Flim Exhibition

Flim Exhibition They say films are a reflection of society; they transform the way we see the world. want to best page for movie lover

For cinema lovers, films are not merely a source of entertainment, they are their retreat from the world.

24/06/2025

Boos your whatsapp

19/06/2025

গভীর রাতে হঠাৎ ঝাপসা চোখে জ্ঞান ফিরলো অরুনীর। চারপাশ অন্ধকার, নিঃস্তব্ধ।
বুকের ওপর অদ্ভুত একটা ভারি চাপ অনুভব করলো সে। ধীরে ধীরে ঘাড়টা কাত করতেই দৃষ্টি আটকে গেলো।
সালমান একটা ছোট্ট বাচ্চার মতো মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে ওর বুকের উপর। নিঃশ্বাসটা ধীরে ধীরে ছুঁয়ে যাচ্ছে অরুনীর ত্বক, কাঁপিয়ে দিচ্ছে ভেতরের সব অনুভব।
একচিমটি লজ্জা যেন মুখটা গরম করে তুললো অরুনীর, তবুও বুকের ভেতর অদ্ভুত এক মায়ার ঢেউ খেললো।
"এই মানুষটা না...কেমন যেন!"
চাদরের নিচে ওদের লেপ্টে থাকা হাতটা আস্তে করে সরিয়ে নিলো সে। তারপর অল্প একটু নুয়ে গিয়ে সালমানের স্লিকি চুলে আলতো করে হাত বুলাতে লাগলো।
চুলের ঘ্রাণ, গালের তাপ, কপালের নরমতা সবকিছু মিলিয়ে অরুনীর বুক কেমন করে উঠলো।
মনে হলো, এই মানুষটার সমস্ত ক্লান্তি যেন এসে নামলো তার বুকের উপর।
এই ঘুম, এই মুহূর্ত এটাই হয়তো ভালোবাসা। না চাওয়াতেও নিজের করে রাখার এক নীরব অধিকার।
অরুনী চুপচাপ চোখ বন্ধ করে ফেললো। বুকে মাথা রাখা মানুষটার নিঃশ্বাস গুনতে গুনতে লাগলো।
অরুনীর সামান্য নাড়াচাড়ায় সালমানের ঘুমটা ভেঙে গেলো। ধীরে ধীরে মাথা তোলে তাকালো বুকের দিকে।
চোখ খুলে তাকিয়ে আছে অরুনী ওর চোখের ভেতরে যেন হাজারটা কথা গুমরে মরছে।
এক মুহূর্তের জন্য থেমে গেলো সময়। দু’জনের চোখে চোখ। শ্বাস-প্রশ্বাস গুলিয়ে গেলো একে অপরের ভেতর।
সালমান মায়াভরা কণ্ঠে ডেকে উঠলো— অরু পাখি।
এই ডাকটা যেন বুক চিরে ভেতরে ঢুকে গেলো অরুনীর। একটা অজানা কাঁপুনিতে ঘিরে ধরলো তাকে।
এই একটা শব্দেই যেন লুকিয়ে আছে শত শত অপ্রকাশিত অনুভব, দীর্ঘ রাতের সব ব্যথা আর ভালবাসার যত অনুরণন।
সালমান তাড়াতাড়ি উঠে বসল। তারপর কপালে গভীর এক চুম্বন এঁকে দিয়ে স্নিগ্ধ কণ্ঠে বললো— অরু পাখি আমার ঠিক আছো তুমি? জ্ঞান ফিরেছে তোমার? এখনই আমি ডাক্তার ডেকে আনছি!
তাড়াহুড়ো করে উঠতে গিয়েই হঠাৎ মনে পড়লো বিছানার পাশেই তো বেল সুইচ আছে।
এক মুহূর্ত দেরি না করে সালমান হাত বাড়িয়ে সঙ্গে সঙ্গে সুইচে চাপ দিলো।
সালমানের বেল প্রেস করার সাথে সাথেই ছুটে এলো ডাক্তার আর দুইজন নার্স। কেবিনের দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই সালমান উঠে দাঁড়িয়ে উত্তেজিত গলায় বললো— ডাক্তার অরু পাখির জ্ঞান ফিরেছে!
সালমানের কণ্ঠের মধ্যে একটা ধাক্কা ছিলো, একটা বাঁচিয়ে রাখার তাড়না ছিলো।
অরুনী জ্ঞান ফিরেছে শুনে ডাক্তার হালকা একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।
— ও.টি.-তে ওর অবস্থা খুব খারাপ ছিলো ডাক্তার ধীরে কণ্ঠে বললো, “একদিকে র”ক্ত” শূন্যতা, আরেকদিকে প্রচুর র”ক্ত” ক্ষরণ, আমাদের প্রচুর ব্লা”ড দিতে হয়েছিলো। সার্জারিটা সাকসেস হলেও একটা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছিল, যতক্ষণ না ওর জ্ঞান ফিরে। এখন যেহেতু ওর জ্ঞান ফিরেছে, তাই আপাতত সেই রিস্কটা কেটে গেছে।”দ
সালমান আবার ডাক্তারকে ডাকলো, চোখে মুখে উৎকণ্ঠার ছাপ।
ডাক্তার এগিয়ে এলো, একবার তাকালো অরুনীর মুখের দিকে। তারপর ধীরে ধীরে চেকআপ করতে লাগলো। নার্স সব য”ন্ত্র”পা”তি এগিয়ে দিলো।
— উনি এখন বিপদমুক্ত, ডাক্তার বললো, তবে শরীর খুবই দুর্বল। সম্পূর্ণ রেস্ট দরকার। ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে।
একটা ই”ন”জে”ক”শ”ন রেডি করে নার্স ডাক্তারকে দিয়ে দিলো। ডাক্তার সেইটা নেয়ার জন্য অরুনীর হাতে এগোতেই সালমান বললো — আস্তে দিবেন প্লিজ, আমার বউটা যেন ব্য”থা না পায়!
ডাক্তারের ঠোঁটের কোণে হালকা এক ক্লান্ত হাসি খেললো। একটা গরম নিঃশ্বাস ফেলে ই”ন”জে”ক”শ”ন”টা পুশ করে দিলো অরুনীর শরীরে।
অরুনী চোখ বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে রইলো। কিছু বললো না, শুধু সালমানের পা”গ”লা”মি গুলো দেখে দেখে চোখের কোনে জমে উঠলো একফোঁটা শান্তির জল।
ডাক্তার আর নার্স কেবিন ছেড়ে বেরিয়ে গেলো।
সালমান ধীরে ধীরে টুলটা টেনে এনে বসল অরুনীর পাশে। তারপর হাত বাড়িয়ে ওর মাথায় বিলি কেটে দিতে দিতে বললো — ঘুমাও বউ আমি আছি তোমার পাশে। ভয় পেওনা ও কলিজার পাখি।
কড়া ডোজের ইনজেকশনে ধীরে ধীরে চোখটা বুজে এলো অরুনীর। নিঃশব্দে তলিয়ে গেলো গভীর ঘুমে।
সালমান ওর হাত ধরে বসে রইলো, থমকে থাকা সেই সময়ের মাঝে।
হাসপাতালের ছোট্ট এই কেবিনটা সেই মুহূর্তে ওদের ভালোবাসার এক নিরব সাক্ষী হয়ে রইলো।
_____________________________
চারপাশে ফিসফাস মানুষের কথাবার্তার আওয়াজ ভেসে আসছিলো ধীরে ধীরে।
ঘুমের ঘোরে ডুবে থাকা অরুনীর চোখ হঠাৎ খানিকটা খুলে গেলো।
একটু সময় নিয়ে জ্ঞান ফিরে এলো পুরোপুরি। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো কেবিনের এক কোণে দাঁড়িয়ে বড় চাচা, অবন্তী আর মেজো চাচা। আর তাদের বিপরীতে, একেবারে ঘাড় ত্যাড়া করে দাঁড়িয়ে আছে সালমান।
তাদের মধ্যে কথার চাপা টান টান উত্তেজনা একটা সংঘর্ষের আঁচ যেন ভেসে বেড়াচ্ছে গোটা রুমে।
— এই কী করছেন আপনারা সবাই? খুব ধীরে কন্ঠে অরুনী কথাটা বললো।
সবাই এক ঝটকায় ঘুরে তাকালো অরুনীর দিকে।
সালমান তো একেবারে বোমার মতো ফেটে পড়লো— দেখলেন! বলেছিলাম না একটু আস্তে কথা বলুন! আমার বউটা ঘুমাচ্ছে! উঠেই গেলো না?
তারপর ঠোঁট কামড়ে একরাশ বিরক্তি মাখা গলায় গর্জে উঠলো — শা’লা’র দুনিয়ায় কোথাও এক ফোঁটা শান্তি নাই ছ্যাহ্!
এক হাতে কপাল চেপে ধরে দাঁড়িয়ে রইলো সে, অন্য হাতে মুঠো পাকিয়ে রাখলো রাগ সামলানোর চেষ্টা করে।
এক মুহূর্তের নীরবতা।
তারপর তানভীর খান ধীরে ধীরে এগিয়ে এলো বেডের দিকে। চোখে মুখে একগুচ্ছ অনিশ্চয়তা, একরাশ গম্ভীরতা।
অরুনী তাকিয়ে রইলো।
বুকে ধুকপুক করছে, বুঝতে পারছে না কী নিয়ে এত কথা কাটাকাটি হচ্ছিলো সালমান আর ওদের মধ্যে।
তানভীর খান এগিয়ে এলো অরুনীর দিকে।
বেডের পাশে গিয়ে ধীরে ধীরে ওর হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিয়ে বললো— মা অরুনী তুই কি আমার সাথে যাবি?
এক মুহূর্তের জন্য ঘরটা থমকে গেলো।
অরুনী ঠোঁট কাঁপিয়ে কিছু একটা বলতে যাবে ঠিক তখনই সালমানের গলা গমগম করে বলে উঠলো — এ্যাঁ! এটা কি মগের মুল্লুক নাকি? বউ আমার, তাই আমার সাথেই যাবে!
শব্দগুলো এমনভাবে ছিটকে এলো, যেন দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে ফিরে ফিরে আসছে।
অরুনী চুপচাপ চোখে একগুচ্ছ বিভ্রান্তি।
একবার তাকাচ্ছে চাচার দিকে, একবার সালমানের দিকে আসলে কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে, কিচ্ছু মাথায় ঢুকছে না।
সবকিছু ওর মাথার উপর দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।
এমন সময় সালমান ধীরে ধীরে পা ফেলতে ফেলতে এগিয়ে এলো ওর দিকে।
একদম কাছে এসে ওর উল্টো পাশে ওর হাতটা ধরে হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়লো।
তারপর ঠোঁটটা অরুনীর কানের খুব কাছে এনে ঠাণ্ডা গলায় ফিসফিস করে বললো— তুমি বলো তুমি আমার সাথে যাবে যদি একটাও উল্টো শব্দ বের হয় তোমার মুখ থেকে তাহলে মনে রাখো কসম খোদার, এই কেবিন থেকে সবাইকে বের করে আমি তোমার সাথে রোমান্স শুরু করবো।
সালমান গলা আরেকটু নিচু, গা ছমছমে স্বরে বললো— এমন রো”মা”ন্স করবো বউ, আগামী তিন মাস একটুও নাড়াচাড়া করার অবস্থা থাকবে না। এখন নাও চয়েস ইজ ইউরস।
অরুনী চমকে তাকালো। চোখটা বড় হয়ে গেলো যেন মুহূর্তেই হৃৎকম্প বেড়ে গেছে।
আর সালমান ঠোঁট চা”ট”তে চা”ট”তে হাসলো।
তারপর বললো — এইভাবে চোখ পাকিয়ে লাভ নাই সোনা আমি সালমান ফারসি! আমার কথার নয়-ছয় হবে না।
তানভীর খান এবার কন্ঠটা আরও নরম করে বললো,
— “কি রে মা… চুপ কেন? কিছু তো বল…”
অরুনী এক চুল নড়লো না। গলায় জমে থাকা শব্দের দলা যেন বুক অবধি উঠে এসে আটকে গেছে।
চোখ দুটো নামিয়ে নিলো নিচের দিকে কখনো, কোনোদিনও বড় চাচার মুখের ওপর কিছু বলেনি সে।
আজ প্রথমবার ওকে বলতে হবে।
কণ্ঠ শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। গলা কেঁপে যাচ্ছে।
একটা বড়সড় ঢোঁক গিললো অরুনী।
চোখটা বন্ধ করলো কয়েক সেকেন্ডের জন্য ঠোঁট জোড়া কামড়ে ধরলো, যেন ওখান থেকেই সাহস টেনে আনছে।
নিজেকে সামলে নিয়ে, ধরা গলায়, ভয় পেয়ে যাওয়া কণ্ঠে তোতলাতে তোতলাতে বললো— বড়ড়...চাচাচা… আমিই …. ওনারর... সাথেই… যাযাবো
এক নিমিষে ঘরে ঝড় বয়ে গেলো।
সালমানের ঠোঁটে ঝকঝকে এক বিজয়ের হাসি ছড়িয়ে গেলো। চোখেমুখে রাজা হওয়ার গর্ব, গলায় বিজয়ীর আত্মবিশ্বাস।
তানভীর খান তাকিয়ে রইলো একদম ঠায়।চোখে সন্দেহ, চিন্তা আর দ্বিধার ঘূর্ণি। সালমানের দিকে সেই চোখে তাকিয়ে বললো না কিছু, কিন্তু চাহনিতেই লেখা ছিল হাজারটা প্রশ্ন।
সালমান ধীরে ধীরে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।
চোখে একরাশ আত্মবিশ্বাস, ঠোঁটে সেই চিরচেনা অবজ্ঞার তির্যক হাসি।
কোনো কিছু, কারো অনুমতি, কারো অস্তিত্ব কিছুই যেন ওর গায়েই লাগলো না।
চুপচাপ এগিয়ে এলো অরুনীর দিকে। তারপর এক মুহূর্ত দেরি না করে, সরাসরি অরুনীকে দুই হাতে তুলে নিলো একটা বাচ্চা মেয়ের মতো, আদরের মতো, অধিকারীর মতো নিজের কাঁধে তুলে নিলো ওকে।
অরুনী বিস্মিত হয়ে লজ্জায় কুন্ঠিতো হয়ে চুপচাপ পড়ে রইলো সালমানের কাঁধে। কিছু বলার সুযোগই পেলো না।
সালমান সবাইকে, বিশেষ করে তার বাবাকে উদ্দেশ্য করে গলা নামিয়ে দৃঢ় অথচ গম্ভীর স্বরে বলে উঠলো— আমার বউ। আমি নিয়ে যাচ্ছি। একদম সুস্থ হলে ফিরবো বাড়িতে। তোমরা ফার্মালিটিজ সব শেষ করে ফেলো। আল্লাহ্ হাফেজ।
একটাও বাড়তি শব্দ নয়। একটাও ব্যাখ্যা নয়।
শুধু অধিকার এবং ভালোবাসা, নিজের মতো করে।
তারপর সালমান ধীরে ধীরে কেবিনের দরজার দিকে পা বাড়ালো। হাসপাতালের সাদা দেয়াল, সেই মুহূর্তে সাক্ষী হয়ে রইলো একজন পুরুষের ভালোবাসা আর মালিকানার ভাষা।
চলবে,,

