি তো তোমার জন্য স্কুলও খুলে ফেলেছি!”
আছিয়া হেসে ফেলে। তারপর দু’জন পাশাপাশি হেঁটে যায়, ভবিষ্যতের দিকে, হাতের মধ্যে স্বপ্ন, চোখে একটাই লক্ষ্য—এই গ্রামের সব আকাশ যেন নতুন করে রাঙে।

---অবশ্যই! নিচে "আছিয়া ও আলামিন" গল্পের পরবর্তী অংশ তুলে ধরা হলো, যেখানে তাদের নতুন জীবনের শুরু, গ্রামের পরিবর্তন এবং ভালোবাসার নতুন অধ্যায় ফুটে উঠবে।

---

আছিয়া ফিরেই আলামিনের হাতে ধরা দেয় পুরোনো এক খাম—যেখানে শহরে থাকাকালীন সে প্রতিদিন লিখে রেখেছিল চিঠি, কিন্তু কখনো পাঠায়নি। খামে লেখা,
“প্রতিটি দিন তোমার অপেক্ষায়।”
আলামিন হেসে বলে,
— “তাহলে তো আমরা সমান! আমিও লিখেছিলাম, জমিয়ে রেখেছি সব কবিতা।”

সেই দিন থেকেই তাদের নতুন যাত্রা শুরু হয়। তারা গ্রামের এক পরিত্যক্ত ঘর মেরামত করে খুলে ফেলে একটি স্কুল—“আলো ঘর” নামে। শুরুতে কয়েকজন শিশু, ধীরে ধীরে সংখ্যাটা বাড়ে। আছিয়া মেয়েদের শিক্ষায় জোর দেয়, আর আলামিন সাহিত্য আর সঙ্গীতে।

গ্রামে কিছু মানুষ প্রথমে বাধা দেয়। "মেয়েরা পড়ালেখা শিখে কী করবে?"—এই প্রশ্ন তাদের মুখে মুখে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু আছিয়ার দৃঢ়তা, আর আলামিনের ধৈর্য আস্তে আস্তে তাদের মন জয় করে। একদিন গ্রামের সেই মানুষরাই এসে বলে,
— “আপনারা যেন আমাদের নতুন চোখ খুলে দিলেন।”

আছিয়া নিজেও বিস্মিত হয়। শহর থেকে শিখে আনা জ্ঞান, এখন যেন আরও জীবন্ত হয়ে উঠেছে। সে আলামিনের পাশে দাঁড়িয়ে বলে,
— “তুমি পাশে না থাকলে, আমি পারতাম না।”
আলামিন মুচকি হেসে উত্তর দেয়,
— “তুমি পাশে থাকলে, আমি কোথাও যাবো না।”

তাদের কাজের জন্য উপজেলা থেকে একটি সংস্থা এসে স্কুল পরিদর্শন করে। তারা খুশি হয়ে বলে,
— “আমরা আপনাদের পাশে থাকবো। গ্রামের প্রতিভা তুলে আনতে হবে।”
এই সংবাদে গ্রাম উৎসবে মেতে ওঠে। শিশুদের হাতে পুরস্কার, মা-বাবার চোখে স্বপ্ন, আর আছিয়া-আলামিনের মুখে হাসি।

এক সন্ধ্যায় আছিয়া নদীর পাড়ে বসে। সূর্য ডুবছে, নদী লাল হয়ে উঠছে। আলামিন পাশে এসে বসে বলে,
— “আছিয়া, তুমি জানো, তোমার সাথে শুধু স্কুল নয়, আমি আমার জীবনও নতুন করে শুরু করেছি।”
আছিয়া ধীরে বলে,
— “তাহলে চলো, এবার আমাদের জীবনের নতুন অধ্যায় লিখি—তুমি, আমি, আর আমাদের এই গ্রাম।”

সেই বছরের শেষ দিকে, গ্রামের সবাইকে নিয়ে আছিয়া ও আলামিনের বিয়ের আয়োজন হয়। ঢাক-ঢোল, আলোকসজ্জা, আর সেই নদীর পাড়েই হয় তাদের বিয়ের মঞ্চ। শিশুরা গান গায়, মেয়েরা নাচে, আর বৃদ্ধরাও চোখ মুছে বলে,
— “এই ভালোবাসা যেন চিরকাল বেঁচে থাকে।”

---

শেষ নয়, শুরু

আছিয়া ও আলামিন আজো সেই গ্রামে থাকে। তারা শুধু এক জোড়া ভালোবাসার মানুষ না, তারা গ্রামের আলো, আশার প্রতীক।
তাদের গল্প বলে—স্বপ্ন দেখো, সাহস রাখো, আর ভালোবাসা দিয়ে বদলে দাও দুনিয়া।

08/01/2024

এক নারীতে আসক্ত থেকে যে আনন্দ সেটা অন্য কোথাও নাই❤️❤️❤️

Address

Serpur

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Moniya akhtar posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share