17/07/2025
আলহামদুলিল্লাহ।
"আমাদের চিন্তার চেয়ে আল্লাহ তাআলার রহমত অধিক বিশাল" — এ বিষয়টি কোরআন ও হাদীসের আলোকে ব্যাখ্যা করলে আমরা দেখতে পাই, আল্লাহর রহমত এমন এক জিনিস যা মানুষের কল্পনাকেও ছাড়িয়ে যায়। তিনি এতটাই দয়ালু, করুণাময় ও ক্ষমাশীল, যা আমরা কল্পনাও করতে পারি না।
১. আল্লাহর রহমত সমস্ত কিছুকে ঘিরে রেখেছে:
📖 সূরা আরাফ ৭:১৫৬
> “...আর আমার রহমত সব কিছুকে পরিব্যাপ্ত করেছে...”
(وَرَحْمَتِي وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ)
🔸 আল্লাহ তাআলার রহমত এত বিশাল যে, তা শুধু মুসলিম বা ভালো মানুষদের ওপর নয়, সব সৃষ্টির ওপর ছায়া বিস্তার করে আছে।
২. আল্লাহ পাপী বান্দাকে হতাশ না হতে বলেন:
📖 সূরা যুমার ৩৯:৫৩
> “হে আমার বান্দারা যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছো, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করেন। তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।”
🔹 এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা জানিয়ে দেন, যত বড় পাপই হোক, বান্দা যদি খাঁটি তাওবা করে, তবে আল্লাহ তা ক্ষমা করে দেন।
৩. আল্লাহ নিজেই ‘আর-রহমান’ ও ‘আর-রহিম’ — অশেষ দয়ালু ও পরম দয়াময়:
🔸 কুরআনের প্রতিটি সূরার শুরুতেই আমরা দেখি:
> “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” — দয়াময়, পরম দয়ালুর নামে।
🔹 এটি নির্দেশ করে, দয়া আল্লাহর অন্যতম প্রধান গুণ, যা তাঁর প্রতিটি কাজের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
১. আল্লাহর ১০০ ভাগ রহমতের মধ্যে ১ ভাগই দুনিয়ায় দিয়েছেন:
📘 সহিহ মুসলিম
> “আল্লাহ তাআলা রহমতের একশত ভাগ সৃষ্টি করেছেন। এর একটি অংশ দুনিয়ায় দিয়েছেন, যার মাধ্যমে মা তার সন্তানকে ভালোবাসে, পশু তার বাচ্চাকে ভালোবাসে। আর বাকি ৯৯ ভাগ রেখেছেন কিয়ামতের দিনের জন্য।”
🔹 আমরা দুনিয়াতে যে দয়া, সহানুভূতি, ভালোবাসা দেখি — সেটা কেবল ১ ভাগ রহমতের প্রকাশ!
২. আল্লাহ বান্দার প্রতি আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি দয়ালু:
📘 সহিহ বুখারি ও মুসলিম
> এক সাহাবী তার সন্তানকে আগলে ধরেছিলেন।
রাসূল (সা.) বললেন, “তোমরা কি মনে করো, এই মা তার সন্তানকে আগুনে নিক্ষেপ করবে?”
সাহাবীগণ বললেন, “না!”
তিনি বললেন, “আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দার প্রতি এর চেয়েও বেশি দয়ালু।
🔸 আমরা যতোই চিন্তা করি, দুঃচিন্তা করি, হতাশ হই — আল্লাহর পরিকল্পনা ও দয়া আমাদের কল্পনার সীমা ছাড়িয়ে।
🔸 তিনি আমাদের চাহিদার চেয়েও উত্তম কিছু দেন।
🔸 তাঁর দয়া এত বেশি, যে বান্দার অনুতপ্ত অন্তর, একফোঁটা চোখের পানির জন্যই তিনি জান্নাত দিয়ে দেন
🤲 একটি দোয়া:
> اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي
“হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাকারী, আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন, সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।(আমিন)