19/06/2025

"কাপড় খু*লে আস তাড়াতাড়ি! অনেক রাত হয়েছে! "
অবন্তীর চোখে পানি এসে গেল! এখনই মনে হয় জানোয়ারটা ঝাপিয়ে পড়বে! এই মানুষটার সাথে তার সারাজীবন কাটাতে হবে।
যাওয়ার জায়গা নেই তার। বাবা কত ক*ষ্টে বিয়ে দিয়েছে। অবন্তীর বাবা একজন স্কুল মাস্টার ছিলেন। এখন রিটায়ার্ড করেছেন। টাকা পয়সা যা ছিলো প্রথম দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েই শে*ষ!
এখনো দুই মেয়ে বাকি! অবন্তীরা পাঁচ বোন। অবন্তী তিন নাম্বার।
লোকটার বয়স একটু বেশি তাতে অবশ্য অবন্তীর কোনো আপত্তি ছিলো না! বাসর রাতে কোন কথা না বলেই কাপড় খো**ল!
লোকটা বারান্দায় চলে গেছে! এখনই ফিরে এসে অবন্তীর ওপরে ঝাপিয়ে পড়বে। অবন্তী শাড়িটা খু*লে বিছানায় উঠে বসল। ছায়া আর ব্লা**উ**জ পরে আছে! কী যে খা**রা**প লাগছে! বাসর রাত নিয়ে মানুষের কত স্বপ্ন থাকে। ওর কাপালটাই খা**রা**প!
বিছানার চাদরটা গায়ে দিয়ে বসে আছে অবন্তী। লোকটা বারান্দায় গিয়ে সিগারেট খাচ্ছে মনে হয়। বাইশ বছরের জমিয়ে রাখা শ*রী*র*টা* দিতে হবে সে তো অবন্তী দিতোই একটু ভালোবেসে নেয়া যেত না?
লোকটা ফিরে আসল। অবন্তীর বুকটা কেমন করছে! ইচ্ছে করছে পালিয়ে যেতে।
লোকটা একটু হেসে বলল, "বাঃ! তুমি তো খুব দ্রুত চেঞ্জ করতে পারো! "
অবন্তী একটু ল**জ্জা পেল। কা*প*ড় চেঞ্জ করতে মানুষ এভাবে বলে? আজব মানুষ তো! ও কী সব ভেবেছে এতক্ষণ?
অবন্তী বলল, "আমি একটু বাথরুমে যাবো।"
"যাও। রুমেই আ্যটাস্ট বাথরুম আছে। "
"আপনি একটু বারান্দায় যান।"
"ল**জ্জা লাগছে বুঝি? আচ্ছা তোমার নাম কী? আমার আবার নাম মনে থাকে না!"
"অবন্তী। "
"খুব সুন্দর নাম!"
লোকটা বারান্দায় চলে গেল। মানুষটা খা**রা**প না! অবন্তী উঠে বাথরুমে গেল। বাথরুমে অবন্তীর পরা একটা থ্রি পিছ রাখা। অবন্তীর এখন বেশ ভালো লাগছে! একটু ল**জ্জা**ও লাগছে!
অবন্তীর পাশে বসে আছে মানুষটা। ওর দিকে তাকিয়ে একটু হাসল। অবন্তী নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। মানুষটার দিকে তাকাতে কেমন ল**জ্জা লাগছে!
"আমার নাম কী জানো?"
একটু নিচু স্বরে বলল, "আসলাম শেখ।"
"এত বেশ ল**জ্জা**র ব্যাপার হলো! তুমি আমার নাম ঠিক মনে রেখেছ। আমি* তোমার নাম ভুলে বসে আছি!"
অবন্তী কিছু বলল না।
"কফি খাবা অবন্তী? "
অবন্তী কিছু বলল না।
আমার ঘরে কফি বানানোর ব্যবস্থা আছে। তুমি বস আমি কফি বানিয়ে আনছি।
অবন্তীর ইচ্ছে ছিলো বলে আপনি বসুন আমি বানাচ্ছি বলা হলো না। মানুষটা উঠে চলে গেছে।
দুই কাপ কফি নিয়ে ফিরে আসল আসলাম। হাত বাড়িয়ে কফি দিয়ে বলল, "খেয়ে দেখ কেমন হয়েছে? আমি অবশ্য ভালো কফি বানাতে পারি। আজ মনে হয় ভালো হয়নি! "
মানুষটা মনে হয় বেশি কথা বলে। বেশি কথা বলা মানুষের মনটা খুব ভালো থাকে। অবন্তীর বাবাও বেশি কথা বলে।
অবন্তী কফির কাপে আলত করে চুমুক দিলো। কফিটা খেতে বেশ ভালো লাগছে! ওদের বাড়িতে কফি খুব একটা খাওয়া হয় না!
"ঘরে আসবাবপত্র কিছুই নাই। ফ্লাটটা পেয়েছি ছয় মাস আগে। একটু গুছিয়ে নেয়া যেত ইচ্ছে করেই ফ্লাটে আসিনি। তোমাকে নিয়ে একসাথে উঠব বলে। এখন তোমার ফ্লাট তুমি গুছিয়ে নাও। সব কিছু একসাথে কিনতে পারব না! অল্প অল্প করে সাজাবে। একটু কষ্ট হবে তোমার পারবে না?"
অবন্তী মানুষটার দিকে তাকাল। এত মায়া লাগছে কেন মানুষটার জন্য! কেমন ছুয়ে দিতে ইচ্ছে করছে!অনেকেই অভিযোগ করেন যে পরের পর্ব খোজে পাচ্ছেন না।
চলবে

