Choto Dairy 01

  • Home
  • Choto Dairy 01

Choto Dairy 01 আল্লাহ সর্বশক্তিমান
(5)

চব্বিশ বছরের কুমারী জীবনের ইতি টেনে এক বুক আশা নিয়ে বাবার ঘর থেকে স্বামীর ঘরে পা রাখলো দীপা। আজ তার বিয়ের প্রথম রাত। খুব...
17/07/2025

চব্বিশ বছরের কুমারী জীবনের ইতি টেনে এক বুক আশা নিয়ে বাবার ঘর থেকে স্বামীর ঘরে পা রাখলো দীপা। আজ তার বিয়ের প্রথম রাত। খুব কাছের প্রিয় বান্ধবী মিমির বিয়ের গল্প শুনে কতবার কল্পনার রাজ্যে ডুব দিয়েছে। একদিন নিজেরও বিয়ে হবে। ছোট্ট সংসার হবে,সন্তানের মা হবে। আদরের সন্তান সারা ঘরময় দৌড়াদৌড়ি করবে। খুনসুটি,হাসি,গল্পে,আনন্দে সারাক্ষণ মাতিয়ে রাখবে প্রিয় মানুষগুলোকে।

ভার্সিটিতে পড়ার সময় ক্লাসমেট বন্ধু পলাশ প্রায়ই আড্ডা দেওয়ার সময় বলতো, ‘জানিস দীপা? আমার বউকে আমি খুব ভালোবাসবো। যে আমার বউ হবে সে খুব ভাগ্যবতী হবে। দীপা,তুই কি আমার লাইফ পার্টনার হবি?’

দীপা খিলখিল করে হেসে উড়িয়ে দিত। হাসতে
হাসতেই মজা করে বলতো,‘ইশ্ কি আমার জামাইরে? তোকে বিয়ে করতে যাবো কোন দুঃখে? আমার জামাই দেখতে তোর চেয়ে কত হ্যান্ডসাম হবে দেখিস। তুই আমার খুব ভালো বন্ধু হয়ে থাকবি সারাজীবন।’

পলাশও হেসেই জবাব দিলো, ‘দেখবো তো কোন রাজকুমার স্বামী হিসাবে তোর কপালে জুটে? আমার মতো গভীরভাবে তোকে আর কেউ বুঝবে না। কথাটা লিখে রাখ দীপা।’

পলাশকে দীপা সব সময় খুব ভালো বন্ধু মনে করতো। আজ পলাশের কথাগুলো খুব মনে পড়ছে দীপার।

সব জল্পনা,কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের আজ সেই মাহেন্দ্রক্ষণের মুখোমুখি দীপা। জীবনসঙ্গী যাকে পেয়েছে তিনি অজানা,অচেনা সম্পূর্ণ অপরিচিত একজন।

দীপার বাবার ছোটকালের বন্ধুর ব্যবসায়িক পার্টনারের একমাত্র ছেলে মৃদুলের সাথে কিছুটা তড়িঘড়ি করেই বিয়েটা হয়ে যায়। ভালো করে কথাবার্তা,দেখা,জানাশোনা কিছুই হয়নি দু'জনের মাঝে। সুসজ্জিত খাটে এলোমেলো ভাবনার ভিতরে দীপার টেনশন,উত্তেজনা দুটোই কাজ করছে। সেই সাথে নানা প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে। আচ্ছা মৃদুল ঘরে আসার সাথে সাথে কি পা ছুঁয়ে সালাম করবো?

নানু অনেক কথার সাথে ছোট্ট করে বলে দিয়েছিল, ‘বিয়ের প্রথম রাতে স্বামীকে পা ছুঁয়ে সালাম করতে হয়।’
মৃদুলের কথার আওয়াজ শুনে দীপা দরজার দিকে তাকায়। মৃদুল মোবাইল পাঞ্জাবির পকেটে রাখতে রাখতে ঘরে ঢুকলো।

মৃদুল খাটের পাশেই রাখা ডিভানে বসে বললো,
- 'দীপা,আপনার সাথে আমার খুব জরুরি কথা আছে। আশা করি আপনি আমাকে হেল্প করবেন।'

হঠাৎ এমন কথায় দীপার ভিতরে ধক করে শব্দ হলো। টেনশনের মাত্রা বেড়ে গেল। বিয়ের প্রথম রাতে বউয়ের মুখ না দেখে কি এমন জরুরি কথা বলতে চাইছে? দীপা এক পলক মৃদুলকে দেখে মাথা নীচু করে বললো,

- 'কি জরুরি কথা?'
- 'দীপা,আপনি কাউকে পছন্দ করতেন?'

দীপা চমকে উঠলো। নিজেকে প্রশ্ন করে,উনি কি বলতে চাইছে? চুপ থেকে আস্তে করে জবাব দিলো,

- 'না। তেমন কাউকে পছন্দ হয়নি।'

মৃদুল কথা শুরু করলো,
- 'আমাদের বিয়েটা খুব তাড়াহুড়ো করে হয়ে গেলো। নিজেদের কথা কিছুই জানানো হলো না। আমার নিজের কথাগুলো জানার পর আমাকে কাপুরুষ,প্রতারক অনেককিছু ভাবতে পারেন। আপনাকে সত্যিটা জানানো খুব প্রয়োজন। বিশ্বাস করেন,আপনাকে আমি ঠকাতে চাই না।

আমি নিরুপায় ছিলাম। পরিস্থিতির চাপে পড়ে আমি বিয়ে করেছি। আমি একজনের সাথে অঙ্গীকারবদ্ধ। ওর নাম ন্যান্সি। সাত বছর ধরে ওর সাথে সম্পর্ক। দু'জনেই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগ্রি ইকোনমিক্সের উপর মাস্টার্স শেষ করি। ন্যান্সি এখন এমএস করার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছে। দু'জনেই একসাথে অনেকদিন ধরে ট্রাই করছিলাম। কথা ছিল দু'জনেই অস্ট্রেলিয়া সেটেল্ড হওয়ার পর বিয়ে করবো। আমারও যাবার প্রয়োজনীয় সব পেপারস প্রায় ঠিকঠাক হওয়ার পথে।

এরই মাঝে বাসায় দুটো দুর্ঘটনা ঘটে গেল। দাদিজান দু'দুবার স্ট্রোক করলেন। দাদিজান বেঁচে ফিরলেও উনাকে নিয়ে আব্বার দুশ্চিন্তা বেড়েই যাচ্ছিল। কারণ, আব্বার জীবনে দাদিজানই সব। আমার কোনো চাচা,ফুপু নেই। আব্বার যখন এক বছর বয়স তখন দাদা মারা যান। দাদিজান নতুন করে সংসারে জড়াননি। আব্বাকে নিয়েই দাদিজানের পুরো পৃথিবী ছিল। আব্বার ধ্যান জ্ঞানেও শুধু দাদিজান। আব্বা দাদিজানকে সব সময় ভালো রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। ছোটবেলা থেকেই তাই দেখে আসছি।

দাদিজানের স্ট্রোকের অল্প কিছুদিন পর আব্বার হার্টে পাঁচটা ব্লক ধরা পড়লো। ডাক্তার দ্রুত অপারেশন করে রিং পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। আব্বা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলেন। উনি সুস্থ হলেও অনেকটা পরিবর্তন হয়ে যান। চুপচাপ থাকতে পছন্দ করেন। হঠাৎ দাদিজানের শরীর আবার খারাপ হতে শুরু করে। নিউমোনিয়ায় শ্বাসকষ্টজনিত কারণে হসপিটালে ভর্তি হলে আব্বা মানসিকভাবে আরও ভেঙে পড়েন। দাদি আব্বাকে ডেকে হাত ধরে বললেন, ‘বাবা, আমার দিন শেষ হয়ে আসতেছে। একটাই ইচ্ছে, মৃদুলের বউ দেখে মরতে চাই। ঘরে বউ আনার পর যেন মৃদুল বিদেশ পড়তে যায়।’

এই কথা শোনার পর আব্বা কাউকে কোনোকিছু বলার সুযোগই দিলেন না। তড়িঘড়ি করে আমাকে বিয়ে করিয়ে দাদিজানের মনের ইচ্ছে পূরণ করে উনার হুকুম পালন করলেন। আম্মা আমার পছন্দের কথা কিছুটা জানতেন। জেনেই বা কি করার ছিল? চোখের পলকে সব কিছু ঘটে গেলো।'

মৃদুল কথাগুলো বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। কিছু সময় চুপ থেকে আবার বললো,

- 'দীপা,আমি আর ন্যান্সি দু'জন দু'জনকে খুব পছন্দ করি। আমি পরিস্থিতির স্বীকার। আপনাকে ঠকাতে চাই না। সত্যিটা আপনার জানা খুব দরকার ছিল। আমাকে ক্ষমা করবেন।'
মৃদুল কথা শেষ ওয়াশরুমে গেল।

ঘুরে আসুন আমাদের পেইজ থেকে facebook.com/snehovibes

মুহূর্তের মধ্যে দীপার চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে যায়। দীর্ঘদিনের জমানো রঙিন স্বপ্নগুলো ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। চোখ থেকে নিঃশব্দে কয়েক ফোঁটা জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে। হাতে রাখা টিস্যু চোখ দুটোতে চেপে ধরে অঝোরে কাঁদে।

মৃদুল বাথরুম থেকে বের হলে চোখ মুছে প্রশ্ন করে,
- 'আর কতদিন লাগবে আপনার সবকিছু গুছাতে'?
- 'প্রায় দুই মাস।'

দীপা খাট থেকে নেমে অর্নামেন্টস খুলে মৃদুলের দিকে এগিয়ে দেয়।
- 'এইগুলি ন্যান্সির জন্য রেখে দিন।'

মৃদুল মুখ মুছতে মুছতে বললো,
- 'অর্নামেন্টস খোলার কি খুব দরকার?'

