12/06/2025
আসলে আমার মতো অনেকেই আছেন, যারা জন্মের পর থেকেই উদ্দেশ্য পূরণের জন্য লেগে পড়ি, এবং সেটা অর্জন করতে গিয়ে জীবনের মূল্যবান সময়গুলো হারিয়ে ফেলি—যা আমরা তখন হয়তো বুঝি না। আমার মতে, জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হলো ১২ থেকে ১৮ বছর। এই বয়সের মধ্যে যদি কেউ জীবনকে উপভোগ করতে না পারে, তাহলে আমি মনে করি তার চেয়ে বড় হতভাগা আর কেউ নেই।
প্রথম ভালো লাগা, কিংবা প্রথমবার কোনো কিছু করতে চাওয়া—কিন্তু সাহসের অভাবে না করতে পারা, এ সময়ের সবচেয়ে বড় ভুল। যা পরবর্তীকালে আপনাকে পিষে মারবে।
করোনার পর থেকে সময় যেন রকেটের গতিতে চলে গেল। করোনা শুধু একটা রোগ ছিল না, এটা ছিল এক ভয়ানক দুর্যোগ। এটা কেড়ে নিয়েছে আমার শৈশবের সুন্দর মুহূর্ত, কেড়ে নিয়েছে আমার বন্ধুমহল। কীভাবে যেন গত পাঁচ বছর চলে গেল, বুঝতেই পারিনি। জীবনের সবচেয়ে বড় রিগ্রেট হচ্ছে সময়ের সঠিক মূল্য না দেওয়া। কারণ, আমরা অতীতে ফিরতে পারব না, তবে ভবিষ্যতে যেতে পারব।
কিছুদিন হঠাৎ মনে হলো—চারপাশে তাকালে সবাই খুব সুখী, সবাই খুব উপভোগ করছে জীবন—শুধু আমি ছাড়া। পাঁচটা মূল্যবান বছর কেমন যেন হাতছাড়া হয়ে গেল। কিছুই করতে পারলাম না এই সময়গুলোতে। জীবনের সবচেয়ে আনন্দদায়ক মুহূর্তগুলো যেন এক নিমিষেই ধ্বংস করে ফেললাম।
শত চেষ্টাতেও আর সেই ক্লিন চেহারা বা শিশুসুলভ আচরণ ফিরে পাব না। কী করলাম আর কীই বা পেলাম এই বছরগুলোতে? বয়সই শুধু বাড়লো, কিন্তু অভিজ্ঞতা কিংবা স্মৃতি সেভাবে তৈরি হলো না—যেটা আমাকে প্রতিনিয়ত মানসিক যন্ত্রণা দেয়।
প্রতিবারই মনে হয়—আবার যদি ১৬ বা ১৭ বছর বয়সে ফিরতে পারতাম! আফসোস হয় শিশুদের দেখলে, মনে হয়—আহ্, যদি আবার একবার শিশু হয়ে জন্মাতে পারতাম!
কিন্তু হায়! এখন শুধু অপেক্ষা—৩০ বা ৩৫-এর মধ্যবয়সী হয়ে যাওয়ার, কিংবা ৪৫ থেকে ৬০ বছর বয়সে ফিরে তাকিয়ে দেখা, যেখানে থাকবে শুধু স্ট্রাগল আর হতাশা। হয়তো তখন টাকা থাকবে, কিন্তু কিছু কেনার শখ থাকবে না। হয়তো আবিষ্কার করব, আমি সেই ৬০ বছরের ডায়াবেটিস আর হার্টের রোগী, যে চেয়ারে বসে ভাবছে—জীবনটা কীভাবে কাটালাম?
সারাজীবন দুর্নীতি করা ব্যক্তিটাও হয়তো শেষ বয়সে এসে ভাবে—কার জন্য করলাম এই দুর্নীতি? এত টাকা, সন্তানের উপভোগের জন্য? না, তাহলে কিসের জন্য?
আলিশান বাড়িতে থেকেও একটা রুটির বেশি খেতে পারছেন না, কারণ ডায়াবেটিস হার্টের রোগ। বৃদ্ধাশ্রমে আবিষ্কৃত এক বৃদ্ধ বুঝে গেছেন—চাইলেও আর ঘরে ফেরা না।
©naim hossen