19/06/2025

সবাই বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে নিজ নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য তোরজোর করে।ঝুমুর - আহিল নতুন বর বউকে বিদায় জানায়,,
আহিল: মিস্টার শিহাব আপনার নতুন জীবনের জন্য আপনাকে অভিনন্দন।
শিহাব: আমাকেও অভিনন্দন জানানোর সুযোগটা জলদি করে দিয়েন।আমি আর আমার বউ ধুমধাম করে আপনাদের বিয়ে দেখতে যাব।
আহিল ঝুমুরের দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বাকা হাসি দিয়ে বলে,,,
আহিল: আপনার বান্ধুবি চাইলে খুব জলদি বিয়েটা সেরে ফেলব তাইনা ঝুমুর।
ঝুমুর চোখ গরম করে আহিলের দিকে তাকিয়ে জুতা দিয়ে আহিলের পায়ে একটা খোজা দিয়ে চলে যায়।আহিল তার পিছুপিছু ছুট লাগায়।
আহিল: আরে ঝুমুর দাড়াও, আরে আস্তে হাটো পরে যাবে।
ঝুমুর: আপনি কি শুরু করেছেন বলুন ত? আর কয়দিন এই নাটক চালিয়ে যাবেন?
আহিল: তুমি এত রিয়াক্ট কেন করছ আমিতো...
ঝুমুর: আপনার জন্য আমাকে সব জায়গায় গেলেই কথা শুনতে হচ্ছে কেন শুনব হুম?
আহিল: আচ্ছা বাবা কুল আমরা গাড়িতে বসে কথা বলি তুমি অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে আছো।
ঝুমুর: তার দরকার নেই আমি,চলে যেতে পারব।
আহিল: দেখো জেদ করোনা এত রাতে তুমি গাড়ি পাবেনা।
ঝুমুর: তাও আমি একাই যাব।
বলেই ঝুমুর হাটা শুরু করে।আহিল ঝুমুরের সামনে গিয়ে তাকে পাজাকোলা করে তুলে নেয়।
ঝুমুর: কি করছেন টা কি মানুষ দেখতেছে নামান আমাকে।
আহিল: না নামাব না।যে আমার কথা শোনেনা তাকে আমি এইভাবেই কথা শোনাই।
আহিল ঝুমুরকে গাড়িতে বসিয়ে সিট বেল্ট লাগিয়ে দেয়।
ঝুমুর: আপনি কি ভুলে যাচ্ছেন আপনি আমার বস,আর আমি আপনার বেতনভুক্ত কর্মচারী?
আহিল: সেটা অফিসে বাইরে নয়।
ঝুমুর: তাহলে বাইরে আপনার আর সম্পর্ক কি?
আহিল ঝুমুরের দিকে কিছুটা ঝুকে তাকে প্রশ্ন করে,,
আহিল: তুমি কি হতে চাও বলো।
ঝুমুর কিছুটা ভরকে যায় তোতলাতে তোতলাতে বলে,,
ঝুমুর: আমি কিছু হতে চাইনা।
আহিল: কিন্তু আমি বানাতে চাই।
ঝুমুর অবাক হয়ে আহিলের দিকে তাকায়,,
ঝুমুর: কি বানাতে চান?
আহিল: আমার তৈরি করা নাটকের নাইকা যেখানে তুমি আমার হবু বউ।
ঝুমুর অনেক আশা করে ছিল যে আহিল হয়তো তাকে পছন্দ করে কিন্তু ঝুমুরের আশাতে এক বালতি পানি ঢেলে দিয়ে আহিল খিলখিল করে হাসতে হাসতে ড্রাইভিং করতে থাকে।ঝুমুরের মধ্যে কেমন জানি হচ্ছে।ঝুমুরের অনেক খারাপ লাগছে একটু পর ঝুমুর পেটে হাত দিয়ে ব্যাথায় কুকিয়ে উঠে।আহিল তাড়াতাড়ি গাড়ি থামিয়ে দেয়।
আহিল: ঝুমুর কি হয়েছে?
ঝুমুর: আহ!! আমার পেট আমার পেটে কেমন জানি অস্বস্তি হচ্ছে।
বলতে বলতে ঝুমুরের শরীর প্রচুর ঘামতে থাকে।
আহিল: আপনি চিন্তা করবেন না আমি এক্ষুনি আপনাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।
আহিল যত তাড়াতাড়ি পারে গাড়ি চালিয়ে ঝুমুরকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
ডাক্তার : চিন্তার কিছু নেই এই সময় এমন একটু হয়ি সবে ত ২ মাস পার হলো আসতে আসতে ঠিক হয়ে যাবে।আমি এই ওষুধ লিখে দিচ্ছি আর এই ভিটামিন গুলো খাওয়াবেন।
ঝুমুর: ডাক্তার আমার বেবি ঠিক আছে ত?
ডাক্তার : চিন্তা করবেন না বেবি একদম ঠিক আছে।
আর আপনি দেখবেন উনি যেন বেশি কাজ না করে আপনার স্ত্রীর যত্ন নিবেন।
আহিল: আচ্ছা ডক্টর।
আহিল আর ঝুমুর হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গাড়ির দিকে যায় তখন ঝুমুর আহিলকে পিছু ডাকে।
ঝুমুর: স্যার শুনুন!!
আহিল: বাইরে আমাকে স্যার বলার দরকার নেই কল মি আহিল।
ঝুমুর: আপনি এগুলো কেন করছেন? আমাকে এত সাহায্য করছেন আমাকে ডাক্তার দেখাচ্ছেন এগুলোর দায় ত আপনার নয়।
আহিল: সত্যি কি আমার নয়?
ঝুমুর কিছুটা ভরকে যায় ঝুমুর ভাবে আহিল বোধহয় সব জেনে গেছে।
ঝুমুর: মানে?
আহিল: সত্যি বলতে মানে আমিও জানিনা ঝুমুর কিন্তু আপনাকে আমার ভীষণ চেনা লাগে আর আপনার পেটে, ( আহিল ঝুমুরের পেটে হাত দিয়ে) এই বাচ্চাটার উপরও ভীষণ টান অনুভব হয় আপনাদের কাছে থাকলে আমার ভালো লাগে।
ঝুমুর: আপনার আমাকে নোংরা আর খারাপ মেয়ে মনে হয়না যে কিনা বিয়ে আগেই...
আহিল: চুপ করো। আমি এসব শুনতে চাইনা তোমার অতীত আমার জানার দরকার নেই।সবাই জীবনে জেনে না জেনে অনেক ভুল করে ( যেমন আমিও করেছি)
তাই বলে সেটা ধরে বসে থাকলে জীবন চলবে না।
ঝুমুর: হাত সরান!!
আহিল ঝুমুরের পেটের উপর থেকে হাত সরিয়ে নেয়।আহিলের কেমন জানি অনুভূতি হচ্ছে এই অনুভূতি আহিলের পরিচিত নয় এ যেন এক ভিন্ন রকম ভালো লাগা যা প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
আহিল: চলুন আপনি এখনো দূর্বল আপনাকে দাদির বাসায় রেখে আসি হলে আপনি একা যদি আবার অসুস্থ হয়ে যান।
ঝুমুর: দাদির বাসায় না না দাদি আগেই সন্দেহ করেছে আজকে গেলে শিওর বুঝে ফেলবে আর ভাববে হয়তো...
আহিল: হয়তো?
ঝুমুর: কিছুনা।
আহিল: আমি আমার বাসায়ি যেতে বলতাম কিন্তু তুমি যদি রাজি না হও।
ঝুমুর: যাব আমি।এইটুকু ভরসা আছে আমার আপনার উপর আমি অকৃতজ্ঞ নই।
আহিল: বেশ তাহলে চল।
আহিল ঝুমুরকে নিয়ে নিজের বাসায় আসে।বাসায় এসে ঝুমুরের সব রকম আরামের ব্যবস্থা আহিল করে দেয়।ঝুমুর শুধু মুগ্ধ হয়ে আহিলের কাজকর্ম দেখছে।
আহিল: আপনি যান ফ্রেশ হয়ে নিন।
ঝুমুর : কিন্তু আমি পরব কি এই জামাকাপড় পরে ত ঘুমাতেই পারব না।
আহিল তার একটা টিশার্ট আর থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট এনে ঝুমুরকে ধরিয়ে দেয়।
আহিল: এগুলো পরুন।আপনার যে হাইট তাতে এইগুলা ঠিকঠাক ই হবে।
ঝুমুর: আপনি আমার হাইট নিয়ে মজা করছেন?
আহিল: এমা মজা কেন করব কতই আর হবে ৫ ফুট?
ঝুমুর বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে বলে,,
ঝুমুর: ৫ ফুট ৪
আহিল : আর আমার কত জানো? ৬ফুট ১
ঝুমুর: ( হুম ওই জন্যই ত হাতির মতো শরীরটার ভার আমাকে নিতে হয়েছে উফফ)
আহিল: কি হলো যান চেঞ্জ করে নিন আমি আপনার জন্য কিছু বানাচ্ছি।
ঝুমুর: না আমার পেট ভরা খাবনা।
আহিল: ওষুধ গুলো খেয়ে নিন তাহলে।
আহিল ঝুমুরকে ওষুধ আর পানি এগিয়ে দেয়।ঝুমুর মনে মনে ভাবতে থাকে,,
ঝুমুর: আহিল আপনি কত কেয়ারিং। আপনাকে কি বলে দিব সেইরাতের কথা এই বাচ্চাটা যে আপনার আমি কি বলে দিব? আপনি কি মানবেন? না না বলাব না আমি আপনি ত আমাকে প্রতিশোধ নিবেন বলে নিপা ভেবে তুলে এনেছিলেন।আপনি জানেন ওই মেয়েটা নিপা যদি আপনাকে সত্তিটা বলি আপনি আবার আমাকে সেইদিনের মতো ঘৃণা করবেন যদি আমার বাচ্চাটাকে না রাখেন।শত্রুর বোন ভেবে যদি আমার আর আমার বাচ্চার কোন ক্ষতি করে দেন। যতদিন না আমি শিওর হচ্ছি যে আপনি জেনে গেছেন ওইদিন রাতে নিপা বলে আপনি অন্য কাউকে এনেছিলেন ততদিন আমি এই বাচ্চার কথা আপনাকে বলব না। আমি সব হারিয়েছি কিন্তু এই বাচ্চাটাকে হারাতে পারব না আপনার যেই রুপ আমি সেইদিন দেখেছি তাতে আপনি যেমন ভালো মানুষ তেমন চরম হিংস্র।
আহিল: কি হলো কোম ভাবনায় ডুবে গেছে ঝুমুর।
ঝুমুর: না কিছুনা।
ঝুমুর সারারাত ধরে ভাবতে থাকে তার কি করা উচিত ভেবে ভেবে সে এটাই ঠিক করে আগে সে জানবে আহিল তার ভুলের কথা জানে কিনা যদি জানে তাহলেই সে সত্তিটা বলবে যে সেই রাতে আর কেউ নয় ঝুমুর ছিল।
