
11/08/2025
বিয়ের প্রথম রাতে স্বামী তালাক দেয় হিয়াকে। নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য তার হাতে ডিভোর্স পেপার ধরিয়ে দেয়। সদ্য বিবাহিত বউয়ের হাতে ডিভোর্স পেপার ধরিয়ে দেয় ধ্রুব যেখানে স্পষ্ট তার সাইন রয়েছে। আর অন্য হাতে টাকার ব্যাগ ধরিয়ে দেয় যেখানে এক কোটি টাকা কাবিন হিসাবে বিয়ের সময় ধার্য্য করা হয়েছে। বেডের উপর বসে থাকা মেয়েটা টাকার ব্যাগ নিচে রেখে হাতে থাকা কাগজ ভালো করে পড়ে দেখে। যেখানে স্পষ্ট স্বরে তার আর ধ্রুবর ডিভোর্স কথা লিখা রয়েছে। ধ্রুব বলে -
"- দেখুন আপনার নাম কি সেটা আমি জানি আর আর যানার কোনো আগ্রহ আমার নাই। তবে শুনে রাখুন আপনার সাথে সংসার করা আমার দ্বারা সম্ভব না তাই ডিভোর্স পেপারে সাইন করে বাড়ি ছেড়ে চলে যান "।
ধ্রুব কথাটা শুনে বসে থাকা মেয়েটা উঠে দাঁড়ায় আর ওর সামনে এসে আশেপাশে কিছু খুঁজতে থাকে। ধ্রুব অবাক হয় কারণ রুমে সে আর এই মেয়েটা ছাড়া আর কোনো মানুষ নাই। সেই মেয়ে অনেক সময় ধরে খুঁজে কোনো কিছু না পেয়ে বাধ্য হয়ে ধ্রুবকে জিজ্ঞেস করে -
"- ক্যামেরা কোথায়? ডিরেক্টর কোথায়? রুমে মধ্যে কি ক্যামেরা লুকিয়ে রাখা হয়েছে? কিন্তু কোথায় ক্যামেরা আমাকে একটু দেখান সিনেমা কেমন হয়েছে সেটা আমাকে একটু দেখতে দেন?
সামনে থাকা মেয়ের এমন অবুঝ কথা শুনে ধ্রুবর অদ্ভুত লাগে। ধ্রুব বলে -
"- ক্যামেরা কোথায় মানে? আর রুমের ভিতরে ক্যামেরা লুকিয়ে রাখা কোনো হবে? এখানে কোনো সিনেমা চলছে না.
ধ্রুবকে এতোখন যার সাথে কথা বলতে দেখা গিয়েছে তার নাম হিয়া। হিয়া বলে -
"- যদি এখানে সিনেমার শুটিং না হয়ে থাকে তাহলে আপনি কোনো নায়কের মতো ডায়লগ দিচ্ছেন।কারণ আপনার কোনো কথা বাস্তব ধর্মী না ধ্রুব "।
"- শুনুন আপনাকে কোনো সিনেমার ডায়লগ দেওয়া আগ্রহ আমার নাই। আর আমার কথা সব সত্য আর বাস্তব আপনার সাথে সংসার করার কোনো আগ্রহ আমার নাই। মা বাবা জোর করে আমাকে আপনার সাথে বিয়ে দিয়েছে বাধ্য হয়ে বিয়ে করতে হয়েছে আমাকে "।
ধ্রুবর কথা শুনে হিয়া হাসে আর বলে -
"- আপনি কি ফিটার খান ধ্রুব? মানে এই তিরিশ বছর বয়সী কোনো যুবক যে ফিটার খায় সেটা আমার জানা ছিলো না আগে।
"- হোয়াট আমি ফিটার খায় কে বললো আপনাকে? দেখুন আপনার সাথে কোনো তর্ক করার ইচ্ছা আমার নাই ডিভোর্স পেপারে সাইন করে বেরিয়ে যান এই বাড়ি থেকে।
"- একজন তিরিশ বছর বয়সী যুবকে তার মা বাবা জোর করে বিয়ে দিয়ে দিয়েছে কথাটি কি বিশ্বাস যোগ্য? আর কোনো কারণ ছাড়া আপনাকে ডিভোর্স কোনো দিতে যাবো আমি? আর এইটা আমার শশুড় বাড়ি এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়া কোনো কথায় আসে না.
সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটা ধ্রুবর সাথে সাথে তর্ক করছে সেটা তার বিশ্বাস হচ্ছে না। কারণ বাড়িতে কেউ আজ অবধি ধ্রুবর সিদ্ধান্তের উপর কথা বলে না আর এই মেয়ে রীতিমতো তাকে অপমান করছে। আর ডিভোর্স পেপারে সাইন করতে না করছে ধ্রুব বলে -
"- দেখুন আপনাকে আমি ভালোবাসি না? আর এই বিয়ে সংসার করতে চাই না আমি? আর সেইজন্য বে*হায়ার মতো কোনো আমার সাথে থাকতে চান বলুন?
"- প্রথম কথা আমার নাম হিয়া সো নাম ধরে কথা বলেন। আর যদি আপনার আমাকে পছন্দ নাই ছিলো তাহলে এই বিয়ে করলেন কোনো? বিয়ে কোনো মজা না যে যখন আপনার ইচ্ছা হলো কবুল বলবেন আর যখন ইচ্ছা হবে ডিভোর্স দিয়ে দিবেন।আমি আপনার বিবাহিত বউ সেটা আপনাকে মেনে নিতে হবে।
"- বউ মাই ফ্যুট যেখানে এই বিয়ে আমি মানি না সেখানে আপনাকে বউ হিসাবে মেনে নেওয়া হাস্যকর বিষয়।
"- বিয়ে আপনার কাছে মজার বিষয় হতে পারে কিন্তু আমার কাছে না। বিয়ে মানে একটা পবিত্র সম্পর্ক যার মাধ্যমে স্বামী স্ত্রী একটা পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হয়। যখন বিয়ে দুইজনের সম্মতি নিয়ে হয়েছে তখন ডিভোর্স পেপারে সাইন করার সময় ও দুইজনকে রাজি থাকতে হবে। কারণ বিয়েতে কবুল শুধু আপনি একা না আমি ও বলেছি তাই আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার সঠিক কোনো কারণ না দেখালে সাইন আমি করব না "।
হিয়ার এমন কথা শুনে ধ্রুবর রাগ উঠে যায় এতোখন হিয়ার সাথে সুন্দর করে কথা বললে ও আর সেটা পারে না। ধ্রুব গিয়ে হিয়ার হাত থেকে কাগজ নিয়ে নেয় এরপর হিয়ার হাত ধরে জোর করে সেখানে সাইন করাতে চাই। যদিও পুরুষ মানুষের শক্তি অনেক হয় তবে হিয়া ও কম না সে এক ধাক্কা দেয় ধ্রুবকে আর হাতে থাকা কাগজ ছিঁড়ে টু*ক*রো টু*করো করে মেঝেতে ফেলে দেয়। হিয়া বলে -
"- ধ্রুব আমাকে দিয়ে জোর করে কোনো কাজ করাতে যাবেন না। কারণ এই হিয়া যদি কোনো কাজ নিজের ইচ্ছায় না করে সেটা কেউ তাকে দিয়ে করাতে পারে না। ভুলে যাবে৷ না জেদ আর রাগ শুধু পুরুষের না নারী ও থাকে "।
হিয়া ধা*ক্কা দিয়ে ধ্রুবকে বেশি দূরে সরাতে পারে নাই তবে মেঝেতে পরে থাকা কাগজ ছিঁ*ড়া টু*করো দেখে ধ্রুবর রাগ উঠে যায়। ধ্রুব বলে -
"- আপনার সাহস কি করে হয় হিয়া এই ডিভোর্স পেপার ছিড়েঁ ফেলার? সত্যি করে বলুন হিয়া কোনো এই বিয়ে কন্টিনিউ করতে চান আপনি টাকার জন্য। কতো টাকা লাগবে আপনার বলুন?