- 'পরেই বা কি হবে? যার সাথে সংসার হওয়ার কথা সেইতো আমার না।'

মৃদুল দু'পা এগিয়ে দীপার মুখের দিকে তাকিয়ে মৃদুস্বরে বললো,
- 'এইগুলো পরে নিন। সব অর্নামেন্টস আপনার। একটা রিকোয়েস্ট রাখতে হবে।'

- 'বলুন।'
- 'বাড়ির মানুষগুলো যেন কোনোভাবেই দু'জনের দূরত্বের কথা বুঝতে না পারে। আপনার কষ্ট হলেও দাদিজান,আব্বার শরীরের দিক বিবেচনা করে সবার সাথে একটু ভালো ব্যবহার করতে হবে।'

দীপা মৃদুস্বরে বললো,
- 'ভিতরে পাহাড়সম কষ্ট নিয়ে ঠোঁটে কৃত্রিম হাসি রেখে আমি না হয় সবাইকে ভালো রাখার চেষ্টা করবো। সুখে থাকার অভিনয় করবো। যখন সবাই সবকিছু জানতে পারবে তখন আপনার প্রিয় ও কাছের মানুষগুলো কতটা কষ্ট পাবে জানেন? আমার বাবা,মা তাদের মেয়ের এতবড় ক্ষতি তারা সহ্য করতে পারবেন না। এখনি সব জানাজানি হোক।'

- 'দীপা,প্লিজ ক'টা দিন সময় নিচ্ছি। আপনি হেল্প করলে আমরা দু'জনেই এর সমাধান করতে পারবো।'

হঠাৎ ফোন বেজে উঠে। মৃদুল ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে বারান্দায় চলে যায়। দীপা শাড়ি চেঞ্জ করে ফ্রেশ হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করে। ঘুমহীন চোখের পাতা দুটো বারবার ভিজে উঠে। আপনমনে বিড়বিড় করছে,জীবনে কাউকে ঠকাইনি,কষ্ট দেইনি। বিধাতা তুমি কেন আমার ভাগ্যটা এমন করলে? কি দোষ করেছি আমি?
কিছু অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে দীপার স্যাঁতস্যাতে চোখের পাতায় ঘুম চলে আসে।


সকালে সজাগ পেয়ে দীপা দেখে মৃদুল ডিভানে কাত হয়ে ঘুমাচ্ছে। দীপা মাথার কাছে দাঁড়িয়ে আস্তে করে ডাকলো,

- 'মৃদুল,সকাল হয়ে গেছে। যদি আরও ঘুমুতে ইচ্ছে করে খাটে শুয়ে ঘুমান। এই মৃদুল উঠুন!'

দীপা দুইবার ডাকার পরও মৃদুলের কোনো সাড়াশব্দ নেই। দীপা আস্তে করে পায়ের তলায় সুড়সুড়ি দিল কয়েকবার। মৃদুল নড়েচড়ে চোখ মেলে দেখে দীপা তার পায়ের কাছে। শোয়া থেকে উঠে বসে।

- 'আমি ঘুমিয়েছি এই একঘন্টা আগে। ন্যান্সি ফোন দিয়েছিল। ওর একটা সমস্যার চলছে। ওর রুমমেট নাইজেরিয়ান একটা মেয়ে। প্রতিদিন মদ খেয়ে রুমে ফিরে ওকে খুব ডিস্টার্ব করে। ন্যান্সি খুব ভয়ে আছে।'

দীপা মৃদুলের কথা থামিয়ে দিয়ে বললো,
- 'ন্যান্সির সাথে আপনার কি কথা হয়েছে তা শুনতে চাচ্ছি না,চাই না এবং কোনোদিন চাইবো না। আপনাদের দু'জনের বিষয় নিজেদের মাঝে রাখলেই ভালো। ঘুমুতে ইচ্ছে করলে ডিভান থেকে খাটে যান। এইজন্যই ডাকছিলাম।'

- 'না,আর ঘুমাবো না। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে যাবো।'
- 'ঠিক আছে। আপনি আসুন। আমি যাই।'


দীপা ডাইনিং রুমে আসতেই শাশুড়ি বললেন,
- 'এই যে বৌমা ভালোই হলো তুমি সকাল সকাল উঠেছো। তোমার দাদি শাশুড়ি বায়না ধরেছে, তোমার হাতে খাবে। আমার হাতে খাবে না, তোমার শ্বশুরের হাতেও খাবে না এমন কি শিউলির মায়ের হাতেও না। বয়স যতই বেড়ে চলেছে উনিও স্বভাবে ততই ছোট বাচ্চা হয়ে যাচ্ছে। জানো সেইদিনও উনাকে চিপস কিনে দিয়েছি। চিপস উনার খুব পছন্দ।'

দীপা মৃদু হেসে বললো,
- 'বেশ ভালো তো! আজ থেকে আমিই দাদিজানকে খাইয়ে দিব। মা,খাবারের প্লেটটা আমায় দিন।'

দীপা খাবারের প্লেট নিয়ে দাদী শাশুড়ির ঘরে আসলো। পঁচাত্তর বছর বয়স্ক কামরুন্নেছা বেগম শুয়ে চোখ বন্ধ রেখে তজবি জপছেন।

- 'দাদিজান, আমি দীপা। আপনার খাবার নিয়ে আসছি।'

কামরুন্নেছা চোখ মেলে তাকালেন।
- 'বইন তুই আসছোস? তোর হাতে খাইতে চাইছি মন খারাপ করোস নাই তো?'

- 'কেন রাগ করবো দাদিজান? এ যে আমার সৌভাগ্য। আমার দাদি বেঁচে নেই। আজ থেকে আপনার সবকিছু আমিই দেখভাল করবো। আপনি শুধু বলবেন আপনার কখন কি খেতে ইচ্ছে করে।'

দীপা নাস্তার প্লেট পাশে রেখে দাদি শাশুড়িকে ধরে শোয়া থেকে বসালেন। মুখে তুলে খাইয়ে দিচ্ছে। দু'জনে টুকটাক কথা বলছে।

মৃদুল খাবার টেবিলে কাউকে না পেয়ে চেয়ার টেনে বসতে বসতে মা'কে ডাক দিলো,

- 'মা,নাস্তা দাও।'
মৃদুলের মা কিচেন থেকে হটপট হাতে করে টেবিলের সামনে দাঁড়ালেন।

- 'বৌ'মাকে নিয়ে খেতে বস। মায়ের ঘরে আছে। তোর দাদি বায়না ধরেছে দীপার হাতে খাবে।'

মৃদুল দাদির ঘরে উঁকি দিয়ে বললো,
- 'দুই সই বেশ জমিয়ে গল্প করছো। দেখতে দারুণ লাগছে।'

মৃদুল কথাটা শেষ করেই আড়চোখে দীপার দিকে তাকাতেই দু'জনের চোখাচোখি হলো।

- 'দাদি তোমার খাওয়া হয়েছে?'
- 'হইছে ভাই। খুব তৃপ্তি নিয়া খাইলাম। আয় ভাই, তুই আমার কাছে বয় একটু।'

মৃদুল দাদির গা ঘেঁষে বসলো। কামরুন্নেছা দীপার ডানহাতটি নিজের হাতের ভিতর রেখে বললেন,

- 'দীপা,আমার মৃদুল দাদাভাই খুব ভালো মনের মানুষ। খুব নরম মনের মানুষ। দেখিস তোকে খুব ভালোবাসবে। ছোট থাকতে ও আমার গলা জড়িয়ে ঘুমাতো। কতবার যে নিজ হাতে ঔষধ খাইয়ে দিছে। মশারি টানায়ে দিছে। তুই আমার নাতিটাকে বেশি করে সেবা যত্ন করবি।'

দীপার চোখ দুটো টলমল। মাথা নীচু করে আছে। মৃদুলের দৃষ্টি দীপার সিক্ত চোখ দুটোকে এড়িয়ে যেতে পারেনি। প্রসঙ্গ এড়ানোর জন্য মৃদুল তাড়াতাড়ি বললো...