[ সকালে ]
ঘুমঘুম চোখে ঝুমুর বিছানা ছেড়ে উঠে। উঠেই দেখে বিছানার পাশে মেয়েদের এক সেট পোশাক রাখা।ঝুমুর সেটা নিয়ে ওয়াশরুমে যায়।ডাইনিং এ এসে দেখে আহিল প্রপার ওয়েতে সেফ সেজে কিচেনে রান্না করছে।
আহিল: উঠে পরেছ? এসো নাস্তা করো।
ঝুমুর: আপনি নাস্তাও বানাতে পারেন?
আহিল: কি করব বলো ব্যাচেলার মানুষ বউ ত আর নেই যে রান্না করে খাওয়াবে।
আহিল ঝুমুর ব্রেকফাস্ট করে অফিসের জন্য বের হয়।আহিল ঝুমুরকে আজ মানা করেছিল অফিস যেতে কিন্তু ঝুমুর তাও যায়।
_________________
কালি: রিদয় তোকে আর কত টাইম দিব? আমার ১০ টা মেয়ে চাই আর ২ দিন পর ডেলিভারি আমি ডিলার কে কি বলব?
রিদয়: বস বস আমি চেষ্টা করছি। ওদের ডিমান্ড খুব হাই সব সুন্দরী মেয়ে লাগবে। আমি ৯ জনকে জোগাড় করে ফেলেছি শুধু একজন।
কালি: আজকে না তুই বিয়ে বাড়ি গেলি ঝুমুর না কাকে তুলতে সে কই?
রিদয়: ভেবেছিলাম ঝুমুর এখানে একা থাকে অসহায় মেয়ে ওকে তোলা সহজ হবে কিন্তু একটু সমস্যা হয়ে গেছে। ওরে আমি কলেজ লাইফ থেকেই নজরে রাখছিলাম সেই মাল প্রেমের প্রস্তাব কত দিছি মানেনি তাই ভাবলাম আপনার হাতে তুলে দেই।
কালি: সে কি রে তুই নাকি ওরে ভালোবাসিস।
রিদয়: ছাড়তো ৫ বছর পিছে ঘুরছি পাত্তা দেয়নি অন্য একজনের সাথে বিয়ে করবে নাকি কিন্তু আমি তার আগেই যে করে হোক ওকে তুলে আনব কিন্তু বস আমার একটা আবদার আছে।
কালি: কি?
রিদয়: ইয়ে মানে বুঝতেই ত পারছ ওরে এক সময় পছন্দ করতাম ওর ভালোবাসা পাওয়ার থেকে আমার বেশি আগ্রহ ওর শরীরের উপর।তাই বলছি ওকে তুলে এনে যদি আমি একটু..
কালি: বেশ কিছু দেখিস কোন দাগ বা কাটাছেড়া যেন না হয় শরীরে তাইলে কিন্তু ওরা টাকা দিবেনা।
রিদয়: ওকে বস যা করার আমি ওকে ঘুম পারিয়েই করব।
রিদয় বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাতে মদের বোতল নিয়ে ভাবতে থাকে কিভাবে সে ঝুমুরকে তুলবে। ঝুমুরকে সে সত্যি অনেক ভালোবাসে ছিল কিন্তু এখন সেই ভালোবাসার থেকেও বড় তার কাছে টাকা।ঝুমুর ছাড়া এই মূহুর্তে অন্য মেয়ের খোজ করা তাও দেখতে শুনতে সুন্দর রিদয়ের জন্য খুব মুশকিল। তাই সে নিজের ভালোবাসাকে মাটি চাপা দিয়ে নিজের অন্ধকার জগতের কাজকেই বেশি গুরুত্ব দিল।ওর শুধু ঝুমুরের শরীর পেলেই হলো ভালোবাসাটা শরীরের প্রতি মনে প্রতি নয়।
[ অফিসে ]
আহিল: মিস ঝুমুর আজকে আমার সিড উইল কি,? কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে?
ঝুমুর: জ্বি স্যার আজকে আমাদের একটা প্রোজেক্ট ফাইল করার আছে আপনাকে সেখানে যেতে হবে।
আহিল: ওকে। তাহলে একটু পর ই আমরা বের হব।
ঝুমুর: আমিও যাব?
আহিল: আপনি না গেলে আমি সামলাব কিভাবে ওখানে ত আমি কাউকেই চিনিনা।
ঝুমুর: ওকে আমি তাহলে ওদের রেডি থাকতে বলছি।
আহিল আর ঝুমুর বের হতে যাবে তখনি আহিলের ফোনে একটা ফোন আসে।
বডিগার্ড : স্যার!! আমরা মেয়েটার খোঁজ পেয়েছি উনি এখন আমাদের সাথেই আছেন।
আহিল: কি?? কোথায়
বডিগার্ড : আমরা কি ওনাকে নিয়ে অফিসে যাব?
আহিল: না তোমরা ওনাকে নিয়ে কোন ফফি শপে বসো আমি আসতেছি।
ঝুমুর: এনি প্রব্লেম স্যার?
আহিল: ঝুমুর আপনি একটু ওইদিক টা সামলে নিন আমার খুব দরকারি একটা কাজ আছে আমি যাচ্ছি হ্যাঁ।
ঝুমুর কে কিছু বলতে না দিয়েই আহিল তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে গেল।
ঝুমুর: যা বাবা কি এমন হলো কে জানে!!
আহিল অনেক দ্রুত লোকেশনে পৌছায় গিয়ে দেখে একটা মেয়ে তার দুইজন বডিগার্ড এর সাথে বসে আসে।
আহিল: তোমরা যাও আমি ওনার সাথে একা কথা বলতে যাই।
বডিগার্ডরা যাওয়ার সাথেই মেয়েটা আহিলের পাশে এসে বসে আর আহিলের হাত ধরে বলে,,,
মেয়েটা: আমাকে চিনতে পেরেছ আমি,, আমি সেই মেয়ে যাকে তুমি ভুল করে তুলে নিয়ে গেছিলে।
আহিল: আ,,আপনার নাম?
মেয়েটা: প্রেমা। আমি আপনাকে কত খুজেছি কত খুজেছি কিন্তু কোথায় পাইনি।
বলেই মেয়েটা কান্না করতে লাগে
আহিল: দে,,দেখুন সেইদিন আসলে আমার লোকেরা।
প্রেমা: যা হওয়ার হয়ে গেছে সেসব নিয়ে আর কথা বলে লাভ নেই এখন যা আছে তাই নিয়েই কথা বলি?
আহিল: যা আছে মানে?
প্রেমা আহিলের হাত নিয়ে তার পেটে রাখে আর বলে,,
প্রেমা: আপনার বেবি
আহিল চমকে উঠে সে কি রিয়াকশন দিবে বুঝে উঠতে পারছেনা, সে খুশি হবে নাকি নাকি কি করবে ভেবেই পাচ্ছেনা।
আহিল: বাচ্চা? বাচ্চা মানে?
প্রেমা: আপনি এমন রিয়াক্ট কেন করছেন। আপনি কি এই বাচ্চাটা মানতে পারছেন না প্লিজ এমন করবেন না আমি কোথায় যাব?
আহিল : না না আপনি শান্ত হোন।আপনি কি চান আমাকে বলুন আম সব কিছু করতে রাজি।
প্রেমা: আমি শুধু আমার আর আমার সন্তানের প্রার্প সম্মান চাই ।
আহিল কি বলবে বুঝতে পারছেনা কি বলা উচিত তার। সে কিভাবে প্রেমাকে বিয়ে করব সে ত মনে মনে ঝুমুরকে ভালোবেসে ফেলেছে।
আহিল: বলছি যে আমি যদি আপনার সব রকম দায়িত্ব নেই মানে আপনার আর এই বাচ্চার ভরন পোষণ সব তাহলে কি আপনি রাজি হবেন? বিয়েটা আমি করতে পারবনা।
প্রেমা: ( বিয়ে আমিও করতে চাইনা আমার ত শুধু কোন মতে এই বাচ্চাটা পেট থেকে বের করতে পারলেই হয়।ততদিনে আপনার থেকে ইচ্ছে মতো টাকা নিয়ে আমি আমার লাইফটা সেট করে নিব আর এই বাচ্চাটা বের হয়ে গেলে তোকে আপনার কাছে ফেলে আমি বিদেশে ইয়েস)
আহিল: কি হলো কিছু বলুন প্লিজ
প্রেমা: আমি আর কি বলব আপনি যা ভালো মনে করেন।কিন্তু প্লিজ দেখবেন আমার কেউ নেই এখন আমি যেন..
আহিল: আপনি চিন্তা করবেন না আপনার কোন অসুবিধা হবেনা।এই নিন আমার ব্যাংক কার্ড যা লাগবে এইখান থেকে খরচ করবেন আর ওরা আপনাকে একটা ফ্ল্যাটে দিয়ে আসবে আপনি ওখানেই থাকবেন।
বলেই আহিল চলে যায়।
প্রেমা: ইয়েস ইয়েস উফফ আল্লাহ থ্যাংকস ভাগ্যিস ওই বডিগার্ড দুটোর কথা আমার কানে এসেছিল নাহলে ওই রিদয়ের বাচ্চা পেটে নিয়ে আমাকে ঘুরতে হতো।শালাত দায়িত্ব নিবে বলে যে পালিয়েছে আর আশার নাম নেই।
[কিচ্ছুক্ষণ আগে]
বডিগার্ড ১: কি করি বলত মেয়েটাকে কোথায় খুজি বস বলেছে খুজে পেতেই হবে।
বডিগার্ড ২: কিভাবে যে কি হইছে। কাদের যে কাজ দিয়েছিল একজনকে তুলতে গিয়ে আরেকজন কে তুলেছে।
বডিগার্ডরা এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছিল পাশেই ছিল প্রেমা। রিদয়ের খোঁজে বেরিয়েছিল সেও পথে একটা দোকানে ওদের কথা শুনছিল প্রেমা।প্রেমা রিদয়ের গার্লফ্রেন্ড ২ বছর প্রেম করে রুম ডেট করে যখন প্রেমা প্রেগন্যান্ট হয়ে যায় রিদয় তখন ওকে ছেড়ে পালায়।বডিগার্ড দুটোর কথা শুনে প্রেমার মাথায় শয়তানি বুদ্ধি আসে।বডিগার্ডরা চলে গেলে প্রেমা তাদের পিছু করে।কিছুটা দূরে গেলে প্রেমা ইচ্ছে করে তাদের সামনে আসে আর নাটক করে জানতে চায় আহিল চৌধুরীর খোঁজ তারা দিতে পারবে কিনা।
বডিগার্ড ১ : আহিল চৌধুরীর সাথে কি কাজ আমরা তার হয়ে কাজ করি বলো আমাদের।
প্রেমা তখন্ যা যা শুনেছিল তাই তাই কিছুটা বাড়িয়ে কমিয়ে বলে।
বডিগার্ডরা সাথে সাথে আহিলকে ফোন করে ডেকে আনে।
[ এ কোন ফাদে জড়িয়ে গেল আহিল? এই ফাদ থেকে কে বাচাবে আহিলকে?
তবে কি ঝুমুর আর আহিল কাছাকাছি আসার আগেই তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হবে]

