গল্পকথা

গল্পকথা সকল ভাইবোনদেরকে আন্তরিক ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা

17/07/2025

বাংলাদেশে জন্ম না নিলে বুঝতামইনা..এদেশের রাজনৈতিক দলগুলো এতো মা-রা-মা-রি করছে..শুধু জনগণের সেবা করার জন্য🙂

16/07/2025

মেয়ে'দের পিছনে ঘুরার সময় নাই, তাই গালস ইস্কুলের সামনে কসমেটিকসের দোকান দিছি 😃

16/07/2025

খালি একবার Successful হই, Struggle এর কাহিনী Ready আছে..

Me : জোনাকি পোকার আলোয় পড়াশোনা করেছিলাম🙂

16/07/2025

ছেলে "বাবাকে" বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছে,
আর বাবা সব সম্পত্তি বৃদ্ধাশ্রমে দান করে দিয়েছে..
নোটিশ এসেছে বাড়ি ছাড়ার🙂

15/07/2025

কেউ নেয় চাঁদা, কেউ নেয় ডোনেশন, আবার কেউ নেয় হাদিয়া, তুমি নিলে কাবিন আর আমি নিলে যৌতুক! 🌚

15/07/2025

বিয়ের দিন বউ কা-ন্না করার সময় বউকে কি বলে সান্তনা দেওয়া যায়🙂

15/07/2025

“ছেলে প্রবাসে থাকে, আয় রোজগার ভালো, ব্যাংক ব্যালেন্স মোটা, বাড়ি-গাড়ি সবই আছে” -এই কথাগুলো শুনেই মেয়েটি বলেছিল, “পরিবারের পছন্দই আমার পছন্দ।”

কিন্তু বিয়ের দিন যখন বর হিসেবে সামনে এসে দাঁড়ালেন- একজন বয়সে বুড়ো, রং-ঢংহীন মানুষ, তখন স্বপ্নের সব কাঁচ ভেঙে চুরমার। মেয়েটি অতঃপর… অজ্ঞান! 🤣

কথায় আছে, টাকা দিয়ে সব কেনা যায় না- চেহারা, মিল, মানসিকতা, এগুলোও গুরুত্বপূর্ণ!

অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ মানেই অন্ধভাবে সিদ্ধান্ত না, বরং যাচাই-বাছাই করে সম্মানের সাথে পছন্দ-অপছন্দের মূল্য দেওয়া।

এ ঘটনা কৌতুক মনে হলেও এর পেছনে লুকিয়ে আছে একটি গভীর শিক্ষা, বিয়ে মানে শুধুমাত্র সামাজিক চুক্তি না, বরং দুটি মানুষের সারাজীবনের বন্ধন। তাই সিদ্ধান্ত হোক স্বচ্ছ, সম্মতিতে ও বাস্তবতাভিত্তিক।

তরুণদের প্রতি অনুরোধ:
নিজের সম্মতি ছাড়া কোনো সিদ্ধান্তে হ্যাঁ বলবেন না।

অভিভাবকদের প্রতিও অনুরোধ:
বিয়ের আগে সন্তানের মতামতকে প্রাধান্য দিন, কারণ জীবনটা ওদেরই।

12/07/2025

চাঁদা চাইলে দিয়ে দিয়েন ভাই...!!

ছেলে মেয়েকে এতিম করার দরকার নাই !!

11/07/2025

চাঁদা দে নইলে জা-ন খা-মু..নির্বাচন দে নইলে দেশ খা-মু..নাম বলব না দলটার🙂

11/07/2025

চাঁদা না দেয়ায় ব্যবসায়ীকে বিভৎস কায়দায় হত্যাকান্ড প্রমাণ করে সামনের দিন গুলো দেশের মানুষের জন্য গত ষোল বছরের চেয়েও আরো ভয়ংকর হবে।