(চলবে)....

গল্পঃ তুমি শুধুই আমার
পর্বঃ ১
লেখাঃ মাকসুদা খাতুন
----------------------------------

নেক্সট পার্ট সবার আগে আইডিতে পোস্ট করা হবে, নীল লেখার চাপ দিয়ে সবাই আইডি ফলো করুন। 👉 Choto Dairy 01

যুবক ছেলে ভাত খেতে বসলে বাবার কঠিন স্বর " এক কুকুর ছিলো।সারাদিন বাইরে ঘুরতো।রাতে আমার কাছে আসতো খাওয়ার জন্য  "ছেলে অর্ধে...
16/07/2025

যুবক ছেলে ভাত খেতে বসলে বাবার কঠিন স্বর " এক কুকুর ছিলো।সারাদিন বাইরে ঘুরতো।রাতে আমার কাছে আসতো খাওয়ার জন্য "

ছেলে অর্ধেক ভাত খেয়েছে,বাবার এরূপ কথায় পরের লোকমা মুখে দিতে পারলো না।মলিন মুখ নিয়ে বসে থাকলো।বাবা বললেন..

" কুকুরটার লজ্জা বলতে কিছু ছিলো না।সারাদিন ঘুরে বেড়িয়ে রাতে যখন পে"টে টান পরতো লেজ গুটিয়ে চলে আসতো "

ছেলে যত সম্ভব নিজেকে সংযত রেখে " বাবা তুমি এতোরাতে জেগে আছো,শরীর খারাপ? "

" তোমার সেদিকে নজর দিতে হবে না।চুরির টাকা কি করেছো "

" চুরির টাকা? কি বলছো বাবা? "

বাবার মুখ আরো কঠিন হয়ে গেলো দাঁত কিটিমিটি দিয়ে " বাজারের টাকা দিয়ে হয়নি,এখন না বলে পকেট থেকে টাকা সরাচ্ছিস,বেয়াদব।এক থা"প্পড়ে বদমাইশি বের করবো "

কথাগুলো বলে বাবা চলে গেলো।রান্নাঘর থেকে ছোটবোন উঁকি দিলো।ভাইকে অভিমানী স্বরে " সরি দাদা,স্কুল থেকে পিকনিকে যাবো।বাবাকে বললে যেতে দিবে না।তাই চুরি করেছি "

" বলে নিতিস।যাইহোক কবে পিকনিক? "

" পরশু।আজকে না আরেকটা টিউশনি পাওয়ার কথা,পেলে? "

" না রে।তোর ভাইয়ের রেজাল্ট ওদের মনে ধরেনি "

" মন খারাপ করো না দাদা।দেখবে খুব তাড়াতাড়ি তোমার চাকরি হয়ে যাবে।তখন বাবা আর তোমায় বকা দিবে না।তোমার টাকায় আমি অনেকগুলো নতুন খাতা কিনবো,রং পেনসিল কিনবো "

" দুমাসের টাকা জমিয়েছি।এই মাসের টিউশনির টাকাটা পেলে বাবাকে জুতা আর তোকে নুপুর কিনে দিবো "

" সোনার নুপুর? "

" না রে পাগলি,সোনার অনেক দাম।রুপার নুপুর কিনে দিবো "

" আচ্ছা দাদা,বাবা তোমায় এতো বকলো,তোমার রাগ হয়না? "

" শুনলি না কুকুরের সাথে তুলনা করলো।আমি শান্ত বেকার কুকুর।অকর্মা বেকার কুকুরের রাগ থাকতে নেই "

বাকি অর্ধেক ভাত আর খেতে পারলো না।যখন তখন চোখে জল চলে আসবে,যত দ্রুত সম্ভব বোনের নজরের আড়াল হতে হবে।

ভ্যাবসা গরম পরেছে।পিঠের ঘামে বিছানার চাদর ভিজে যাচ্ছে।বকেয়া পরিশোধ না করায় কারেন্টের লাইন কে"টে দিয়েছে দুই মাস হলো।গরমে বাবা ঘুমাতে পারেননা।সারারাত ছটফট করেন,দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।

বাবার এরুপ কষ্ট সইতে না পেরে ছেলে সখের সাইকেল ৫ হাজার টাকা বেঁচে চার্জার ফ্যান কিনে এনেছে।ছোটবোন প্রতিদিন পাশের বাড়ি থেকে চার্জ করিয়ে আনে।সখের সাইকেল বললে ভুল হবে।মধ্যেবিত্ত ছেলে মেয়েদের সখের কিছু হয়না,হয় প্রয়োজনের।সাইকেলটা প্রয়োজন ছিলো ২টা টিউশনি করাতে।এখন ২ কিলো যায় পায়ে হেঁটে।রাতে ফিরতে এজন্যই দেরি হয়।

ঘামতে ঘামতে এক পর্যায়ে ছেলের চোখ ক্লান্তিতে ঢেকে যায়।বাবা ঠিকই জেগে থাকেন,অপেক্ষা করেন ছেলের ঘুমের।ঘুমিয়েছে অনুমান করে চুপিচুপি চার্জার ফ্যানটা ছেলের মাথায় কাছে রেখে যান।ছেলের কপালের ঘাম হাত দিয়ে মুছে দেন।কঠিন সব কথা বলার জন্য ছেলের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ক্ষমা চান।

তারপর ব্যথিত মনে হাত পাখাটা নিয়ে মেয়ের ঘরে যান।হাত পাখার বাতাসে বাবা মেয়ে ঘুমায়।অব্যক্ত ভালোবাসা,দারিদ্রের ভার,সুখের খোঁজে একটি পরিবার।

গল্প সুখের_খোঁজে
লেখক জয়ন্ত_কুমার_জয়

এই আইডি ব্যাতিত আমার কোনো আইডি/পেজ নেই।যারা আমার গল্প পড়েন এই আইডিতে থাকতে পারেন।ধন্যবাদ 🤍

রোজ রাতেই আমি টের পাই আমার বড় মেয়ে রাতে পুনুর পুনুর করে ফোনে কথা বলে। আমি ওর রুমে গেলেই একেবারে চুপ হয়ে ঘুমের ভা ন ধরে ব...
16/07/2025

রোজ রাতেই আমি টের পাই আমার বড় মেয়ে রাতে পুনুর পুনুর করে ফোনে কথা বলে। আমি ওর রুমে গেলেই একেবারে চুপ হয়ে ঘুমের ভা ন ধরে ব্যাঙ্গের মতন পরে থাকে। আমি ওর মা আমিও এমন করে ওর বাপের সাথে প্রেম করতাম। তখন ফোন ছিলনা, রাতে চিঠি আদান প্রদান করতাম। আব্বারে দেখলে আমিও ব্যাং ম রা র মতন পড়ে থাকতাম।

ভাবলাম আমার কিছু একটা করতে হবে। আমার আব্বা কলেজ যাওয়া অফ করে দিছিল তাই আমি পালিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু আমি ডিজিটাল মা, আমার মেয়ের এসব করা চলবে না।

টেকনিক করে, মেয়ে যখন ওয়াশ রুমে গেল আর ওর ফোনখানা নিয়ে দেখি রিসিভ কল ভর্তি হয়ে আছে একটি নম্বর। আর তা জান নামে সেভ করা। সুন্দরভাবে ওই নম্বর টুকে নিলাম।

ব্যাস! রান্না ঘরে গিয়ে ওই নম্বরে মেসেজ দিলাম, জান আমি লিমু, এটা আমার নিউ নম্বর।আগের নম্বরে ভুলেও কল দিবানা।ওটা মায়ের কাছে। ওই নম্বর ব্লাক লিস্ট এ দেও। এখন থেকে মেসেজিং করবো। মা টের পেয়েছে সব।তাই কিছুদিন কথা বলা যাবেনা।

ওপাশ থেকে টুং করে ফিরতি মেসেজ,আচ্ছা জান।কি করছো সোনা?