19/06/2025

ওর কথাগুলো আমার এক কান দিয়ে সুন্দর মতো ঢুকলেও,অন্য কান দিয়ে আগুন হয়ে বের হচ্ছিলো। তাজকিয়া বাড়িতে হলে এইটা কে? তাজকিয়াকে কি জবাব দিবো,হাবলা হয়ে ফোনটা বিছানায় রেখে আমি ওয়াশরুমের সামনে যাই। দরজা খুলতেই দেখি,ভিতরে একটা বিড়াল চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। আমি চিৎকার দিতেই বিড়ালটা চোখের সামনেই অদৃশ্য হয়ে গেলো।
এরপর আর কি,
মুভির কাহিনীর মতো জ্ঞান হারাই ওখানেই। প্যান্ট ছাড়া।
এলোপাতাড়ি কলিং বেলের শব্দে হুশ আসে আমার। লাফ দিয়ে উঠি। অগোছালো রুম আমার। প্যান্ট এক জায়গায়,শার্ট এক জায়গায় আর ছোটটাও অন্য জায়গায়। তাড়াহুড়ো করে লুঙ্গিটা পড়লাম। এরপর দরজা আটকিয়ে সোজা নিছে নেমে এলাম। নিশ্চয়ই আব্বু আম্মু চলে এসেছে। দরজার সামনে এসে দরজা খুলতেই দেখি,তাজকিয়া,আম্মু,আব্বু তিনজনই দাঁড়িয়ে আছে। আমার দিকে এমনভাবে মুখ করে আছে,যেনো চিড়িয়াখানার প্রাণী দেখেছেন উনারা। আমি আমতা আমতা করে বললাম,
- এমন করে কি দেখছো সবাই। আমি রিয়াজ।
আমার কথার পরেই তাজকিয়া বলল,
- সেই ২০ মিনিটের বেশি হবে বেল বাজিয়ে যাচ্ছি আমরা। তোমার দরজা খোলার নামই নেই। কল দিচ্ছি ধরতেছো না। হয়েছে কি তোমার? কি করতেছিলে?
তাজকিয়ার কথা শেষ না হতেই আব্বু বলল,
- এক রাত বাসায় ছিলাম না বলে মদ এনে খেয়েছিস নাকি। মানে একা ছেড়ে দিলেই আকাশে উড়তে মন চায়? চোখমুখ এমন গা*জাখোরের মতো হলো কেন এক রাতেই?
আব্বুরটার ফাকে এইবার আম্মুর কবিতা শুরু।
- তুই তো আমারে একটুও ভালোবাসিস না। কত চিন্তা করতেছিলাম। তোর কিছু হইলে আমরা কি নিয়ে বাচবো। আমাদের কথা একটুও কি ভাবিস না তুই?
দিলো কান্না করে। আর আমার অবস্থা তখন কেমন বুঝতেই পারতেছেন। সারারাত গেলো এক অমায়িক ঝড়,যে ঝড়ে আমিই হয়ে আছি অমায়িক বোকা**দা। ওদের কথা শুনে আমি আমার বাংলা ভাষাওটাও ভুলে গেলাম। উত্তর কি দিবো, দেওয়ার মতো কিছু হয়ওনি। যা হয়েছে তা বললে বিশ্বাস তো করবেই না। উল্টো মিথ্যা কথা বলতেছি বলে আরো কয়েকটি রচনা উপস্থাপন করবে। লুঙ্গিটা হাত দিয়ে ধরে হাবলার মতো ওদের দিকে তাকাই আছি। আর কি বা করার আমার। হুট করে সবাই আমাকে ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলো। আম্মু সোফায় গিয়ে বসে,আব্বু আর তাজকিয়া পুরো বাসা এমন ভাবে দেখছে, যেনো আমি কোটি কোটি ডলার রাতে চুরি করে এনে দেয়ালের চিপায় চাপায় লুকিয়েছি। হটাৎ তাজকিয়া আব্বুকে বলল,
- আঙ্কেল, আমি নিশ্চিত রিয়াজের রুমে গেলে কোনো ক্লু পাওয়া যাবে। চলুন রুমে।
কথাটা শুনতেই আমার মাথায় দেড় ইঞ্চি টাইপের একটা ধাক্কা লাগে। ওরা রুমে গেলে, জামা কাপড় ওমন দেখলে নিশ্চিত আরো বড় কোনো ঘটনা সাজাবে। রাতে তখন কনড* লাগিয়েছিলাম নাকি মনেও তো নাই। যদি লাগাই,তবে তো নিশ্চিত ওটা ফ্লোরে থাকবে।সর্বনাশ,এদের রুমে যেতে দেওয়া যাবেনা। ভুলেও না।
আমি এইবার মুখ উজ্জ্বল করে একটা ভেটকি দিয়ে ওদের সামনে গিয়ে দাড়ালাম। দাত কেলিয়ে কেলিয়ে বলতে লাগলাম,
- দেখো তাজু। রুমে কেন যাবে হা হা হা। এসেছো,বসো,নাস্তা খাও। এরপর আস্তে ধীরে চেক করবে। উফফ তোমার কপালে ঘাম জমেছে। কত গরম লাগছে তোমার। সোফায় বসো আম্মুর সাথে,আমি বাতাস করে দিচ্ছি।
তাজকিয়া আমার কথা শুনে ভ্রু কুচকে আব্বুকে বলল,
- দেখেছেন আঙ্কেল? ওর মুখের হালটা দেখুন। হাসি আসতেছেনা জোর করে হেসে যাচ্ছে। আদেক্ষেতাও দেখাচ্ছে। ওর চেহারাতে চো*রের চেহারা মিল খাচ্ছে। আমি নিশ্চিত রুমে কোনো গড়বড় করে রেখেছে। সব তথ্য রুমে গেলেই পাওয়া যাবে। চলুন আঙ্কেল, ভয় নেই।
- এই এই দাড়া দাড়া। তুমি আমার প্রেমিকা নাকি গোয়েন্দা। আমি কিছুই করিনি। কেন আমাকে সন্দেহ করে যাচ্ছো। তুমি আমাকে চিনোনা বলো? আমি ওমন ছেলে? আমি কোনো খারাপ কাজ করতে পারি বলো?
- ইমোশনাল ব্লা*ক মেইল করে লাভ নেই। আঙ্কেল চলুন,ওর রুমে যাওয়া যাক।
তাজকিয়া আমাকে ধাক্কা দিয়ে সিড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো। আব্বুও তাজকিয়ার সাথে যাচ্ছে। মরণ আমার। বিয়ের আগেই আম্মু আব্বুকে পটিয়ে আমার সর্বনাশ করতেছে। বিয়ের পর কপালে কি আছে আল্লাহ জানে। আজ যদি রুমে কনড* পায়। বিয়েটাও বাতিল হবে মনে হয়। আজাইরা চিন্তা করে কিছু হবেনা। আমি ওদের আটকানোর চেষ্টা করি। " আব্বা" বলে চিৎকার মেরে ফ্লোরে পড়ে গেলাম। চোখ অফ করে ফেলেছি। তাজকিয়া উপর থেকে আওয়াজ দিয়ে বলল,
- অভিনয় বন্ধ করো। এসব তোমার রোজকার কান্ড।
লাভ হলোনা। আবার শোয়া থেকে উঠে ওদের পিছু নিতে লাগলাম। আমি উঠতে উঠতে আব্বু আর তাজকিয়া আমার রুমে ঢুকে গেছে। দরজার বাহিরেই ব্রেক করি আমি। সামনে আর যাওয়া যাবেনা। লুঙ্গি হইলে লুঙ্গি। গায়ে গেঞ্জি নেই তো কি হয়েছে, এক দৌড়ে এখন রনির বাসায় চলে যাবো। উল্টো দৌড় দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সাথে সাথেই আব্বু তাজকিয়াকে বলল,
- শুধু শুধু তুমি আমার ছেলেটাকে সন্দেহ করেছো। দেখেছো? কত নিষ্পাপ ছেলে আমার?
কথাটা কান খাড়া শুনেছি। হটাৎ আব্বুর রুপ বদলে গেলো কিভাবে। এক দৌড়ে আমি আমার রুমে গেলাম।
বিশ্বাস করবেন না জানি।।তবুও বলি, আমার বিছানা একদম গোছগাছ। প্যান্ট শার্ট কি সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছে কে যেনো। রুম থেকে এক মিষ্টি গন্ধ ভেসে আসছে। বেকুব কিভাবে হয়,কাল রাত থেকে টের পাচ্ছি। অদ্ভুত ঘটনা ঘটছে। রুম এতো সুন্দর করে সাজালো কে? আব্বু আর তাজকিয়া আমতা আমতা করে কি যেনো বলতে চাচ্ছিলো,আমি বুক ফুলিয়ে নাক বাকা করে বলা শুরু করি।
- চুপ যাও। অনেক হয়েছে। আমার উপর কারো বিশ্বাস নাই। আমি এই সংসারে আর থাকবো না।।বনবাসে চলে যাবো আজই।
আমার কথা শুনে আব্বু তাজকিয়াকে বলল,
- দেখেছো? ছেলেটা কত অভিমান করেছে? তুমি মানাও এখন। আমি নিছে গেলাম।
এ বলেই আব্বু রুম থেকে বের হয়ে গেলো। তাজকিয়া ওর ওড়নাটা কচলিয়ে যাচ্ছে। আমি এক পা এক পা করে ওর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ও চোখ অফ করে ফেলেছে ভয়ে। আমি ওর পেটে হাত রেখে ঠেলতে ঠেলতে দেওয়ালের সাথে পিঠ লাগিয়ে দেই। এরপর আরেক হাত দিয়ে ওর ঘাড় ধরি। তাজকিয়া ভয়ে কাপাকাপি করছে। তখনি আমার কানে স্পষ্ট একটা শব্দ এল, " ছাড় তুই"।
আমি লাফিয়ে উঠলাম। দেখি তাজকিয়ার চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। মুখে রক্তের দাগ। দাত সব কালো হয়ে গেছে। চোখ দুটো সাদা হয়ে গেছে। হাতের নখ বড় বড় হয়ে গেছে। গলার চামড়াগুলো বুড়োদের মতো হয়ে গেছে। আর আমার গলা দিয়ে যে সাউন্ড বের হয়,সেটাও যেনো সাইলেন্ট হয়ে গেছে।
চলবে.....?

