28/08/2025
মানুষের জীবনে ঘুম ঠিক কতটা প্রয়োজনীয় সেটা যখন পায় না তখন বুঝতে পারে।
৩২ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক অলিভার অ্যালভিসের জীবন দুই বছরের মধ্যে পুরোপুরি ওলটপালট হয়ে গেছে, কারণ তিনি ঘুমাতে পারেন না!
অলিভার একসময় বেশ পরিশ্রমী, দায়িত্বশীল, সুস্থ এক ট্রেনচালক ছিলেন। বাড়ির ঋণ শোধ করে দিয়েছিলেন, প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স নিয়েছিলেন, নিজের প্লেনও কিনেছিলেন। প্রেমিকার সঙ্গে সুখী ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনছিলেন তিনি।
কিন্তু হঠাৎ এক রহস্যময় অসুস্থতা সবকিছু কেড়ে নেয়। ঠিক অনিদ্রা নয়, বরং প্রায় পুরোপুরি 'ঘুম'ই হারিয়ে ফেললেন তিনি। ঘুমাতে পারেন না তিনি, চোখ বন্ধ করলেও ঘুম আসে না। যেন একটানা জেগে থাকছেন সারাক্ষণ।
দিন গড়িয়ে রাত, আর রাত পেরিয়ে দিন- ঘুম না আসায় জীবনটা তার কাছে যন্ত্রণার নামান্তর। ঘুমের অভাব তাকে শারীরিক-মানসিক উভয়ভাবেই ভেঙে দিয়েছে। জীবনের নানা অর্জনের প্রায় সবকিছু হারিয়েছেন তিনি।
অলিভারের শরীর এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পরও তিনি জেগে থাকেন। মাথায় অসহ্য চাপ, শরীরে আগুন জ্বলার মতো অনুভূতি, হাড়-মাংসে ব্যথা, চোখ গলে পড়ার মতো যন্ত্রণা- এসব সহ্য করেছেন টানা ২১ মাস।
ডাক্তাররা তার এই অবস্থার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, একেবারে ঘুমের অনুপস্থিতি প্রাণঘাতী হতে পারে। প্রাণীর ওপর পরীক্ষা থেকে দেখা যায়, কুকুর ১৭ দিন আর ইঁদুর ৩২ দিন ঘুম ছাড়া টিকে থাকতে পারে। অথচ অলিভার প্রায় দুই বছর ধরে মোটামুটি ঘুম ছাড়াই বেঁচে আছেন!
তিনি ঘুম আনার জন্য সবকিছু চেষ্টা করেছেন- ওষুধ, থেরাপি, দেশ-বিদেশের ভেষজ গাছ; কিছুতেই কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে বাড়ি বিক্রি করেছেন, মায়ের কাছে ফিরে গেছেন, আর পৃথিবী ঘুরে চিকিৎসা খুঁজেছেন।
অলিভার আক্ষেপ করে বলেন, “রাতে আমি হাঁটতে বের হই, ফুটপাতে ঘুমিয়ে থাকা গৃহহীনদের দেখে হিংসে হয়। তাদের জায়গায় আমি থাকতে চাই- শুধু ঘুমানোর জন্য। আমি আমার সব সম্পদ দিয়ে দিতাম, যদি এক রাত শান্তিতে ঘুমোতে পারতাম।”
সংগৃহীত