মনে মনে ভাবি,তরে একবার হাতের নাগালে পাই সোনা পুড়ে তামা বানামু।

আমি মেসেজ দিলাম,কিছুনা জান।মন খারাপ।

এভাবেই আমাদের মেসেজিং চলতেই রইল,চলতেই রইল,৫দিনের মাথায় আমি ভোর রাতেও বারান্দায় গিয়ে মেসেজিং করি।আমার বর মহাশয় ইদানীং আমার দিকে কেমন সন্দেহর দৃষ্টিতে তাকায়।তাতে কিছুই আসে যায়না। আমার মেয়ের লাইফ আগে।আমি অনেকদিন মেসেজিং করলে আমার মেয়ে ওদিক থেকে ওই ছেলেকে ভুলে যাবে।

ইদানীং আমার মেয়েকেও মন মরা দেখি।নম্বর ব্লক লিস্ট এ দিয়েছে কিনা।

যাক, অবশেষে আমি ভাবলাম আমি সেই ছেলের সাথে দেখা করি।ওকে গিয়ে হুমকি ধামকি দিয়ে আসবো।তাহলেই সাকসেস।

সাজুগুজু করছি,মন বেশ ফুরফুরা লাগছে আজ সেই বেয়াদপ কে চরম ধোলাই দিব।

আমার বর মশাই পেপার পড়া বাদ দিয়ে আমায় আড়চোখে দেখছে আর জিজ্ঞেস করছে কি!কই যাও?

ওকে বললে ও বেপার টা নিয়ে হাইপার হবে।তাই বললাম বাজারে কিছু কেনার আছে

-এই বিকেলবেলা?

তো?মধু নাই বাসায়।তুমি তো জানো সকালে খালি পেটে আমি মধু খাই।ডায়েটে আছি তো।

বাসা থেকে নেমে পার্ক এ গিয়ে দাড়িয়ে আছি।
অল্প বয়সী কাউকেই দেখছিনা।কিন্তু আমার বরের চেয়েও বয়স্ক লোক আমার পাশে ঘুরঘুর করছে।

ফোনটা হাতে নিয়ে আবার মেসেজ দিলাম কই তুমি?

ওপাশ থেকে মেসেজ না দিয়েই কল দিল।আমি রিসিভ করে চুপ করে আছি।কি অদ্ভুত আমার পাশে দাড়ানো লোকটির কানেও ফোন আর আমার দিকে শকুনের মতন তাকিয়ে আছে।আমি কেটে দিয়ে আবার কল দিলাম,আমি আরো শিহরিত হলাম,ফোন বাজছে ওই লোকের হাতের টা ই।

রেগে গিয়ে বললাম,আপনি ই সেই মানুষ! ছিঃ মেয়ের বয়সী একজন এর সাথে প্রেম করতে লজ্জা লাগেনা।আবার তারে জান,সোনা ডাকেন!

লোকটি তীব্র দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বলে,বেত্তমিস মহিলা,তিন কাল গিয়ে এক কালে ঠেকছে আর এখন বাচ্চার বয়সী ছেলেকে বিরক্ত করেন!

ঝগড়ার এক পর্যায় জানতে পারলাম,আমার মেয়ে এই লোকের ছেলের সাথে প্রেম করে।তিনি তার ছেলের ফোন নিয়ে গেছিল।আর আমি এতদিন তার ছেলে ভেবে তার সাথেই প্রেমালাপ করেছিলাম।

দুজন ই এক পর্যায় হাসতে হাসতে মরার উপক্রম হয়েছে।দুই ব্যর্থ গোয়েন্দাই এক পর্যায় কফি শপ এ বসলাম।নিজের কর্মকান্ডর জন্য স্যরিও বললাম।তিনিও বললেন।ভাবলাম বেয়াই হিসেবে ছেলের বাবা মন্দ না।হেসে হেসে বললাম ছেলের ফোনটা বাসায় গিয়ে ছেলেকে দিয়ে দিয়েন,আমার মেয়ে খুব ই মন মরা হয়ে আছে।

সে উঠে বললো,হুম আগে মেসেজিং গুলি মুছে নেই।এমন প্রেমালাপ দেখলে মামলা খেয়ে যাব হা হা হা।

আমি হেসে কুটিকুটি হয়ে কফির মগে চুমুর দিব তখন ই দেখছি আমার দিকে রাক্ষসের মতন তাকিয়ে আছে লিমুর বাবা।
এ কি তুমি এখানে?

-বাহ!আরজু বাহ!না আসলে তো এমন রঙ্গ দেখতেই পেতাম না

এই কি বলো? ভুল ভাবছো তুমি আমায়।

-ভুল! ছিঃ এত নিচ তুমি?এখন তো আমি তিতা হয়ে গেছি?আর এই বেটা মধু?তাই তো ভ্রমর মধু খেতে এসেছে।খাও মধু।
এই বলে লিমুর বাবা চলে গেল।

আমি পিছন পিছন ছুটছি।বেয়াই মশাই উঠে বললো,ঘাবড়াবেন না সোনা থুক্কা আপা।আমি আছি অলয়েজ পাশে।

রেগে বললাম,চুপ কর টাকলা ব্যাটা।মেয়ের প্রেম ভাংতে গিয়া আমার সংসার ই ভাঙার উপক্রম হইছে।

ও লিমুর আব্বা...খারাও..তুমি ভুল ভাবতেছো,দুনিয়ার সব মধুই ভেজাল,তুমি ই আসল।

ও লিমুর আব্বা খারাও কইলাম.....
Dhonnobad dite vulben na😑

টিট_ফর_ট্যাট
Nipa
তারকাঁটা

📘🖍️ পরবর্তী পর্ব এবং নতুন গল্প পেতে সবার আগে আইডিটে ফলো দিয়ে রাখুন 📜👉 Choto Dairy 01
📕🖍ধন্যবাদ📕🖍️

চার বছর পরে দেশে ফিরে বউয়ের মুখে ভাইয়া ডাকটা শুনে মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল। তবুও নিজেকে সংযত করে বললাম:হৃদয়: আমি তোমার...
16/07/2025

চার বছর পরে দেশে ফিরে বউয়ের মুখে ভাইয়া ডাকটা শুনে মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল। তবুও নিজেকে সংযত করে বললাম:

হৃদয়: আমি তোমার ভাই হবো কেন? কে বলেছে আমি তোমার ভাইয়া।

নীলিমা: আপনার আম্মু আব্বু তো আমাকে তাদের কে আম্মু আব্বু বলে ডাকতে বলেছে। তাহলেতো আপনি ভাইইয়াই হন।😃

হৃদয়: আরে আমি তোমার ভাইয়া হতে যাবো কোন দুঃখে। আমি তোমার স্বামী, বর বর।😠

নীলিমা: ওকে এখন থেকে বর বলে ডাকবো?😌

হৃদয়: নাম ধরে ডাকবে নাম নাম নাম! আমার নামটা জানো তো?🙄

নীলিমা: হ্যাঁ জানি তো।😀

হৃদয়: কি বলতো?🙂

নীলিমা: হারামজাদা।😇

হৃদয়: কি কে বলেছে এটা?😠

নীলিমা: আপনার আম্মু!🤐

কথাটা শুনে আমি আম্মু বলে চিৎকার করে উঠলাম। আম্মু ছুটে এসে বলল:

আম্মু:কি হয়েছে?😳

হৃদয়: আমার নাম হারামজাদা😠

আম্মু: এমা তা হবে কেন।😐

হৃদয়: তুমি নাকি নীলিমাকে বলছো🙄

নীলিমা :সেদিন তুমি বললে না ওই হারামজাদা টার জন্য নাকি তোমার শান্তি নেই।😀

আম্মু :আরে ওটা তো আমি এমনি বলছি ওর নাম হৃদয়।😅

হৃদয়: হৃদয় বলে ডাকবে আমাকে ওকে?😑

নীলিমা:আচ্ছা🙃

আমি আর কথা না বাড়িয়ে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া করে বেরিয়ে পড়লাম আমার সেই চিরচেনা শহর টা ঘুরতে।

সারা বিকাল ঘোরাঘুরি করলাম। বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা করলাম অনেকদিন পর তাদের সাথে দেখা। একেকটা তো হাতির মত মোটা হয়ে গেছে। 😁

তাদের সাথে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলাম।

রাতে ডিনার শেষ করে রুমের দরজায় এসে দেখি নীলিমা খাটের মাঝখানে বসে আছে।

আমাকে রুমে ঢুকতে দেখে।

নীলিমা: কি করছেন? একটা মেয়ের রুমে ছেলেমানুষ হয়ে এত রাতে ঢুকছেন।বেরিয়ে যান এক্ষুনি।😠

হৃদয়: কিহ!😳

ঘুরে আসুন আমাদের পেইজ থেকে facebook.com/snehovibes

নীলিমা: আপনার একটা মেয়ের রুমে ঢুকতে লজ্জা করে না।😠

হৃদয়: আজব, আমিতো তোর বর।🙁

নীলিমা: তো, তাই বলে আপনি আমার রুমে আসবেন?🙄

হৃদয়: তো কোথায় যাব।🙂

নীলিমা: সেটা আমি কি করে বলব। 😐আম্মু......