19/06/2025

তোমার বুকের গুলো ছোট আর বাসর রাতে স,হবা,সের পর র*ক্ত*ক্ষ*র*ণ হলো না কেনো?
কথাটা বলেই রিয়াকে খাট থেকে ছুঁ,ড়ে ফেলে দেয় মেঝেতে। রিয়া নিস্তব্ধ।তার মুখে কোনোই কথা নেই। এতকিছু হয়ে গেল তার সাথে তবু সে টু শব্দও করেনি।
এদিকে রিয়াদ এসে রিয়ার হাত ধরে টানতে টানতে রুম থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে।
বাড়ির সবাই এই দৃ,শ্য দেখে নানান রকম প্রশ্ন করলেও কারু প্রশ্নেরও জবাব সে দেয়নি।রিয়াকে নিয়ে সোজা চলে আসে তার শশুড় বাড়ি।
এত সকালে মেয়ে আর নতুন জামাইকে দেখে রিয়ার বাবা মা অবাক হয়ে যায়।
এদিকে রিয়াদ রিয়ার হাতটা ছেড়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় মাটিতে।বলতে শুরু করে..
।।..আপনাদের মেয়েকে দিয়ে গেলাম।আপনাদের কাছেই রাখুন।যে মেয়ে কিনা বিয়ের আগে তার সতীত্ব বিলিয়ে দেয়,তার জায়গা এই রিয়াদ চৌধুরীর বাড়িতে নেই।
রিয়ার বাবা কথা গুলো শুনে যেনো আকাশ থেকে পড়ল। কাকুতি মিনতি করে বলতে লাগলো..
।।.. দেখো বাবা কোথাও হয়তো ভুল হচ্ছে।আমাদের মেয়েকে আমারা এই শিক্ষা দিয়ে মানুষ করিনি।।
।।.. ঠিকই বলছি।কি করে সাহস হয় এই নষ্টা মেয়ের আমার সাথে বিয়ে দেয়ার?কাল ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিব যেন সই করে পাঠিয়ে দেয়।
কথাগুলো বলে রিয়াদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে গেল।এদিকে এখনো রিয়ার মুখে কোনো কথা নেই।চুপ করে বসে আছে।রিয়ার বাবা মা তাকে এমন ভাবে বসে থাকতে দেখে তার কাছে গেল। রিয়ার মা কাদতে কাদতে বলতে লাগলো..
।।..যে মেয়ে আমার অবৈধ সম্পর্ক তো দূরের কথা কখনও কোনো অপরিচিত পুরুষের সাথে কথা পর্যন্ত বলেনি তার নামে এমন অপবাদ। যার হাজারও কল্পনা, স্বপ্ন ছিল যে স্বামী নিয়ে আজ সেই স্বামীই তারে এমন মিথ্যা অপবাদ দিল?
রিয়া মায়ের হাতটা ধরে বলতে লাগলো..
।।..তুমি কিচ্ছু ভেবো না মা সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।আর বাবা?তুমি যত দ্রুত সম্ভব এই শহর ছাড়ার ব্যাবস্থা কর।আমার দূরে কোথাও চলে যাব।
কয়েক দিনের মধ্যে রিয়ারা অন্য শহরে চলে যায়।পেরিয়ে যায় দশটা বছর।রিয়ার পড়াশোনা শেষ হয়েছে।এখন সে এই শহরের একজন নামকরা গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। চেম্বারে বসেছিল। হঠাৎ তিনটা লোক রুমে প্রবেশ করলো।
রিয়া সামনে তাকাতেই অবাক হয়ে গেল।কারণ তাদের তিন জনের মধ্যে একজন ছিল???
চলবে.....???

19/06/2025

ধীরে ধীরে শরীরের সমস্ত কাপড় খুলে দু*ধ বের করে ন*গ্ন দেহে সুলতানকে শয্যায় ডাকলো মেরী। বুকে সদ্য বাবা হারানোর শোক আর প্রতিশোধের আগুন মেরীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে আরও মজবুত করে গড়ে তুলছে প্রতিক্ষণ।
জানালার পাশে দাড়ানো সুলতান তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললো,– কোথায় বাবার হ ত্যার প্রতিশোধ নেবে তা না করে বাবার হ ত্যা কারীর সাথে সোহাগ রাত করতে প্রস্তুত হয়ে আছো, তোমার আর কি-ই বা করার আছে, কারণ তুমি নারীজাতি। ভোগ্যপণ্যের মতোই নিজেকে মেলে ধরেছো একজন পুরুষের সামনে, এটা ছাড়া আর কিইবা করার আছে তোমাদের!
মেরী বললো,– পুরুষের সামনে বলতে আপনি আমার স্বামী, আমার যা-কিছু আপনারই, আপনার সামনে নিজেকে মেলে ধরা পাপ অথবা অন্যায় কিছু নয় রাজপুত্র সুলতান।
সুলতান জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বললো,– কোথায় গেল তোমার বাবার অহঙ্কার আর গৌরব রাজকুমারী মেরী? তোমার বাবার রাজ্যে আমাকে তোমার বাবা যে অপমান করেছিল তার প্রতিশোধ স্বরূপ নিজের হাতে তোমার বাবাকে হত্যা করলাম, তার মেয়েকে বিয়ে করলাম। তোমার বাবা আমাকে বলেছিল জালিম বর্বর, অথচ দ্যাখো এই জালিম বর্বর তার একমাত্র মেয়ের স্বামী। আশেপাশের শত রাজ্যে রাজকুমারী মেরীর রূপের প্রশংসা, বুদ্ধিমত্তার তারিফ, মির্জানগর রাজ্যের রাজকন্যা সুন্দরী মেরী আজ আমার বিছানায় নগ্ন দেহে, হা- হা হা, কোথায় তোমার বাবার গর্ব, কোথায় দম্ভ, কোথায় অহঙ্কার!
নরম গলায় মেরী বললো,– রাত অনেক হয়েছে এবার শুতে আসুন।
আবারও সুলতান হো হো করে হেসে বললো,– ভেবনা তোমায় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করেছি মেরী, এটা সেই অপমানের বদলা যেটা তুমি করেছিলে আমায়। আজ সারারাত তোমার শরীর ভোগ করে সকালে নগ্ন শরীরে মির্জানগর রাজ্যে ছুড়ে ফেলে আসবো তাদের সুন্দরী রাজকন্যাকে, সবাই দেখবে আর ভাববে সুলতাননগর রাজ্যের রাজপুত্র কতটা ভয়ঙ্কর, তার সাথে পাঙ্গা নিলে পরিনাম কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে।
মেরীর বাবার রাজ্য মির্জানগর এবং সুলতানের রাজ্য সুলতান নগর পাশাপাশি। সুলতান অত্যাচারী এবং জুলুমকারী হিসেবেই পরিচিত আশেপাশের রাজ্যে।
পাশাপাশি রাজ্য হওয়ায় সুলতান তার দলবল এবং পোষা চারটি হিংস্র বাঘ নিয়ে প্রায়ই হামলা চালাতো মেরীর বাবার রাজ্যে, এতে যেমন প্রাণনাশ হতো তেমনই ক্ষয়ক্ষতি।
মেরীর বাবা শান্তশিষ্ট রাজা হিসেবেই পরিচিত, যেমন দয়ালু তেমনই উদার মনের মানুষ বলে তার প্রসংশা লোকমুখে। আর এই কারনেই সুলতান ও সুলতানের বাবার খুব হিংসা হতো। তারা সবসময় চাইতো মেরীর বাবার এই সম্মান যেকোনো উপায়ে ধ্বংস করতে।
হঠাৎ করে সুলতান মেরীর বাবার রাজ্য থেকে কুমারী মেয়েদের তুলে এনে ধর্ষণ, এবং ধর্ষণ শেষে অর্ধমৃত অথবা মৃত অবস্থায় ফেলে আসতে শুরু করে। আর সুলতান এবং সুলতানের লোকজন আশেপাশের রাজ্যে বলতে থাকে যে রাজা নিজের প্রজাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ, সে রাজ সিংহাসনের অযোগ্য, তার রাজ্য ত্যাগ করে চলে যাওয়া উচিৎ।
চলবে...

