07/08/2024
আবারও বলি, যারা বলতেছেন; এই স্বাধীনতা কি চেয়েছি?
তাদেরকে আমার স্বার্থবাদী এবং স্বার্থেন্বেষী মনে হয়! এমনকি আপনার এই কথার মাঝে লীগারদের যেই পরিকল্পনা কিংবা চাওয়া সেটা প্রকাশ পায়। তারা চাইত, দেশের মানুষ স্বাধীন হয়েও যেন মনে করে, তারা ঐ কালকুঠুরিতেই ভালো ছিল। আপনাদের এই ধরনের কথাও ঠিক অনেকটা তেমনই মনে হচ্ছে আমার কাছে। যেন এতদিন কালকুঠুরিতে থেকে থেকে স্বাধীনতাটা হজম করে নিতে কষ্ট হচ্ছে! তাই আমার এত ভাই-বোনের রক্তের ওপর পাওয়া স্বাধীনতা নিয়াও এত শঙ্কা, এত অধৈর্য! অনেকটা অকৃতজ্ঞতার মতো।
একটা যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ কখনোই রাতারাতি পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে না। আর স্বৈরাচারি নারী যেই সিস্টেম চালু করেছিল, সেটাও এক বা দুই রাতে ভেঙে নতুন করতে পারবেন না। সোজা কথায় বলি, একটা স্থাপিত ভাস্কর্য যত দ্রুত ভেঙে ফেলতে পারবেন, ঠিক ওখানটাতেই নতুন আরেকটা ভাস্কর্য রাতারাতি তুলে দিতে পারবেন না। এরজন্য গাথুনি, ভিম, ভিত্তি, ঢালাই, আস্তর ইত্যাদি নানান প্রসেসের মাধ্য দিয়ে গিয়ে এরপর চূড়ান্ত নতুন আরেকটি ভাস্কর্য তৈরি করতে পারবেন। আশা করছি, আমি আপনাকে বুঝাতে পেরেছি; স্বৈরাচার ভাঙনের পর নতুন আরেকটা স্বাধীন দেশ গঠন করতে এরকম নানান প্রসেস ও কিছু সময় অবশ্যই লাগবে। তাই দয়া করে আমার ভাই-বোনের বিলিয়ে দেওয়া রক্তে অর্জিত স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না।
আর আজ থেকে কয়েক বছর পর যারা আসবেন আর বলবেন, যারা হাসিনারে ঘৃণা করেন তারা আমাকে আনফ্রেন্ড করেন; তাদেরেকে অগ্রীম জুতাপেটা করতে চাই। সে-ও তার বাপের মতো একনায়কতন্ত্র, বাকশাল প্রতিষ্ঠা, লুটপাট, নিরিহ মানুষ হত্যাসহ নানান হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে ঠিক তার বাপ মুজিব যেটা ১৯৭২-৭৫ অবধি করেছিল। আর যাদের মনে হচ্ছে, এতদিন হাসিনা দেশের উন্নতি করছে, তাদেরকে একটু বলতে চাই, এই স্বৈরাচার যেই পরিমাণ টাকা পাচার করছে তা দিয়ে মাত্র ৬৯৭টি মেট্রোরেল, ৩৯৭টি স্যাটেলাইট এবং ৩৬টি পদ্মাসেতু বানানো যেত। হ্যাঁ, ঠিক শুনেছন। কেবল পাচারকৃত টাকা দিয়ে এই পরিমাণ উন্নয়ন দেশে করা সম্ভব হতো। আর দেশের মাঝে লুটপাট, শেয়ার বাজার ধ্বংস, ব্যাংকব্যবস্থার হরিলুটসহ যত কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে, তা দিয়ে দেশে পদ্মাসেতুর মতো প্রকল্প আরও ১০০ করা যেত, মেট্রো রেলের মতো প্রকল্প আরও ১ হাজার করা যেত, স্যাটেলাইটের মতো প্রকল্প আরও কয়েক হাজার করা যেত। এছাড়া আয়নাঘর, ডিবির গুম, ২০১৩, ২০১৮ এবং ২০২৪-এর গণহত্যার মতো অসংখ্য প্রাণকে তারা ঝড়িয়েছে।
কী পরিমাণ হরিলুট, স্বৈরাচার নৈরাজ্য থেকে মুক্তি থেকে দেশ মুক্তি পেয়েছে এটা কল্পনা করুন শুধু। অতীতের পিঞ্জর থেকে বের হয়ে স্বাধীনতা ভোগ করতে শিখুন, গোলামি আর কত কাল করবেন?
আর চারদিকের ঘটনা নিয়ে একটু শঙ্কিত তো? একটু ধৈর্য রাখুন, দেশের প্রয়োজনে যেভাবে সবাই রাজপথে নেমেছিলেন, সেভাবে আর কয়েকটা দিন কষ্ট করুন সর্বোচ্চ। অলরেডি কাল মোহাম্মদপুরের ইন্সিডেন্সে সেনাবাহিনি একশন নিয়েছে। এক দলকে ধরতে পেরেছে তারা। মনে রাখবেন, দেশের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য অভ্যন্তরীণ বাহিনি এখনও সক্রীয় নয়।
ইনশাআল্লাহ, খুব শীঘ্রই নতুন আরেকটি স্বাধীন দেশের স্বাদ পাব।