আমি দৌড়ে গিয়ে নীলিমার মুখটা চেপে ধরলাম।

হৃদয়:এই আম্মুকে ডাকতেছিস কেন?😱

নীলিমা: আমি আম্মুকে বলে দেব তুমি আমার রুমে আসছো! তুমি ভালো না বদমাইশ খারাপ ছেলে কোথাকার লুচ্চা লাল টিকটিকি তেলাপোকা বান্দর হনুমান।😞

হৃদয়: আরে বোন আমি আসলে সমস্যা কোথায়? 😭

নীলিমা: আম্মু বলেছে কোন ছেলের সাথে কথাও না বলতে ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে। সবার থেকে দূরে দূরে থাকতে। আর তুমি ডাইরেক্ট আমার রুমে চলে আসছো।😠

এতক্ষণে ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারলাম। মনে হয় স্মৃতিশক্তি নষ্ট হওয়ার কারণে ভুলে গেছে স্বামী স্ত্রী কাকে বলে।😶

কি প্যারা এখন কি আমি বউয়ের সাথে থাকতেও পারবো না। 😭😭

হঠাৎ একটা আইডিয়া মাথায় আসলো।

হৃদয়: আচ্ছা আমার আব্বু আম্মু স্বামী-স্ত্রী তাই না?😪

নীলিমা: তো 🙄

হৃদয়: তারা তো একসাথে থাকে।😇

নীলিমা: হুমম।🤐

হৃদয়: এখন কি বুঝতে পারছিস। স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকতে হয়।🙂

নীলিমা: ও আচ্ছা।🙄

যাক বুঝতে শেষ পর্যন্ত বুঝতে পেরেছে। আমিতো ভাবলাম আজকে আমাকে ঘরের বাইরে রাখবে। একটা মুচকি হাসি দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকলাম।😃

আমি বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে খাটে শুয়ে পরলাম। মনে মনে ভাবতেছি খাটে শোয়া নিয়ে আবার কি কাহিনী হয়।🙁

কিন্তু দেখলাম কিছু না বলে আমার পাশে এসে শুয়ে পড়ল।😃

যাক মনে হয় সবকিছু স্বাভাবিক করতে তেমন কষ্ট হবে না।😌

আমি একটু নীলিমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমার হাত নীলিমার হাতের সাথে একটু স্পর্শ লাগতেই নীলিমা সজোরে এক ধাক্কা মেরে খাট থেকে দিল ফেলে।💔

এবার মনে হয় মাজা টা ভাঙলো গো....।😭

আমি খাট থেকে ঊঠে দেখি নীলিমা খাটের মাঝখানে বসে আছে। মনে হচ্ছে আছার মারি 😠

হৃদয়: ঐ আমায় ধাক্কা মেরে ফেলে দিলি কেন?😠

নীলিমা: তুমি আমার হাতে হাত দিলে কেন 🙄 তুমি একটা লুচু ছেলে। যাও সোফায় যাও।🤐

হৃদয়: আরে আমি কি ইচ্ছা করে হাত দিয়েছি? আর তুমি তো আমার বউ। তোমার গাঁয়ে হাত দিব না কার গাঁয়ে দিবো?☹️

নীলিমা: কি হাত দিয়েছ আবার বলছো কার গায়ে হাত দিব?😤

হৃদয়: আরে বউয়ের গায়ে হাত দিলে কি এমন হবে? আল্লাহ বাঁচাও আমায় 😭

নীলিমা: বউ বলে কি তার গায়ে হাত দেওয়া লাগবে নাকি? 🙄

হৃদয়: তো মানুষ কি বউকে বিয়ে করে নে বাক্সের ভেতর তুলে রাখে 🙄

নীলিমা: তুমি এর আগে কয়টা বিয়ে করছো? এর আগে বিয়ে না করলে তো জানার কথা নয় বর বউয়ের গায়ে হাত দিতে পারে।

হৃদয়: কয়টা মানে 🙄। তুমিই প্রথম।

নীলিমা: তারমানে আরো বিয়ে করার ইচ্ছা আছে?🤬

হৃদয়: কখন বললাম সে কথা?😐

নীলিমা: ওই যে বললে তুমি প্রথম। তারমানে দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম আরো নিয়ে আসবে 🙄

হৃদয়: আমি সে কথা বলি নি।🤭

নীলিমা: আমি আর কিছুই জানতে চাই না তুমি এক্ষুনি সোফায় যাও।😤

হৃদয়: আর হাত দিবো না। থাকি না?😟

নীলিমা: যাবে না আম্মুকে ডাকবো?😒

হৃদয়: যাচ্ছি যাচ্ছি।😶

আমি আর কিছু না বলে সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। ধুর একসময় খাটে শোয়ার সুযোগ থাকলেও শুইতে চাইতাম। আর আজ খাটে শুইতে চেয়েও সোফায় শুতে হচ্ছে।😕

এভাবেই কেটে গেল অনেকদিন। আমি এখন নীলিমার যন্ত্রণায় পুরাই অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। মনে হচ্ছে বাড়িঘর ছেড়ে এখন পাবনা যাই।🤯

বাড়িতে ফিরতেই ইচ্ছা হয় না। মেয়েটাকে বিয়ে করার পর থেকে আমার জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেছে। আমি ডাইনে গেলে ও বামে যায় আর আমি বামে গেলে ও ডাইনে যায় ।😞

মনে হইতাছে সব কিছু ছাইড়া হিমালয় চলে যাই।😩

রাতে বেলকুনিতে বসে থেকে এসব ভাবতেছি। অনেক রাত হয়েছে নীলিমা এখনো আসলো না রূমে। তাই বের হয়ে আসছিলাম। রান্নাঘরের কাছে আসতেই যা শুনলাম তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।😱

নীলিমা: বড় আম্মু, হৃদয় তো এখন দেশে ফিরেছে। আর এতদিনে অনেক জ্বালিয়েছি। এখন কি সবকিছু স্বাভাবিক করে নিলে হয়না? অনেক দিনই তো স্মৃতিশক্তি হারানোর একটিং করলাম।😌

আম্মু: না নীলু, আরো কিছুদিন। ও তোরে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আরও কিছুদিন এভাবে থাকতে দে।🌝

আমি এসব শুনে পুরোটাই হতভম্ব হয়ে গেল। তার মানে সবই অভিনয়। বাহ আমার মা ওই এর মাথা। যারে বলে ঘরের শত্রু বিভীষণ।😟

আমি রাগে গজতে গজতে রুমে গেলাম। গিয়ে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থেকে কি করা যায়।.......

চলবে,,,,,,

গল্প শেষ বেলার তুমি
পর্ব ১

নেক্সট পার্ট সবার আগে আইডিতে পোস্ট করা হবে, নীল লেখার চাপ দিয়ে সবাই আইডি ফলো করুন। 👉 Choto Dairy 01

তিলকে পা'জাকোলে করে চোখের সামনেই কাকিমার রুমে ঢুকে পড়লো রিদ। অস্থিরতায় চারপাশটা চোখ বুলিয়ে দরজায় সিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে তিল...
16/07/2025

তিলকে পা'জাকোলে করে চোখের সামনেই কাকিমার রুমে ঢুকে পড়লো রিদ। অস্থিরতায় চারপাশটা চোখ বুলিয়ে দরজায় সিটকিনি লাগিয়ে দিয়ে তিলের জামা টেনে খু'লার চেষ্টা করছে। জামা খুলতে না পারায় এক পর্যায়ে টান দিয়ে ছিড়তে থাকে। রিদের হাতের আচরে ভ্যা ভ্যা করে কেদে উঠে তিল। চোখের পানি গাল বেয়ে পড়ছে আর নাকি নাকি কন্ঠে চিৎকার করে বলছে,

"" লিদ ভাইয়া,আমাল লাগছে। ছালো আমাকে। আমাল পুতুলের তো আজকে বিয়ে। ছালো আমাকে। আমার নতুন লাল জামাটা ছি'লে ফেলছো কেন? আম্মু আমাকে মালবে,লিদ ভাইয়া,ছালো!""