19/06/2025

ইট পাথরের তৈরি শ্যাওলা পড়া পুরোনো দুতলা বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে কৌশিকের গাড়ি। কৌশিক একবার চোখ বুলালো পুরো বাড়িতে। ঠিক কতদিন পর আবার নিজের বাড়িতে পা রাখল জানা নেই তার। আসতে পারবে এই ধারণাও ছিল না সবটাই আল্লাহর ইচ্ছে।
দরজার ঠকঠক আওয়াজ কানে আসতেই স্তম্ভিত ফিরে তাকালেন রুমি বেগম। আস্তে ধীরে উঠে এসে খুলে দিলেন দরজাটা। কিন্তু দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা চেনাপরিচিত মুখগুলো দেখে মনে হলো খুশি হননি তিনি। রুমি বেগমই হলেন কাশফিয়া আর কৌশিকের মামী। বাড়িটা কৌশিকের আব্বু-আম্মুর উনারা মা′রা যান কার এ*ক্সি*ডেন্টে। মা′রা যাওয়ার পরে আত্মীয়-স্বজন অনেকেই তখন দায়িত্ব নিতে চেয়েছিলেন কৌশিক আর ছোট্ট কাশফিয়ার। তখন না বুঝলেও এখন ভালো করেই বুঝে কৌশিক সবার লোক দেখানো ভালোবাসা, তাদের দায়িত্ব নিতে চাওয়া সবটাই ছিল ওর বাবার রেখে যাওয়া বাড়ি আর জমিজমার লোভে। তিনকোলে কেউ না থাকায় একমাত্র মামা মামীকেই কৌশিক নিয়ে এল নিজের বাড়িতে, দায়িত্ব দিল ওর ছোট্ট বোনটার। বেঁচে থাকতে হলে পড়াশোনা করতে হবে, ইনকাম করতে হবে এই চিন্তা সবসময়ই ছিলো কৌশিকের মাথায়। তাই তো বোনকে একা রেখে পাড়ি জমিয়েছিল দূর দেশে। বোনের অভিভাবক হিসেবে রেখে গিয়েছিলো ওর মামা-মামীকে, কিন্তু মামীর মনে যে বিষ, তা তো জানা ছিল না কৌশিকের। কৌশিকের অবর্তমানে তার ছোট্ট বোনটাকে বের করে দিল বাড়ি থেকে! সব কথাই কানে গেছে কৌশিকের। তাই তো আজকে কৈফিয়ত চাইতে এসেছে সবকিছুর। মামীর ভয়ার্ত মুখশ্রী দেখে হাসল কৌশিক। বলল উনাকে,
"কি হলো মামী? আমি বেঁচে আছি দেখে অবাক হলে বুঝি?"
শুকনো ঢোঁক গিলে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বললেন রুমি বেগম,
"তা... তা হব কেন কৌশিক।"
"ভিতরে আসতে বলবে না?"
"হ্যাঁ হ্যাঁ, ভিতরে আসো। তোমাদের বাড়িতে তোমরাই তো আসবে এখানে, আমার অনুমতি লাগে বুঝি!"
মাথাটা ঘুরিয়ে ইনায়ার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কাশফিয়ার দিকে তাকাল কৌশিক, তারপর আবার ওর মামীর দিকে তাকিয়ে বলল,
"অথচ আমার বাড়ি থেকে তুমি আমার বোনকে বের করে দিয়েছিলে। এমনটা কেন করেছিলে, মামী? আমার অনুপস্থিতে তুমি আমার বোনকে বিয়ে দিতে চেয়েছিলে কোন সাহসে?"
কৌশিকের কথা বলার ধরণে ভয় পেলেন রুমি বেগম। ওর ধমকে কেঁপে উঠলেন তিনি। এখন কি কৌশিক বাড়ি থেকে বের করে দেবে উনাদের? অসুস্থ স্বামী আর বিয়ে উপযোগী মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাবেন তিনি! রাস্তায় রাস্তায় হাঁটা ছাড়া যে উপায় থাকবে না আর। রুমি বেগমের কী যেন হলো, হুট করেই মেঝেতে বসে কৌশিকের পা দুটো ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দিলেন, বললেন বারবার,
"ক্ষমা করে দে বাবা, আমার ভুল হয়েছে। আমি এতকিছু ভাবিনি তখন। কাশফিয়া সুখে থাকবে ভেবেই বিয়ে ঠিক করেছিলাম ওর।"
"সুখে থাকবে বলে? নাকি নিজের মাথার উপর থেকে ঋণের বোঝা নামাতে বিক্রি করতে চেয়েছিলে আমার বোনকে? আমি বেঁচে থাকতে ওর সাথে এমন অন্যায় করার সাহস দেখালে কীভাবে, মামী? নাকি ভেবেছিলে আমি ম′রে গেছি? আমার বোনকে তাড়িয়ে সব কিছু দখল করবে বলেই কি এত আয়োজন?"
চুপ রইলেন রুমি বেগম। কী-ই বা বলবেন তিনি? এমনটাই তো চেয়েছিলেন মনে মনে। সব পেয়েও লোভ জেগেছিল উনার মনে। তিন মাস ধরে প্রাণপ্রিয় বোনের খোঁজ নিচ্ছিল না কৌশিক, উনার মাথায় এটাই এসেছিল, কোনো অঘটন ঘটেছে। কৌশিক হয়তো বেঁচে নেই আর। তাই তো করেছেন এত কিছু। তার শাস্তিও পেয়েছেন, স্বামী উনার অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন ঘরের এক কোণে, মেয়েটারও নানা অসুখ বিসুখ লেগেই আছে। আল্লাহ মেনে নিতে পারেননি উনার এত অবিচার তাই তো শাস্তি দিচ্ছেন এভাবে। মামীর কান্নায় করুণা হলো না কৌশিকের, কিন্তু কাশফিয়া, ওর মনটা যে নরম। মামীর কান্নায় কষ্ট পাচ্ছে কাশফিয়া নিজেও। কথার মাঝখানেই কোথা থেকে ছুটে এসে রুমি বেগমের মেয়ে খবর দিল উনাকে,
"আব্বুর অবস্থা খুব খারাপ আম্মু, তাড়াতাড়ি চলো।"
কান্না থামালেন রুমি বেগম, দ্রুত উঠে চলে গেলেন মেয়ের পিছু পিছু। কাশফিয়া, কৌশিক আর ওদের সাথে থাকা ইনায়াও গেল। দরজার সামনে আসতেই বিছানায় শুয়ে থাকা মামার ফ্যাকাশে চেহারাটা নজরে এল কাশফিয়ার। ভাবল মনে মনে —-"ইস, মানুষটা কেমন ছিলেন আর কী হয়ে গেলেন।"
ওর যে বড়ই কষ্ট হচ্ছে মামার জন্য। বুকটায় কেমন ব্যথা হলো কাশফিয়ার, কষ্টে কান্না এল চোখ বেয়ে। স্ত্রী-সন্তানের থেকে চোখ সরিয়ে দরজার দিকে তাকালেন কাশফিয়ার মামা রাফসান সাহেব, কাঁপা কাঁপা হাতটা তুলে ডাকলেন ওদেরকে। কৌশিক আর কাশফিয়া দুজনেই মুখ চাওয়া চাওয়ি করল, তারপর দৌড়ে গেল মামার কাছে। মামী যেমনই হোন, মামা তো বরাবরই বটগাছের মতো আগলে রেখেছিলেন ওদের। কাশফিয়া ওর মামার মাথার কাছটায় বসল, উনার হাত ধরে বলল আশ্বাস দিয়ে,
"মামা, তুমি ঠিক হয়ে যাবে। আমরা আছি তো, এক্ষুণি তোমাকে হসপিটালে নিয়ে যাব।"
মলিন হাসলেন রাফসান সাহেব, বললেন ভাগ্নীকে,
"আমি তোকে দেখে রাখতে পারিনি রে মা। ক্ষমা করে দিস তোর এই অভাগা মামাকে।"
কথাটা বলেই বড় করে শ্বাস ছাড়লেন রাফসান সাহেব। কাশফিয়া বুঝল শ্বাস নিতে খুবই কষ্ট হচ্ছে উনার। মামার এমন অবস্থা দেখে কান্না করে দিল সে। কৌশিক মামাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল আবারও,
"এসব বলো না মামা, তুমি ভালো হয়ে যাবে।"
ইনায়া দাঁড়িয়ে দেখছে সবটাই। উনাকে হসপিটালে নিয়ে কাজ হবে না বুঝতে পারছে ভালো করেই। তবে উপস্থিত সবাই ভেঙে পড়বে তাই বলল না কিছুই। সময় পেরোল কিছুটা, রাফসান সাহেবের অবস্থা আরও খারাপের দিকে গেল। বোনের কান্না আর মামার অবস্থা দেখে কৌশিক তৈরি হলো উনাকে হসপিটালে নিয়ে যাবে বলে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। শরীরটা কেমন ঠান্ডা হয়ে এসেছে রাফসান সাহেবের, সারা শব্দ না পেয়ে কৌশিক হয়তো আন্দাজ করল কি ঘটেছে, চোখের ইশারায় কিছু বলল ইনায়াকে। দ্রুত এগিয়ে আসল ইনায়া, চেক করল রাফসান সাহেবকে শ্বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে উনার। বুঝতে বাকি নেই কারোরই, মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন রাফসান সাহেব। কাছের মানুষের মৃত্যু যে খুব কষ্ট দেয় প্রত্যেকেই যেভাবে কষ্ট পাচ্ছেন রুমি বেগম, উনার মেয়ে আর কাশফিয়া। রাফসান সাহেবের দীর্ঘ দুই মাসের রোগভোগের অবসান হলো অবশেষে। কান্নায় ভেঙে পড়ল সবাই। কৌশিক দাঁড়িয়ে আছে স্তব্ধ হয়ে, চোখের কোণে একরাশ অশ্রু জমেছে ওর। কে বলেছে ছেলেরা কাঁদে না? কাছের মানুষ হারানোর কষ্ট কেমন কৌশিক যে বুঝে, মা-বাবার পর আপন বলতে এই এক মামা'ই ছিলো ওদেন, উনিও আজ চলে গেলেন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে!
---------
রাফসান সাহেবের মৃত্যুর পেরিয়ে গেছে এক সপ্তাহ, একটার পর একটা ধাক্কা দুর্বল করে দিচ্ছে কাশফিয়াকে। সবকিছু ছেড়ে ইয়াশের চলে যাওয়াটা যে খুব কষ্ট দিচ্ছে ওকে। পুড়াচ্ছে ভিতরটা। কী করলে অবসান ঘটবে এই কষ্টের? কীভাবে আবার কাছে পাবে ইয়াশকে? কাশফিয়ার রুমের পাশ দিয়েই যাচ্ছিল কৌশিক,কাশফিয়ার রুমের পরেই ওর রুমটা। রাত প্রায় ১২টার কাছাকাছি হবে। এতো রাতে কাশফিয়ার রুমের দরজা খোলা দেখে চিন্তা হলো ওর, উঁকি মেরে দেখল মেঝেতে বসে আছে কাশফিয়া। চলন্ত সিলিং ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে কী যেন ভেবে যাচ্ছে। ভালো করে কাশফিয়াকে লক্ষ্য করল কৌশিক, মেয়েটা কেমন শুকিয়ে গেছে, চোখের নিচে কালসিটে দাগ পড়েছে। লম্বা চুলগুলো কেমন এলোমেলো হয়ে আছে। যে কেউ দেখলে বলে দেবে অনেক দিন হলো নিজের যত্ন নেয় না কাশফিয়া। দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল কৌশিক, ভাবল মনে মনে, বয়স বাড়ার সাথে সাথে কি কাশফিয়ার চঞ্চলতাও কমে গেছে? কিন্তু বাড়ি ফেরার পর থেকে যে কৌশিক আগের চঞ্চল কাশফিয়াকেই মিস করে যাচ্ছে সারাক্ষণ। কৌশিক তো ভেবে এসেছিল, এতোদিন পর ওকে দেখে দৌড়ে এসে জাপ্টে ধরবে কাশফিয়া। কত শত অভিযোগ জানাবে তাকে। কিন্তু তা তো কিছুই হলো না। কাশফিয়ার মলিন চেহারার দিকে তাকালেই মনে হয় বিষণ্ণতা ঘিরে ধরেছে ওকে। কথাগুলো ভেবে বুকের ভিতরটা ছ্যাঁত করে উঠল কৌশিকের। ওর অনুপস্থিতিতে কী এমন ঘটেছে কাশফিয়ার সাথে? কেন এভাবে ভেঙে পড়েছে ওর বোন! কৌশিক কথা বলতে চাইল কাশফিয়ার সাথে, ওর রুমে যাবে বলে পা বাড়াতেই মনে হলো কেউ দাঁড়িয়ে আছে পেছনে। মাথাটা ঘুরিয়ে তাকাল কৌশিক, দেখল ইনায়া দাঁড়িয়ে আছে ওর থেকে দুই আতিন হাত দূরে।ইনায়া ওর চোখের ইশারায় কাশফিয়ার রুমে যেতে বারণ করল কৌশিককে। কৌশিকও শুনল ইনায়ার কথা, একবার তাকাল মেঝেতে বসে থাকা কাশফিয়ার দিকে, পরে আবার রুমের দরজাটা আটকে চলে গেল ইনায়ার সাথে।
