15/11/2024
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান যুগান্তরকে বলেন, কোনো সরকারই বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল সিন্ডিকেট ভাঙবে। কিন্তু সেটাও দেখা যাচ্ছে না। সরকার গঠনের পর চাঁদাবাজি বন্ধ হওয়ায় হঠাৎ কিছু পণ্যের দাম কমেছিল। তবে কয়েকদিন পরই চাঁদাবাজি হাতবদল হওয়ায় ফের পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে পুরোনো সেই সিন্ডকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বাড়িয়েছে পণ্যের দাম। এতে নাজেহাল ভোক্তা। তিনি বলেন, পণ্যের দাম কে বাড়ায়, কারা সিন্ডিকেট করে, তা সরকারের কাছে সব তথ্য আছে। ব্যবস্থা নিতে পারলে দাম কমবে। তবে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ভর করেছে সব গাফিলতি।
সম্প্রতি এ নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে এক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকসূত্রে জানা যায়, পণ্যের দাম কমাতে সরকার কঠোর অবস্থানে না গিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমোঝতার দিকে হাঁটছে। বাজার তদারকিতে হুমকিধামকি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বাজার মনিটরিংয়ে একপ্রকার পিছু হটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বড় কয়েক আমদানিকারকের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ তিনটি কাজ করতে গিয়ে নীতিনির্ধারকরা দেখবেন বাজারে পণ্যের দাম যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক পর্যায়ে আছে। পাশাপাশি বাজারে হস্তক্ষেপ করা দরকার আছে কি না, তা বিশ্লেষণ করে বের করবেন। এতেও যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে কঠোর অবস্থানে গিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হবে। এতে বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ীদের পক্ষেই যাবে। সিন্ডিকেট চক্র তাদের কারসাজি আরও বাড়াবে।
সূত্র জানায়, সরকারের তদারকিতে সিন্ডিকেট হোতার নাম ফাঁস হয়ে যাবে বলে এখন এ চক্রের সদস্যরা হিমাগারে আলু সংরক্ষণ বেনামে। যাতে তাদের নাম প্রকাশ্যে চলে না আসে। মূলত তারাই আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের কারসাজিতে হিমাগার পর্যায়ে দাম বাড়ালে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে দাম বেড়ে যায়।
অন্যদিকে রাজধানীর পেঁয়াজের বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজার। পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীর এই আড়তে পেঁয়াজ পাঠায় কমিশনে বিক্রির জন্য। সেখানে আমদানিকারক ও পাইকারি আড়তদার মিলে ৪৮ টাকার পেঁয়াজ ১০৫ টাকায় বিক্রি করে। এছাড়া দেশে ভোজ্যতেলের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তিন থেকে চারটি কোম্পানি। তারা দাম বাড়ালেই তেলের দাম বেড়ে যায়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সরকার ইতোমধ্যে কিছু দ্রব্যাদির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এতে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, জনগণের কল্যাণের জন্য জনগণের মালিকানাধীন রাষ্ট্রে জনগণের পক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করার এখতিয়ার ও ক্ষমতা সরকারের আছে। তাই সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করলে এতে সংকট বা সমস্যায় পড়ার কোনো কারণ নেই।
#হেতিমগঞ্জ #হেতিমগঞ্জ #হেতিমগঞ্জ #মৌসুমি_মান্নান।