তিলের কথা রিদের কানে যাচ্ছেইনা। সে তিলের দিকে তাকিয়ে আরো অস্থির হয়ে টান দিয়ে ছি'ড়ে পুরো জামাটা ফ্লোরে ছুড়ে ফেললো। নিজের গেন্জির ভেতরে প্যান্টের সাথে আটকে থাকা শাড়ীটা বের করে তিলের সামনে মেলে ধরলো। ওর লাল ফ্রকটার সাথে মেচিং করা লাল কুচি দেওয়া শর্ট প্যান্টের কো'মড়ের রাবারটার ভেতর দিয়ে শাড়ী গুজতে গুজতে বললো,

"" ক্লাস ফ্লোরে পড়িস এখনো ' র' উচ্চারন করতে পারিসনা? রিদ থেকে লিদ? আমার নামের অপমান করিস তুই? আর আমি তোর কাছে আসলেই তোর কান্না পায়?ব্যথা লাগে? আমাকে দেখলেই তোর চোখে সমুদ্র তৈরী হয়ে যায়? চুপ আর একবার চিৎকার করলে এই শাড়ীটা তোর কো'মড়ে না পেচিয়ে গলায় পেচিয়ে ধরবো।""

তিলের কান্নার গতি কমার বদলে আরো বেড়ে গেলো। গলার শব্দ আরেকটু চিকন করে চিৎকার করে বলতে লাগলো,

"" আমাল নতুন জামা,আমাল পুতুল বউ। আমাল সুলসুলি লাগছে,লিদ ভাইয়া ছালো আমাকে!""

রিদ র*ক্তচক্ষুতে তাকালো তিলের দিকে। ধমক দিতে গিয়েও থেমে গেলো। নিমেষেই অসহায় ভ'ঙ্গি'তে শাড়ীর কুচিটা দিতে দিতে বললো,

"" এভাবে কাদিস না,তিল। আমি শুধু দেখতে চাই শাড়ী পড়লে তোকে কেমন লাগে। আমাকে একটু শাড়ীটা পড়াতে দে। তোর কান্না আমাকে খুব জ্বা'লাচ্ছে। শাড়িতে তোকে দেখতে কেমন দেখায়, এটা দেখেই চলে যাবো।""

রিদের কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই দরজায় বাড়ি পড়ছে। দরজার অ'পরপাশ থেকে বাবার কন্ঠ পেয়ে রিদ ভয় পেয়ে যায়। আর তিলও গ'লা ফাটিয়ে চিৎকার করতে থাকে,

"" বলো আব্বু,বলো আব্বু। লিদ ভাইয়া আমাল জামা...""

তিলের কথা শেষ হওয়ার আগেই ওর মুখ চেপে ধরে রিদ। বাবা এবার প্রচন্ড শব্দ আর হুংকার দিয়ে রিদকে দরজা খুলতে বলছে। রিদের চোখটা আবার র*ক্তর'ঙে রাঙিয়ে তিলের শরীর থেকে শাড়ীটা খু'লতে খু'লতে বললো,

"" তোর এই কান্না আমাকে তিলে তিলে শেষ করে দিচ্ছে। যেদিন তুই লিদের জায়গায় রিদ বলতে শিখবি সেদিন আমাকে খুজে পাবিনা। আফসোস করবি তুই,খুব আফসোস করবি!""

রিদ হে'চকা টানে পুরো শাড়ীটা আবার নিজের গেন্জির ভেতরে ঢুকাতে ঢুকাতে জানালাটা খু'লে লা'ফ দিয়ে পালিয়ে গেলো।
~~
"" তিল,তুই এখনো রেডি হোসনি? গায়ে হলুদ তো শুরু হয়ে গেছে!""

মায়ের ডাকে তিল ছোটবেলার স্মৃ'তি থেকে বের হয়ে আসলো। আয়নায় মায়ের চোখে চোখ রেখে বললো,

""আমি এখনি রেডি হয়ে আসছি আম্মু, রিমাকে কিন্তু সবার আগে আমিই হ'লুদ লাগাবো। তুমি গিয়ে পাহারা দাও যেন আমার আগে কেউ লাগাতে না পারে।""

তাসমিয়া বেগম মেয়ের কাছে এগিয়ে এসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,

"" এই হলুদ শাড়ীটাতে তোকে হলদে পাখির মতো সুন্দর লাগবে। কি এতো ভাবছিস? রিদের কথা?""
"" আমি নিজেকে ভেবেই কুল পাইনা আবার আরেকজনের কথা ভাববো। শাড়ীটা কোন স্টাইলে পড়বো সেটাই ভাবছিলাম। তুমি যাও তো,তুমি না গেলে আমি পড়বো কিভাবে?""

তাসমিয়া বেগম মুচকি হাসি দিয়ে বের হয়ে গেলেন।

তিল হাতের হলুদ শাড়ীটার দিকে তাকাতেই চোখটা ভিজে এলো। গলা ব'ন্ধ হয়ে কান্না আসছে। আমি 'র' বলা শিখে গিয়েছি রিদ ভাইয়া। আপনি কি আজকেও আসবেননা? আমার আফসোসের পাহাড় ভেং'গে গুড়িয়ে দিবেননা? এতো বড় পাহাড়টা আমি আর বয়ে বেড়াতে পারছিনা। আমার ঐ একটা নালিশ যে আপনাকে আমার থেকে এভাবে কেড়ে নিবে আমি বুঝতে পারিনি। আমার অবুঝের পা*গলামীগুলো মনে পড়লেই সেগুলো তীর হয়ে বুকে বিদছে। ৮ টা বছর তো পেরোলো আর কত অভিমান করে থাকবেন? এবার অভিমানটা দিয়ে আমার আফসোসের পাহাড়টা ভেং'গে গুড়িয়ে দিননা,প্লিজ!

তিল কাদতে কাদতে আয়নার সামনেই হাটু ভেং'গে বসে পড়ে। খুব কষ্ট হচ্ছে খুব,এতো কষ্ট হচ্ছে কেন রিদ ভাইয়া??

তিল শাড়ীটা ঢিল মেরে ফেলে দিলো। পড়বোনা আমি শাড়ি! আপনার হাত যেদিন পড়াবে সেদিনই পড়বো। সেদিনি নিজের শরীরে শাড়ী জড়াবো।
~~
"" খবরদার তুই আমাকে হলুদ লাগাবিনা।""

রিমা তিলের হাতটা আটকে দিয়ে তিলের দিকে তাকিয়ে রইলো।

ঘুরে আসুন আমাদের পেইজ থেকে facebook.com/toxicvibes0

"" কেন?""
"" তুই তো আমাকে কথা দিয়েছিলি হলুদ শাড়ী পড়েই হলুদ লাগাবি। তুই কথার খেলাপ করেছিস। আমি তোর হাতে হলুদ লাগাবোনা। আমার সামনে থেকে যা!""

তিল অসহায়ভ'ঙ্গি'তে রিমার দিকে তাকিয়ে রইলো। ছোটবেলা থেকেই একসাথে বড় হয়েছে। একজনের পুতুলের সাথে আরেকজনের পুতুলের বিয়ে হয়েছে কতবার তা অগনিত। রিমা রিদানেরই ছোটবোন। রিদানের বাবা আর তিলের বাবা আপন দুইভাই। সে সুবাদেই তারা জয়েন ফ্যামিলির ন্যায় একসাথে থেকে আসছে। রিদানের বাবা বড় হওয়ায় তিল বড় আব্বু বলেই ডাকে। আর উনিও রিমার মতোই তিলকে মেয়ের মতোই দেখেন। সেভাবে দেখতে গেলে এ বাড়িতে সব থেকে আদরের মেয়ে হলো তিল। হবেইনা কেন? একটা ভদ্র,ভালো মেয়ের যা যা গুন থাকা সব তিলের মধ্যে বিদ্যমান। বরংচ অন্যদের মধ্যে যেগুলো নেই সেগুলোও আছে। এক কথায় ভদ্র,শান্ত,চুপচাপ মেয়েকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। যদি এই নিয়ে কোনো প্রতিযোগিতা হতো তাহলে বিচারক চোখ বন্ধ করে তিলকে ফার্স্ট প্রাইজটা খুশিমনে তুলে দিয়ে নিজেকে ধন্য মনে করতো।

"" এমন করছিস কেন? শাড়ী দেখলেই আমার চু'লকানি শুরু হয়ে যায়,আমার কি দোষ? আমি তো পড়তেই চাইলাম।""
"" তিল, আমার সাথে একদম মিথ্যা কথা বলবিনা। তুই যে মিথ্যে বলতে পারিস না সেটা আমার থেকে ভালো তুই নিজেও জানিস না। তুই যতক্ষননা শাড়ী পড়বি ত'তক্ষন আমার চোখের সামনে আসবিনা। আমাদের বন্ধুত্বের কসম।"

তিল মন খা'রাপ করে সেখান থেকে উঠে আসে। তোরা দুইভাইবোন এমন বিচ্ছিরী পোকা কেন রে? যখন তখন কা'মড়ে দিস। তোদের কি মনে হয়না তোদের বিষদাতগুলো আমার শরীরে কেমন জ্বলন ধরায়? ইচ্ছে তো করে তোদের বিষগুলো নিঙরিয়ে নিয়ে পু'কুরের পচা পানির সাথে মিশিয়ে সরবত বানিয়ে তোদেরকে খায়িয়ে মেরে ফেলি। আমি তো শুনছি নিজের বি'ষ নিজে খেলে সাথে সাথে মা*রা যায়। সেটা তোদের উপর পরীক্ষা করে সিউর হতে হবে!

