05/01/2024
আজ ৫ জানুয়ারি, কথাসাহিত্যিক ও ব্রিটিশরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা সত্যেন সেনের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। আজকের এই দিনে মহান এই সংগঠক ভাতরের শান্তি নিকেতনের গুরুপল্লীতে ১৯৮১ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
অমর প্রতিভার ব্যক্তিত্ব সত্যেন সেন ১৯০৭ সনের ২৮ র্মাচ মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি সোনারং গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার ডাক নাম ছিল লস্কর। বাবা ধরণীমোহন সেন, মা মৃণালীনি সেন। বাবা-মা’র চার সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। সত্যেন সেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী অন্যতম ব্যক্তিত্ব। তিনি শুধু বিপ্লবী নেতাই ছিলেন না, ছিলেন কৃষক আন্দোলনের নেতা, কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক, গীতিকার, সুরকার।
কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি যুক্ত হন বিপ্লবী দল যুগান্তরের সঙ্গে। ১৯৪৩ সালের মহাদুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় ‘কৃষক সমিতি’র মাধ্যমে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। ১৯৪৭ সালে স্বাধীন ভারত ও পাকিস্তান সৃষ্টির সময় তিনি অসামপ্রদায়িক রাজনীতিতে ভূমিকা রাখেন। তার কারাভোগের ইতিহাস দীর্ঘ। ৭৩ বছরের জীবনে তিনি ২৪ বছর কাটিয়েছেন কারাগারে, আত্মগোপনে থাকতে হয়েছে ৪ বছর। দীর্ঘ কারাভোগ, অত্যাচার ও নির্যাতনে তার শারীরিক অসুস্থতা ও চোখের পীড়া দেখা দেয়। সুদীর্ঘ কারাভোগ শেষে ১৯৫৩ সালে মুক্তি পেয়ে নিজ গ্রাম সোনারাংয়ে ফিরে আসেন এবং তাদের পরিবারের সবাই নিরাপত্তার কারণে কলকাতায় পাড়ি জমান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এক পর্যায়ে তার চোখের পীড়া গুরুতর রূপ নেয়। চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে মস্কো পাঠানো হয়।
১৯৭২ সালের প্রথম দিকে তিনি চলে আসেন বাংলাদেশে। কিন্তু ১৯৭৩ সালে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ভারতে আশ্রয় নেন শান্তি নিকেতনের মেজদিদি প্রতিভা সেনের কাছে।
তার লেখা বইয়ের সংখ্যা ৪০টির উপরে। তিনি ১৯৬৯ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার ও ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৬ সালে সাহিত্য মরণোত্তর একুশে পদক পান। তিনি গণসাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উদীচী’র প্রতিষ্ঠাতা।