10/07/2025

বিয়ের পর প্রথম দিন থেকেই মা আমার স্ত্রী শামার সাথে বাজে ব্যবহার করছেন।

অবশ্য বিয়ের পর বললে ভুল হবে। মার এই সম্বন্ধ টাতেই মত ছিল না। শামার বেড়ে ওঠা মফস্বল শহরে। সেখানের এক কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট শেষ করার পরপর ই আমার সাথে বিয়ে হয়ে যায় । বাবা প্রথম দেখাতেই শামা কে পছন্দ করে ফেলেন। তার ভাষ্যমতে শামা অতি লাবন্যময়ী জলজোছনা। আমি খুব ভাগ্য করে জন্মেছি বলেই শামার মতন একজন কে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়েছি। তবে শামাকে নিয়ে আমার মা'র অবস্থান ঠিক বাবার উলটো। কারন শামা দেখতে কালো। উচ্চতাও বেশি না। ঢাকার আধুনিক এলাকায় বেড়ে উঠেছি আমি। মা'র মতন ই ফর্সা গায়ের রং পেয়েছি। আর উচ্চতা প্রায় ছ'ফুট। আমার পাশে শামা কে মা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না। বিয়ের কথা পাকাপাকি করার সময় বাবার সাথে তুমুল গন্ডগোল করেছেন মা। তবে বাবা নাছোড়বান্দা, মা'র চিৎকার চেঁচামেচিকে একেবারেই পাত্তা দিলেন না। ঠান্ডা গলায় বলেছিলেন,'আলেয়া,বাড়াবাড়ি করবে না। মেয়েটা জন্মের আগে অর্ডার করে নিজের গায়ের রঙ কালো রাখে নাই। আমি সব দিক ভাল বুঝেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছেলের ভাল তুমি একা বুঝো না, আমিও কিছু বুঝি।'

বাবার শীতল আচরনে হোক বা যে কোন কারনেই হোক, বিয়ে পর্যন্ত মা আর কোন উচ্চবাচ্য করলেন না। তবে বিপত্তি বাধলো শামাকে ঘরে নিয়ে আসার পর থেকে। মা খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিলেন। এক প্রকারের অনশন বলা যেতে পারে। আমার কিংবা বাবার কারো কথাতেই সেই অনশন ভঙ্গ হলো না। আমি আর বাবা যখন মা'কে খাওয়ানোর চেষ্টা করছিলাম, দরজার আড়ালে অবাক চোখে দাঁড়িয়ে দেখছিল শামা। নতুন জীবনটা এমন অদ্ভুত ভাবে শুরু হতে যাচ্ছে হয়তো কখনো ভাবে নি সে। মা এক পর্যায়ে চিৎকার করে উঠলেন,'আমাকে খাওয়াইতে আসছো কেন? ঐ কাইল্লা রে খাওয়াও গিয়া। আমার প্রতি দরদ থাকলে আমার কথার দাম দিতা।'

যাকে উদ্দেশ্য করে এমন কথা বলা হয়, সেই স্থানে তার পক্ষে আর এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব হবার কথা না। কিন্তু শামা দাঁড়িয়ে ছিল। শাড়ির আঁচলে তার কান্না লুকায় নি। টপটপ করে চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছিল। জীবনে সেই একবার ই শামা কে কাঁদতে দেখেছিলাম।

আমি বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম। শামার মতন সেদিন আমারো নতুন জীবনের শুরু ছিল। এই দিনটি নিয়ে সবার ই একটা অন্যরকম অনুভূতি থাকে। আমার ও ছিল। মা'র কার্যকলাপে বিরক্ত আমি। তবে কোন এক অদ্ভুত কারনে মা'র প্রতি ভীষন মায়াও লাগছিল আমার। ছোট বেলায় বেশ সুন্দর ছিলাম আমি। দুধ সাদা গায়ের রং,মাথায় ঘন কালো চুল। মা প্রায় ই আমাকে আদর করতে করতে বলতেন 'আমার রাজপুত্র টারে। সাত সমুদ্র পার করে তোর জন্য পরী খুঁজে নিয়া আসবো আমি।'

মা কষ্ট পেয়েছেন। ছেলের জন্য পরী খুঁজে আনার আহ্লাদ টা মেটেনি তার। আমি বাবা-মা'র একমাত্র সন্তান হওয়াতে ঝামেলাটা হয়েছে আরো বেশি। বাবা নিজের পছন্দ করা মেয়েকে ছেলের বউ করে নিয়ে এলেন, মা'র পছন্দ কে গুরুত্ব দিলেন না। এতে মা আরো কষ্ট পেয়েছেন।