তিল বিড়বিড় করে হাটতে হাটতে বড়আম্মুর সাথে ধা'ক্কা খেলো।

"" উফ! শুভ কাজে বাধা দিলি কেন? একটু দেখে হাটতে পারিসনা?""
"" আবার কি শুভ হলো??""
"" আরে,আমার ছেলে এসেছে। আমার ছেলে আমার বুকে ফিরে এসেছে। আমি জানতাম নিজের আদরের ছোট বোনের বিয়ের কথা শুনে ও না এসে থাকতে পারবেনা। বাবার প্রতি রাগটা তাহলে এবার পড়লো।""
"" কার কথা বলছো,বড় আম্মু?""
"" কার কথা আবার আমার সোনার খনি,আমার রিদান এসেছে!""
"" রিদ ভাইয়া?""

তিলের মনে হলো তার শ'রীর বেয়ে বড়সড় একটা ঘুর্নিঝড় বয়ে গেলো। চারপাশের সবকিছু ল'ন্ডভ'ন্ড হয়ে গিয়েছে। হঠাৎই রিমার সজোরে চিৎকার করে ভাইয়া ডাকটা তিলের নিশ্বাসটা আটকে দিলো।

~~
তিল ড্রয়ার থেকে একে একে সব জামাকাপড় খু*লে বের করছে। একের পর একটা পড়ে যাচ্ছে,আর খু'লছে। সে তার রিদ ভাইয়ার সামনে কি পড়ে যাবে?? কোনটা পড়লে সব থেকে বেশি সুন্দর লাগবে?? উফ! আমার তো আজকে বেস্ট জা'মাটা পড়তে হবে। রিদ ভাইয়া এতো বছর পর বিদেশ থেকে এলো। ইউকে থেকে পড়াশুনা করেছে মানে তার পছন্দগুলোও অমনই হবে। আর তার পছন্দসই নাহলে আমার দিকে তো ফিরেও তাকাবেনা। কি যে করি! উফ! টেনশনে মাথা ভার হয়ে আসছে। সাথে সাথে মাথা ফাটিয়ে ব্য'থা শুরু হয়ে গেছে।

তিলের মাথা ব্য'থা আরো বাড়িয়ে দিলো তার বড় আম্মু!

"" একি তুই রুম এমন গোয়ালঘরের মতো করে রাখছিস কেন?""
"" এমনি,আমি কোন জামাটা পড়বো ঐটা...""
"" জামা কাপড় পরে খাচিস। রিদানের নাকি মাথা ধরেছে। আমার মাথা ধরলে তুই যে কি মশলা চা নাকি কি চা বানাস ঐটা বানিয়ে দেতো,মা।। যাতে চায়ে চু*মুক দিতেই মাথা ব্যথা ফুরুৎ হয়ে যায়!""

বড় আম্মুর বিপরীতে কথা বলার সময়টাও পায়নি তিল। ওকে টানতে টানতে রান্নাঘরে নিয়ে গেলো।

তিল হাতে চায়ের ট্রেটা নিয়ে ড্রয়িংরুমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমার বেস্ট সাজের বারোটা বাজিয়ে দিলো বড় আম্মু। এতো জা'মাকাপড় থাকতে কিনা শেষে এই সা'দামাটা হ'লুদ জামাটা পড়েই উনার সামনে যেতে হবে?? শাড়ী পড়বোনা দেখে কি একটা গর্জিয়াস জামাও পড়তে পারলাম না? আর আমি চা বানালাম দেখে আমাকেই দিয়ে আসতে হবে? এই বড় আম্মুটাও আমাকে বুঝলোনা। রিদ ভাইয়ার সামনে আমাকে চাকরানী বানিয়ে দিলো? তিল মাথায় ওড়নার ঘোমটাটা আরো টেনে নিলো যাতে রিদ চিনতে না পারে।
I
ড্রয়িংরুমের সামনে যেতেই তিলের হাত পা কাপতে লাগলো। আল্লাহ এতগুলো ছেলে কোথা থেকে আসলো? এর মধ্যে রিদ ভাইয়া কোনটা? ছোটবেলা আর বড়বেলার চেহারা কি এক হবে?? আমি কি চিনতে পারবো?? ইশ! রিমা আমাকে কতবার উনার ছবি দেখাতে চাইলো আর আমি ফালতু রাগ দেখিয়ে মুখের উপর বলে দিয়েছিলাম,তোর ভাই কি ঘোড়ায়চড়া রাজকুমার যে আমি দেখতে যাবো? তোর ভাই গা'দা চড়ার গরুকুমার। আর আমি গরুকুমারদের দেখিনা!

তিল ওড়নার নিচ দিয়ে সবাইকে দেখার চেষ্টা করতে লাগলো। কোনটা তার রিদ ভাইয়া! এদিকে পায়ের সাথে হাতটাও তাল মিলিয়ে কাপছে সাথে চায়ের কাপ টকটক করে শব্দ শুরু করে দিয়েছে। মনে হচ্ছে আজ কাপেরা মিলে যুদ্ধ বে'ধে যাচ্ছে কে আগে ফে'টে গিয়ে চা নিচে গড়িয়ে ফে'লতে পারে।

চলবে.....

গল্প: ভালোবাসার রাত
লেখক: রোকসানা
পর্ব: ১

নেক্সট পার্ট সবার আগে আইডিতে পোস্ট করা হবে, নীল লেখার চাপ দিয়ে সবাই আইডি ফলো করুন। 👉 Choto Dairy 01

শা*রী*রিক মেলামেশা শেষে আয়েশার বুকের ওপর থেকে নেমে একগ্লাস পানি খেয়ে আয়েশার বুকে মাথা রেখে সুলেমান বললো– চলো আজ রাতেই আম...
16/07/2025

শা*রী*রিক মেলামেশা শেষে আয়েশার বুকের ওপর থেকে নেমে একগ্লাস পানি খেয়ে আয়েশার বুকে মাথা রেখে সুলেমান বললো– চলো আজ রাতেই আমরা সেই ভালোবাসার বীজ বপন করি যে বীজ অঙ্কুরিত হয়ে তোমাকে মাতৃত্বের স্বাদ দেবে

সদ্য প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের দেহ ভোগ করে আমাবস্যা রাতে সেই মেয়েদের ন-গ্ন অবস্থায় গভীর অরণ্যে গাছের সাথে বেধে বিষাক্ত তীর ছুড়ে একে একে হ-ত্যা করে অত্যাচারী রাজা লুইস।

তারপর তাদের শরীরের রক্ত দিয়ে গোসল শেষে মেয়েদের নিষ্প্রাণ দেহ গুলো সেই গভীর অরণ্যে মাটিচাপা দেয়া হয়, আর যেখানে যেখানে মাটিচাপা দেয়া হয় সেখানে একটি করে গোলাপের গাছ রোপণ করা হয়। এখানের গোলাপ গাছে ফুল ফোটে কিন্তু তার রং কালো। এই ফুলে কখনও ভ্রমর, প্রজাতি, অথবা মৌমাছি বসেনা, শোনা যায় এই কালো গোলাপের মধু ভয়ঙ্কর বিষাক্ত। এবং রাজা লুইস লোকজন দিয়ে এই ফুল সংগ্রহ করায়, তারপর এই কালো গোলাপ ছেঁচে এর রস বের করে সেই রস প্রতিটি তীরের ডগায় মাখিয়ে নেয়। এই রস এতটাই বিষাক্ত যে তীর কারো শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে হৃদপিণ্ড বিকল হয়ে মৃত্যু অনিবার্য। এই বনের ঠিক এই খানে কেবলমাত্র গোলাপ গাছগুলো ছাড়া অন্যসব গাছ, ঘাসপাতা, লতা সবই মৃত প্রায়। নেই কোনো পাখির কলকাকলি। সারাক্ষণ মৃত্যুপুরীর থমথমে নিস্তব্ধতা। এখানকার প্রকৃতি যেন প্রাণ হারিয়েছে অনেক আগেই রাজা লুইসের নিষ্ঠুরতায়। পাশেই একটা আদি আমলের পুরনো ছোট ঘরের মতন, তার দেয়ালে শেওলা ও পরগাছা ঝুলছে। ঐ ঘরেই নিষ্ঠুর ভাবে সারারাত মেয়েদের দেহ ভোগ করে লুইস। পরপর দশদিন দশটা মেয়ের দেহ ভোগ করে তারপর আমাবশ্যা রাতে তাদের হত্যা করে।