"- এই টাকার গরম একদম আমাকে দেখাতে আসবেন না ধ্রুব। ভুলে যাবেন না আমি যদি মন্ত্রী রামিম খানের ছেলে হন তাহলে আমি ও মন্ত্রী হুমায়ুন চৌধুরীর মেয়ে। টাকা আমার বাবার ও আছে ছোটবেলা থেকে সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছি আমি। সো টাকার লোভ আমার নাই.
"- তাহলে কোনো এই ডিভোর্স চান না আপনি হিয়া? আমি আপনাকে কখনো ভয় হিসাবে মেনে নিতে পারব না? নিজের জীবন কোনো ন*ষ্ট করছেন আপনি? কোনো ডিভোর্স দিতে চান না আমাকে?
ধ্রুবর কথা শুনে হিয়া একটু হাসে আর বলে -
"- বিয়ে কোনো মজা না।তবে আমি কোনো বে*হায়া মেয়ে না যে স্বামীর ভালোবাসা বা গুরুত্ব না পেয়ে শশুড় বাড়িতে পরে থাকবো? আপনাকে আমি ডিভোর্স দিবো ধ্রুব তবে একটা শর্ত আছে আমার.
"- কি শর্ত?
"- আগামী তিনমাস আমার সাথে সংসার করতে হবে আপনার। যদি এই তিনমাসের মধ্যে আপনার মনে আমার জন্য কোনো মায়া বা ভালোবাসা জন্ম না নেয় তাহলে ডিভোর্স দিয়ে দিবো আমি।বলুন রাজি আপনি ধ্রুব?
"- হিয়া আপনি কি আমার সাথে বাজি ধরছেন?
"- হুম অনেকটা সেইরকম। যদি রাজি থাকেন তাহলে তিনমাসের জন্য একটা ভালোবাসার বাজি ধরতে চাই আমি। তবে একটা কথা মনে রাখবেন হিয়া কখনো হারতে শিখে নাই?
হিয়ার কথা শুনে ধ্রুব অট্ট স্বরে হেঁসে উঠে কারণ হিয়া এই বাজি কখনো জিততে পারবে না। ধ্রুব কোনোদিন কাউকে ভালোবাসবে না তাই ধ্রুব বলে -
"- কিন্তু এই বাজি আপনি হেরে যাবেন হিয়া। তবে আমার আপনার বাজি ভালো লেগেছে দেখা যাক আপনি এই ধ্রুবর মনে ভালোবাসার ফুল ফুটাতে পারেন কি না?
"- ধ্রুব আমি আপনাকে কখনো ইমপ্রেস করবো না বরং আপনি এই হিয়ার প্রেমে পড়বেন। বাজি রইল ভালোবাসতে বাধ্য হবেন আপনি হিয়াকে "।
"- দেখা যাক কি হয়।
"- অবশ্য সময় সব বলে দিবে "।
হিয়ার সাথে ধ্রুব কথা শেষ করে অন্যদিকে রামিম খান ফোনে কারো সাথে কথা বলে -
"- সওদাগর সাহেব কালকে তাহলে মিটিং করা যাক। আর আপনাকে কোনো টেনশন করতে হবে মাল সময় মতো পৌঁছে যাবে আর পুলিশ সেটা জানতে ও পারবে না "।
ধ্রুব আর হিয়া বাজি ধরে ধ্রুব রুম থেকে বেরিয়ে যায় হিয়া একটা ডেভিল হাসি দিয়ে বলে -
"- ধ্রুব আপনি যানেন না এই বাজি ধরে কি ভুল করেছেন আপনি? একদিন এই বাজি আপনার গ*লার ফাঁ*সি হয়ে উঠবে। এই হিয়ার আসল রূপ এখনো দেখেন নাই আপনি.
চলবে
তুমি_আমার_প্রিয়তমা
কলমে_নুসাইবা_এহসানা_হিয়া
সূচর্না_পর্ব
আরেক টক কথা এখন থেকে প্রত্ত্বেক গল্পের সম্পুর্ন গল্প দেওয়া হবে।
[যারা পেজ কে ফলো না করে গল্প পড়ছেন তারা নিল লেখার উপর চাপ দিয়ে পেজ কে ফলো করে রাখুন, যাতে পরের পর্ব গুলা মিস না হয়। 👉 Choto Dairy 01 ]