সেদিনের পর থেকে আমিও শামাকে ঠিক নিজের কাছের মানুষ হিসেবে টেনে নিতে পারলাম না। মা'র মতন দুর্ব্যবহার করিনি, তবে নতুন বিবাহিত কপোত-কপোতিদের মধ্যে যেমন আদুরে রঙ ঢং থাকে,তার বিশেষ একটা প্রভাব আমার মধ্যে কখনো আসেনি। শামা সম্ভবত ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিল। তাই সেও যতোটা সম্ভব আমার খুব কাছাকাছি ঘেঁষার চেষ্টা কখনো করেনি। মা'র অসহনীয় দুর্ব্যবহার, আমার শীতল আচরন- এতো কিছুর পরেও শামাকে আমি কখনো দুঃখী কিংবা মনমরা থাকতে দেখিনি। স্রষ্টার দেয়া এক অমায়িক ব্যক্তিস্বত্তা নিয়ে দুনিয়ায় এসেছে সে। কিছু কিছু মানুষ খুব দ্রুতই বুঝে ফেলতে পারে এই দুনিয়ায় তার কষ্টের পাল্লা টা সব সময় ভারী থাকবে। সুখ পাবে না কিংবা পেলেও তা হবে খুবই ক্ষনস্থায়ী। শামা সম্ভবত তাদের ই একজন। ওর স্বাভাবিকতা দেখে মাঝে মাঝেই অভিভূত হয়ে যেতাম আমি। যেমন একদিন দুপুরে মা তার বিছানায় বসে কাজের মেয়ে তিনার কাছে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি চাইলেন। মা'র এটা বেশ পুরোনো অভ্যাস। দুপুরের খাবার শেষ করে বিছানায় কিছুক্ষন বসে টিভি দেখবেন। এরপর এক গ্লাস ঠান্ডা পানি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বেন। জমিলার বদলে সেদিন শামা নিজেই ফ্রিজের ঠান্ডা পানির বোতল থেকে এক গ্লাস ঠান্ডা পানি নিয়ে মা'র সামনে উপস্থিত হলো। ডাইনিং টেবিলে বসে আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম মা'র মুখ লাল হয়ে উঠছে। শামার হাত থেকে গ্লাস নিজের হাতে নিয়েই দেয়ালের দিকে ছুঁড়ে মারলেন মা। বাবা ক্রুব্ধ চোখে তাকালেন মা'র দিকে। মা'র তাতে তেমন কিছু এলো গেলো না। মুখ ভার করে বসে রইলেন। অন্য যে কেউ হলে কেঁদে ফেলতো এমন অবস্থায়। শামা কাঁদলো না। ভাঙ্গা কাঁচের টুকরো গুলো পরিষ্কার করে বের হয়ে এলো ঘর থেকে। তিনাকে দিয়ে আবারো এক গ্লাস ঠান্ডা পানি পাঠালো মা'র কাছে। খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে আমার কাছে এসে বললো,'তুমি কি আমাদের বাসায় গিয়ে আমার টিয়া পাখিটা নিয়ে আসতে পারবে? অনেকদিন দেখি না ওকে।'

আমি অভিভূত হয়ে গেলাম। মায়ের করা অমন আচরনের কোন প্রভাব নিজের ভেতর আসতে দেয় নি মেয়েটা। কি অসম্ভব সহ্য শক্তি।

মায়েরা একটা কথা প্রায় ই বলেন; বিয়ের পর ছেলেরা মাকে ভুলে যায়। বউ ই হয় তাদের একমাত্র ভালবাসা। ব্যাপার টা কতোটুকু সত্য তা জানি না, তবে আমার ক্ষেত্রে ব্যাপার টা উলটো ভাবে ধরা দিয়েছে। শামা এ বাড়িতে আসার পর থেকে মা কখনো স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন নি। চিৎকার চেঁচামেচি, গ্লাস প্লেট ভাঙ্গা ইত্যাদি প্রায় প্রতিদিন ই করেন। ব্যাপার টা আমার কাছে অত্যান্ত বিরক্তিকর, আবার মা'র মানসিক অবস্থা চিন্তা করে নিজের ভেতর টা হুহু করে ওঠে। আমার পরম মমতাময়ী মা কতো দ্রুত বদলে যাচ্ছেন। যিনি কখনো আমার উদ্দেশ্যে বাজে একটা কথা পর্যন্ত বলেননি, সেদিন অফিস থেকে ঘরে ঢুকেই শুনলাম মা শামার সামনেই চিৎকার করে উঠলেন,'ঐ যে কাইল্লা বেডির ধলা জামাই আইছে।'

স্তম্ভিত হয়ে গেলাম আমি। জীবনে প্রথম মা'র মুখ থেকে আমার সম্বন্ধে এমন কথা শুনলাম। তাও কথা টা পুরোপুরি আমাকে নিয়ে বলা না। শামা কে অপমান করার কোন সুযোগ ই মা ছাড়ছেন না। বাবার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেল। সেদিন রাতেই আমাদের ঘরে এসে বললেন,'তোরা চলে যা। নতুন বাসা ঠিক করে সেখানে গিয়ে মন দিয়ে সংসার কর। নিজেদের মতো করে বাঁচ। যতো দ্রুত পারিস চলে যা।'