ঠিক আমাবস্যা আসার ঠিক দিন দশেক আগে থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে গায়েব হতে শুরু করে নবযৌবনা মেয়েরা। তারা কোথায় যায় আজ পর্যন্ত কেউ জানতে পারেনি। এবং এই রহস্য ভেদ করা কারো পক্ষে সম্ভব হয়নি। হবেই বা কি করে। লুইসের এসক কর্মকান্ডে যারা জড়িত তারা সকলেই অত্যন্ত বিশ্বস্ত। আর কেউ ভুলেও যদি লুইসের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে তাহলে তার ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করা হবে সেটা তারা ভালো করেই জানে। রাজা লুইস একজন অপদেবতার পূজারি, সেই অপদেবতাদের সন্তুষ্টির জন্য নবযৌবনা মেয়েদের রক্ত দিয়ে গোসল করে তাদের দেহ মৃত বনে মাটিচাপা দেয়। লুইসের রাজপ্রাসাদে এযাবৎ কেউ আক্রমণ করে রক্ষা পায়নি, রাতবিরেতে কেউ লুইসের প্রাসাদে আক্রমণ করতে এলে সকালে তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায় প্রাসাদের আসেপাশে। শোনা যায় এসব নাকি ঐ অপদেবতাদের কাজ, তারাই লুইসের রাজপ্রাসাদ রক্ষাকারী।

রাজ প্রাসাদের উত্তরের দিকের ছোট্ট গ্রামের একজন কাঠুরিয়া হলো রহিম। বনে জঙ্গলে কাঠ কেটে সেগুলো বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সেই সকালে বের হয়ে সারাদিন জঙ্গলে কাঠ কেটে সেগুলো আঁটি বেঁধে অল্প অল্প করে নিয়ে এসে গঞ্জের হাটে বিক্রি করে। অল্পস্বল্প যা রোজগার হয় তাই দিয়ে টেনেটুনে দিন চলে যায়।

ঘুরে আসুন আমাদের পেইজ থেকে facebook.com/toxicvibes0

আজ কাঠের সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে জঙ্গলের অনেক গভীরে চলে যায়। এবং ফেরার সময় মৃত বনের পাশ দিয়ে আসার সময় কালো গোলাপ দেখে থমকে দাঁড়ায়। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে গাছ থেকে একটি কালো গোলাপ ছিড়ে হাতে নেয় রহিম। দেখতে দেখতে মেয়েটার বয়স আঠারো হয়ে গেল, আদরের সেই ছোট্ট মেয়ে আয়েশা আজ বড়ো হয়ে গেছে, কিন্তু বাবা হিসেবে মেয়েটির মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দেয়া ছাড়া মেয়ের আর কোনো সখ আহ্লাদ পুরন করতে পারেনি। দুধে আলতা গায়ের রং আয়েশার, দীঘল কালো চুল, চোখদুটো মায়ার সাগর। সৃষ্টিকর্তা যেন রহিমের ঘরে মেয়ে হিসেবে স্বর্গের পরী পাঠিয়েছে।

রহিম এই ভেবে কালো গোলাপ ছিড়ে হাতে নিয়েছে যে– এটা নিয়ে গিয়ে আয়েশাকে দিলে অনেক খুশী হবে।

কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো চোখের পলকে একটা ভয়ঙ্কর কালো সাপ এসে ফনা তুললো। তাই দেখে রহিম ভয়ে দৌড়াতে শুরু করলো, সাপটাও পেছন পেছন রহিমকে তাড়া করছে। অনেক দূরে দৌড়ে আসার পর গাছের শেকড়ে পা আটকে পড়ে যায় রহিম, পা একটুখানি কেটেও যায়। গোলাপটা পায়ের কাছেই পড়েছিল এবং কাটা যায়গা থেকে রক্ত বেরোনোর সাথে সাথেই কালো গোলাপ সেই রক্ত শুষে নেয় সেটা রহিম খেয়াল করেনি।

গোলাপটা তুলে হাতে নিয়ে রহিম খেয়াল করলো সাপটা নেই। গোলাপটা কাঁধে ঝোলানো পুটলিতে ভরে ধীর পায়ে হেটে বন অতিক্রম করে লোকালয়ে আসলো রহিম।

রহিম বাড়ির ভেতর ঢোকা মাত্রই এক হাতে জগ অন্য হাতে পানির গ্লাস হাতে নিয়ে হাসিমুখে উপস্থিত আয়েশা।

ক্লান্ত মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে রহিম বলে– আমি আসলেই তুই কি করে টের পেয়ে যাস মা, তুই কি আমার ফেরার পথ চেয়ে বসে থাকিস?

মিষ্টি হেসে আয়েশা বললো– সে পরে বলবো বাবা, আমি পানি ঢেলে দিচ্ছি তুমি আগে হাতমুখ ধুয়ে নাও।

হাতমুখ ধুয়ে সামনের খোলা বারান্দায় খুটির সাথে হেলান দিয়ে আরাম করে বসে ক্ষানিকটা বিশ্রাম নিয়ে ক্লান্তি দূর করার জন্য চোখ বন্ধ করে রইলো রহিম।

এদিকে উঠোনে আয়েশার পেছন পেছন ঘুরঘুর করছে তার পোষা প্রিয় ছাগল লক্ষী। আয়েশার খোঁপায় গোঁজা বেলি ফুলটা হঠাৎ পড়ে যেতে যেতে একটা প্রজাপতিতে পরিনত হয়ে ছাগল লক্ষীর সামনে সামনে উড়তে লাগলো, আর লক্ষী তাকে ধরার জন্য পেছন পেছন ছুটতে লাগলো।

আয়েশা খপ করে প্রজাতিটা ধরে ফিসফিস করে বললো– মায়া পরী এখন দুষ্টুমি করার সময় নয়, বাবা বিশ্রাম নিচ্ছে তো!

হাতের মধ্যেই প্রজাপতি আবার ফুলে পরিনত হয়ে গেল। ফুলটা খোঁপায় গুঁজে ঘরে গিয়ে একটা বাটিতে করে মুড়ি এবং এক গ্লাস পানি এনে বাবার সামনে রাখলো আয়শা।

মুড়ি খেয়ে রহিম পুটলি থেকে কালো গোলাপটা বের করে হাসিমুখে আয়েশার হাতে দিয়ে বললো– গোলাপটা ভীষণ সুন্দর তাইনা মা, এরকম আগে কোনদিন দেখেছিস।

গোলাপ হাতে নিতেই আয়েশার শরীরের সমস্ত লোম কাটা দিয়ে উঠলো। আয়েশার খোঁপায় গোঁজা ফুলটা আচানক প্রজাপতি হয়ে উড়ে গেল। আর ছাগল লক্ষী হঠাৎ কেমন অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করলো।

এদিকে অত্যাচারী রাজা সদ্য তুলে আনা একটি মেয়েকে বিবস্ত্র করে তার দেহে ঝাপিয়ে পড়ে দেহ ভোগ শুরু করতেই হঠাৎ থেমে গেল, অশুভ শক্তির বদৌলতেই বুঝতে পারলো কালো গোলাপ অন্য কারো হাতে পড়েছে। একটা চাকু দিয়ে নিজের আঙুল কেটে রক্ত বের করে ছোট্ট একটা পুরনো আমলের আয়নায় দুফোঁটা রক্ত ফেলতেই আয়নায় আয়েশার মুখটা ভেসে উঠলো...

চলবে।

গল্পঃ কালোগোলাপ
পর্ব ১
লেখক Unknown

[পরের পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন,পরের পর্বগুলা মিস না করতে চাইলে নিল লেখার উপর চাপ দিয়ে পেজকে এখনি ফলো করে রাখুন যাতে পরের পর্বগুলা মিস না হয়, ধন্যবাদ। 👉 Choto Dairy 01 ]

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Choto Dairy 01 posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Choto Dairy 01:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share