আকাশটা ঢেকে আছে অন্ধকারে, নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে চারিপাশে। ইনায়া আর কৌশিক দুজনেই দাঁড়িয়ে আছে ছাদে। তাকিয়ে আছে আকাশ পানে। অনেকক্ষণ হলো এভাবেই দাঁড়িয়ে আছে দু’জনে। নিরবতা ভেঙে কথা বলল কৌশিক,
"আমার বোনটার কী হলো ইনায়া? ওর এই বিধ্বস্ত অবস্থা চোখের সামনে দেখতে পারছি না আমি।"
কৌশিকের কথার উত্তরে বলল ইনায়া,—- "ওকে একা থাকতে দাও কৌশিক। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।"
কথাটা বলেই চলে যাচ্ছিল ইনায়া, পথ আটকাল কৌশিক। শক্ত করে ওর হাত চেপে ধরল, ভ্রু কুঁচকে ইনায়ার দিকে তাকিয়ে বলল,
"তোমার আবার কী হলো?"
"আমার ফিরে যাওয়ার সময় হয়েছে কৌশিক। আম্মু-আব্বু বারবার কল দিচ্ছেন।"
"আমাকে ছেড়ে কোথায় যাবে তুমি?"
"আমি এখানে থাকতে আসিনি কৌশিক।"
এক ঝটকায় কৌশিকের থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল ইনায়া, পা বাড়াল আবারও চলে যাবে বলে। কানে এল কৌশিকের কণ্ঠস্বর,
"বিয়ে করবে আমাকে?"
থেমে গেল ইনায়ার পা জোড়া, চোখ-মুখে ওর খুশির ঝিলিক। কৌশিকের মুখে এই কথাটা শুনবে বলেই তো অপেক্ষা করছে সে। দেরিতে হলেও কথাটা শুনল তবে! ফিরে তাকাল ইনায়া, কৌশিক ওর কাছে এসে হাত দুটো ধরে বলল,
"আমার ভবিষ্যৎ বাচ্চাদের আম্মু হবে ইনায়া? ভালোবাসবে আমাকে?"
মুচকি হাসল ইনায়া, উপর-নিচ মাথা নাড়িয়ে সায় জানাল কৌশিকের কথার। কৌশিকও হাসল ইনায়ার হাসির উত্তরে, ওকে আগলে নিল নিজের বুকে।
----------
কলেজে যাবে বলে রেডি হচ্ছে কাশফিয়া। সকালেই সিমির ফোন পেল সে, সুফিয়া বেগম নাকি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন হুট করেই। উনাকেই দেখবে বলেই যাচ্ছে, হোস্টেলে যাওয়াটা বাহানা মাত্র। ইয়াশ না থাকলেও ওই বাড়ি আর বাড়ির মানুষগুলোর সাথে যে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে গেছে সে। মায়ের মতো শাশুড়ি অসুস্থ শুনে মন ঠিকছে না ঘরে, তাই তো সকাল সকাল রেডি হচ্ছে ও বাড়িতে যাওয়ার জন্য। কৌশিককে তো আর বলা যাবে না ওর বিয়ের বিষয়ে, কৌশিক কেমন ভাবে নেবে বিষয়টা এটাও তো জানা নেই কাশফিয়ার। আয়নার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলো কাশফিয়া,চুল গুলো ঠিক করে নিচ্ছিলো,তখনই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ইনায়ার প্রতিবিম্ব দেখল সে। ঘুরে তাকাল ওদিকে, হেসে ভিতরে আসতে বলল ইনায়াকে। দুই হাতে কতগুলো শপিং ব্যাগ নিয়ে এসেছে ইনায়া। সবগুলো বিছানায় রেখে একটা একটা করে কাশফিয়াকে খুলে দেখাল সব। ওর পছন্দের সব জিনিসপত্র চকলেট, চুড়ি, কত রকমের কসমেটিক্স রাখা একেকটা ব্যাগে। অবাক হলো কাশফিয়া ইনায়া জানল কিভাবে ওর পছন্দ অপছন্দ সম্পর্কে? পরক্ষণেই আবার ভাবল, হয়তো ওর ভাই বলেছে। ইনায়া মুচকি হেসে জিজ্ঞেস করল কাশফিয়াকে,
"কেমন আছো উপমা?"
দ্রুত গতিতে মাথা তুলে তাকাল কাশফিয়া, হাসিমুখটা চুপসে গেল ওর। এই অতিপরিচিত ডাকনামটা যে কেবল ইয়াশের মুখেই মানায়। ইনায়া সেই নামে কেন ডাকছে ওকে? নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল কাশফিয়া,
"এই নামে আমাকে ডেকো না, ইনায়া আপু।"
"কেন? এই নামে স্পেশাল কেউ ডাকে বুঝি?"
চুপ করে রইল কাশফিয়া। ওর যে নামটা শুনলেই মনে পড়ে ইয়াশের কথা। পরে আবার নিজেকেই বকাঝকা দেয়,কেন ভাবে ওই স্বার্থপর মানুষটার কথা! ধ্যান ভাঙল কাশফিয়ার, ইনায়া ডেকে বলল ওকে,—-"এই মেয়ে, কী ভাবছ এতো?"
কথা কাটানোর জন্য বলল কাশফিয়া,—- "কই, কিছু না তো। তোমরা বিয়ে করছ কবে?"
"তোমার এক্সাম শেষ হলে।"
"আমার এক্সামের সাথে তোমাদের বিয়ের কী সম্পর্ক?"
"তোমার এক্সাম শেষ না হলে আমাদের সাথে লন্ডন যাবে কী করে?"
ইনায়ার কথায় হাসল কাশফিয়া। সময় নষ্ট করল না আর। ইনায়ার নিয়ে আসা জিনিসপত্র সব গুছিয়ে রেখে চলে গেল সে কলেজের উদ্দেশ্যে।
---------
কথা ছিল কাশফিয়ার এক্সামের পরেই লন্ডনে ফিরে যাবে
কৌশিকরা। কিছুদিন হলো পরীক্ষা শেষ হয়েছে কাশফিয়ার। এরমধ্যে আবার ইনায়ার আম্মু আব্বু এসেছেন দেশে। কৌশিক ইনায়ার আংটিবদল হয়েছিল আগেই, বিয়েটাও ফেলে রাখতে চাইলেন না উনারা। কৌশিক ছেলেটা দেখতে সুন্দর, ভালো চাকরি করে, তার উপর আবার একমাত্র মেয়ের পছন্দ, তাই এই বিয়েতে বাধা দেননি কেউ-ই। সুন্দর মতোই বিয়ে হয়েছে ওদের। কৌশিক-ইনায়ার বিয়ের এক সপ্তাহ হলো, কাশফিয়ার পরীক্ষা শেষ হয়েছে অনেকদিন। রেজাল্টও বেরিয়ে যাবে হয়তো। তাই আর দেরি করলো না কৌশিক, আজকেই ওরা ফিরে যাবে লন্ডনে। বাড়িতে এখনও আছেন রুমি বেগম। উনি চিরকৃতজ্ঞ কৌশিকের কাছে এতো কিছুর পরেও যে ঠাঁই দেবে বাড়িতে, ধারণাতেও ছিল না উনার।
-----------
সময়টা সকাল, চারদিকে সুন্দর আবহাওয়া বিরাজ করছে। নির্জন, নিস্তব্ধ রাস্তাটা দিয়ে একা একা হেঁটে যাচ্ছে কাশফিয়া, কোলে ওর ছোট্ট একটা বিড়ালছানা। কাশফিয়া এই বিড়ালটার নাম দিয়েছে মমী। দিনের বেশিরভাগ সময়ই এই বিড়ালটার সাথে কথা বলে কাটায় সে। বাতাস বইছে চারদিকে, সেই বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে রাস্তার দুই পাশে থাকা গাছের ডালপালা গুলো দুলছে বারবার। লন্ডনে আসার পর আজকে দ্বিতীয়বার হাঁটতে বেরিয়েছে কাশফিয়া, তাও একা একা। কৌশিক বা ইনায়াকে বলে আসেনি কিছুই, ওরা চিন্তা করছে হয়তো! করলে করুন, কাশফিয়ার মনটা ভালো নেই। মন খারাপগুলো উড়িয়ে দিতেই প্রকৃতির সাথে বন্ধুত্ব করতে এসেছে সে। একটা সাদা কালো রঙের লং কুর্তি পড়েছে কাশফিয়া, গলায় সাদা রঙের একটা ওড়না পেঁচিয়ে রেখেছে। কোমর পেরিয়ে যাওয়া লম্বা চুলগুলো খুলে দিয়েছে। হাঁটতে হাঁটতে একটা অর্ধপরিচিত ফ্ল্যাটের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সে। বাড়িটার দিকে তাকিয়ে কি যেন ভেবে চলেছে। আগেরবার যখন ইনায়ার সাথে ঘুরতে বেরুল, এখানে এসেই দেখা হয়েছিল মমীর সাথে। তারপর আর কি,মমীকে ভালো লাগল কাশফিয়ার, অসহায়ের মতো একা একা ঘুরছিল মমী, তাই নিয়ে গেল নিজের সাথে করে। ফ্ল্যাটের সামনে দাঁড়িয়ে থেকে এসবই ভাবছিল কাশফিয়া। ভাবল এবার চলে যাবে জায়গাটা ছেড়ে। অসাবধানতায় হোচট খেয়ে পড়ে যেতে নিল সে। কোনোভাবে আবার সামলে নিল নিজেকে, কিন্তু ওর হাতে থাকা বিড়ালছানাটা কোথায় যেন চলে গেল তখন। কাশফিয়া চারদিকে তাকিয়ে খুঁজল বিড়ালটাকে। না পেয়ে ভাবল এবার ফ্ল্যাটের ভিতরে গিয়েই খুঁজবে।
ফ্ল্যাটের ভিতরে ঢুকে আশেপাশে মমীকে খুঁজল কাশফিয়া। পেয়েও গেলো সে, পা বাড়ালো মমীকে নিয়ে আসবে বলে, কিন্তু তখনই কেউ এসে কোলে তুলে নিল মমীকে। মমীর থেকে চোখ সরিয়ে ওই মানুষটার দিকে তাকাল কাশফিয়া, পিছিয়ে গেল কয়েক পা, চোখের সামনে এ কাকে দেখছে সে? ইয়াশ দাঁড়িয়ে আছে কাশফিয়ার থেকে কিছু দূরেই! কাশফিয়ার যে বিশ্বাসই হচ্ছে না কিছুই সে কি স্বপ্ন দেখছে? না, হয়তো সত্যিই দেখছে। ওর যে ইচ্ছে করছে ইয়াশের কাছে যেতে। ইয়াশকে জিজ্ঞেস করতে কেন এতো কষ্ট দিল ওকে? কেন এতো দিন পালিয়ে বেরিয়েছে ওর থেকে? ইয়াশ কি উত্তর দেবে কাশফিয়ার সব প্রশ্নের? হয়তো না, এতোদিনে হয়তো ভুলেই গেছে সে কাশফিয়াকে। কাশফিয়া ভাবছে কথাগুলো, এরমধ্যেই মুখ তুলে তাকাল ইয়াশ, ইয়াশকে ভালো ভাবে লক্ষ্য করল কাশফিয়া আগের থেকে অনেকটা শুকিয়ে গেছে ইয়াশ। গায়ে থাকা কালো রঙের শার্টটার বুকের দিকের কয়েকটা বোতাম খুলে রেখেছে,চুলগুলো কেমন এলো মেলো হয়ে লেপ্টে আছে কপালের সাথে। ইয়াশ তো অগোছালো নয় তাহলে এই অবস্থা কেন ওর? ইয়াশ তাকিয়েছে কাশফিয়ার চোখ বরাবর, একটু একটু করে এগিয়ে আসল ওর কাছে। ইয়াশের ভাবভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে সে আগে থেকেই জানতো কাশফিয়া এখানে আসবে। অপেক্ষা করছিল ওর জন্যই। ইয়াশ মুচকি হেসে ফ্ল্যাটের দরজার দিকে হাত দেখিয়ে বলল কাশফিয়াকে,
"ওয়েলকাম টু আওয়ার নিউ হোম, মিসেস ইয়াশ রায়হান।"

Address

Sylhet

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Flim Exhibition posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Flim Exhibition:

Share