আমি কিছু বলতে পারলাম না। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম। তবে বাবার পরামর্শ টা শামা মেনে নিলো না। সে বাবাকে বললো,'অন্য কোথাও কেন যাবো বাবা? আমার বাসা তো এটাই। আমার সংসার ও এটাই। এখান থেকে চলে গেলে নিজেকে খুব ছোট লাগবে বাবা।'

শামার কথা শুনে আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে। কি সুন্দর গোছানো কথা বার্তা। বাবাও আর কিছু বলতে পারলেন না। তার চোখ টলটল করছে পানিতে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে এতো সুন্দর কথা বহুদিন তিনি শোনেননি।

আপনাদের হয়তো মনে হতে পারে শামা আবহমান বাংলার নিপীড়িত বউ টাইপের কেউ, যে মুখ বুজে সব কেবল সহ্য করে যায়। আসলে সে সহ্য করে নেয় ঠিকই, তবে সে মা'র প্রিয় হয়ে ওঠার চেষ্টার ও কমতি রাখে নি কখনো। ঘরের বেশিরভাগ দিনের ই রান্না হতো মা'র পছন্দের খাবার আইটেম। খুব যত্ন নিয়ে রাঁধতো শামা। শুরুতে কিছুদিন মা ভীষন চিৎকার চেঁচামেচি করতেন। শামার হাতের রান্না তিনি খাবেন না। তবে ধীরে ধীরে মা শামার রান্না খাওয়া শুরু করেন। শামার রান্না প্রথম বার খেয়ে বাবা বলেছিলেন,'এক কথায় অমৃত। আমি আমার হাতের ছাল চামড়া তুলে ফেলছি খেতে খেতে। খুব ভাল রাঁধো তুমি মা।'
মা খাওয়া না থামিয়েই বিরক্তির সুরে বললেন,'না হইছে লবন,না হইছে ঝাল। ঘোড়ার পেচ্ছাব রানছে। এগুলা রে রান্না বলে?'

বাবা কিছু বললেন না। লজ্জা লজ্জা মুখ নিয়ে খেতে থাকলেন। তবে শামার দিকে তাকিয়ে দেখি সে হাসছে। হাসতে হাসতে মা'র প্লেটে ডাল তুলে দিলো। মা কিছু বললেন না। খেতে থাকলেন। হয়তো এতোদিনে তিনি এটা বুঝে গেছেন,খাবারের উপর রাগ করার কোন মানে হয় না। মা এমনিতেও একটু খাদ্যরসিক টাইপের। খেতে ভালবাসেন। শামা তার পছন্দের খাবার খাইয়ে মন জয় করার চেষ্টা করছে, বুদ্ধিটা খুবই ভাল। কথা বার্তা না বলেও সে মা'র মন গলাবার চেষ্টা করছে অন্য পদ্ধতিতে। ব্যাপার টা সহজ না,তবে হয়তো কিছু টা কাজে দিচ্ছিলো।

শামার সাথে আমার কথা বার্তা কখনোই স্বামীসুলভ ছিল না। ওর বুদ্ধিদীপ্ত কাজে,কথায় অভিভূত হলেও কোন এক বিচিত্র কারনে ওকে কিছুটা এড়িয়ে চলতাম আমি। তবে শামা মাঝে মাঝে অদ্ভুত কিছু আবদার করে বসতো আমার কাছে। যেমন এক রাতে ঘুমুতে যাবার প্রস্ততি নিচ্ছি, হঠাৎ শামা এসে আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে রইলো। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,'কি চাও?'

আকুতি ভরা কন্ঠে শামা বললো,'আজ জোছনা রাত। কি সুন্দর চাঁদ উঠেছে। একটু ছাদে চলো না।'

বিরক্তি নিয়ে তাকালাম ওর দিকে। রাত বাজে সাড়ে বারোটা। সকালে আমার অফিস।

'এতো রাতে এই তামাশা কেন করতে হবে তোমার?'

শামা আমার হাত টা ছেড়ে দিয়ে মাথা নুইয়ে ফেললো। খুবই খারাপ লাগলো আমার। মাঝে মাঝে ভাবি এই ব্যবহার গুলো কি আমি ইচ্ছে করে করি ওর সাথে নাকি অজান্তেই চলে আসে? শামা এই ব্যবহার পাবার যোগ্য অবশ্যই না। প্রতিটা দিন মা'র কাছে অপমানিত হবার পরেও সে এই সংসার টাকে নিজের একটুকরো পৃথিবী ভেবে আঁকড়ে রেখেছে।

মন টা ভীষন খারাপ হলো। নিজের থেকেই শামার হাত ধরে বললাম,'চলো'।

আমরা ছাদে গেলাম। জোছনা তার আলো মাখিয়ে দিচ্ছিলো আমাদের শরিরে। শামা চোখ বন্ধ করে আকাশের দিকে তাকিয়ে দু হাত প্রসারিত করে দাঁড়ালো। আমার মনে হলো আমার সামনে কল্পপুরীর রাজকন্যা দাঁড়িয়ে আছে। জোছনার আলো শামার বিষাদ গ্রস্থ মুখে কি অপরূপ মায়া সৃষ্টি করেছে। ইস, খুব ইচ্ছে করছে মা'কে বলতে, মা, তোমার চাওয়া সেই রাজকন্যাই পেয়েছি আমি।
শামা গুনগুন করে গেয়ে উঠলো,'চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে, উছলে পড়ে আলো। ও রজনীগন্ধা, তোমার গন্ধসুধা ঢালো'

কি চমৎকার গায় মেয়েটা। গান শুনতে শুনতে আমি তাকিয়ে রইলাম ওর মুখের দিকে। শামা কে এতো সুন্দর কখনো লাগেনি আমার চোখে। হয়তো এভাবে কখনো তাকাই ই নি ওর দিকে। আমি ওর গানের ঘোরে ডুবে গেলাম।

আচ্ছা,শামা কি আমাকে কখনো ভালবাসি বলেছিল?

হ্যা, বলেছিল। দিনটা আমার মনে আছে। সেদিন ওর ঢাকা ভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা ছিল। সকালে আমার বাইকে করে ওকে ভার্সিটি ক্যাম্পাসে নামিয়ে দিয়ে বললাম,'বেস্ট অফ লাক। আমি অফিসে যাচ্ছি। পরীক্ষা শেষে সিএনজি নিয়ে বাসায় চলে যেও।'

শামা কিছুক্ষন আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বিড়বিড় করে বললো,'আমার খুব টেনশন হচ্ছে। যা পড়েছিলাম সব ভুলে গেছি।'

আমার অফিসে লেট হয়ে যাচ্ছিলো। বিরক্ত সুরে বললাম,'প্রশ্ন দেখলে আবার মনে পড়ে যাবে সব। টেনশন করবে না। যাচ্ছি আমি।'

বাইক টান দিয়ে বেশ কিছুটা সামনে চলে এলাম। লুকিং গ্লাসে তাকিয়ে দেখি শামা তখনো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে যেখানে নামিয়ে দিয়েছিলাম। নিজের মনের অজান্তেই একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম। আজ আর অফিস যাবো না। বাইক ঘুড়িয়ে শামার কাছে এসে ব্রেক করলাম। ওর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বললাম,'যাও। মন দিয়ে পরীক্ষা দাও। আমি এখানেই অপেক্ষা করবো। আজ আর অফিস যাচ্ছি না।'

শামার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। হাসিমুখে ভার্সিটি বিল্ডিং এর দিকে হেঁটে চলে গেল।

যেভাবে গিয়েছিল,সেভাবেই হাসিমুখে বের হয়ে এলো পরীক্ষা শেষে। আমাকে দেখে সেই হাসি আরো বিস্তৃত হলো। কাছে এসে প্রথমেই জিজ্ঞেস করলো,'তুমি সত্যি অফিস যাও নি?'
আমি বললাম,'না,যাইনি। পরীক্ষা কেমন হলো?'
শামা বললো,'খুবই ভাল হয়েছে।'

একটু ইতস্তত করে বললাম,'আজ তো অফিসে যাইনি,হাতে সময় আছে। একটু ঘুরে আসি চলো?'
নিচু গলায় শামা বলল,'অন্যদিন যাই? দুপুরের রান্না হয় নি। দেরি হলে মা রাগ করবেন। মা খিদে সহ্য করতে পারেন না'।

আমি আর কিছু বললাম না। শামাকে পিছনে বসিয়ে বাইক চালু করে দিলাম। কিছুদূর যাবার পর অনুভব করলাম শামা আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,'কিছু বলবে?'

শামা বলল,'হু'।
'বলো।'

শামা আমার হেলমেটের কাছে মুখ এনে বললো,'ভালবাসি। তোমাকে খুব ভালবাসি।'

আমি হেসে দিলাম। নিজেকে খুব ভাগ্যবান লাগছে আমার। বাবার কথা একদম ঠিক। খুব ভাগ্য করে পেয়েছি ওকে।

একটা লোকাল বাস কে ওভার টেক করতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পাশ থেকে দ্রুত গতিতে আরেকটা বাইক চলে গেল। আমি ব্যালেন্স ধরে রাখতে পারলাম না। বাইক নিয়ে পিছলে পড়ে গেলাম। মাথা গিয়ে লাগলো পাশের এক গাড়িতে। মাথায় হেলমেট থাকলেও প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করলাম । বেশ কিছুক্ষন লাগলো আমার স্বাভাবিক হতে। তবে আমার মনে হলো আমার মাথা ফেটে মরে যাওয়াই ভাল হতো। জীবনের বিভৎসতম দৃশ্য টা আমাকে দেখতে হতো না।

আমার শামার বুকের ওপর বাসের চাকা উঠে আছে। পিশে যাওয়া নিথর শরির টা ঘিরে মানুষের ভীর। কিছু মানুষ বাস ওয়ালাকে নামিয়ে পিটাচ্ছে। আমি শামার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে উদ্ভ্রান্তের মতন এদিক ওদিক তাকাচ্ছি। চিৎকার করতে চাইছি,পারছি না। আমার বুকের বাতাস হারিয়ে গেছে। কোন শব্দ বের হচ্ছে না। চোখে গড়িয়ে পড়া পানি টুকু দিয়ে রাস্তায় জমা হওয়া মানুষ দের আকুতি মিনতি করছি। কি প্রচন্ড কষ্ট পেয়ে মারা গেছে আমার বউ টা । এই প্রথম আমার মনে হচ্ছে, শামাকে আমি ভালবাসি। অসম্ভব ভালবাসি। শামার নিথর হাতটা তুলে পাগলের মতো চুমু খেতে থাকলাম আমি।

পরের দিন দুপুরে আমাদের গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে আমার শামাকে দাফন করা হয়। কান্নার শব্দে পুরো এলাকা ভারী হয়ে ছিল। আমি একটা কোনে চুপচাপ বসে ছিলাম। তবে খুব আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করলাম, মা কাঁদছে। সত্যি বলছি, মা কাঁদছে। আমার মমতাময়ী মা কে আজ সহ্য হচ্ছে না আমার। তার কান্না মেকি লাগছে খুব। বাবা কে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কাঁদছেন তিনি। ঘেন্না ভরা চোখে মার কান্না দেখছি।

আমার শামা চলে গেছে আজ ৫ বছর হলো। মা আমাকে আবার বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। আমি ঐ বাসা ছেড়ে বেড়িয়ে গেছি চিরদিনের জন্য। পৃথিবীর কাউকে আমার সহ্য হয় না আর।

জোছনা রাতে ছুটে চলে যাই আমার শামার কবরের কাছে। ভীষন আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকি কবরের দিকে। গুনগুন করে গেয়ে উঠি, চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে, উছলে পড়ে আলো। ও রজনীগন্ধা তোমার গন্ধসুধা ঢালো…'

(শেষ)

গল্পঃ শ্যামকাব্য

লিখাঃ আহমেদ হিমেল ইশতিয়াক

সবজি ওজন করার সময় যদি মাপার যন্ত্রে একটি মাছি বসে, তবে ওজনে তেমন কোনো পার্থক্য হয় না। কিন্তু সেই একই মাছি যদি স্বর্ণ ও...
10/07/2025

সবজি ওজন করার সময় যদি মাপার যন্ত্রে একটি মাছি বসে, তবে ওজনে তেমন কোনো পার্থক্য হয় না।

কিন্তু সেই একই মাছি যদি স্বর্ণ ওজন করার সময় বসে, তাহলে ওজনে দশ-বিশ হাজার টাকার পার্থক্য করে দিতে পারে।

এখানে ওজন বড় কথা নয়, আপনি কোন জায়গায় অবস্থান করছেন — সেটাই আসল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

তাই চেষ্টা করুন ভালো মানুষদের সংস্পর্শে থাকতে। উত্তম পরিবেশে অবস্থান করুন এবং নিজের সম্মান ও মর্যাদা বজায় রাখুন।

Address

Sirajganj

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when গল্পকথা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to গল্পকথা:

Share